আনন্দধারা

(শিল্প ও সংস্কৃতি) ৬ষ্ঠ: আনন্দধারা – সমাধান

Posted on

আনন্দধারা হচ্ছে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিল্প ও সংস্কৃতি বই এর শিখন অভিজ্ঞতা। আনন্দধারা অধ্যায়টির পাঠ্যবইয়ের প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

আনন্দধারা

কাজ-১: তোমাদের ভালো লাগার গাছগুলোর একটি তালিকা তৈরি করো।
কাজের ধরন: একক কাজ।

নমুনা সমাধান
আমাদের ভালো লাগার গাছগুলোর তালিকা নিচে দেওয়া হলো-
i. আম গাছ;
ii. নারকেল গাছ;
iii. পলাশ গাছ;
iv. কাঠাল গাছ;
v. শিমুল গাছ ইত্যাদি।

কাজ-২: পছন্দমতো গাছ আঁক অথবা পাতা এঁকে তাতে মনের মতো রং করো। রঙিন কাগজ কেটে আঠা দিয়ে কাগজে লাগিয়ে পছন্দমতো কোলাজচিত্র তৈরি করো। গাছের পাতায় রং লাগিয়ে তার ছাপ নিয়ে মনের মতো নকশা করো।
কাজের ধরন: একক কাজ।

নমুনা সমাধান
আমার ভালো লাগার গাছ হিসেবে আমি আম গাছকে নির্বাচিত করেছি। এই গাছটি নিয়ে আমাদের ভাবনা নানান ভাবে প্রকাশ করতে পারি।
যেমন- (ক) গাছ/ পাতা এঁকে তাতে মনের মতো রং করে। (খ) বিভিন্ন রঙের কাগজ কেটে আঠা দিয়ে কাগজ লাগিয়ে পছন্দমতো নকশা তৈরি করতে পরি। নিচে কয়েকটি ভাবনা উল্লেখ করা হলো-
(ক) গাছটি এঁকে বা পাতা এঁকে রং করে নিচের চিত্রটি আঁকা হলো-
(খ) এই কাজের জন্য বিভিন্ন রংয়ের কাগজ প্রয়োজন পড়বে যেমন- সবুজ, খয়েরি, হলুদ ইত্যাদি। তার সাথে প্রয়োজন হবে সাদা আট পেপার, কাঁচি এবং আঠা।

ধাপ-১: পছন্দের গাছটিকে পর্যবেক্ষন্তা করি। তার পাতার আকার, ফলের রং এবং আকার, কান্ডের পুরুত্ব ইত্যাদি নোট করি।

received 917340626407485

চিত্র: আমগাছ

ধাপ-২: রঙিন কাগজে পেনসিল দিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আকৃতি এঁকে নেই।
ধাপ-৩: কাঁচি দিয়ে অংশগুলো কেটে আলাদা করি।
ধাপ-৪: সাদা কাগজটিতে আঠা দিয়ে কাগজগুলো বসিয়ে কোলাজচিত্রটি সম্পন্ন করি।

(গ) গাছের পাতায় রং (লাল, নীল, সবুজ ইত্যাদি) লাগিয়ে সাদা আর্ট পেপারে ছাপ দিয়ে মনের মতো নকশা তৈরি করে নিচে দেওয়া হলো-

received 345997538308804

চিত্র: পাতা দিয়ে আর্ট পেপারে নকশা।

কাজ-৩: গাছের পাতা, ফুল, শিকড়, ডালপালা, মাটি, বালিসহ নানা রকমের প্রাকৃতিক উপাদানের সাথে মিলিয়ে মনের মতো আকৃতি তৈরি করো।
কাজের ধরন: একক কাজ।

নমুনা সমাধান
গাছের ফুল, শিকড়, ডালপালা, মাটি ইত্যাদি। উপকরণ একত্রে করে আমরা ছোট গাছ, পাখি, ঘর, পশু ইত্যাদি যেকোনো আকৃতি দিতে পারি। নিচে তার একটি উদাহরণ দেওয়া হলো-

ধাপ-১: উপকরণগুলো যোগাড় করি এবং উল্লেখিত উপকরণগুলোর পাশাপাশি আরও যা প্রয়োজন হতে পারে তা হলো- পানি, স্কাল্পটিং টুল (না পাওয়া গেলে চামচ জাতীয় কিছু হলেও চলবে), গ্লাভস ইত্যাদি।

ধাপ-২: একটি পাত্রে পানি দিয়ে তাতে প্রয়োজন মতো মাটি, ডালপালা, শিকড়, পানি মিশ্রিত করে মণ্ড তৈরি করি।

ধাপ-৩: স্কাল্পটিং টুল/চামচ বা হাতের মাধ্যমে পছন্দ মতো আকৃতি প্রদান করি এবং রোদে শুকাতে দেই।

ধাপ-৪: পাতা, রং, ডাল, ফুল ইত্যাদি দিয়ে সাজিয়ে নেই।

received 716593123871844

চিত্র: মাটি ও পাতা দিয়ে তৈরি পাখির আকৃতি

কাজ-৪: তোমাদের মধ্যে কেউ গাছ নিয়ে পছন্দের গান শোনাতে পারো। আবার গাছের দুলুনিটি মজা করে নেচে অথবা অভিনয় করে দেখাতে পারো। কেউবা ইচ্ছামতো লিখতে পারো। কেউবা কোনো পছন্দের ছড়া বা কবিতা বলে গাছ সম্পর্কে নিজেদের অনুভূতিকে প্রকাশ করতে পারো।
কাজের ধরন: একক কাজ।

নমুনা সমাধান
ক. আম গাছ নিয়ে আমাদের সবার প্রিয় ছড়া গান শুনাতে পারি-
আম পাতা জোড়া-জোড়া,
মারবো চাবুক চড়বো ঘোড়া
ওরে বুবু সরে দাঁড়া
আসছে আমার পাগলা ঘোড়া।
পাগলা ঘোড়া ক্ষেপেছে,
চাবুক ছুঁড়ে মেরেছে।

খ. এই ছড়া গানটির সাথে গাছের দুলুনির মতো করে আমরা নেচে অথবা অভিনয় করতে পারি নির্দিষ্ট ছন্দে ছন্দে।

গ. গাছ নিয়ে একটি ছড়া হলো-

জেনে রাখা প্রয়োজন
গাছেরও আছে জীবন
জেনে রাখা ভালো
গাছের জন্য চাই সূর্যের আলো।
জেনে রাখা উচিত
মরুভূমির প্রচন্ড তাপে গাছ জন্মে কদাচিৎ।
জেনে রাখা দরকার
আম গাছকে জাতীয় গাছের মর্যাদা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
জেনে রাখো সবাই
গাছের ছড়া এখানে শেষ,
টাটা গুডবাই।

গাছ সম্পর্কে নিজের অনুভূতি: আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গাছ সরবরাহ করে এবং ছায়া দিয়ে থাকে। গাছের নিঃস্বার্থ উদারতা আমাদের শিখিয়ে দেয় পরোপকারের কথা। গাছের ডাল, পাতা সবই আমাদের কাজে ব্যবহার করি জ্বালানি হিসেবে। অনেক ঔষধি গাছও আছে যা আমাদের রোগ নিরাময়ে বেশ উপকারী। গাছের উপকারের কথা বলে শেষ করা কঠিন। তাই গাছ আমাদের পরম বন্ধু।

কাজ-৫: নিজের পছন্দমতো রঙবেরঙের কাগজ দিয়ে নকশা করে মলাট বানিয়ে একটি বন্ধুখাতা তৈরি করো।
কাজের ধরন: একক কাজ।

নমুনা সমাধান
বন্ধুখাতা তৈরি: বন্ধুখাতা ‘শিল্প ও সংস্কৃতি’ বিষয়ের বিভিন্ন কাজ লিপিবদ্ধ করার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় এবং সকল অধ্যায় অনুশীলনের সময়ে এর প্রয়োজন হবে।
বন্ধুখাতা: বন্ধুখাতা হলো রঙ্গিন কাগজ ও নকশাযুক্ত মলাটের তৈরি একটি খাতা যা শিক্ষার্থী নিজ হাতে তৈরি করেছে এবং নিজের পছন্দমতো বিন্যাস করতে পারবে।
এর প্রতি পৃষ্ঠায় এঁকে, লিখে, পত্র-পত্রিকার বিভিন্ন অংশ কেটে লাগিয়ে, কাপড়, সুতা, স্টিকার ইত্যাদি যা পছন্দ তা লাগিয়ে (পেস্টিং করে) সংযোজন করা যায়। প্রয়োজনে সারা বছরের নাচ-গানের চর্চা থেকে যা শিখলো তা লিখেও রাখা যায়।

received 782236377276234

চিত্র: নমুনা বন্ধুখাতার ধরন

কাজের ধারা: বন্ধুখাতা প্রস্তুতের কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। নিজ পছন্দ, রুচি এবং যোগ্যতা/সামর্থ্য অনুযায়ী এটি তৈরি করা যাবে। নিচে বন্ধু খাতা প্রস্তুতের একটি প্রাথমিক ধাপ-বিন্যাস দেওয়া হলো-
উপকরণ: রঙ্গিন আর্ট পেপার, বাইন্ডার/ স্টেপলার/সেলাইয়ের সুই-সুতা, রঙ্গিন কলম, নকশা করা কাগজ, মার্কার কলম, সাজানোর অন্যান্য উপকরণ (স্টিকার, ওয়াসি টেপ, শুকনো ফুল/পাতা ইত্যাদি), আঠা।

ধাপ-১: রঙ্গিন পেপার নেই। এক বা একাধিক রংয়ের নেওয়া যেতে পারে। সাধারণত এ-ফোর (A4) সাইজের কাগজ নেওয়া হয় তবে যেকোনো আকারের কাগজ নিয়েই তা বানানো যেতে পারে।
ধাপ-২: একত্রিত কাগজগুলো নিয়ে তা আঠা দিয়ে লাগিয়ে বাইন্ডার/ সুই-সুতা নিয়ে শক্ত করে এঁটে দেই।
ধাপ-৩: কাগজগুলোর বাইরে শস্ত্র নকশা করা কাগজ দিয়ে মলাট তৈরি করি।
ধাপ-৪: মলাটের উপরে সাজানোর উপকরণ, ওয়াসি টেপ, স্টিকার, শুকনো ফুল-পাতা ইত্যাদি দিয়ে ডিজাইন করি।
ধাপ-৫: মার্কার দিয়ে বড় করে লিখি ‘বন্ধুখাতা’। লেখাটি নকশা করে, জরি/সুতা দিয়ে নিজ রুচি বা সৃজনশীল ভাবনা দিয়ে সাজাই।

আরো পড়োআত্মার আত্মীয়
আরো পড়োবৃষ্টি ধারায় বর্ষা আসে

কাজ-৬: আনন্দধারা অধ্যায়ে যা যা করছো তা লেখো এবং তোমার অনুভূতি বর্ণনা করো।

কাজের ধরন: একক:

নমুনা সমাধান
ক. এই অধ্যায়ে আমি যা যা করেছি:

  • সহপাঠীদের সাথে আমাদের পছন্দের গাছগুলোর তালিকা তৈরি করেছি।
  • পছন্দের গাছগুলোর মধ্যে আম গাছ, নারিকেল গাছ, শিমুল গাছ, অশ্বত্থ গাছ এগুলোকে তালিকাভুক্ত করেছি।
  • আমার পছন্দের আম গাছ নিয়ে আমার ভাবনা প্রকাশ করেছি।
    যেমন: আম গাছ বিশাল আকৃতির হয়। যখন আম গাছে মুকুল ফোটে তখন গাছটি দেখতে সুন্দর লাগে। আম গাছে যখন ফল ধরে; কাঁচা অবস্থায় সবুজ রং আর পাকা অবস্থায় হলুদ রং ধারণ করে। ঋতুভেদে গাছটি ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে।
  • আমি একটি আম গাছ এঁকেছি, তাতে আমি কালো, সবুজ, হলুদ ইত্যাদি রং ব্যবহার করেছি।
  • আমি কয়েকটি লাল, সবুজ ও হলুদ রংয়ের কাগজ কেটে আঠা দিয়ে লাগিয়ে একটি গাছের কোলাজচিত্র তৈরি করেছি।
  • পছন্দের আম গাছের পাতায় বিভিন্ন রং লাগিয়ে তার ছাপ নিয়ে কিছু নকশা করেছি।
  • গাছের শুকনো পাতা, ডালপালা, ফুল, মাটি ইত্যাদি উপাদান দিয়ে মনের মতো আকৃতি বানিয়েছি।
  • পছন্দের গান/ কবিতা/ ছড়া সহপাঠীদের শুনিয়েছি।
  • লাল, নীল, সবুজ, হলুদ রংয়ের কাগজ দিয়ে একটি বন্ধু খাতা তৈরি করেছি।
  • বন্ধুখাতায় পছন্দের গাছগুলোর ছবি এঁকে রেখেছি। আমার পছন্দের গান লিখে রেখেছি।

খ. আমার অনুভূতি: আমি এই অধ্যায়ের মাধ্যমে আমার পছন্দের বিষয়গুলো নির্ধারণ করতে পেরেছি। আমার সহপাঠীদের সাথে আমার পছন্দের বিষয়গুলো আলোচনা করেছি। নিজের পছন্দের সাথে অন্য সহপাঠীদের পছন্দের মিল-অমিল পেয়েছি। আমরা সহপাঠীরা মিলে যার যার পছন্দের গাছ এঁকে তাতে রং করেছি। এতে আমি অনেক আনন্দ পেয়েছি। আমার বন্ধুখাতা তৈরি করতে শ্রেণিশিক্ষকের সাহায্য নিয়ে তাতে আমার পছন্দের গাছের ছবি এঁকে রেখেছি। আমার পছন্দের গানগুলো লিখে রেখেছি। এই বইয়ের অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রে এবং পছন্দের বিষয়গুলো লিখে রাখতে বন্ধুখাতা আমাকে সাহায্য করবে।

Gravatar Image
StudyOurs: Your Gateway to Collaborative Learning and Growth.