(ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান) ৬ষ্ঠ: আত্মপরিচয় – সমাধান

আত্মপরিচয় হচ্ছে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই এর ১ম শিখন অভিজ্ঞতা। আত্মপরিচয় অধ্যায়টির পাঠ্যবইয়ের প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

আত্মপরিচয়

সেশন-১
কাজ-১: এলাকার বন্ধুদের সাথে আত্মপরিচয়ের কার্ডের খেলা।
কাজের উদ্দেশ্য: কাজটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অচেনা পরিবেশে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরার পাশাপাশি সহপাঠী ও এলাকার বন্ধুদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য চিহ্নিত করতে পারবে। সেইসাথে নিজের বৈশিষ্ট্যের সাথে মিল আছে এমন বন্ধু খুঁজে পাবে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ: শ্রেণিশিক্ষকের দেওয়া কার্ড, কলম, পাঠ্যবই।

কাজের নির্দেশনা:

  • শ্রেণিতে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকে শ্রেণিশিক্ষকের কাছ থেকে একটি করে কার্ড সংগ্রহ করবে।
  • এরপর তারা নিজের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করে তা কার্ডে লিখবে। তবে শিক্ষার্থী কার্ডে নিজের নাম লিখবে না। এছাড়া সরাসরি দেখলে বোঝা যায় এমন কোনো বৈশিষ্ট্য লেখা যাবে না। যেমন- কারো শারীরিক কোনো বৈশিষ্ট্য লিখবে না।
  • কার্ডে লেখা শেষ হলে তা শ্রেণিশিক্ষকের কাছে জমা দেবে।
  • শিক্ষক এবার একটি একটি করে কার্ড পড়বেন এবং শিক্ষার্থীরা ওই বৈশিষ্ট্য সংবলিত বন্ধুকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে।

নমুনা সমাধান
আত্মপরিচয়ের কার্ডে যা যা থাকতে পারে:

  • নিজের কোনো শখ।
  • প্রিয় রঙ, ফুল, খেলা, খাবার, ব্যক্তিত্ব, খেলোয়াড় ইত্যাদি।
  • কী করতে পছন্দ করো।
  • কোনো বিষয়ে দক্ষতা আছে কি না। যেমন- আবৃত্তি করা, গান গাওয়া, বিতর্ক করা, বিশেষ কোনো খেলায় পারদর্শিতা, বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারা ইত্যাদি।
  • অপছন্দনীয় কোনো বিষয়।
  • বড় হয়ে কী হতে চাও।

নমুনা আত্মপরিচয়ের কার্ড:

CamScanner 01 06 2024 11.40 1

সেশন-২, ৩ ও ৪
অ্যাসাইনমেন্ট-১: একজন শিক্ষার্থীর বলা গল্পের ওপর ভিত্তি করে আত্মপরিচয়ের ছক তৈরি।

অ্যাসাইনমেন্টের মূল উদ্দেশ্য:
আত্মপরিচয়ের মৌলিক উপাদানগুলোর সাহায্যে শিক্ষার্থীর নিজের আত্মপরিচয়ের ছক তৈরিতে সক্ষম হওয়া।

প্রয়োজনীয় উপকরণ: যেকোনো সাইজের কাগজ, কলম, পেন্সিল, স্কেল, কম্পাস, সহায়ক বই ইত্যাদি।

কাজের নির্দেশনা:

  • শ্রেণিতে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকে কাগজ, কলম, পেন্সিল, স্কেল, কম্পাস, পাঠ্যবই নিয়ে নিজ নিজ আসনে বসবে।
  • শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন তার জীবনের গল্প বলবে এবং অন্যরা সে গল্পের আলোকে তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দিক চিহ্নিত করবে।
  • এরপর কাগজে পেন্সিল, স্কেল ও কম্পাস ব্যবহার করে তারা গোল বৃত্ত এবং চারকোণা বক্স তৈরি করবে।• তারপর একজনের জীবনের গল্প শোনার সময় চিহ্নিত দিকগুলো বৃত্ত ও বক্সের ভেতর লিখবে।

