সামাজিক-রাজনৈতিক কাঠামো ও রীতিনীতি হচ্ছে ৭ম শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই এর শিখন অভিজ্ঞতা। সামাজিক-রাজনৈতিক কাঠামো ও রীতিনীতি অধ্যায়টির পাঠ্যবইয়ের প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
সামাজিক-রাজনৈতিক কাঠামো ও রীতিনীতি
কাজ-১: সামাজিক রীতিনীতির সাথে পরিচিত হওয়া।
কাজের নির্দেশনা:
- শিক্ষার্থীরা প্রথমে সামাজিক মূল্যবোধ ও রীতিনীতি অংশটি ভালোভাবে পড়বে।
- পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলবে।
- নিচের ছক ব্যবহার করে তারা কোন কোন সামাজিক নিয়ম মেনে চলে তার একটি তালিকা তৈরি করবে।
- এসব নিয়ম-কানুন তারা কোথা থেকে জানতে পেরেছে? নিয়ম না মানলে কী হতে পারে? এসব প্রশ্নের উত্তরও জেনে নিবে এবং ছকে লিখবে।
নমুনা সমাধান :
কাজ-২: সামাজিক রীতিনীতির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা।
কাজের নির্দেশনা:
উপরের তালিকাটি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা নিচের প্রশ্নগুলোর সমাধান করবে:
- তারা নিজেরা এসব নিয়ম-কানুনের বিষয়ে কী মনে করেন?
- তারা কোথা থেকে নিয়মগুলো পেয়েছেন?
- এসব নিয়ম না মানলে কী হয়?
নমুনা সমাধান
- উপরের ছকটিতে আমরা যে সামাজিক নিয়মগুলো সম্পর্কে জানতে পারলাম তার অধিকাংশ নিয়মগুলোই আমরা পরিবার, পাড়া-প্রতিবেশি, বয়স্ক আত্মীয়-স্বজন, সমাজ, সংস্কৃতি প্রভৃতি জায়গা থেকে জানতে পারি। এছাড়া যাদের কাছে জিজ্ঞেস করে আমরা তালিকাটি তৈরি করেছি তারাও মনে করেন যে, সামাজিক পরিবেশের সুস্থতা বজায় রাখা, মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ এবং সমাজের দৈনন্দিন জীবন যাপনে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সামাজিক নিয়ম-কানুনের গুরুত্ব অপরিসীম।
- আমরা যাদের বানাতে উপরিউ সামাতি তৈরি করেছি তারাও এসকল সামাজিক নিয়মগুলো সমাজ, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া- প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব, ইতিহাস-ঐতিহ্য, ধর্মীয় নিয়মাবলি প্রভৃতি স্থান থেকে পেয়েছেন।
- সামাজিক রীতি-নীতি মেনে চলার কোনো আইনগত বাধ্যবাধকতা না থাকলেও কেউ এগুলো অমান্য করলে সমাজের মানুষ তাকে অপছন্দ করে। এগুলো না মানলে সুষ্ঠু সামাজিক পরিবেশ বিনষ্ট হয়। মানুষের অনিয়ন্ত্রিত আচরণের ফলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও এসব রীতি-নীতি অমান্য করলে দৈনন্দিন সামাজিক জীবন যাপনে বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে, একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ করা থেকে দূরে সরে যাবে। সর্বোপরি সুষ্ঠু সামাজিক অগ্রগতি ব্যাহত হবে।
সামাজিক রীতিনীতির বৈশিষ্ট্য
১. সামাজিকভাবে তৈরি হয়।
২. সামাজিক রীতিনীতি সমাজের একটি অপরিহার্য অংশ।
৩. সামাজিক রীতিনীতি ভালোও হতে পারে, মন্দও হতে পারে।
৪. একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন এলাকায়/দেশে আলাদা রকমের সামাজিক রীতিনীতি হতে পারে।
৫. রীতি-নীতি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কিছু অলিখিত নিয়ম-কানুন।
৬. সমাজে অধিকাংশ মানুষ চেষ্টা করে সামাজিক রীতিনীতি মেনে চলতে।
