প্রেক্ষাপটের পরিবর্তনে ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা হচ্ছে ৭ম শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই এর শিখন অভিজ্ঞতা। প্রেক্ষাপটের পরিবর্তনে ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা অধ্যায়টির পাঠ্যবইয়ের প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
প্রেক্ষাপটের পরিবর্তনে ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা
কাজ : ফুটবল মাঠের ফরমেশন
ছক দুটো ভালো করে দেখি আর আলোচনা করি, ইচ্ছেমতো অবস্থান কিংবা ভূমিকা বদলালে কী ঘটনা ঘটবে।
নমুনা সমাধান: ইচ্ছেমতো অবস্থান কিংবা ভূমিকা বদলালে যা ঘটবে-
১. শৃঙ্খলা বলে কিছু থাকবে না।
২. সর্বত্র অরাজকতা লেগে যাবে।
৩. কোনো কাজই ঠিকমতো সম্পূর্ণ হবে না।
৪. সবাই সবাইকে দোষারোপ করতে থাকবে।
৫. সময়ের অপচয় ঘটবে।
৬. কোনো কাজে কখনও সফলতা আসবে না।
৭. অনেক বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।
৮. কার্যক্ষমতা হ্রাস পাবে।
৯. কেউ কারও লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে না।
১০. সামাজিক ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হবে।
কাজ : চলো, আমরা একটা ছক পূরণ করে বুঝে নিই, ছেলে হিসেবে সুশীল-সুবল কেমন ছিল আর বাবা হিসেবে তারা কেমন হয়েছিল। ওরা আলোচনার মাধ্যমে বোর্ডে নিচের ছকটি পূরণ করল :
নমুনা সমাধান:
কাজ : নিচের প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা কর:
• সুবলচন্দ্র আর সুশীলচন্দ্রের কী রকম বদল হয়েছিল?
• যখন তারা বাবা তখন তাদের কাজ, আচরণ কেমন ছিল?
• যখন তারা ছেলে তখন তারা কেমন?
• লোকজন ওদের ওপর বিরক্ত হয়েছিল কেন?
সমাধান নির্দেশিকা:
তোমরা উপরের প্রশ্নগুলো নিয়ে দলীয় আলোচনা করো। এরপর প্রতিটি প্রশ্নের আলোচনাগুলো হতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু লিখে রাখো এবং পরবর্তীতে সাজিয়ে উপস্থাপন করো। নিচে একটি নমুনা উত্তর দেয়া হলো-
• সুবলচন্দ্র আর সুশীলচন্দ্রের কী রকম বদল হয়েছিল?
সুবলচন্দ্র ও সুশীলচন্দ্রের আচরণ একদম অদল বদল হয়ে গিয়েছিল। ইচ্ছা ঠাকুরুনের ইচ্ছায় ছেলে সুশীলচন্দ্র দেখে তার টাক মাথায় চুল গজিয়েছে, পড়ে যাওয়া দাঁতগুলোও গজিয়েছে। মুখে একটাও গোঁফদাড়ি নেই। সে একদম সুশীলের মতো ছোটো হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে সুশীলের হলো উল্টোরকম ব্যাপার। মাথায় চকচকে টাক, মুখে গোঁফদাড়ির জঙ্গল, কয়েকটা দাঁতও পড়ে গেছে। আর শরীরটা কত বড় হয়ে গেছে। অন্যদিকে বাবা সুবলচন্দ্রের চেহারা ছেলে সুশীলচন্দ্রের মতো তাছাড়া জোয়ান হয়ে গেছিল।
• যখন তারা বাবা তখন তাদের কাজ, আচরণ কেমন ছিল?
যখন তারা বাবা হয়ে যায়, তখন তাদের ভূমিকা একই রকম ছিল। ছেলেকে পড়তে বসায়। ছেলেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করে। সুবল পুকুরে নামতে দেয় না। সুবলচন্দ্র বাবা হয়ে ছেলেকে পড়তে বসায়, ছেলেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করে। জোর করে পাঁচন খাইয়ে দেয় ছেলেকে, ব্যাকরণ মুখস্থ করতে বলে।
• যখন তারা ছেলে তখন তারা কেমন?
