(বিজ্ঞান) ৫ম: আমাদের পরিবেশ অধ্যায়ের রচনামূলক প্রশ্নোত্তর

আমাদের পরিবেশ হচ্ছে ৫ম শ্রেণীর প্রাথমিক বিজ্ঞান বই এর ১ম অধ্যায়। আমাদের পরিবেশ অধ্যায় থেকে বাছাইকৃত সেরা রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

আমাদের পরিবেশ

প্রশ্ন-১. বীজের বিস্তরণ কী? খাদ্য জাল ও খাদ্য শৃঙ্খলের মধ্যে পার্থক্য কী? পরাগায়নের দুইটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর : বীজের বিস্তরণ হলো মাতৃউদ্ভিদ থেকে বিভিন্ন স্থানে বীজের ছড়িয়ে পড়া।
খাদ্য জাল ও খাদ্য শৃঙ্খলের মধ্যে পার্থক্য হলো- খাদ্য জাল একটি পরিবেশে বিদ্যমান বিভিন্ন খাদ্য শৃঙ্খলের মধ্যে সম্পর্ক প্রকাশ করে। অপরদিকে খাদ্য শৃঙ্খল একটি পরিবেশের উদ্ভিদ থেকে প্রাণীতে শক্তি প্রবাহের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া প্রকাশ করে।
পরাগায়নের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো— i. উদ্ভিদের বীজ সৃষ্টি হয়। ii. বীজের বিস্তরণ ঘটে।

প্রশ্ন-২. জীব কীভাবে বায়ুর উপর নির্ভরশীল তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: বায়ুতে বিদ্যমান কার্বন ডাইঅক্সাইড ও অক্সিজেন গ্যাস উদ্ভিদ এবং প্রাণীর জীবন ধারণের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।

উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরির জন্য বায়ুতে বিদ্যমান কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস ব্যবহার করে এবং বায়ুতে অক্সিজেন গ্যাস ত্যাগ করে। আবার মানুষসহ সকল প্রাণী শ্বাসকার্যের জন্য বায়ুতে বিদ্যমান এই অক্সিজেন গ্যাস গ্রহণ করে এবং বায়ুতে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস ত্যাগ করে।
সুতরাং, বায়ু ছাড়া কোনো উদ্ভিদ ও প্রাণী বাঁচতে পারে না। তাই বলা যায় জীব তার জীবনধারণের জন্য বায়ুর উপর নির্ভরশীল।

প্রশ্ন-৩. তোমার ঘরের ভেতরে রাখা গাছটি মারা যাচ্ছে। তোমার বন্ধুরা গাছটিকে জানালার পাশে নিয়ে রাখার পরামর্শ দিল। কেন?
উত্তর : ঘরের ভেতরে থাকায় গাছটি বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সূর্যের আলো পাচ্ছিল না। সূর্যের আলোর অভাবে গাছটি সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় খাদ্য তৈরি করতে পারছিল না বলে খাদ্যের অভাবে গাছটি মারা যাচ্ছিল।
এমতাবস্থায় গাছটিকে জানালার পাশে রাখলে তা পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পাবে। এই সূর্যের আলো ব্যবহার করে সে নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করতে পারবে। ফলে গাছটির বৃদ্ধি স্বাভাবিক হবে এবং গাছটি সতেজ থাকবে।

প্রশ্ন-৪. প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন এমন দুইটি জড় বস্তুর নাম লেখো। কোন কোন বিষয়ে উদ্ভিদ জড়ের উপর নির্ভরশীল সে সম্পর্কে চারটি বাক্য লেখো।
উত্তর : প্রাণী বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় দুইটি জড় বস্তুর নাম হলো- i. বায়ু ও ii. পানি।
নিচে জড় বস্তুর উপর উদ্ভিদের নির্ভরশীলতা বিষয় চারটি বাক্যে দেওয়া দেয়া হলো-

  • খাদ্য তৈরিতে উদ্ভিদ সূর্যের আলো, পানি ও বায়ু ব্যবহার করে।
  • আবাসস্থলের জন্য উদ্ভিদ মাটির উপর নির্ভরশীল।
  • উদ্ভিদ শ্বসনে বায়ু ব্যবহার করে।
  • আবার কিছু কিছু জলজ উদ্ভিদ আবাসস্থলের জন্য পানির উপর নির্ভরশীল।

প্রশ্ন-৫. জীবের দুইটি বৈশিষ্ট্য লেখো। মানুষ কীভাবে উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল এ সম্পর্কে তিনটি বাক্য লেখো।
উত্তর : জীবের দুইটি বৈশিষ্ট্য হলো-
i. জীব খাদ্য গ্রহণ করে। ii. জীব বংশবৃদ্ধি করে।
মানুষ যেভাবে উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল তা হলো-
উদ্ভিদের ত্যাগ করা অক্সিজেন মানুষ শ্বাস গ্রহণের সময় ব্যবহার করে। উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ, যেমন- কাণ্ড, শাখা ও ফলমূল মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। মানুষ বাসস্থান তৈরিতে বিভিন্ন উদ্ভিদ ব্যবহার করে।

প্রশ্ন-৬. বাস্তুসংস্থান কী? উদ্ভিদ কীভাবে প্রাণীর উপর নির্ভরশীল —এ সম্পর্কে চারটি বাক্য লেখো।
উত্তর : কোনো স্থানের সকল জীব ও জড় এবং তাদের মধ্যকার পারস্পরিক ক্রিয়াই হলো ঐ স্থানের বাস্তুসংস্থান। উদ্ভিদ কীভাবে প্রাণীর উপর নির্ভরশীল সে সম্পর্কে চারটি বাক্য-
i. উদ্ভিদ তার খাদ্য তৈরি, বৃদ্ধি, পরাগায়ন ও বীজের বিস্তরণের জন্য প্রাণীর উপর নির্ভরশীল।
ii. উদ্ভিদ খাদ্য তৈরির জন্য প্রাণীর ত্যাগ করা কার্বন ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করে।
iii. প্রাণীর মৃতদেহ পচে যে প্রাকৃতিক সারে পরিণত হয় তা পুষ্টি হিসেবে ব্যবহার করে উদ্ভিদ বেড়ে ওঠে।
iv. পরাগায়নের মাধ্যমে নতুন উদ্ভিদ জন্মানোর কাজে বিভিন্ন প্রাণী, যেমন— পাখি, মৌমাছি ইত্যাদি সাহায্য করে।

প্রশ্ন-৭. খাদ্য শৃঙ্খল কী? কীভাবে খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে সৌরশক্তি জীবে সঞ্চালিত হয় তা চারটি বাক্যে লেখো।
উত্তর: বাস্তুসংস্থানে উদ্ভিদ থেকে প্রাণীতে শক্তি প্রবাহের ধারাবাহিক প্রক্রিয়াই হলো খাদ্য শৃঙ্খল।
খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে যেভাবে সৌরশক্তি জীবে সঞ্চালিত হয় তা বাক্যে লেখা হলো-
উদ্ভিদ সূর্যের আলো ব্যবহার করে নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করে। পোকামাকড় এই উদ্ভিদ খেয়ে বেঁচে থাকে এবং ব্যাঙ, পোকামাকড়কে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। একইভাবে সাপ ব্যাঙ পায় এবং ঈগল সাপ খায়। আর এভাবে খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে সৌরশক্তি জীবে সঞ্চালিত হয়।

প্রশ্ন-৮. খাদ্য শৃঙ্খল কী থেকে শুরু হয়? কীভাবে ব্যাঙ খাদক এবং খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয় তা খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে লেখো।
উত্তর: সবুজ উদ্ভিদ থেকে খাদ্য শৃঙ্খল শুরু হয়।
খাদ্যশৃঙ্খলে ব্যাঙ খাদক ও খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এমন একটি খাদ্য শৃঙ্খল হলো— ঘাসফড়িং → ব্যাঙ → সাপ।
এই খাদ্য শৃঙ্খলটিতে ব্যাঙ যখন ঘাসফড়িং খায় তখন খাদক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আবার ব্যাঙকে যখন সাপ খায় তখন ব্যাঙ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন-৯. খাদ্য জাল কাকে বলে? ব্যাঙ, সাপ, ঘাসফড়িং ও ঘাস দিয়ে সঠিক খাদ্য শৃঙ্খল তৈরি করো। খাদ্য শৃঙ্খলটির সর্বোচ্চ খাদক কোনটি?
উত্তর: একাধিক খাদ্য শৃঙ্খল একত্রিত হয়ে যে জাল তৈরি করে তাকে খাদ্য জাল বলে।
ব্যাঙ, সাপ, ঘাসফড়িং ও ঘাস দিয়ে গঠিত খাদ্য শৃঙ্খলটি হলো—
ঘাস → ঘাসফড়িং → ব্যাঙ সাপ।
খাদ্য শৃঙ্খলটির সর্বোচ্চ খাদক হলো সাপ।

Leave a Comment