দেখে এলাম নায়াগ্রা হচ্ছে পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা বই এর গল্প। দেখে এলাম নায়াগ্রা গল্পটির অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
এক নজরে দেখে এলাম নায়াগ্রা গদ্যের মূলকথাটি জেনে নিই-
নায়াগ্রা পৃথিবীর সর্ববৃহৎ জলপ্রপাত। এটি কানাডার টরন্টো থেকে একটু দূরে অবস্থিত। জলপ্রপাত হলো ঝরনার মতো পাহাড়ের উপর থেকে নিচে সমতল ভূমিতে পানির গড়িয়ে পড়া। তবে তা আকারে অনেক বড় হয়। জলপ্রপাত বড়, ঝরনা ছোট— এটুকু যা পার্থক্য। উপর থেকে জল পতনের ব্যাপার দুই জায়গায়ই ঘটছে।
কিন্তু নায়াগ্রা জলপ্রপাত অন্য যেকোনো জলপ্রপাতের চেয়ে ভিন্ন। কারণ যেখান থেকে নায়াগ্রার উৎপত্তি, সেখানে এটি খরস্রোতা নদী বইছে। সামনের সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কিছুই ভাসছে না। কারণ যে মাটির ওপর দিয়ে এই খরস্রোতা নদী বইছে সেখানে এক বিশাল ফাটল। একটি নদী ঠিক যতখানি চওড়া হতে পারে ততখানি ফাঁক। নায়াগ্রার জল এই ফাটলের ভিতর দিয়ে চলে যাচ্ছে। কিন্তু কোথায় যাচ্ছে তা কেউ জানে না। তাই নায়াগ্রা একেবারে ভিন্ন রকমের জলপ্রপাত।
সতর্কতার সাথে নিচের শব্দগুলোর সঠিক বানান জেনে নিই—
জলপ্রপাত, সৌভাগ্য, টরন্টো, নায়াগ্রা, আঁকাবাঁকা, দ্রুত, ক্রমশ, ভূমণ্ডল, বৃহৎ, খরস্রোতা, ফাটল, ফাঁক, গহ্বর।
দেখে এলাম নায়াগ্রা
১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
কানাডা, দ্রুতগতিতে, পতন, সমতল ভূমি, প্রবাহিত হওয়া, গহ্বর।
উত্তর :
কানাডা – উত্তর আমেরিকা মহাদেশের একটি দেশ।
দ্রুতগতিতে – খুব তাড়াতাড়ি করে, জোরে যাওয়া।
পতন – নিচে পড়া।
সমতল ভূমি – যে জমি উঁচু-নিচু নয়, পাহাড়ি নয় তাকেই সমতল ভূমি বলে।
প্রবাহিত হওয়া – বয়ে চলা, গড়িয়ে গড়িয়ে চলা।
গহ্বর – গর্ত।
২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
কানাডা, দ্রুতগতিতে, পতন, সমতল ভূমিতে, প্রবাহিত, গহ্বর
ক. হোঁচট খেলে – ঠেকানো দায়
খ. নদীর জল – হয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে যায়।
গ. পাহাড়ের গায়ে গর্ত থাকলে তাকে আমরা – বলি ।
ঘ. আমরা – হাঁটতে পারি।
ঙ. – একটি বড় দেশ।
চ. ঢাকা শহর গড়ে উঠেছে –, কিন্তু চট্টগ্রাম শহর সে রকম নয়।
উত্তর :
ক. হোঁচট খেলে পতন ঠেকানো দায়।
খ. নদীর জল প্রবাহিত হয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে যায়।
গ. পাহাড়ের গায়ে গর্ত থাকলে তাকে আমরা গহ্বর বলি।
ঘ. আমরা সমতল ভূমিতে হাঁটতে পারি।
ঙ. কানাডা একটি বড় দেশ।
চ. ঢাকা শহর গড়ে উঠেছে দ্রুতগতিতে, কিন্তু চট্টগ্রাম শহর সে রকম নয়।
৩. প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখি ও বলি।
প্রশ্ন ক. নায়াগ্রা কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : নায়মা পৃথিবীর সর্ববৃহৎ জলপ্রপাত। এ জলপ্রপাতটি কানাডার টরন্টো শহর থেকে একটু দূরে অবস্থিত।
প্রশ্ন খ. নায়াগ্রা জলপ্রপাত এবং ঝর্ণার মধ্যে পার্থক্য বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : উপর থেকে নিচে জল পতনের ব্যাপারটি জলপ্রপাত ও বার্ণা উভয়ের ক্ষেত্রেই ঘটে। কিন্তু জলপ্রপাত আকারে বিশাল। সেই তুলনায় ঝর্ণা আকারে ছোট। যেমন নায়াগ্রা জলপ্রপাতের আকার বিশাল। সেই তুলনায় পার্বত্য অঞ্চলের ঝর্ণার আকার ছোট। এটিই নায়াগ্রা জলপ্রপাত ও ঝর্ণার মধ্যে মূল পার্থক্য।
প্রশ্ন গ. নায়াগ্রা জলপ্রপাতের বিশেষত্ব কী?
উত্তর : পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত হলো নায়াগ্রা জলপ্রপাত। এই জলপ্রপাত পাহাড় থেকে নামেনি। নায়াগ্রা জলপ্রপাত যেখানে, সেখানে সমতলের উপর দিয়ে একটি খরস্রোতা নদী বইছে। নদী যেখানে প্রবাহিত, সেখানে ভূমিতে রয়েছে এক বিশাল ফাটল। নায়াগ্রার জল ঐ ফাটলের ভেতর দিয়ে প্রবল বেগে চলে যাচ্ছে। কিন্তু জলটা কোথায় যাচ্ছে তা কেউ জানে না। এটিই নায়াগ্রার বিশেষত্ব।
প্রশ্ন ঘ. নায়াগ্রার জল কোথায় ?
উত্তর : সমতলের এক খরস্রোতা নদী থেকে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের উৎপত্তি। এই খরস্রোতা নদীটি যে মাটির উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, সেখানে হঠাৎ করেই এক বিশাল ফাটল। দু-দিকের মাটির মধ্যে এক বিশাল ফাঁক। নায়গ্রার জল এই ফাঁকের মধ্য দিয়ে চলে যাচ্ছে।
প্রশ্ন ঙ. বিশ্ব-ভূমণ্ডল বড়ই বিচিত্র’- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পৃথিবীর ভৌগোলিক অবস্থা কোথাও এক রকম নয়। কোথাও সুউচ্চ পাহাড়-পর্বত, কোথাও নদী-নালা, সমুদ্র, বনভূমি, আবার কোথাওবা বিস্তীর্ণ মরুভূমি। আবার প্রকৃতিতেও লক্ষ করা যায় এই বৈচিত্র্যের ছোঁয়া কোথাও তীব্র শীত, কোথাও প্রচণ্ড গরম, কোথাও আবার সারা বছরই বরফে ঢাকা থাকে। কেবল পৃথিবীই নয়, পৃথিবীর বাইরে যে বিশাল মহাকাশ সেখানেও আছে বৈচিত্র্য। এ কারণেই বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব ভূমণ্ডল বড়ই বিচিত্র।’
প্রশ্ন চ. সাধারণ জলপ্রপাতের সঙ্গে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের তুলনামূলক আলোচনা কর।
উত্তর : নায়াগ্রা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত। এটি সাধারণ জলপ্রপাত থেকে ভিন্ন। নিচে সাধারণ জলপ্রপাতের সঙ্গে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের তুলনামূলক আলোচনা করা হলো-
সাধারণ জলপ্রপাতের ক্ষেত্রে পাহাড়ের উপর থেকে জল পতিত হয় নিচে সমতল ভূমিতে। কিন্তু নায়াগ্রার জলের উৎস পাহাড় নয়। নায়াগ্রার জল সমতলের নদী থেকে এক বিশাল ফাটলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সাধারণ জলপ্রপাতে জল নিচে পতিত হয়ে সরু নদীর মতো প্রবাহিত হয়। কিন্তু নায়াগ্রার জল ফাটলের মধ্যে পড়ে কোথায় যাচ্ছে তা কেউ জানে না।
৪ ঠিক উত্তরটিতে টিক (√) চিহ্ন দিই।
ক. নায়াগ্রা কোথায় অবস্থিত?
১. জাপার
২. ভারত
√ ৩. কানাডা
৪. রাশিয়া
খ. নায়াগ্রা জলপ্রপাত পড়ছে-
১. পাহাড় থেকে
√ ২. সমতল ভূমি থেকে
৩. কোনো উঁচু স্থান থেকে
৪. পাহাড়ি ঢল থেকে
গ. জলপ্রপাত দেখতে বাসে না যাবার কারণ কী?
১. বাসের ভাড়া বেশি।
২. সেখানে বাস যায় না।
√ ৩. বাসে ইচ্ছেমতো থামা যায় না।
৪. বাসে সময় বেশি লাগে।
৫. ডান দিক থেকে শব্দ বেছে নিয়ে খালি জায়গায় লিখি।
সৌভাগা, ফাটল, খরস্রোতা, নয়াগ্রা, বন্ধুবান্ধবদের
ক. তখন আমিও পড়েছি – জলপ্রপাতের কথা।
খ. জলপ্রপাত দেখার – একবার হয়েছিল।
গ. একদিন – সঙ্গে গল্পের মজলিসে কথা উঠল।
ঘ. যে মাটির ওপর দিয়ে এই – নদীটি প্রবাহিত হচ্ছে সেখানে হঠাৎ করেই এক বিশাল -।
উত্তর :
ক. তখন আমিও পড়েছি নায়াগ্রা জলপ্রপাতের কথা।
খ. জলপ্রপাত দেখার সৌভাগ্য একবার হয়েছিল।
গ. একদিন বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে গল্পের মজলিসে কথা উঠল।
ঘ. যে মাটির ওপর দিয়ে এই খরস্রোতা নদীটি প্রবাহিত হচ্ছে। সেখানে হঠাৎ করেই এক বিশাল ফাটল।
৬. কথাগুলো বুঝে নিই।
জলপ্রপাত – পাহাড়ের ওপর থেকে নিচে সমতল ভূমিতে বিশাল পরিধি নিয়ে জল পড়া।
মজলিস – গল্পগুজব করার আসর।
জলের ধর্ম – জলের স্বভাব, জলের চরিত্র।
বিশ্ব-ভূমণ্ডল – জগৎ, দুনিয়া।
আরো পড়ো → দুই তীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর
আরো পড়ো → বিদায় হজ গল্পের প্রশ্ন উত্তর
৭. কর্ম-অনুশীলন।
আমি কোথায় কোথায় বেড়াতে বা ঘুরতে গিয়েছি- তা মনে করার চেষ্টা করি। এর মধ্য থেকে যেকোনো একটি জায়গার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি লিখি (কোথায় গিয়েছিলাম, কবে গিয়েছিলাম, কীভাবে গিয়েছিলাম, কী কী দেখেছিলাম, কী করেছিলাম, কী খেয়েছিলাম, কেমন করে ফিরে এসেছিলাম)। উত্তর : নিজে নিজে চেষ্টা কর। প্রয়োজনে বাংলা দ্বিতীয় পত্রের ২০নং পত্র অনুসরণ কর।
৮. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ি এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখি।
বিশ্ব-ভূমণ্ডল বড়ই বিচিত্র। কত অসম্ভব ব্যাপারই যে ঘটে। পৃথিবীতে সবচেয়ে বৃহৎ জলপ্রপাত বলা হয় নায়াগ্রাকে। এই জলপ্রপাত পাহাড় থেকে নামে নি। সমতলের ওপর দিয়ে একটি খরস্রোতা নদী বইছে। যে মাটির ওপর দিয়ে এই খরস্রোতা নদীটি প্রবাহিত হচ্ছে সেখানে হঠাৎ করেই এক বিশাল ফাটল। একটা নদী যতখানি চওড়া হতে পারে ততখানি ফাঁক। নায়াগ্রার জল ঐ ফাঁকের ভিতরে চলে যাচ্ছে। এটাও তো প্রপাত, কারণ পানি পড়ছে। তবে, সাধারণ জলপ্রপাতের মতো পাহাড় থেকে নিচে পড়ছে না। পড়ছে, সমতল থেকে বিশাল ফাটলের গহ্বরে। নায়াগ্রা তাই একেবারে ভিন্ন রকমের জলপ্রপাত।
ক. পৃথিবীর বৃহৎ জলপ্রপাত বলা হয় কোনটিকে?
খ. নায়াগ্রা জলপ্রপাতের বৈশিষ্ট্য কী?
গ. নায়াগ্রা জলপ্রপাত কোথা থেকে প্রবাহিত হয়?
ঘ. মায়াগ্রাকে ভিন্ন রকমের জলপ্রপাত বলা হয়েছে কেন?
উত্তর :
ক. নায়াগ্রা জলপ্রপাতকে পৃথিবীর বৃহৎ জলপ্রপাত বলা হয়।
খ. নায়াগ্রা জলপ্রপাতের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি পাহাড় থেকে নামেনি।
গ. নায়াগ্রা জলপ্রপাত সমতলের ওপর দিয়ে বয়ে চলা খরস্রোতা নদীর জল হঠাৎ করে এক বিশাল ফাটলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ঘ. নায়গ্রাকে ভিন্ন রকমের জলপ্রাপাত বলা হয়েছে। কারণ- (১) এটি পাহাড় থেকে নামেনি; (২) এর জল সাধারণ জলপ্রাতের মতো পাহাড় থেকে পড়েনি; (৩) এর জল সমতলে প্রবাহিত খরস্রোতা একটি নদীর সমান চওড়া বিশাল ফাটলের মধ্য দিয়ে নিচে পতিত হয়।