৭. সমাজে নির্দেশমূলক ও নিষেধমূলক এই দুই ধরনের রীতিনীতি দেখা যায়। নির্দেশমূলক রীতিনীতি মানুষকে কোনো কাজ করার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়। আর নিষেধমূলক রীতিনীতি কোনো বিশেষ কাজ করতে নিষেধ করে।
সমাজে সামাজিক রীতিনীতির ভূমিকা
১. সমাজে মানুষের আচার ব্যবহার কেমন হবে তা ঠিক করে দেয়।
২. সমাজে যাতে সবকিছু ঠিকমতো কাজ করে তা নিশ্চিত করতে ভূমিকা পালন করে।
৩. মানুষের সমাজ গড়ে তোলার যে মূল উদ্দেশ্য সবাইকে নিয়ে ভালো থাকা, তা অর্জনে ভূমিকা রাখে।
৪. সবাই যদি সামাজিক রীতিনীতি মেনে একই রকম আচার-ব্যবহার চর্চা করে, তাহলে সমাজের প্রতিদিন যে কাজগুলো হয় তা সুষ্ঠুভাবে হতে পারে।
৫. সমাজের মানুষের প্রতিদিন কাজকর্ম যাতে কমবেশি একই রকম রুটিন অনুযায়ী চলে সে জন্য একটি সাধারণ মান ঠিক করে দেওয়া।
৬. সামাজিক মূল্যবোধ চর্চার সুযোগ তৈরি করে।
৭. সামাজিক বিচারে সফলতার মানদণ্ড তৈরি করে মানুষের মাঝে সফলতার অনুভূতি তৈরিতে সহায়তা করে।
সেশন-৫
কাজ-৩: পরিবার ও স্কুলের বিভিন্ন রীতিনীতি ও আচরণের প্রতিক্রিয়া।
কাজের উদ্দেশ্য: কাজটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পরিবার ও স্কুলের বিভিন্ন রীতিনীতি মেনে না চললে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা পাবে।
কাজের নির্দেশনা:
- শিক্ষার্থীরা প্রথমে সামাজিক মূল্যবোধ ও রীতিনীতি অংশ ভালোভাবে পড়বে।
- এরপর স্কুল এবং পরিবারে কী ধরনের নিয়ম মেনে চলতে হয় সে সম্পর্কে ধারণা লাভ করবে।
- পরবর্তীতে সেই ধরনের নিয়ম-কানুন না মানলে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে তা লিখবে।
- সবশেষে শ্রেণিশিক্ষককে কাজটি দেখাবে।
পরিবারে নিয়ম-কানুন মেনে না চললে কী হতে পারে
সেশন ৬-৮
কাজ-৪: সামাজিক মূল্যবোধের ধারণা
কাজের নির্দেশনা:
নমুনা সমাধান
শিক্ষার্থীরা দলে বিভক্ত হয়ে নিচের ছক ব্যবহার করে তাদের চিন্তাগুলো সাজিয়ে সবার সামনে উপস্থাপন করল।
কাজ-৫: পরিবারে ও সমাজে ভালো কাজ চিহ্নিত করা এবং এগুলোর পেছনে যে নীতি থাকে সেগুলো খুঁজে বের করা।
কাজের নির্দেশনা:
শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে পরিবার ও সমাজে ভালো কাজ হিসেবে মনে করা হয় এমন কিছু কাজ চিহ্নিত করবে এবং এসব ভালো কাজ করার পেছনে যে নীতিগুলো থাকে সেগুলো খুঁজে বের করে নিচের ছকে লিখবে এবং শ্রেণিতে উপস্থাপন করবে।
নমুনা সমাধান
শিক্ষার্থীরা অনেকগুলো ভালো কাজের সমাজ স্বীকৃত নীতি খুঁজে বের করল এবং ছকে উপস্থাপন করলো।
কাজ-৬: বিভিন্ন দেশের প্রবাদবাক্য জানা এবং সংশ্লিষ্ট সমাজের মূল্যবোধগুলো সম্পর্কে জানা।
কাজের নির্দেশনা:
শিক্ষার্থীরা দলে ভাগ হয়ে বিদেশে থাকা পরিচিতজন, ইন্টারনেট, আশপাশের মানুষ, বিভিন্ন বই ইত্যাদি উৎস থেকে প্রবাদবাক্য সংগ্রহ করে এর মধ্যকার মূল্যবোধগুলো খুঁজে বের করবে। কাজটি করে বিভিন্ন মাধ্যম (যেমন: পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড) ব্যবহার করে শ্রেণিতে উপস্থাপন করবে। একইভাবে তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রবাদবাক্য খুঁজে বের করে ছকে উপস্থাপন করবে।
নমুনা সমাধান
সেশন-৯
কাজ-৭: সামাজিক রীতিনীতি ও মূল্যবোধের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়।
কাজের নির্দেশনা:
শিক্ষার্থীরা দুটি দলে ভাগ হয়ে একদল সামাজিক রীতিনীতি ও আরেক দল মূল্যবোধ এর বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করবে। তারপর একটি ছক তৈরি করে এদের পাশাপাশি লিখে পার্থক্য তুলে ধরবে।
নমুনা সমাধান :
কাজ-৮: গল্প থেকে রীতিনীতি ও মূল্যবোধ খুঁজে বের করা।
স্কুলের প্রথম দিন
অরিত্র আজ প্রথম স্কুলে যাবে। মা ওকে সকাল থেকে তৈরি করছেন আর নানা রকম উপদেশ দিচ্ছেন। বলেছেন স্কুলে যাওয়ার আগে বাড়ির বড়দের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে। স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের সালাম দিতে। অরিত্র দাদিকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করার পর দাদি ওকে বিশ টাকার একটা নোট দিলেন। আর বললেন, দোয়া করি, অনেক বড় হও। তখনি টিকটিকিটা টিকটিক করে উঠল। দাদি তখনই বললেন, ঠিকঠিকঠিক আর আঙুল দিয়ে টেবিলে তিনবার টোকা দিলেন। দাদিও অরিত্রকে উপদেশ দিলেন, স্কুলে ভদ্র আর শান্ত হয়ে থাকবে। কারো সঙ্গে ঝগড়া-মারামারি করবে না। টিফিনের কৌটা ব্যাগে ভরতে ভরতে মা বললেন, বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে খেয়ো। জিনিসপত্র ডান হাত দিয়ে দেওয়া-নেওয়া করবে। বাম হাত দিয়ে কাউকে কিছু দিয়ো না। এসব নিয়ম-কানুনের কথা শুনে অরিত্রর একটু ভয় ভয় করতে লাগল। বাবার সঙ্গে বের হওয়ার আগে অরিত্র সবাইকে বিদায় জানাল। দরজা থেকে বের হওয়ার সময় বাবা বললেন, ডান পা আগে দাও। স্কুলে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত বাবাও ওকে যতটা সম্ভব উপদেশ দিলেন। অরিত্রর ভয়টা আরও বেড়ে গেল। স্কুলের গেট দিয়ে ঢোকার সময় দারোয়ান চাচা ওর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসলেন। ওর তক্ষুণি স্কুলটাকে খুব আপন লাগতে শুরু করল।
কাজের নির্দেশনা:
শিক্ষার্থীরা খুঁজে দেখবে এই গল্পের মধ্যে কী কী রীতিনীতি আর কী কী মূল্যবোধ খুঁজে পাওয়া যায়। তারপর তা নিচের ছকে লিপিবদ্ধ করবে।
নমুনা সমাধান
কাজ-৯ ও ১০: প্রকৃতি সংরক্ষণ ক্লাব-কমিটিতে প্রয়োজনীয় পদের ও মনোনয়ন প্রার্থীদের নামের তালিকা তৈরি।
কাজের নির্দেশনা:
সবার আলোচনার ভিত্তিতে প্রকৃতি সংরক্ষণ ক্লাব-কমিটিতে কী কী পদ প্রয়োজন তার তালিকা তৈরি করতে হবে। নির্বাচনে কে কোন গদে মনোনয়ন চায়, তাদের নামেরও তালিকা তৈরি করতে হবে।
নমুনা সমাধান
প্রকৃতি সংরক্ষণ ক্লাব-কমিটিতে প্রয়োজনীয় পদসমূহ
সভাপতি:
সহ-সভাপতি:
সাধারণ সম্পাদক:
কোষাধ্যক্ষ:
পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক:
তথ্য ও প্রচার সম্পাদক:
প্রকাশনা সম্পাদক:
সদস্য ১:
সদস্য ২:
সদস্য ৩:
সদস্য ৪:
কাজ-১১: নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনি আচরণবিধি নির্ধারণ।
কাজের নির্দেশনা:
নির্বাচনের আয়োজন করার জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করতে হবে, যার নাম দেওয়া হবে নির্বাচন কমিশন। তারা নির্বাচনের। প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করবে। ক্লাসের সবার নাম লিখে ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে। নির্বাচনের নিয়ম-কানুনও তৈরি করতে হবে। যার নাম হলো নির্বাচনি আচরণবিধি।
নমুনা সমাধান
