অবাক জলপান

(বাংলা)পঞ্চম: অবাক জলপান নাটিকাটির প্রশ্ন উত্তর

Posted on

অবাক জলপান হচ্ছে পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা বই এর সুকুমার রায় এর নাটিকা। অবাক জলপান নাটিকাটির অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

নাট্যকার পরিচিতি জেনে নিই
নাম – সুকুমার রায়।
জন্ম তারিখ : ৩০ অক্টোবর, ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দ।
জন্ম পরিচয়-
জন্মস্থান : কিশোরগঞ্জ জেলার মসুয়া গ্রাম।
পিতৃ পরিচয়-
পিতার নাম : উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী।
শিক্ষাজীবন-
মাধ্যমিক : এন্ট্রান্স (এসএসসি), কলকাতা সিটি স্কুল।
উচ্চ মাধ্যমিক : এইচএসসি, প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা।
উচ্চতর শিক্ষা : বিএস-সি অনার্স (পদার্থ ও রসায়ন), প্রেসিডেন্সি কলেজ। এফ.আর.পি.এস ডিগ্রি, ম্যানচেস্টার স্কুল অব টেকনোলজি, ইংল্যান্ড।
সাহিত্যকর্ম-
শিশুতোষ গ্রন্থ : আবোল-তাবোল, হ-য-ব-র-ল, পাগলা দাশু, বহুরূপী, খাইখাই ইত্যাদি।
সম্পাদনা : ‘সন্দেশ’ পত্রিকা।
প্রতিষ্ঠাতা : ননসেন্স ক্লাব, মানডে ক্লাব।
জীবনাবসান : ১০ সেপ্টেম্বর, ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ।

এক নজরে অবাক জলপান নাটিকার মূলকথাটি জেনে নিই
‘অবাক জলপান’ নাটিকাটি চরিত্রগুলোর সংলাপের মধ্য দিয়ে একটি হাসির গল্প হয়ে উঠেছে। পথিক তৃষ্ণার্ত। রাজপথে তার দেখা হয় ঝুড়িওয়ালার সঙ্গে। ঝুড়িওয়ালাকে তিনি বলেন ‘একটু জল পাই কোথায় বলতে পারেন?’ ঝুড়িওয়ালা ভাবেন তিনি বুঝি জলপাই চান। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়। ঝুড়িওয়ালা রেগেমেগে সেখান থেকে চলে যান। তাদের তর্কাতর্কি শুনে পাশের বাড়ির জানালা খুলে এক বৃদ্ধ জানতে চান তাদের কী হয়েছে। বৃদ্ধ সুযোগ পেয়ে ঝুড়িওয়ালার বদনাম শুরু করে দিলেন। পথিক জলের কথা বলতেই বৃদ্ধও উল্টো বুঝে জলের পঁচিশ রকম ফর্দের কথা বলতে শুরু করলে পথিক তাকে থামিয়ে দেন। এতে তিনি রেগে যান এবং পথিককে অপদার্থ বলে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। এবার অন্য বাড়ির ভেতরে এক বালক পড়ছিল। তার গলার স্বর শুনে পথিক তাকে ডাকেন। কিন্তু বের হয়ে আসেন তার মামা। পথিক তার কাছে তার তেষ্টার কথা জানান। এবার মামা জলের খবর বলতে গিয়ে জল কীভাবে গঠিত হয়, পরিস্রুত জল কী, জলাতঙ্ক, বোবা জল ইত্যাদি বলতে লাগলেন। এবার পথিকের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল। শেষমেশ তিনি বুদ্ধি খাটিয়ে ফন্দি এঁটে মামার কাছ থেকে খাবার জল আদায় করলেন এবং জল পান করে তার তেষ্টা মেটালেন।

অবাক জলপান নাটিকাটির প্রশ্ন উত্তর

১. অবাক জলপান নাটিকাটির মূলভাব জেনে নিই।
সুকুমার রায়ের ‘অবাক জলপান‘ ছোট একটি নাটিকা। এতে একটি গল্প বলা হয়েছে। তবে পথিক, ঝুড়িওয়ালা, বৃদ্ধ, খোকার মামা- এই চারজন লোকের কথোপকথন বা সংলাপের মধ্য দিয়ে গল্পটি বলা হয়েছে বলে এটি নাটিকা। ছোট্ট নাটককে নাটিকা বলে। ‘অবাক জলপান’ নাটিকার কাহিনি হচ্ছে— ভীষণ তৃষ্ণার্ত একটি লোক তেষ্টায় নানান জনের কাছে গিয়ে জল চাইছে, কিন্তু কেউ তাকে জল দিচ্ছে না। বরং তার কথা বলার মধ্যে নানারকম খুঁত ধরছে। শেষ পর্যন্ত বেশ বুদ্ধি খাটিয়ে ফন্দি এঁটে এক বিজ্ঞানীর নিকট থেকে সে জল আদায় করল। এটি একটি হাসির গল্প।

২. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
গেরস্ত, বরকন্দাজ, তেষ্টা, খাটিয়া, এক্সপেরিমেন্ট, রুক্ষমূর্তি।
উত্তর :
গেরস্ত – গৃহস্থ, সংসারী লোক।
বরকন্দাজ – বন্ধুকধারী সিপাই বা রক্ষী, দেহরক্ষী।
তেষ্টা – তৃষ্ণা, পিপাসা।
খাটিয়া – কাঠের তৈরি খাট।
এক্সপেরিমেন্ট – পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
রুক্ষমূর্তি – উগ্ররূপ।

৩. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
গেরস্ত, বরকন্দাজ, এক্সপেরিমেন্ট, তেষ্টায়, রুক্ষমূর্তি, খাটিয়ার
ক. …… বাড়ি, দুপুর রোদে দরজা এঁটে সব ঘুম দিচ্ছে।
খ. বরকে কি আপনি …….. বলেন?
গ. একটা লোক ……. জল জল করছে, তবু জল খেতে পায় না।
ঘ. পথিক ক্লান্ত হয়ে অবশেষে ……. ওপর বসে পড়ল।
ঙ. নোংরা জলের ভিতর কী আছে তা …….. করে বলা যাবে।
চ. …….. লোকটিকে দেখলেই ভয় লাগে।
উত্তর :
ক. গেরস্ত বাড়ি, দুপুর রোদে দরজা এঁটে সব ঘুম দিচ্ছে।
খ. বরকে কি আপনি বরকন্দাজ বলেন?
গ. একটা লোক তেষ্টায় জল জল করছে, তবু জল খেতে পায় না।
ঘ. পথিক ক্লান্ত হয়ে অবশেষে খাটিয়ার ওপর বসে পড়ল।
ঙ. নোংরা জলের ভিতর কী আছে তা এক্সপেরিমেন্ট করে বলা যাবে।
চ. রুক্ষমূর্তি লোকটিকে দেখলেই ভয় লাগে।

আরো পড়ো → শ্বদেশ কবিতার প্রশ্ন উত্তর
আরো পড়ো → কাঞ্চনমালা ও কাকনমালা গল্পের প্রশ্ন উত্তর

৪. প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
প্রশ্ন ক. ‘বোবা জল’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :
বোবা জল বলতে পরিযুত জলকে বোঝায়। ইংরেজিতে একে বলে ‘ডিস্টিল ওয়াটার’। বিশেষ কাজের জন্য যেমন- পরীক্ষাগারে ব্যবহারের জন্য কৃত্রিমভাবে এই জল তৈরি করা হয়। এই জল প্রাকৃতিক জলের চেয়ে আলাদা। বোবা জলের কোনো স্বাদ নেই।

প্রশ্ন খ. ‘জলাতঙ্ক’ কাকে বলে?
উত্তর :
যে রোগ হলে প্রচণ্ড পিপাসা পেলেও রোগী জল পান করতে পারে না, জল পান করতে গেলে শরীর খিঁচ ধরে যায় তাকে ‘জলাতঙ্ক’ বলে।

প্রশ্ন গ. জলের তেষ্টায় পথিকের মন ও শরীরের অবস্থা হয়েছিল? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর :
পথিক ছিলেন অত্যন্ত তৃষ্ণার্ত। জলের তেষ্টায় তার মগজের ঘিলু পর্যন্ত যেন শুকিয়ে উঠেছিল। তিনি আর হাঁটতে পারছিলেন না। অথচ এদিকে তার আরও এক ঘন্টার পথ বাকি। অন্যদিকে তেষ্টার কারণে তার মনও ছিল বিশৃঙ্খল। একটু জল খাওয়ার কথাও তিনি গুছিয়ে বলতে পারছিলেন না। আর এ জন্যই জল পান করা নিয়ে তাকে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

প্রশ্ন ঘ. মনে কর এই পথিকের সঙ্গে তুমি কথা বলছ। তোমাদের দুজনের কথোপকথন কেমন হতে পারে তা নিজের ভাষায় লেখ।
উত্তর :
পথিক : একটু জল পাই কোথায় বলতে পার?
আমি : আপনি কি খাবার জলের কথা বলছেন?
পথিক : হ্যাঁ। সেই সকাল থেকে হেঁটে আসছি বড্ড তেষ্টা পেয়েছে।
আমি : আপনি বাড়ির ভেতরে আসুন, আমি আপনাকে জল দিচ্ছি।
পথিক : আসছি। (পথিক বাড়ির ভেতরে এলেন এবং জল পান করলেন)।
আমি : আরেক গ্লাস জল দেব?
পথিক : না না বাবা। এতেই হবে। জলটা পান করে বড্ড শান্তি পেলাম। বেঁচে থাক বাবা।
আমি : আবার আসবেন। (পথিকের প্রস্থান)

প্রশ্ন ঙ. পথিককে ঝুড়িওয়ালা কত রকম জলের কথা শুনিয়েছিল? নামগুলো লেখ।
উত্তর :
পথিককে ঝুড়িওয়ালা পাঁচ রকম জলের কথা শুনিয়েছিল। যথা: কুয়োর জল, নদীর জল, পুকুলের জল, কলের জল, মামাবাড়ির জল।

প্রশ্ন চ. তুমি তোমার সহপাঠীর সাথে আলোচনা করে ইচ্ছেমতো একটি নাটিকা লেখ।
উত্তর :
তুমি তোমার সহপাঠীর সাথে আলোচনা করে একটি নাটিকা লেখার চেষ্টা কর। এক্ষেত্রে তোমার বাংলা বিষয়ের শিক্ষকের পরামর্শ নিতে পার।

৫. ঠিক উত্তরটিতে টিক (√) চিহ্ন দিই।
ক. অবাক জলপান কোন ধরনের রচনা?
১. নাটিকা √
২. ছোটগল্প
৩. প্রবন্ধ
৪. উপন্যাস
খ. পথিক ঝুড়িওয়ালার কাছে কী চেয়েছিল?
১. কাঁচা আম
২. জল √
৩. জলপাই
৪. পাকা আম
গ. কুকুরে কামড়ালে মামা কোন রোগের কথা বলেছিল?
১. ডিপথেরিয়া
২. আমাশয়
৪. টাইফয়েড
৩. জলাতঙ্ক √
ঘ. পথিক কয়জনের কাছে খাবার জল চেয়েছিল?
১. ৪ জন
২. ৩ জন √
৩. ২ জন
৪. ৫ জন
ঙ. বৃদ্ধ পথিককে কয় ধরনের জলের কথা বলতে চেয়েছিল?
১. পঁচিশ √
২. ত্রিশ
৩. দশ
৪. সাতাশ
চ. পথিক শেষ পর্যন্ত কার কাছ থেকে খাবার জল পেয়েছিল?
১. বালক
২. মামা √
৩. ঝুড়িওয়ালা
৪. বৃদ্ধ
ছ. নাটিকাটিতে বিজ্ঞানীর চরিত্রে কাকে দেখানো হয়েছে?
১. ঝুড়িওয়ালা
২. বৃদ্ধ
৩. বালক
৪. মামা √

৬. কর্ম-অনুশীলন।
শিক্ষকের সহায়তায় অবাক জলপান নাটিকাটি শ্রেণিতে ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করি।
উত্তর: শ্রেণিশিক্ষকের সহায়তায় অবাক জলপান নাটিকাটি ধারবাহিকভাবে অভিনয় কর।

Gravatar Image
StudyOurs: Your Gateway to Collaborative Learning and Growth.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *