সমাজকর্মের সাথে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা এবং পেশার সম্পর্ক হচ্ছে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণী অর্থাৎ এইচএসসি’র সমাজকর্ম ১ম পত্রের পঞ্চম অধ্যায়। সমাজকর্মের সাথে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা এবং পেশার সম্পর্ক অধ্যায় থেকে বাছাইকৃত সেরা ৫টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
সমাজকর্মের সাথে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা এবং পেশার সম্পর্ক
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : শফিক স্যার ক্লাসে বললেন এটি এমন একটি বিষয় যা সামাজিক সমস্যার কারণ উদ্ঘাটনের পাশাপাশি সামাজিক সমস্যার বিজ্ঞানভিত্তিক সমাধান ও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে মানুষকে সাহায্য করে। অন্যদিকে শাহিন স্যার ক্লাসে বললেন এটি এমন একটি বিষয় যা মানুষকে অভাব, সম্পদ, আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্য বিধান এবং জাতীয় উন্নয়নে সহায়তা করে।
ক. কোন ভাষা থেকে পেশা শব্দটিকে বাংলা ভাষায় নেওয়া হয়েছে?
খ. আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে শাহিন স্যারের ইঙ্গিতকৃত বিষয়টি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে শফিক স্যার ও শাহিন স্যারের বিষয় দুটি পরস্পর নির্ভরশীল হলেও উভয়ের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান-তুমি কি বক্তব্যটি সমর্থন কর? যুক্তি দাও।
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ফারসি ভাষা থেকে পেশা শব্দটিকে বাংলা ভাষায় নেওয়া হয়েছে।
খ. আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার (Right of Self-determination) বলতে ব্যক্তির স্বকীয়তা বজায় রেখে যোগ্যতা প্রমাণের মাধ্যমে আত্মোন্নয়নের (Self-determination) সুযোগকে বোঝায়। এটি সমাজকর্মের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মূল্যবোধ। ব্যক্তির পছন্দ, চাহিদা, সামর্থ্য এবং ক্ষমতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অধিকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ অধিকার ব্যক্তির আত্মনির্ভরতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবনকে অর্থবহ করে তোলে।
গ. উদ্দীপকে শাহিন স্যারের ইঙ্গিতকৃত বিষয়টি হলো সামাজিক বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ শাখা অর্থনীতি।
সামাজিক সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক অর্থনৈতিক সম্পর্ককে কেন্দ্র করে অর্থনীতির বিকাশ ঘটেছে। অর্থনীতি সামাজিক বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যাতে সম্পদ উৎপাদন, বণ্টন, ভোগ, বিনিয়োগ প্রভৃতি সংক্রান্ত মানুষের কার্যাবলি আলোচনা করা হয়। উদ্দীপকে এ বিষয়গুলোই উল্লিখিত হয়েছে।
উদ্দীপকের শাহিন স্যার ক্লাসে বললেন এটি এমন একটি বিষয় যা মানুষের অভাব, সম্পদ, আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্য বিধান ও জাতীয় উন্নয়নে সহায়তা করে। এ থেকেই বোঝা যায়, সে অর্থনীতিকেই ইঙ্গিত করেছে। অর্থনীতির সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলেই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ অর্থনীতিকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। তাদের বক্তব্যে বলা হয়েছে ব্যক্তি ও সমাজ কীভাবে সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে অভাব পূরণ ও পছন্দ মতো বণ্টন করে তা নিয়ে যে বিষয় আলোচনা করে তাই অর্থনীতি। উপর্যুক্ত আলোচনার মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় শাহিন স্যারের ইঙ্গিতকৃত বিষয়টি অর্থনীতিকে নির্দেশ করে।
ঘ. হ্যাঁ, উদ্দীপকের শফিক স্যারের সমাজকর্ম ও শাহিন স্যারের অর্থনীতি বিষয় দু’টি পরস্পর নির্ভরশীল হলেও উভয়ের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান-এ বস্তুব্যের সাথে আমি একমত।
পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানের আলোকে ব্যাখ্যা করতে গেলে দেখা যায় সমাজকর্ম ও অর্থনীতি উভয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। দুটি বিষয়ই চেষ্টা করে সম্পদের সর্বোত্তম ও সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত করে সীমিত সম্পদ ও অসীম চাহিদার মাঝে সামঞ্জস্য বিধান করতে। এছাড়া সমাজকর্ম ও অর্থনীতি উভয়েই সমাজের উন্নয়ন করতে চায় এক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা রয়েছে। সমাজকর্মের সাথে অর্থনীতির যেমন নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। তেমনি এ দুটি বিষয়ের মধ্যে মৌলিক কতগুলো পার্থক্যও রয়েছে। সমাজকর্ম হলো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নির্ভর সাহায্যকারী পেশা। যা সমাজে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ও তাদেরকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলে। এখানে অর্থনৈতিক দিকটা মুখ্য নয়। পক্ষান্তরে অর্থনীতি হলো একটি সামাজিক বিজ্ঞান যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আনয়নে ও মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ কার্যাবলী পর্যালোচনা করে। এছাড়া সমাজকর্ম হলো ব্যবহারিক বা অনুশীলনের বিজ্ঞান। অন্যদিকে অর্থনীতি হলো একটি তাত্ত্বিক বিজ্ঞান। অর্থনীতি কেবল সম্পদ ও উৎপাদন নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু সমাজকর্ম মানুষের সকল দিকের উপর গুরুত্ব দেয়। সেই সাথে সমাজকর্ম মানুষের কল্যাণে ও তাদের সমস্যার সমাধানে নিজম্ব পদ্ধতি ও কৌশল অবলম্বন করে। পক্ষান্তরে সমাজের সামগ্রিক উন্নয়নে অর্থনীতির কতগুলো পদ্ধতি রয়েছে। যা সমাজকর্মের পদ্ধতি হতে সম্পূর্ণ পৃথক। এছাড়াও মূল্যবোধ, নৈতিকতা, মৌলিক ও শব্দগত ইত্যাদি দিক থেকেও উভয়ের বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু সমাজের ও মানুষের কল্যাণে উভয়ের ভূমিকা অত্যন্ত জোরালো। অর্থনীতির জ্ঞানই সমাজকর্মকে পূর্ণাঙ্গতা দিয়েছে।
তাই বলা যায়, শফিক স্যারের ও শাহিন স্যারের আলোচনাকৃত বিষয় দুটি | অর্থাৎ সমাজকর্ম ও অর্থনীতির মধ্যে উপরোল্লিখিত পার্থক্য বিদ্যমান।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : রায়হান সাহেব একজন নবীন সমাজকর্মী। পেশাগত প্রয়োজনে তাকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে মিশতে হয়। কিন্তু নবীণ সমাজকর্মী হিসেবে মানুষের আচরণিক বৈচিত্র্যের সাথে তিনি খাপ খাওয়াতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তিনি উপলব্ধি করেছেন যে বয়স, অবস্থান, সমাজ, জলবায়ু ও পরিবেশভেদে মানুষের আচার-আচরণ ভিন্ন হয়। এজন্য তিনি মানব আচরণের উপর গভীর অনুশীলন শুরু করেছেন।
ক. নৃ-বিজ্ঞানের ইংরেজি প্রতিশব্দ কী?
খ. সমাজকর্ম এবং চিকিৎসা পেশার সম্পর্ক লেখ।
গ. রায়হান সাহেবকে সামাজিক বিজ্ঞানের কোন শাখা’ মানব আচরণের উপর জ্ঞান লাভ করতে সাহায্য করবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সামাজিক বিজ্ঞানের উক্ত শাখার সাথে সমাজকর্মের সম্পর্ক পাঠ্যপুস্তকের আলোকে ব্যাখ্যা কর।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. নৃ-বিজ্ঞানের ইংরেজি প্রতিশব্দ Anthropology.
খ. সমাজকর্ম ও চিকিৎসাসেবা উভয় পেশাই মানবসেবামূলক। সমাজকর্ম ও চিকিৎসা পেশা উভয়েরই উৎপত্তি ও বিকাশ ঘটেছে। মানবসেবার দর্শনের ভিত্তিতে। উভয় পেশাতেই তাত্ত্বিক জ্ঞান ও দক্ষতার সমাবেশ থাকতে হয়। চিকিৎসা পেশায় যেমন দক্ষতার জন্য ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় তেমনি সমাজকর্মেও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের | জন্য মাঠকর্ম অনুশীলন করা হয়। সমাজকর্ম পেশায় মানব আচরণের জৈবিক ভিত্তি সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জনে চিকিৎসা পেশা নানাভাবে সহায়তা করেছে।
গ. মনোবিজ্ঞান রায়হান সাহেবকে মানব আচরণের উপর জ্ঞান লাভ করতে সাহায্য করবে।
মনোবিজ্ঞান হলো সমাজে মানুষ বা প্রাণীর সামগ্রিক আচার-আচরণ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের বিজ্ঞানভিত্তিক অধ্যয়ন। যার মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক বিষয়াবলি, আচরণ, শিক্ষণ, সামাজিকীকরণ, অভিজ্ঞতা, প্রেষণা | উপযোজন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সমাজে বসবাসরত ব্যক্তি, দল, সমষ্টি, সামাজিক পরিবেশ, রীতিনীতি, আদর্শ-মূল্যবোধ প্রভৃতি নিয়েও মনোবিজ্ঞান আলোচনা করে থাকে।
উদ্দীপকের রায়হান সাহেব একজন নবীন সমাজকর্মী। পেশাগত প্রয়োজনে তাকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে মিশতে হয়। কিন্তু নবীন সমাজকর্মী হিসেবে মানুষের আচরণের বৈচিত্র্যের সাথে খাপ খাওয়াতে তিনি ব্যর্থ হচ্ছেন। তিনি উপলব্ধি করেন মানুষের আচরণের ভিন্নতার পেছনে নানা কারণ দায়ী। এজন্য তিনি মানব আচরণের উপর অনুশীলন শুরু করেন। এক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান তাকে বিশেষভাবে সহায়তা করবে। কারণ মনোবিজ্ঞান মানুষের বাহ্যিক আচরণ বিশ্লেষণ করে মানবীয় আচরণের পিছনে যে অভ্যন্তরীণ চালনা শক্তি রয়েছে তার অনুসন্ধান করে।
ঘ. মনোবিজ্ঞানের সাথে সমাজকর্মের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।
সমাজকর্ম হলো মানুষের সন্তোষজনক জীবনমান ও সামাজিক সম্পর্ক লাভের জন্য সুসংগঠিত সাহায্যকারী পেশা। মানুষের এ সন্তোষজনক জীবন লাভে মানব প্রকৃতি ও আচরণ একটি সক্রিয় উপাদান। তাই বর্তমান সময়ে সমাজকর্ম অধিকমাত্রায় মনোবিজ্ঞানের জ্ঞানের ওপর নির্ভরশীল। মনোবিজ্ঞানের মূল আলোচ্য বিষয় হলো মানব আচরণ। অন্যদিকে সমাজকর্ম মানুষের আচরণ বিশ্লেষণ করে তার বিভিন্ন চাহিদা ও সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে। সমাজকর্ম বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তির বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে থাকে। এ সকল সমস্যার পিছনে সাধারণত ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব, আবেগ, বুদ্ধি, হতাশা বিশেষভাবে দায়ী সমাজকর্মকে ব্যক্তির সমস্যা সমাধানের সময় এ বিশেষ দিকগুলোর প্রতি লক্ষ রাখতে হয়। এক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞান ব্যক্তির আচার-আচরণ, আবেগ, অনুভূতি, দৃষ্টিভঙ্গি প্রভৃতি সম্পর্কে জ্ঞান দান করে। সমাজকর্মে প্রয়োগকৃত বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি বহুলাংশে মনোবিজ্ঞান জ্ঞাননির্ভর। বিশেষ করে ব্যক্তি সমাজকর্মে ব্যক্তির সমস্যা সমাধান ও আচরণ সংশোধনের জন্য প্রয়োগকৃত জ্ঞান মনোবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। ব্যক্তির মানসিক ক্ষমতা বা সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের জন্য মনোবিজ্ঞানের নিজস্ব কিছু কৌশল ও প্রক্রিয়া আছে। সমাজকর্ম এ সকল প্রক্রিয়া ও কৌশল অবলম্বন করে সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির প্রতিভার বিকাশ সাধন করে।
উদ্দীপকে রায়হান সাহেব তার সমাজকর্ম পেশা অনুশীলন করতে গিয়ে মানব আচরণ সম্পর্কিত নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। এক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান তাকে বিশেষভাবে সহায়তা করবে। তাই বলা যায়, সমাজকর্ম ও মনোবিজ্ঞান একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : নিশাত সমাজকর্ম বিষয়ে লেখাপড়া শেষ করে একটি সমাজকল্যাণ সংস্থায় কর্মী হিসেবে চাকরি নেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন নৃ-বিজ্ঞান ও সমাজকর্মের দৃষ্টিভঙ্গি এক এবং উভয় বিজ্ঞানেরই কেন্দ্রবিন্দু মানুষ। সমাজের মানুষের সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে তিনি বাস্তব ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য সংগ্রহ করেন।
ক. পৌরনীতির ইংরেজি প্রতিশব্দ কী?
খ. জনবিজ্ঞানের দুইটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
গ. নৃ-বিজ্ঞানের কোন জ্ঞান কাজে লাগিয়ে নিশাত সমস্যাগ্রস্তদের সমস্যা সমাধানের জন্য কর্মসূচি প্রণয়ন করেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সামাজিক বিজ্ঞানের উত্ত শাখা দুটি সম্পর্ক যুক্ত হলেও এদের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে-বিশ্লেষণ কর।
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. পৌরনীতির ইংরেজি প্রতিশব্দ Civics.
খ. জনবিজ্ঞানের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়।
জনবিজ্ঞান হলো জনসংখ্যা সম্পর্কিত বিজ্ঞান। জনসংখ্যা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জনবিজ্ঞান আলোচনা করে। প্রথমত, জনবিজ্ঞান মূলত জনসংখ্যা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তত্ত্ব নিয়ে সুশৃঙ্খল গাণিতিক ও পরিসংখ্যানিক তত্ত্ব প্রকাশ করে। দ্বিতীয়ত, সামাজিক অনগ্রসরতা ও দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র সমস্যা সমাধানের জন্য প্রস্তাবিত নীতি ও কার্যক্রমের প্রায়োগিক কৌশল অর্থাৎ জনসংখ্যা নীতি গ্রহণকরে।
গ. নৃ-বিজ্ঞান সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ধারা, প্রচলিত প্রথা, প্রতিষ্ঠান, সামাজিক আদর্শ ও মূল্যবোধ সম্পর্কে বাস্তব ও বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞান দান করে, যা কালে লাগিয়ে নিশাত সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিদের সমস্যা সমাধানের জন্য কর্মসূচি প্রণয়ন করেন।
মানুষের আচার-আচরণ ও ব্যক্তিত্বের ওপর দৈহিক গঠনের প্রভাব সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞানদান করে দৈহিক নৃ-বিজ্ঞান। নৃ-বিজ্ঞানের এ সকল দিক অধ্যয়ন করে নিশাত সমাজ ও সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞানার্জনে সক্ষম হবেন এবং সে অনুযায়ী কর্মসূচি প্রণয়ন করতে পারবেন। মানুষের সামাজিক মূল্যবোধ ও আদর্শবিরোধী কোনো কর্মসূচি মানুষ সহজে গ্রহণ করতে চায় না। এক্ষেত্রে নৃ-বিজ্ঞান প্রচলিত মূল্যবোধ, ধ্যান-ধারণা, প্রথা-প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানদান করে কল্যাণমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে সমাজকর্মীদের সহায়তা করে থাকেন। নিশাত এ সকল বিষয় সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করে সমস্যাগ্রস্তদের সমস্যা সমাধানে কর্মসূচি প্রণয়ন করেন।
উদ্দীপকে নিশাত একটি সমাজকল্যাণ সংস্থার কর্মী। সমাজের মানুষের সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে তিনি বাস্তব ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য সংগ্রহ করেন। মানুষ যেহেতু তাদের বিশ্বাস, আদর্শ ও মূল্যবোধ বিরোধী কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করতে চায় না, তাই তিনি প্রচলিত মূল্যবোধ, ধ্যান-ধারণা, প্রথা প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানলাভ করে সমস্যা সমাধানের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে নৃ-বিজ্ঞানের জ্ঞান তাকে সহায়তা করে।
ঘ. সমাজকর্ম এবং নৃবিজ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও মানব জ্ঞানের দুটি শাখা হিসেবে উভয়ের মধ্যে কতিপয় পার্থক্য থাকার কারণে প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
নৃবিজ্ঞান একটি মৌলিক সামাজিক বিজ্ঞান। কিন্তু সমাজকর্ম কোনো তাত্ত্বিক বিজ্ঞান নয়। এটি একটি সংগঠিত সাহায্য ব্যবস্থা। এর তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক জ্ঞানের জন্যে বিভিন্ন বিজ্ঞান ও বিষয় হতে প্রয়োজনীয় জ্ঞান আহরণ ও সমন্বয় করে একে একটি পাঠ্য বিষয় হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। তাছাড়া নৃবিজ্ঞান মানুষ, সমাজ ও সভ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত ও বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা করে বিধায় সমাজকল্যাণে নৃবিজ্ঞান হতে জ্ঞানের প্রয়োজন হয়। কিন্তু নৃবিজ্ঞানে সমাজকর্মের জ্ঞান বা অভিজ্ঞতার কোনো প্রয়োজন হয় না।
নৃবিজ্ঞানের বহু বিভাগ ও শাখা-প্রশাখা রয়েছে- যা সমাজের প্রায় প্রতিটি দিকেই বিস্তৃত। কিন্তু সমাজকর্মের তেমন কোনো শাখা-প্রশাখা নেই। সমাজকর্মের তুলনায় নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ও পরিধি অনেক ব্যাপক প্রত্যক্ষ পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুর গবেষণা ও অনুশীলন কার্যাদি পরিচালিত হয়ে থাকে। কিন্তু সমাজকর্মের ক্ষেত্রে এ কথা প্রযোজ্য নয়। সমাজকর্মের গবেষণা, প্রশ্নমালা ও পরিসংখ্যানভিত্তিক এবং সমাজকর্মের অনুশীলন মোটামুটি সাক্ষাৎ অভিজ্ঞতানির্ভর।
পরিশেষে বলা যায়, সমাজকর্ম ও নৃবিজ্ঞানের মধ্যে কোনো কোনো ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকলেও উভয়ের মৌলিক উপাদান হচ্ছে মানুষ ও তাদের সমাজ। এদিক দিয়ে উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠলেও বিষয় দুটি এক নয়।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : মিসেস লায়লা একজন কলেজ শিক্ষক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজস্ব একটি শখ পূরণেও তিনি যথেষ্ট সচেষ্ট, আর তা হলো সময় ও সুযোগ হলেই তিনি বিভিন্ন মানুষের আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন। কারণ এই আচরণ বিশ্লেষণের মাধ্যমে তিনি মানুষের মনোজগতকে বুঝতে চেষ্টা করেন। এটা যখন তিনি সাফল্যের সঙ্গে করতে পারেন তখন তিনি যথেষ্ট আনন্দ অনুভব করেন।
ক. জনসংখ্যার গতি প্রকৃতি আলোচনা করে কোন বিজ্ঞান?
খ. অর্থনীতির ধারণা বুঝিয়ে লিখ।
গ. মিসেস লায়লা শখ পুরণের জন্য কোন বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়েছেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সমজকর্মীদের জন্য উক্ত বিজ্ঞানের জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কী? উত্তরের সপক্ষে মতামত দাও।
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জনসংখ্যার গতি-প্রকৃতি আলোচনা করে জনবিজ্ঞান।
খ. অর্থনীতি হলো এমন একটি বিজ্ঞান বা বিষয় যা জাতিসমূহের সম্পদের প্রকৃতি এবং তার কারণ অনুসন্ধান করে। অর্থনীতির ইংরেজী প্রতিশব্দ ‘Economics’। যা এসেছে গ্রিক শব্দ ‘Oikonomia’ থেকে। এর অর্থ হলো গৃহ পরিচালনা। অর্থনীতি এমন একটি বিষয় যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কার্যাবলী নিয়ে আলোচনা করে। যার মাধ্যমে সীমিত সম্পদের বিকল্প ব্যবহার এবং অসীম অভাবের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের দ্বারা মানবীয় আচরণকে বিশ্লেষণ করে। মূলত সীমাহীন অভাব অনুভবকারী ব্যক্তি ও সমাজ কীভাবে সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে অভাব পূরণের জন্য পছন্দ মতো বন্টন করে তা নিয়ে যে শাস্ত্র আলোচনা করে তাই হলো অর্থনীতি।
গ. মিসেস লায়লা শখ পূরণের জন্য মনোবিজ্ঞানের সাহায্য নিয়েছেন।
মনোবিজ্ঞান হলো এমন একটি বিজ্ঞান যার আলোচনার বিষয় মানুষ তথা প্রাণীর আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়া। মানবীয় আচরণের পেছনে যে চালিকাশক্তি বা অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া রয়েছে সে সম্পর্কে আলোচনা করাই মনোবিজ্ঞানের লক্ষ্য। যার মধ্যে আছে মনস্তাত্ত্বিক বিষয়াবলি, আচরণ, শিক্ষণ, সামাজিকীকরণ, অভিজ্ঞতা, প্রেষণা, উপযোজন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সমাজে বসবাসরত ব্যক্তি, দল, সমষ্টি, সামাজিক পরিবেশ, রীতি-নীতি, আদর্শ-মূল্যবোধ ইত্যাদি নিয়েও মনোবিজ্ঞান আলোচনা করে থাকে।
উদ্দপিকে মিসেস লায়লা শখ পূরণে যথেষ্ট সচেষ্ট। সময় ও সুযোগ পেলে তিনি বিভিন্ন মানুষের আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন এবং এই আচরণ বিশ্লেষণের মাধ্যমে তিনি মনোজগতকে বুঝতে চেষ্টা করেন। আর এগুলোর সবই হলো মনোবিজ্ঞানের বিষয়।
ঘ. সমাজকর্মীদের জন্য উক্ত বিজ্ঞানের জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই আছে।
মানুষের সন্তোষজনক জীবন লাভে মানব প্রকৃতি ও আচরণ একটি সক্রিয় উপাদান। তাই বর্তমানে সমাজকর্ম অধিক মাত্রায় মনোবিজ্ঞানের জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। মূলত ব্যক্তির বিভিন্ন মনো-সামাজিক সমস্যার সমাধান করে তাকে সমাজ ও পরিবেশের উপযোগী আচরণ করতে সাহায্য করাই সমাজ কর্মের অন্যতম লক্ষ্য। এছাড়া সমাজকর্মে প্রয়োগকৃত বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি বহুলাংশে মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান নির্ভর।
উদ্দীপকের আলোকে বলা যায়, সমাজকর্মের যথাযথ প্রয়োগের নিমিত্তে মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান অপরিহার্য। এছাড়া চিকিৎসা সমাজকর্ম, বিদ্যালয় সমাজকর্ম, শিশুকল্যাণ, শ্রমকল্যাণ, অপরাধ সংশোধন প্রভৃতি ক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখাকে প্রয়োজন অনুসারে প্রয়োগ করা হয়। পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজকর্মে বিভিন্ন কৌশল ও প্রক্রিয়া অবলম্বন করে ব্যক্তির মানসিক বা সুপ্ত প্রতিভা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বা বিকাশে মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয়। এর মাধ্যমে সমাজকর্মী একজন ব্যক্তিকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সামঞ্জস্য বিধানে সহায়তা করে।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : মাহির একজন সমাজকর্মী। সম্প্রতি তার কাছে একজন ব্যক্তি সাহায্যের জন্য আসেন। উক্ত ব্যক্তি সম্প্রতি সহকর্মীদের ষড়যন্ত্রে চাকরি হারিয়েছেন। চাকরি হারানোর ফলে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেও তিনি বেশ অপমানিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি অত্যন্ত মানসিক চাপ ও অস্থিরতায় দিনাতিপাত করছেন। তাই তিনি তার মানসিক শান্তির জন্য একজনের পরামর্শে মাহিরের কাছে আসেন।
ক. অর্থনীতির জনক কে?
খ. সমাজকর্ম ও নৃ-বিজ্ঞানের সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের সমস্যাগ্রস্থ ব্যক্তিকে সহায়তা করতে মাহিকে কোন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মাহিকে উক্ত ব্যক্তির সমস্যা সমাধানে সমাজকর্মীর পাশাপাশি চিকিৎসকের ভূমিকাতেও অবতীর্ণ হতে হবে যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ কর।
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অর্থনীতির জনক হলেন এডাম স্মিথ।
খ. প্রকৃতিগত ও বিষয়বস্তুগত দিক থেকে সমাজকর্ম ও নৃবিজ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। প্রকৃতিগত দিক থেকে উভয়ই সামাজিক বিজ্ঞান এবং উভয় বিজ্ঞানই মানুষের সামাজিক সম্পর্ক, সমাজ কাঠামো, প্রথা-প্রতিষ্ঠান, সংস্কৃতি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। বিষয়বস্তুগত দিক থেকেও উভয় বিজ্ঞানের উপজীব্য বিষয় হলো সমাজ, সমাজের মানুষ, তাদের কর্ম ও আচরণ। তবে সমাজকর্ম ও নৃবিজ্ঞানের মধ্যে সাদৃশ্যমূলক সম্পর্ক থাকলেও সমাজকর্ম একটি সমন্বিত সামাজিক বিজ্ঞান এবং নৃবিজ্ঞান হলো মৌল সামাজিক বিজ্ঞানের বিশেষ শাখা।
গ. উদ্দীপকের সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিকে সহায়তা প্রদানের জন্য মাহিরকে চিকিৎসা পেশার জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
একজন সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তি মানসিক, সামাজিক, দৈহিক ইত্যাদি নানা সমস্যার শিকার হতে পারেন। এক্ষেত্রে তারা যদি সহায়তার আশায় মাহিরের মতো সমাজকর্মীর দারস্থ হন তবে তাদেরকে উত্তম পরামর্শ প্রদানের উদ্দেশ্যে মাহিরের মতো সমাজকর্মীকে চিকিৎসা পেশার জ্ঞান অর্জন করতে হবে। উদ্দীপকের সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তি সহকর্মীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে চাকরি হারিয়েছেন এবং পরিবার থেকেও অপমানিত হয়েছেন। তাই তিনি অত্যন্ত মানসিক চাপ ও অস্থিরতার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। একজনের পরামর্শে সহায়তা পাওয়ার আশায় তিনি সমাজকর্মী মাহিরের কাছে এসেছেন।
এমতাবস্থায় মাহিরকে তার সাহায্যার্থে প্রথমেই তার ব্যক্তিত্বের অস্বাভাবিকতা নির্ণয় করতে হবে এবং চিকিৎসার মাধ্যমে তার মানসিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন করতে হবে। উক্ত ব্যক্তির দীর্ঘমেয়াদি অভ্যন্তরীণ মানসিক চাপ তার দৈহিক স্বাস্থ্যের ওপর কোনো প্রভাব ফেলেছে কি না এ বিষয়েও মাহিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাকে সামাজিক ভূমিকা পালন ও সামঞ্জস্য বিধানে উৎসাহিত করতে পারেন সমাজকর্মী মাহির। কিন্তু এসব জ্ঞান প্রয়োগ করতে হলে একজন সমাজকর্মী হিসেবে মাহিকে চিকিৎসা পেশার জ্ঞান নিতে হবে। এ বিষয়ের জ্ঞান ছাড়া কোনো সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তি সহায়তা করা সম্ভব হবে না এবং তার মনোদৈহিক সমস্যার অনুসন্ধান প্রক্রিয়াও সফল হবে না। তাই মাহিরকে চিকিৎসা পেশার জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
ঘ. মাহিকে উদ্দীপকের সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির সমস্যা সমাধানে সমাজকর্মীর পাশাপাশি চিকিৎসকের ভূমিকাতেও অবতীর্ণ হতে হবে বক্তব্যটি যৌক্তিক।
চিকিৎসা ও সমাজকর্ম উভয়ই পেশা। একজন সমাজকর্মী ও চিকিৎসক। সর্বদাই মানুষকে সেবা দিয়ে থাকেন। চিকিৎসক ব্যক্তির পূর্ণাঙ্গ সুস্থতা বিধানে কাজ করেন এবং একজন সমাজকর্মী ব্যক্তিকে সুস্থতার জন্য পরামর্শ ও সেবা দিয়ে থাকেন।
উদ্দীপকের সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে মাহিরকে উভয় ভূমিকাতেই অবতীর্ণ হতে হবে। উক্ত ব্যক্তিটি সহকর্মীদের ষড়যন্ত্রে চাকরি হারিয়ে এবং পরিবারের কাছে অপমানিত হয়ে অত্যন্ত মানসিক চাপের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। একজনের পরামর্শে তিনি সমাজকর্মী মাহিরের কাছে সমাধানের জন্য এসেছেন। উক্ত ব্যক্তিকে সেবা ও পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করতে মাহিকে সমাজকর্মী হিসেবে ভূমিকা রাখতে হবে। আবার তার মনোদৈহিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাকে মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে মাহিরকে চিকিৎসা পেশার জ্ঞান প্রয়োগ করে চিকিৎসা সমাজকর্মী হিসেবেও ভূমিকা রাখতে হবে। মাহিরের দ্বৈত ভূমিকাই পারবে উক্ত সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিকে সকল সমস্যা থেকে মুক্ত করতে। একজন সমাজকর্মীকে সেবা ও পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি সাহায্যপ্রার্থী ব্যক্তির মানসিক ও দৈহিক সুস্থতার বিষয়েও অগ্রসর হওয়া সাহায্যপ্রার্থীর সমস্যা সমাধানে সহায়ক।
পরিশেষে বলা যায়, মাহিরকে উক্ত ব্যক্তির সমস্যা সমাধানে সমাজকর্মীর পাশাপাশি চিকিৎসকের ভূমিকাতেও অবতীর্ণ হতে হবে। কেননা তা ছাড়া সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে না। তাই প্রশ্নোক্ত বক্তব্যটি যৌক্তিক।