নমুনা সমাধান

রাফিফের বলা গল্প

সবসময় ঢাকায় থাকলেও ছোটবেলায় অনেকদিন আমরা নোয়াখালীতে ছিলাম। সেখানে আমার নানাবাড়ি ও দাদাবাড়ি দুটোই।

আমাদের বাসায় মা-বাবা, দুই ভাই আর নানা-নানি একসাথে থাকি। মা-বাবা দুজনেই চাকরি করেন। আমি সারাদিন নানা-নানির সাথেই থাকি। নানি আমাকে খুব ভালোবাসেন। সবসময় আমার পছন্দের খাবার রান্না করেন। আমার প্রিয় খাবার পোলাও ও রোস্ট। ঘরের খাবার আমার ভালো লাগে, আবার মা-বাবার সাথে রেস্টুরেন্টে খেতে যেতেও আমি খুব পছন্দ করি। আমার বড় ভাই আমাকে আদর করে, তবে প্রায়ই আমার সম্পর্কে মায়ের কাছে নালিশ করে, যা আমার ভালো লাগে না। ভাইয়ার নাম হাসিন। ওর নামটা সুন্দর, কারণ ওর নামের অর্থই হলো সুন্দর। তবে আমার মনে হয়, এর চেয়ে আমার রাফিফ নামটা বেশি সুন্দর। রাফিফ নুবাইদ মানে ‘সুখ আনয়নকারী’। ক্লাসে বা পরিচিত কারো এ নামটা নেই।

আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি। আমার স্কুলে যেতে ভালো লাগে। আমাদের ক্লাস টিচার যদিও বলেন, ক্লাসে আমরা সবাই সবার বন্ধু কিন্তু আমার সবাইকে ভালো লাগে না। আমার প্রিয় বন্ধু আয়ান, ফাহমিদ ও দীপ্ত। ওদের সাথে আমার অনেক বিষয়ে মিল রয়েছে। স্কুলে বাংলা, ইংরেজি ও ড্রয়িং ক্লাস আমার ভালো লাগে। গণিত খুব একটা ভালো লাগে না, খুব জটিল মনে হয়। আবার শরীরচর্চা ক্লাসও বেশ লাগে।

অবসর সময়ে আমার মোবাইল চালাতে সবচেয়ে ভালো লাগে। আমি আর্ট ও ক্রাফট্ওসের ভিডিও দেখতে পছন্দ করি। মাঝে মাঝে বাসায় নতুন কিছু বানাতে চেষ্টা করি। মোবাইলে বিভিন্ন দেশের ফুড রিভিউ ভিডিও দেখতে এবং গেম খেলতেও আমার ভালো লাগে। গেম খেলতে দেখলে মা খুব রাগ করেন। বাসায় আমার দুজন শিক্ষক আছেন। একজন স্কুলের সবগুলো বিষয় পড়ান। তার কাছে পড়তে আমার মোটামুটি ভালো লাগে। কারণ তিনি পড়ার ফাঁকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার সাথে গল্প করেন। আরেকজন শিক্ষক ধর্মীয় ও নৈতিক বিষয় পড়ান।

আমি মাঝে মাঝে বিভিন্ন বই পড়ি। মা আমাকে অনেক গল্পের বই কিনে দেন। ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, সুকুমার রায় এবং শাহরিয়ার কবিরের বই পড়তে আমার ভালোই লাগে। হুমায়ুন আহমেদের ‘বোতল ভূত’ আমার খুব প্রিয় বই। টিভিতে কার্টুন দেখতেও আমার বেশ ভালো লাগে।

ঘুরতে যেতে আমি খুব পছন্দ করি। আমি কক্সবাজার গিয়ে সমুদ্র দেখেছি। আবার সিলেটে দেখেছি জাফলংয়ের ঝর্ণা, চা-বাগান, রাতারগুল বন এবং পাহাড়। অনেকেই জিজ্ঞেস করে আমি বড় হয়ে কী হতে চাই? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আমি প্রায়ই খুব দ্বিধায় পড়ে যাই। কারণ, মা চান আমি ডাক্তার হবো, বাবা বলেন আমি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হবো, আবার নানি চান আমি যেন ইঞ্জিনিয়ার হই। তবে আমার ইচ্ছা পাইলট হওয়ার। কারণ আকাশ আমার খুব পছন্দ, পাখির মতো আকাশে ওড়ার আমার খুব সাধ!

CamScanner 01 06 2024 11.40 2

অ্যাসাইনমেন্ট-২: বিখ্যাত মনীষীদের পরিচয়ের ছক তৈরি (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান)

অ্যাসাইনমেন্টের মূল উদ্দেশ্য: অ্যাসাইনমেন্টটি করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিখ্যাত মনীষীদের জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক চিহ্নিত করার পাশাপাশি তা নিয়ে আলোচনা করে তাদের পরিচয়ের ছক তৈরি করতে পারবে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ: যেকোনো সাইজের কাগজ, কলম, পেন্সিল, স্কেল, কম্পাস, সহায়ক বই ইত্যাদি।

কাজের নির্দেশনা:

  • শ্রেণিতে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকে কাগজ, কলম, পেন্সিল, স্কেল, কম্পাস, পাঠ্যবই নিয়ে নিজ নিজ আসনে বসবে।
  • ৫/৬ জন শিক্ষার্থী মিলে কয়েকটি দল গঠন করবে।
  • পাঠ্যবই থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দিক চিহ্নিত করবে। প্রয়োজনে পাঠ্যবইয়ের বাইরের নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে।
  • এরপর কাগজে পেন্সিল, স্কেল ও কম্পাস ব্যবহার করে তারা গোল বৃত্ত এবং চারকোণা বক্স তৈরি করবে।
  • তারপর চিহ্নিত করা পয়েন্টগুলো তারা কলম দিয়ে বৃত্ত ও বক্সের ভেতর লিখবে।
  • শ্রেণিকক্ষে অনুশীলনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা বাড়িতে চার্ট তৈরি করবে।

নমুনা সমাধান

CamScanner 01 06 2024 11.40 3

অ্যাসাইনমেন্ট-৩: বিখ্যাত মনীষীদের পরিচয়ের ছক তৈরি (রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন)

অ্যাসাইনমেন্টের মূল উদ্দেশ্য: অ্যাসাইনমেন্টটি করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিখ্যাত মনীষীদের জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক চিহ্নিত করার পাশাপাশি তা নিয়ে আলোচনা করে তাদের পরিচয়ের ছক তৈরি করতে পারবে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ: যেকোনো সাইজের কাগজ, কলম, পেন্সিল, স্কেল, কম্পাস, সহায়ক বই ইত্যাদি।

কাজের নির্দেশনা:

  • শ্রেণিতে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকে কাগজ, কলম, পেন্সিল, স্কেল, কম্পাস, পাঠ্যবই নিয়ে নিজ নিজ আসনে বসবে।
  • ৫/৬ জন শিক্ষার্থী মিলে কয়েকটি দল গঠন করবে।
  • পাঠ্যবই থেকে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দিক চিহ্নিত করবে। প্রয়োজনে পাঠ্যবইয়ের বাইরের নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে।
  • এরপর কাগজে পেন্সিল, স্কেল ও কম্পাস ব্যবহার করে তারা গোল বৃত্ত এবং চারকোণা বক্স তৈরি করবে।
  • তারপর চিহ্নিত করা পয়েন্টগুলো তারা কলম দিয়ে বৃত্ত ও বক্সের ভেতর লিখবে।
  • শ্রেণিকক্ষে অনুশীলনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা বাড়িতে চার্ট তৈরি করবে।

নমুনা সমাধান

CamScanner 01 06 2024 11.40 4

অ্যাসাইনমেন্ট-৪: বিখ্যাত মনীষীদের পরিচয়ের ছক তৈরি (স্যার আইজাক নিউটন)

অ্যাসাইনমেন্টের মূল উদ্দেশ্য: অ্যাসাইনমেন্টটি করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিখ্যাত মনীষীদের জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক চিহ্নিত করার পাশাপাশি তা নিয়ে আলোচনা করে তাদের পরিচয়ের ছক তৈরি করতে পারবে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ: যেকোনো সাইজের কাগজ, কলম, পেন্সিল, স্কেল, কম্পাস, সহায়ক বই ইত্যাদি।

কাজের নির্দেশনা:

  • শ্রেণিতে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকে কাগজ, কলম, পেন্সিল, স্কেল, কম্পাস, পাঠ্যবই নিয়ে নিজ নিজ আসনে বসবে।
  • ৫/৬ জন শিক্ষার্থী মিলে কয়েকটি দল গঠন করবে।
  • পাঠ্যবই থেকে স্যার আইজাক নিউটনের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দিক চিহ্নিত করবে। প্রয়োজনে পাঠ্যবইয়ের বাইরের নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে।
  • এরপর কাগজে পেন্সিল, স্কেল ও কম্পাস ব্যবহার করে তারা গোল বৃত্ত এবং চারকোণা বক্স তৈরি করবে।
  • তারপর চিহ্নিত করা পয়েন্টগুলো তারা কলম দিয়ে বৃত্ত ও বক্সের ভেতর লিখবে।
  • শ্রেণিকক্ষে অনুশীলনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা বাড়িতে চার্ট তৈরি করবে।

নমুনা সমাধান

CamScanner 01 06 2024 11.40 5

সেশন-৫
কাজ-২: বিখ্যাত মনীষীদের পরিচয়ের ছক নিয়ে বাসায় বা এলাকায় বন্ধুদের সাথে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অথবা আলোচনা।

কাজের উদ্দেশ্য: দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ সেশনে তৈরি করা আত্মপরিচয় ও বিখ্যাত মনীষীদের পরিচিতিমূলক ছক নিয়ে আলোচনা ও উপস্থাপন। এছাড়া শিক্ষার্থীরা বিখ্যাত মনীষীদের পরিচিতি ছক নিয়ে বাসায় বা এলাকায় উন্মুক্ত আলোচনা বা বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে।

নমুনা আলোচনা-১: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে এলাকার বন্ধুদের সাথে আলোচনা-

সুমন: গতকাল ক্লাসে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পেরেছি। উনার জীবনী শুনে আমার দেশপ্রেম আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে।
মিতু: ওহ তাই। তাহলে যা পড়েছিস তা আমাদেরও বল।
সুমন: বঙ্গবন্ধু ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতার নাম সায়েরা খাতুন। তিনি ছিলেন পরিবারের প্রথম সন্তান। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি তাঁর তীব্র ঝোঁক ছিল।
রিতু : বঙ্গবন্ধুর প্রিয় খেলা ফুটবল।

সুমন: ফুটবল আমারও প্রিয় খেলা। বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটা কি তোরা কিনেছিস? আমি আজকেই বাংলা একাডেমিতে কিনতে যাবো। আর তোদের কারো কাছে বইটা থাকলে আমাকে পড়তে দিতে পারিস।
মিতু: বইটি আমাদের বাসার লাইব্রেরিতে আছে।
রিতু : আমি বাবাকে বলেছি। সময় পেলেই বাবা কিনে নিয়ে আসবে।
সুমন: বেরিবেরি নামক কঠিন রোগে আক্রান্তের কারণে বঙ্গবন্ধুর দুইবছর পড়ালেখা বন্ধ ছিল। এ রোগে বঙ্গবন্ধুর হার্ট দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। বেরিবেরি থেকে সুস্থ হলে তিনি গ্লুকোমা রোগে আক্রান্ত হন। ফলে চোখের দৃষ্টি কমে যায়। সেই সময় থেকে বঙ্গবন্ধুকে সবসময় চশমা পড়তে হতো।

রিতু: সুস্থ হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু ১৯৩৭ সাল থেকে পুনরায় লেখাপড়া শুরু করেন। বন্ধুরা তাকে পেছনে ফেলে চলে গেছে চিন্তা করে তিনি আর পুরোনো স্কুলে ফিরে যেতে চাননি। তাই বাসায় কাজী আবদুল হামিদ নামে এমএসসি পাস একজন মাস্টার বঙ্গবন্ধুকে পড়াতেন।
মিতু: বঙ্গবন্ধুর মতো ব্যক্তি পৃথিবীতে কমই রয়েছেন। তার অনেক সাহস ছিল, গরিবের প্রতি ছিল দরদ, নেতা হওয়ার গুণ ছিল এবং দায়িত্ব পালনে নিষ্ঠা ছিল প্রবল।
সুমন: আচ্ছা রিতু, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে বঙ্গবন্ধুর প্রথম সাক্ষাৎ হয় কখন তা জানিস নাকি?
রিতু : ১৯৩৮ সালে। এ সময় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তার মধ্যে প্রকৃত নেতার গুণ দেখতে পেয়েছিলেন।
মিতু: সন্ধ্যা নেমে আসছে। এখন আমাদের বাসায় যেতে হবে।

এখানে একটি আলোচনার নমুনা দেয়া হলো। তোমরা স্কুলে, এলাকায় অথবা বাসায় বন্ধু কিংবা পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের অন্যান্য তথ্য নিয়েও আলোচনা করতে পারো।

নমুনা আলোচনা-২: বাসায় পরিবারের সদস্যদের সাথে বেগম রোকেয়ার জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা-

মা : বর্তমানে মেয়েরা পড়াশোনায় এগিয়ে যাচ্ছে। অথচ একসময় মেয়েদের পড়ার অধিকার ছিল না।
বাবা : তোমরা কি জান, একসময় মেয়েদের পড়াশোনা করা তো দূরে থাক বাড়ির বাইরে পর্যন্ত যাওয়ার অধিকার ছিল না।
আমার বোন: বাবা, তাহলে মেয়েরা কীভাবে পড়াশোনার অধিকার পেল?
বাবা : মেয়েদের শিক্ষার অধিকার আদায়ে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
আমি : বাবা, বেগম রোকেয়া কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
বাবা : ১৮৮০ সালের ৯ই ডিসেম্বর রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
আমি : বেগম রোকেয়ার বাবা জব্রিদ্দিন মুহাম্মদ আবু আলী সাবের ছিলেন একজন জমিদার।
আমার বোন: বাব্য, মা বলল নারীরা পড়াশোনা করতে পারতো না। তবে তিনি কীভাবে লেখাপড়া শিখেছেন?
মা : ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়।

বাবা : বড় ভাই ইব্রাহিম সাবের ও বোন করিমুন্নেসার কাছ থেকে লেখাপড়া শিখেছেন।
আমি : বাবা, আমি বই পড়ে জেনেছি, যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়ত তখন ভাই ইব্রাহিম সাবের বেগম রোকেয়াকে লেখাপড়া শিখাতেন।
বাবা : হ্যাঁ, তখন সমাজ মেয়েদের পড়াশোনাকে অবহেলার চোখে দেখতো। তারা মনে করতো মেয়েদের পড়াশোনার কোনো দরকার নেই।
আমি : বাবা, বেগম রোকেয়া নারী শিক্ষার অধিকারের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। তিনি ১৯১১ সালে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।
বাবা : স্কুলের-ছাত্রী সংগ্রহ করতেও বেগম রোকেয়া অনেক কষ্ট করেছেন। তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাবা মায়েদের নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে ছাত্রী সংগ্রহ করেছেন। এভাবেই ধীরে ধীরে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। মেয়েরা শিক্ষার অধিকার অর্জন করে।
মা : আলোচনা অনেক হয়েছে। এখন ঘুমাতে হবে।

এখানে একটি আলোচনার নমুনা দেয়া হলো। তোমরা স্কুলে, এলাকায় অথবা বাসায় বন্ধু কিংবা পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে বেগম রোকেয়ার জীবনের অন্যান্য তথ্য নিয়েও আলোচনা করতে পারো।

নমুনা আলোচনা-৩: বিজ্ঞানী নিউটনের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে এলাকার বন্ধুদের সাথে আলোচনা-

আয়ান: নুসাইবা, তুমি বড় হয়ে কী হতে চাও?
নুসাইবা: আমি বড় হয়ে আইজাক নিউটনের মতো বিজ্ঞানী হতে চাই।
আয়ান: নিউটন অনেক বড় মাপের বিজ্ঞানী ছিলেন।
নুসাইবা : হ্যাঁ, তার আবিষ্কার দেখে বড় বড় বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তার পাণ্ডিত্যের কারণে সম্রাটের কাছ থেকে ‘নাইট’ বা ‘স্যার’ উপাধি পেয়েছিলেন। বিলেতের পার্লামেন্টের সদস্য হয়েছিলেন।
আয়ান : অথচ আইজাক নিউটন স্কুলের লাস্ট বয় ছিলেন। এমনকি মাস্টাররা পর্যন্ত বলেছিল তার মাথায় গোবর ছাড়া কিছুই নেই।
নুসাইবা : সহপাঠীরাও নিউটনকে নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করত। নিউটনের বাল্যজীবন সম্পর্কে তুমি কিছু জানো?

আয়ান : নিউটন ১৬৪২ সালের ২৫শে ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন একজন কৃষক। জন্মের আগেই তার পিতা মারা যান। গ্রামের স্কুলেই তার পড়াশোনা। তবে পড়ার চেয়ে সূর্যঘড়ি, জলঘড়ি, কলকব্জা নিয়ে নাড়াচাড়ার প্রতি ঝোঁক বেশি ছিল।
নুসাইবা: নিউটনের আগ্রহ দেখে তার চাচার পরামর্শে তাকে কেমব্রিজ কলেজে ভর্তি করে দেওয়া হয়েছিল। কলেজের প্রথম বছরেই তিনি গণিতের এক নতুন ক্ষেত্র ক্যালকুলাস আবিষ্কার করে ফেলেন।
আয়ান: সত্যিই তিনি ছিলেন অসম্ভব, মেধাবী। তাইতো তেইশ বছর বয়সে কলেজের পড়া শেষ করেই গণিতের অধ্যাপক হতে পেরেছিলেন।

নুসাইবা: শুধু কি তাই। তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আবিষ্কার করেছেন। নিউটন এমন এক দূরবিন আবিষ্কার করেছিলেন, যার ব্যাস ছিল মাত্র এক ইঞ্চি, আর লম্বায় ছিল মাত্র দুই ইঞ্চি। কিন্তু এ দুরবিন দিয়ে দূরের কোনো জিনিস চল্লিশ গুণ বড় দেখা যেতো। এরপর কাচের প্রিজম বা তেশিরা পরকলার সাহায্যে নিউটন দেখিয়েছিলেন সাদা আলোর মধ্যেই আছে সাতরঙা আলোর রঙধনু।
আয়ান: নিউটন খুবই সাদাসিধে রকমের মানুষ ছিলেন। নতুন নতুন আবিষ্কার করলেও সেটার প্রচার নিয়ে মোটেই মাথা ঘামাতেন না।
নুসাইবা : আসলে তিনি গবেষণার কাজে অনেক বেশি মশগুল থাকতেন। অন্যদিকে তার এত মনোযোগ থাকত না। এ নিয়ে প্রচলিত অনেক কাহিনী রয়েছে।
আয়ান: আমিও এসব কাহিনী শুনেছি।

এখানে একটি আলোচনার নমুনা দেয়া হলো। তোমরা স্কুলে, এলাকায় অথবা বাসায় বন্ধু কিংবা পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে স্যার আইজাক নিউটনের জীবনের অন্যান্য তথ্য নিয়েও আলোচনা করতে পারো।

সেশন-৬
কাজ-৩: ব্যক্তিগত পরিচয়ের ছক তৈরি।
কাজের মূল উদ্দেশ্য: এই শিখন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত পরিচয়ের ছক তৈরি করা শিখবে এবং নিজের বহুমাত্রিক পরিচয় তুলে ধরতে পারবে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ: যেকোনো সাইজের সাদা কাগজ, লাল ও নীল রঙের কলম, পেন্সিল, স্কেল, কম্পাস, পাঠ্যবই।

কাজের নির্দেশনা:

  • প্রত্যেক শিক্ষার্থী একটি করে এফোর সাইজের সাদা কাগজ, লাল ও নীল রঙের কলম, পেন্সিল, স্কেল ও কম্পাস নিয়ে আলাদাভাবে বসবে।
  • প্রত্যেকে কম্পাসের সাহায্যে পেন্সিল দিয়ে গোল আকৃতির ছক অঙ্কন করবে।
  • ছকের উপরে পরিচয়ের বিষয়গুলো যেমন- প্রিয় রঙ, প্রিয় খাবার, প্রিয় গান ইত্যাদি বিষয় লাল কলম দিয়ে লিখবে।
  • ছকের ভিতরে স্কেল ও পেন্সিল দিয়ে লম্বা দাগ টেনে ব্যক্তিগত পরিচয়ের বিষয়গুলো নীল কলম দিয়ে লিখবে।
  • ছকের নিচে নিজের নাম লিখবে।
  • ছক পূরণ করা হয়ে গেলে শিক্ষক ও বন্ধুদের সামনে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করবে।
CamScanner 01 06 2024 11.40 6

আরো পড়োবই পড়া ক্লাব
আরো পড়োসামাজিক পরিচয়

সেশন-৭
কাজ-৪: ‘যে ভালুকটি ভালুক ছিল না’ গল্প থেকে ছবি আঁকি।
প্রয়োজনীয় উপকরণ: ছবি আঁকার জন্য শ্রেণিশিক্ষকের দেওয়া ছক, পেন্সিল, ইরেজার।

কাজের উদ্দেশ্য: শিক্ষার্থীরা তাদের আত্মপরিচয় অন্যদের দ্বারা কীভাবে সঙ্গায়িত (ডিফাইন্ড) হয় এবং ব্যক্তি ও সমাজের মাঝে সম্পর্ক কী তা অনুধাবন করতে শুরু করবে। শিক্ষক ‘যে ভালুকটি ভালুক ছিল না’ নামক গল্পটি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তি ও সমাজের মাঝে সম্পর্ক এবং এর মাধ্যমে ব্যক্তি-পরিচয় কীভাবে নির্ধারিত হয় তা উপলব্ধিতে সহায়তা করবেন।

কাজের নমুনা সমাধান

CamScanner 01 06 2024 11.40 7
CamScanner 01 06 2024 11.40 8

সেশন-৮

কাজ-৫: ভালুকের পরিচয়ের ছক তৈরি।

কাজের উদ্দেশ্য: শিক্ষার্থীরা আত্মপরিচয়হীনতার সংকট চিহ্নিত করতে পারবে এবং আত্মপরিচয়ের ওপর নিজের, সমাজ ও পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে পারবে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ: কলম ও পাঠ্যবই।

কাজের নির্দেশনা:

  • শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের কাছ থেকে ভালুকের থাবা চিহ্ন যুক্ত একটি ছক সংগ্রহ করবে।
  • এরপর তারা পাঠ্যবই থেকে ‘যে ভালুকটি ভালুক ছিল না’ গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়বে।
  • গল্পটি পড়ার পুর ভালুক নিজের আত্মপরিচয়ের ব্যাপারে অন্যরা কী ভাবছে এবং তার ব্যাপারে অন্যরা কী ভাবছে সেগুলো চিহ্নিত করবে।
  • তারপর ভালুক নিজের আত্মপরিচয়ের ব্যাপারে কী ভাবছে এ ব্যাপারে চিহ্নিত করা পয়েন্টগুলো শিক্ষার্থীরা কলম দিয়ে থাবার ভেতর লিখবে। অন্যদিকে ভালুকের ব্যাপারে আশেপাশের মানুষরা কী ভাবছে সে সম্পর্কিত চিহ্নিত করা পয়েন্টগুলো থাবার বাইরে লিখবে।
  • ছকের নিচে নিজের নাম লিখবে।
  • পুরো চার্টটি সম্পন্ন হলে শ্রেণিশিক্ষকের কাছে উপস্থাপন করবে।

ভালুকের পরিচয়ের ছক

CamScanner 01 06 2024 11.40 9

প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর

প্রশ্ন-১. ভালুকটি নিজের পরিচয় বর্ণনা করতে কোন কোন শব্দ ব্যবহার করত?
উত্তর: আমিতো ভালুক, আমি ভালুকই, আমি সবসময় ভালুকই ছিলাম, কিন্তু আমি একটা ভালুক- এ শব্দগুলো ভালুক নিজের পরিচয় বর্ণনা করতে ব্যবহার করতো।

প্রশ্ন-২. অন্যরা তার পরিচয় বর্ণনা করতে গিয়ে কী কী শব্দ ব্যবহার করত?
উত্তর: অন্যরা ভালুকের পরিচয় বর্ণনা করতে গিয়ে বোকা হাঁদারাম মানুষ, গবেট, বোকা মানুষ, গোয়ার গোবিন্দ- এ শব্দগুলো ব্যবহার করতো।

প্রশ্ন-৩. সময়ের সাথে সাথে কীভাবে ভালুকটির পরিচয় পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল?
উত্তর: সময়ের সাথে সাথে ভালুকটাকে পশমের কোট পরা মানুষ হিসেবে কারখানার ফোরম্যান, ম্যানেজার, থার্ড ভাইস প্রেসিডেন্টের জোরালো সমর্থন এবং চিড়িয়াখানার পশুদের তাকে ভালুক বলে অস্বীকৃতির কারণে তার পরিচয় পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল।

প্রশ্ন-৪. গল্পের লেখক এখানে কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: গল্পের লেখক বোঝাতে চেয়েছেন যে, অনেক সময় নানা পরিস্থিতি ও বিভ্রান্তির কারণে আত্মপরিচয় পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। তবে যেকোনো পরিস্থিতিতে আত্মপরিচয় না হারিয়ে নিজ পরিচয়ে অটল থাকা উচিৎ।

প্রশ্ন-৫. আমাদের পরিচয় গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কোন বিষয়টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ? আমাদের পরিচয় সম্পর্কে আমরা কী ভাবি তাই, না কি অন্যরা আমাদের সম্পর্কে যা ভাবে তা?
উত্তর: আমাদের পরিচয় সম্পর্কে আমরা যা ভাবি সেটিই পরিচয় গড়ে তোলার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অন্যদের চেয়ে আমরা নিজেকে সব থেকে ভালো জানি ও চিনি।

কাজ-৬: “আমি আমার পরিচয় সম্পর্কে যা ভাবি তাই আমার পরিচয় গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ; অন্যরা কী ভাবল তা নয়” শীর্ষক বিষয়ের ওপর বিতর্ক প্রতিযোগিতা।

কাজের নির্দেশনা:

  • শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা বিতর্ক করতে ইচ্ছুক তারা শিক্ষকের সহায়তায় দুটি দলে বিভক্ত হবে।
  • প্রতি দলে ৩/৪ জন সদস্য থাকবে।
  • দুটি দলের একটি বির্তকের বিষয়ের পক্ষে এবং অপরটি বিপক্ষে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করবে।
  • বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিচারকমণ্ডলী পক্ষ ও বিপক্ষ দলের বক্তব্য শুনে যে দল ভালোভাবে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পেরেছে তাদেরকে বিজয়ী ঘোষণা করবেন।
  • উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বিজয়ী দলকে অভিনন্দন জানাবে।

নমুনা সমাধান
“আমি আমার পরিচয় সম্পর্কে যা ভাবি তাই আমার পরিচয় গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অন্যরা কী ভাবল তা নয়”- এ বিষয়ে পক্ষ ও বিপক্ষ দলের নমুনা বক্তব্য নিচে দেওয়া হলো-

CamScanner 01 06 2024 11.40 10
CamScanner 01 06 2024 11.40 11

Leave a Comment