যখন তারা ছেলে তখন তাদের মধ্যে ছেলেমানুষি প্রকাশ পেয়েছিল। সুশীলচন্দ্র ছেলে হয়ে পড়াশোনায় ফাঁকি দেয়, বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে, গাছে চড়তে ভালো লাগে। পড়ার ভয়ে মিথ্যা বলত। ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়াতো, হা-ডু-ডু খেলত, ঠান্ডাতে বৃষ্টি যাত্রা দেখতে যেত, লজেস্ফুস প্রিয় খাবার ছিল, পুকুরে স্নান করত। আন্দিপিসির মাটির কলসে ঢিল ছুড়ে মারত। অন্যদিকে সুবলচন্দ্র ছেলে হয়ে পড়াশোনায় ফাঁকি দেয়। বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে, গাছে চড়তে ভালো লাগে। লজেন্ডুস এর স্বাদ বিশ্রি লাগে, মাস্টারের কাছে তামাক চেয়ে মার খায়, তাসের আড্ডায় গিয়ে ধমক খায়।
• লোকজন ওদের ওপর বিরক্ত হয়েছিল কেন?
লোকজন তাদের বয়স হিসেবে কাজের ধরন দেখে প্রথমে হাসিঠাট্টা করলেও সেটা একসময় বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ছেলে হিসেবে সুবলের ন্যাকামি আর বাবা হিসেবে সুশীলের ভাড়ামি সকলের কাছে অসহ্য হয়ে যায়। ফলে সবাই তাদের উপর বিরক্ত হয়ে যায়।
কাজ : সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য আলোচনার মাধ্যমে ছক তৈরি:
কাজের নির্দেশিকা:
অনুসন্ধানী কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা করে দেখবে ছোটোবেলায় আর পরিণত বয়সে মানুষের অবস্থান ও ভূমিকা কেমন হয়। তথ্য সংগ্রহের জন্য নিজেদের পরিবারের লোকজনসহ আশপাশের পাঁচজন বড়ো মানুষের সাক্ষাৎকার নিবে। বিভিন্ন পেশার, বিভিন্ন বয়সের, বিভিন্ন অর্থনৈতিক অবস্থার মানুষের সঙ্গে কথা বলবে। যত ভিন্ন ভিন্ন রকমের মানুষের সাক্ষাৎকার নিতে পারবে, তত ভালোভাবে বিষয়টা বুঝতে পারবে। সমাজের সব রকম মানুষের ক্ষেত্রে এই বিষয়টা সত্যি কি না, জানা যাবে।
নমুনা সমাধান:
কাজ : বিভিন্ন সামাজিক প্রেক্ষাপটে আমার অবস্থান ও ভূমিকা
নমুনা সমাধান :
আরো পড়ো → সামাজিক-রাজনৈতিক কাঠামো ও রীতিনীতি
কাজ : ১০০ বছর আগের নারীর অবস্থান ও ভূমিকা এবং বর্তমান সময়ের নারীর অবস্থান ও ভূমিকা সম্পর্কে আমরা তথ্য সংগ্রহ করি।
নমুনা সমাধান :
প্রায় ১০০ বছর আগেরকার নারী
১. নারী ছিল অবরোধবাসিনী।
২. নির্দিষ্ট গন্ডির ভেতর তার চলাচল ছিল।
৩. বাহিরের কাজে তার স্বাধীনতা ছিল না।
৪. পুরুষের আজ্ঞাবহ ছিল।
৫. ব্যক্তিস্বাধীনতা না থাকায় নিজস্ব মতামত প্রকাশ করতে পারত না।
৬. সন্তান লালনপালন এবং গৃহস্থালীর কাজ ছিল একমাত্র কাজ।
৭. নারী অধিকারের স্বীকৃতি ছিল না।
এখনকার সময়ের নারী
১. পুরুষের সহকর্মী।
২. অফিস আদালতে নারীর অবাধ বিচরণ।
৩. নারী শ্রমিক হিসেবে অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।
৪. নারী উদ্যোক্তা হিসেবে অর্থনীতির উন্নতি সাধন করছে।
৫. নারী এখন আর অবরোধবাসিনী নয়।
৬. নারীর অধিকার দেশের সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত।