ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং অর্থ কি? ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কিভাবে করা হয়? (জেনে নিন)

বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে সবার মনে একটাই প্রশ্ন কিভাবে নাম দেওয়া হলো ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর, আর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর উৎপত্তিই বা কোথায়? তাই আজ আলোচনা করবো ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে।

সিত্রাং নামকরণ :
Sitrang এর বাংলা নামও হচ্ছে সিত্রাং। এই নামের উৎপত্তি হয়েছে অর্থাৎ সিত্রাং নামকরণ করেছে থাইল্যান্ড। তবে থাইল্যান্ডে ‘সি-ত্রাং (Si Trang)’ এই ভাবে উচ্চারণ করা হয়। আবার জানা গেছে, সিত্রাং থাইল্যান্ড বাসিন্দাদের পদবিও।

সিত্রাং অর্থ কি?
বিভিন্ন দেশ থেকে দেওয়া ঝড়ের তালিকার ইংরেজি হরফে লেখার মধ্যে Sitrang এবং উচ্চারণ Si-Trang, এখানে Si শব্দের অর্থ হচ্ছে রং, সহানুভূতি, সম্মানীয় ইত্যাদিও বোঝায়- যোগ করেন কানালাওয়াই ওয়ায়েক্লায়হং। আর ত্রাং হচ্ছে দক্ষিণ থাইল্যান্ডের একটি প্রদেশ। ফুলের জন্য এই প্রদেশের বেশ সুনামও রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় এর নামকরণ কিভাবে করা হয়?
আবহাওয়া সূত্রে জানা গেছে, সমুদ্র সৃষ্ট থেকে উৎপত্তি ঝড়ের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৩৯ মাইলের বেশি হয় তাহলে সেই ঘূর্ণিঝড়ের একটি নামকরণ করা হয়। আবার কোনো ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৭৪ মাইল এর বেশি হতে শুরু করলে সেইসব ঘূর্ণিঝড়কে হারিকেন, সাইক্লোন, বা টাইফুন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়।

তবে এসব ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয় ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (India Meteorological Department) নামক একটি সংস্থা থেকে। ভারত মহাসাগরের উত্তর অংশ, আরব সাগরের একটি বড় অংশে এবং বঙ্গোপসাগরে কোনও ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি শুরু হলে এই সংস্থা থেকে নামকরণ করা হয় এবং নজরদারিতে রাখেন। এবং এই সংস্থাটিতে রয়েছে ১৩টি দেশ।

এই দেশগুলো হচ্ছে ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার, পাকিস্তান, মলদ্বীপ, ওমান, শ্রীলঙ্কা, তাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং ইয়েমেন। এই ১৩টি দেশ মিলে বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়ে রাখে। এখন পর্যন্ত ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ দেওয়া হয়েছে এই সংস্থাটি থেকে। ইতোমধ্যে ঘটে যাওয়া আয়লা, আমপান, বুলবুল, হুদহুদ, ফণী, অশনি ইত্যাদি নামগুলো এই সংস্থাটি থেকেই নামকরণ করা হয়।

এমনকি ভবিষ্যতে ঘটবে এমন কোন দেশের ঘূর্ণিঝড়ের কি নাম দেওয়া হবে তা আগেই তালিকা ঠিক করে রাখা আছে। সে তালিকা থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছে সিত্রাং নাম এর। এই নামটি দেওয়া হয়েছে থাইল্যান্ড থেকে। সেই সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে ‘মন্দোস’। এই নামের উৎপত্তি সৌদি আরব। আবার মন্দোস ঘূর্ণিঝড় হয়ে গেলে পরের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হবে ‘মোচা’। এই নামের উৎপত্তি ইয়েমেন।

কেন দেওয়া হয় ঘূর্ণিঝড়ের নাম?
World Meteorological Organisation-এর মতে একই সঙ্গে একটি জায়গায় একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হতে পারে। তাই সহজে চেনার জন্য এবং নজর রাখার সুবিধার জন্য নামকরণ প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকাকে সতর্ক করা যায়। সমুদ্রে থাকা জাহাজগুলিকে বার্তা পাঠানো যায়।

Leave a Comment