নির্বাচন কমিশন গঠন: একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে গঠিত হবে;
১. প্রধান নির্বাচন কমিশনার: রকি
২. নির্বাচন কমিশনার-১: শফিক
৩. নির্বাচন কমিশনার-২: আরিফ
৪. নির্বাচন কমিশনার-৩: ইফাজ
৫. নির্বাচন কমিশনার-৪: মিলি
উল্লেখিত কমিশন নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে নির্বাচনের নিয়ম-কানুন ও ব্যালট পেপার এবং ভোটার তালিকা তৈরি করবে। এছাড়া উক্ত কমিশন প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের কাজও সম্পন্ন করবে। আর এতে সাহায্য-সহযোগিতা করবে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।
প্রকৃতি সংরক্ষণ ক্লাব-কমিটির নির্বাচনে নির্বাচনি আচরণবিধি
১. এমনভাবে প্রচারণা করতে হবে যেন শ্রেণি কার্যক্রম বিঘ্নিত না হয়।
২. নির্ধারিত জায়গার বাইরে পোস্টার লাগানো যাবে না।
৩. প্রত্যেক শিক্ষার্থী কেবল একটি করে ভোট দিতে পারবে।
৪. নির্বাচন সংক্রান্ত আইন-কানুন ও বিধি-বিধান অবশ্যই সকলকে মেনে চলতে হবে।
৫. প্রত্যেক প্রার্থী প্রচারণার ক্ষেত্রে সমান অধিকার ভোগ করবে। প্রতিপক্ষের কোনো সভা, শোভাযাত্রা ও প্রচারে কোনোরূপ বাধা দেওয়া যাবে না।
৬. একজন প্রার্থীর পোস্টার ও লিফলেটের ওপর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার ও লিফলেট লাগানো যাবে না।
৭. বিদ্যালয়ের দেওয়ালে সকল প্রকার লেখা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৮. ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রদান করে এমন কোনো বক্তব্য দেওয়া যাবে না।
৯. নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোট গ্রহণের দিন পর্যন্ত কোনো প্রার্থী কোনো ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে বা গোপনে চাঁদা বা অনুদান প্রদান করতে পারবে না।
১০. কোনো প্রার্থী ভোটকেন্দ্রে ঘোরাফেরা করতে পারবে না।
কাজ-১২: নির্বাচনে পদপ্রার্থীদের একাধিক প্যানেল তৈরি করা।
কাজের নির্দেশনা:
শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে দুই বা তিনটি প্যানেল তৈরি করতে হবে। প্যানেল থেকে কে কোন পদে অংশগ্রহণ করবে তার তালিকা প্রকাশ করবে।
নমুনা সমাধান
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাব-কমিটির নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্যানেলসমূহ:
কাজ-১৩: স্লোগান, ইশতেহার, পোস্টার, প্ল্যাকার্ড, গান ইত্যাদি তৈরির মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচারণা চালানো।
কাজের নির্দেশনা : স্লোগান, পোস্টার, প্ল্যাকার্ড ইত্যাদি তৈরিতে উৎসাহ দেওয়া হবে। প্রচার-প্রচারণার জন্য গান-কবিতা তৈরি, নির্বাচনি ইশতেহার বানানো ইত্যাদি করতে হবে।
নমুনা সমাধান
নির্বাচনি স্লোগান
নির্বাচনি গান
শোনো শোনো বন্ধুরা সব, শোনো দিয়া মন,
প্রকৃতি সংরক্ষণ ক্লাবের হবে নির্বাচন
সঠিক লোকের সঠিক পদে থাকা প্রয়োজন।
সবার ভোটে সফল হবে এমন আয়োজন।
চিন্তা করে ভোট দিয়ো তাই সুধী সর্বজন।
কাজ-১৪. নির্বাচন অনুষ্ঠান ও ভোট গণনার পর প্রকৃতি সংরক্ষণ ক্লাব নির্বাচনে বিজয়ীদের নাম নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে দিতে হবে।
কাজের নির্দেশনা:
শিক্ষকদের সহায়তা নিয়ে ও কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে নির্বাচন আয়োজন করা হবে। নির্বাচনের দিন যেন ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির সকলেই উপস্থিত থাকে সে বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া হবে। ভোট গ্রহণ শেষে গণনা করা হবে। নির্বাচনে বিজয়ীদের নাম নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে দিতে হবে।
নমুনা সমাধান
নির্বাচনে বিভিন্ন পদে বিজয়ী প্রার্থীর নামের তালিকা
সেশন ১৫-১৮
কাজ-১৫. ‘ভেন রেখাচিত্র’ এঁকে প্রকৃতি সংরক্ষণ ক্লাবের নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনের মিল-অমিলের একটি ছক তৈরি করা।
কাজের নির্দেশনা:
শিক্ষার্থীরা দলে ভাগ হয়ে প্রথমে প্রকৃতি সংরক্ষণ ক্লাবের নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনের মিল-অমিলগুলো খুঁজে বের করবে, তারপর ভেন রেখাচিত্রের মাধ্যমে শ্রেণিতে উপস্থাপন করবে।
নমুনা সমাধান
কাজ-১৬: প্রকৃতি সংরক্ষণ পরিকল্পনার ছক ব্যবহার করে সারাবছরের কাজের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা।
কাজের নির্দেশনা:
ছায়া সংসদে আলোচনার ভিত্তিতে ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন-২০১২’ অনুসারে প্রকৃতির জন্য প্রতিটি পাড়া-মহল্লাকে নিরাপদ করে গড়ে তোলা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই মর্মে আইনের খসড়া প্রস্তাব তৈরি করা হলো এবং যথাযথ নিয়মের মাধ্যমে এটিকে আইনের স্বীকৃতি দেওয়া হলো।
নমুনা সমাধান
কাল-১৭: ক্লাব পরিচালনার জন্য অবশ্য পালনীয় নিয়ম।
কাজের উদ্দেশ্য:
কাজটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটি ক্লাব পরিচালনা করতে যে ধরনের অবশ্য পালনীয় নিয়ম জানতে হয় সে সম্পর্কে জানতে পারবে।
কাজের নির্দেশনা:
- শিক্ষার্থীরা প্রথমে নির্বাচন অংশ ভালোভাবে পড়বে।
- ক্লাব সংক্রান্ত কমিটি সম্পর্কে ধারণা নিবে।
- এরপর নিজেকে ঐ ক্লাবের সদস্য মনে করে অবশ্য পালনীয় কাজগুলো লিখবে।
- সবশেষে কাজটি শ্রেণিশিক্ষককে দেখাবে এবং কোথাও সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলে তা সংশোধন করবে।
ক্লাব পরিচালনার জন্য অবশ্য পালনীয় নিয়ম
ক্লাব পরিচালনার মূলনীতি: ক্লাব পরিচালনার মূলনীতি হবে একতা, সমতা, সততা, স্বচ্ছতা এবং অসাম্প্রদায়িকতা।
- সদস্যপদ: অত্র এলাকার কাজে আগ্রহী, চিন্তাশীল ছেলেমেয়েদের নিয়ে গঠিত হবে ক্লাবটি। একমাত্র ক্লাব কমিটিই সদস্যপদ প্রদান করতে পারবে।
- সাংগঠনিক কাঠামো: ক্লাব পরিচালনার মূলনীতির উপর ভিত্তি করে সাংগঠনিক কাঠামো কাজ করবে। অনেকটা উপদেষ্টার মতো তারা কাজ করবে। তাদের মেয়াদ হবে ৫ বছর।
- কার্যনির্বাহী কমিটি: ক্লাবের দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনাসহ সামগ্রিক কার্যনির্বাহের দায়িত্ব এই কমিটি পালন করবে। ক্লাবের কর্মকৌশল ও কর্মসূচি নির্ধারণ করতে পারবে। কার্যনিবাহী কমিটিতে ১ জন করে সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক, প্রকাশনা সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক এবং ৪ জন সদস্য থাকবে। তাদের মেয়াদ হবে ২ বছর।
- সদস্যদের দায়িত্ব-কর্তব্য: ক্লাব কমিটির সদস্যরা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন। কাজের হিসাব, অর্থ, প্রয়োজনীয় নথি সংরক্ষণসহ বিভিন্ন দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পরিচালনা করবেন।
- সম্পর্ক উন্নয়ন: ক্লাব কমিটির সদস্যরা নিজেদের মধ্যে সৌহাদ্যপূর্ণ এবং পারস্পরিক সহযোগিতামূলক মনোভাবসম্পন্ন অবস্থা বজায় রাখবে।
- সদস্যপথ স্থগিত ও বাতিল সংক্রান্ত: ক্লাবের কোন সদস্য অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত হলে তার সদস্যপদ স্থগিত বা গুরুতর হলে বাতিল করতে হবে।
- অর্থসংগ্রহঃ বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত অর্থ, অনুদানের অর্থ বা সদস্যদের থেকে সংগৃহীত চাঁদা নিয়ে গঠিত ফান্ড থাকবে। প্রয়োজনানুসারে সেখান থেকে ব্যয়ের সুযোগ থাকবে।
- নীতি সংশোধন: যদি কোনো নতুন নিয়মের সংযোজন প্রয়োজন হয় তবে তা সংযোজন করবে এবং যদি কোনো নীতি আংশিক বা সম্পূর্ণ পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা পরে তবে তা সংশোধন করবে সদস্যদের অনুমতি সাপেক্ষে।
- প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা: যেহেতু ক্লাবটি বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাব সেহেতু নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। তাছাড়া সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার ব্যবস্থা করা আবশ্যক।
- কর্মসূচি পালন: ক্লাব এবং এর সদস্যরা বিভিন্ন জাতীয় দিবস এবং কর্মসূচি পালন করবে এবং নিজেদের ক্লাবের ব্যানার ও সচেতনতামূলক কাজের পোস্টার বানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করবে।
কাজ-১৮: সামাজিক-রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে রীতিনীতি মূল্যবোধ।
কাজের নির্দেশনা:
ছক ব্যবহার করে আমাদের নির্বাচন, ছায়া সংসদের অভিজ্ঞতা, রাষ্ট্র ও সরকার সংক্রান্ত কাজ থেকে পাওয়া মূল্যবোধগুলোর একটি তালিকা তৈরি করতে হবে।
নমুনা সমাধান
সামাজিক-রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে রীতিনীতি মূল্যবোধ
কাজ-১৮.১. উপরের ছক ব্যবহার করে আমাদের নির্বাচন, ছায়া সংসদের অভিজ্ঞতা, রাষ্ট্র ও সরকার সংক্রান্ত কাজ থেকে পাওয়া মূল্যবোধের একটি নমুনা নিচে দেওয়া হলো।
নমুনা সমাধান
১. অন্যের মতকে প্রকাশ করতে দেওয়া।
২. নিজের মতকে প্রকাশ করা।
৩. সবার মতের প্রতি সম্মান রাখা।
৪. অধিকাংশের মতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।
৫. সবার মতে প্রতি শ্র্যাশীল থাকা।
৬. পক্ষ-বিপক্ষ সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।
৭. অন্যের মতকে মেনে নেওয়ার মানসিকতা।
৮. সবার মতের ভিত্তিতে যেকোনো কাজ করা।
৯. যেকোনো কাজে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
১০. যেকোনো সিন্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক নিয়ম মানা।
সেশন ১৬-১৮
কাজ-১৯. কীভাবে সামাজিক রীতি-নীতি পরিবর্তিত হয়?
কাজের নির্দেশনা:
পাঠ্যবইয়ে দেওয়া রামমোহন রায়ের জীবনী পড়া শেষ হলে শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে নিচের ছক ব্যবহার করে সামাজিক রীতি-নীতি কীভাবে পরিবর্তন হয় তার প্রক্রিয়াটি নিজের ভাষায় লিখে উপস্থাপন করবে।
নমুনা সমাধান
কীভাবে সামাজিক রীতিনীতি পরিবর্তিত হয়?
একটি দেশ বা এলাকায় প্রচলিত রীতি-নীতি কোনো অনড় বিষয় নয়। প্রচলিত রীতি-নীতিকে প্রভাবিত করে এমন সব বিষয়ের পরিবর্তনের ফলে সমাজে ক্রমাগত ও কাঙ্খিত পরিবর্তন ঘটে। রামমোহন রায়ের জীবনী পড়ে এরকমই ধারণা জন্মে। রামমোহন রায় পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার এক রক্ষণশীল ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে তিনি চিরাচরিত নিয়মে সংস্কৃত ভাষা শিখলেও পরে নিজ আগ্রহেই ফারসি ও আরবি ভাষা শেখেন। এমনটি করতে গিয়ে তিনি মুসলমানদের সংস্পর্শে আসেন। মুসলমানদের জীবনযাত্রা তাঁকে এতই গভীরভাবে প্রভাবিত করে যে, তাঁর আচার-ব্যবহার ভিন্নধর্মী হয়ে উঠে। এজন্য তিনি ‘মৌলভী রামমোহন’ বলেও উপহাসের পাত্র হয়ে ওঠেন।
রামমোহন কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও রক্ষণশীল হিন্দু সমাজে বসবাস করেও ইংরেজি ভাষা শেখার তাগিদ বোধ করেন। কারণ, তখন আধুনিক শিক্ষার যা কিছু ছিল সবই ছিল ইংরেজিতে। ইংরেজি শেখার সাথে সাথে ইংরেজদের সংস্পর্শে এসে মানুষ ও সমাজ সম্পর্কে তাঁর ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন ঘটে।
এ সময়ে ভারতে ‘সতীদাহ’ নামে এক অমানবিক কুপ্রথা চালু ছিল সেখানে স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রীকেও তার চিতায় জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হতো। ইংরেজি, ফার্সি ও আরবি শিক্ষায় শিক্ষিত রামমোহন এ প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। তৎকালীন ইংরেজ গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংকের সহায়তায় ১৮২৯ সালের ৪ ডিসেম্বর সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করে আইন পাস করতে সক্ষম হন। প্রকৃতপক্ষে রামমোহন রায়ের প্রচার-প্রচারণার মধ্য দিয়ে সামাজিক ধ্যানধারণার পরিবর্তন ঘটেছিল। যার ফলে সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়েছিল।
কাজ-২০. বিতর্কের বিষয় নির্বাচন।
কাজের নির্দেশনা:
শিক্ষার্থীরা ‘কীভাবে সামাজিক রীতিনীতি পরিবর্তিত হয়’ সে বিষয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে এবং বিতর্কের বিষয় নির্বাচন করবে। বিতর্ক প্রতিযোগিতা শেষে যারা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়নি তাদের নিয়ে মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হবে।
নমুনা সমাধান
বিতর্কের বিষয়:
১. কেবল আইনের পরিবর্তনের মাধ্যমেই সম্ভব সব মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
২. নারীর কাজ ঘর সামলানো আর পুরুষের কাজ রাষ্ট্র পরিচালনা।
৩. সব মানুষের মতামতের কোনো গুরুত্ব নেই, কেবল বুদ্ধিমানের মতামতই শোনা উচিত।
৪. কারিগরি শিক্ষার চেয়ে সাধারণ শিক্ষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
৫. দুর্নীতি রোধে সরকারের যথাযথ পদক্ষেপই যথেষ্ট।
৬. শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু রাজনৈতিক চর্চার গুরুত্ব অপরিসীম।
৭. আমরা ধর্মীয় মূল্যবোধ ও বিশ্বাসের সমন্বয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পক্ষে।
৮. উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত নারী-পুরুষের অবৈতনিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত।
কাজ-২১. অনুসন্ধানী প্রশ্ন তৈরি ও প্রতিবেদন উপস্থাপন।
কাজের নির্দেশনা:
শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতো করে অনুসন্ধানী প্রশ্ন তৈরি করবে এবং অনুসন্ধান কাজের মাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরি করে শ্রেণিতে উপস্থাপন করবে।
নমুনা সমাধান: অনুসন্ধানী প্রশ্ন:
১. রাষ্ট্র, সরকার, আইন কীভাবে রীতিনীতি ও মূল্যবোধকে প্রভাবিত করে?
২. রীতিনীতি ও মূল্যবোধ কীভাবে রাষ্ট্র, সরকার ও আইনকে প্রভাবিত করে?
৩. রীতিনীতি ও মূল্যবোধ কি সবসময় একই থাকে নাকি যুগের সাথে পরিবর্তন হয়?
৪. রাষ্ট্র, সরকার ও আইনের সাথে রীতিনীতি ও মূল্যবোধের বৈপরিত্য হয় কেন?
৫. একই সাথে রীতিনীতি মূল্যবোধ এবং রাষ্ট্র সরকার ও আইন চলমান থাকতে পারে কি-না?
৬. রীতি-নীতি ও মূল্যবোধ কীভাবে পরিবর্তন হয়?
৭. রাষ্ট্র, সরকার, আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে কীভাবে রীতিনীতির পরিবর্তন হয়?
তথ্য সংগ্রহের উৎস: শিক্ষক/মা-বাবা, বই, পত্রপত্রিকা, ইন্টারনেট ও সাক্ষাৎকারের সাহায্য নিয়ে অনুসন্ধানী কাজ করবে।
প্রতিবেদন
বিগত শতাব্দীর গোড়ার দিকে সংঘটিত নারী ভোটাধিকার আন্দোলন সামাজিকভাবে নারীর অবস্থান নির্ধারণে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছিলো। প্রথম স্ব-শাসিত দেশ হিসেবে নিউজিল্যান্ড ১৮৯৩ সালে ২১ বছরের বেশি বয়সী সকল নারীকে ভোট প্রদানের অধিকার দেয়। ১৯০৩ সালের মধ্যে ব্রিটেনে যখন নারীদের ভোটাধিকার দেওয়া হয়নি, তখন ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ ইমেলেন পাংখাস্ট সিদ্ধান্ত নিলেন যে নারীদের ‘নিজেদেরকেই কাজটি করতে হবে’। এরই প্রেক্ষিতে তার সংগঠন ডব্লিউএসপিইড- এর প্রধান নীতিবাক্য হয়ে দাঁড়ায়- ‘কথায় নয় কর্মে।’ এ সংগঠনের সদস্য হিসেবে পরিচিত সাফ্রোগেটরা রাজনীতিবিদদের হেনস্তা ও সংসদে ঝামেলা সৃষ্টি করার সময় পুলিশি আক্রমণ ও যৌন হেনস্তার স্বীকার হয়েছিলো। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জনপ্রতিনিধি আইন-১৯১৮ অনুসারে ত্রিশোর্ধ্ব নারীরা নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে ভোটাধিকার পায়। এর ১০ বছর পর, জনপ্রতিনিধি আইন-১৯২৮ অনুসারে ২১ বছর বয়স থেকেই পুরুষদের পাশাপাশি সকল নারীরা ভোটাধিকার অর্জন করে। সম্প্রতি বাংলাদেশে সন্তানের অভিভাবকত্বের প্রশ্নে হাইকোর্ট এক ঐতিহাসিক রায় দেয়। এতদিন যেকোনো অফিসিয়াল কাগজপত্রে (যেমন- বোর্ড পরীক্ষা, পাসপোর্ট ইত্যাদিতে) বাবা ও মা উভয়েরই নাম লেখা বাধ্যতামূলক ছিল। বাবাকেই এক্ষেত্রে অভিভাবক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হতো। যে কারণে একক মায়েরা এক্ষেত্রে বিড়ম্বনায় পড়তেন। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে থাকলেও বিচ্ছেদ পরবর্তী সন্তানের অভিভাবকত্বের ক্ষেত্রে টানাপোড়েন লক্ষ করা যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট কর্তৃক সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মায়ের স্বীকৃতি প্রদান করা হলো। ঘটনাসূত্রে ২০০৭ সালের গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের অধীনস্থ ঠাকুরগাঁওয়ের এক ছাত্রীকে তথ্য পূরণ ফরমে বাবার নাম না থাকায় এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয় নি। ২০০৯ সালে ঐ শিক্ষার্থীর পক্ষে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয় এবং আদালত রুল জারি করেন। রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট এই ঐতিহাসিক রায় প্রদান করেন। এখন থেকে সন্তানের অভিভাবক হিসেবে বাবার নাম থাকা বাধ্যতামূলক না। (তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো)