শিক্ষাগুরুর মর্যাদা

(বাংলা)পঞ্চম: শিক্ষাগুরুর মর্যাদা কবিতার প্রশ্ন উত্তর

Posted on

শিক্ষাগুরুর মর্যাদা হচ্ছে পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা বই এর কবিতা। শিক্ষাগুরুর মর্যাদা কবিতাটির অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

এক নজরে শিক্ষাগুরুর মর্যাদা কবিতার মূলকথাটি জেনে নিই—
‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায় শিক্ষকের মর্যাদা ও ছাত্রের নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজীয়তার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। দিল্লির বাদশাহ আলমগীর একদিন দেখেন শাহজাদা তার শিক্ষকের পায়ে পানি ঢেলে দিচ্ছে আর শিক্ষক নিজ হাতে পা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করছেন। এ দৃশ্য দেখে তিনি মর্মাহত হলেন। পরদিন সকালে বাদশাহ্ শিক্ষককে তাঁর কেল্লায় ডেকে পাঠালেন। ডাক পেয়ে শিক্ষাগুরু প্রথমে এই ভেবে ভয় পান যে শাহজাদার হাতে ঢালা পানি দিয়ে তিনি পা ধুয়েছেন বলে বাদশাহ হয়তো অখুশি হয়ে তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য ডেকে পাঠিয়েছেন পরক্ষণে শিক্ষকের মনে আত্মসম্মান বোধ জেগে ওঠে।

তিনি সিদ্ধান্ত নেন বাদশাহকে শিক্ষাগরুর মর্যাদা কী তা তাঁকে ব্যাখ্যা করে বোঝাবেন। কিন্তু দরবারে গেলে বাদশাহ তাঁকে বলেন শাহজাদা শুধু পানি না ঢেলে যদি নিজ হাতে পা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে দিত তবে তিনি বেশি খুশি হতেন এবং পুত্র যে নৈতিক শিক্ষা লাভ করছে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতেন। কারণ শিক্ষকের মর্যাদা সবার উপরে। যে শিক্ষাগুরুর মর্যাদা দিতে জানে না, সে সমাজ ও দেশের উপযোগী মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে না। এ কবিতায় শিক্ষাগুরুর মর্যাদা দান করে বাদশাহ আলমগীর মহানুভতার পরিচয় দিয়েছেন, যা আমাদের সবার জন্য অনুকরণীয়।

শিক্ষাগুরুর মর্যাদা কবিতার প্রশ্ন উত্তর

১. শিক্ষাগুরুর মর্যাদা কবিতার মূলভাব জেনে নিই।
‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায় শিক্ষকের মর্যাদার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। কবিতায় শিক্ষক একজন সাধারণ মানুষ হওয়া সত্ত্বেও বাদশাহ আলমগীরের ছেলের দ্বারা পায়ে পানি ঢেলে নিয়েছিলেন। কিন্তু বাদশাহ আলমগীর এতে সন্তুষ্ট ছিলেন না। বাদশাহ আলমগীর প্রত্যাশা করেছিলেন তাঁর সন্তান পানি ঢেলে নিজ হাতে শিক্ষকের পা ধুয়ে দেবেন। তবেই না তাঁর সন্তান নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও দেশপ্রেম নিয়ে দেশের একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে।

বাদশাহ আলমগীর উপলব্ধি করেছিলেন, যে ছাত্র তাঁর শিক্ষককে যথাযথ মর্যাদা দিতে জানে না, শিক্ষকের সেবা করতে জানে না, সে কখনো পরিবার, সমাজ ও দেশের উপযোগী মানুষ হিসাবে গড়ে উঠতে পারে না।
শিক্ষাগুরুর মর্যাদা কবিতার মাধ্যমে আমরা উপলব্ধি করতে পারি, শিক্ষা হলো একটি জাতির মেরুদণ্ড, আর শিক্ষক হলেন কাণ্ডারি। তিল তিল করে নীরবে নিভৃতে শিক্ষক তাঁর আদর্শ দ্বারা জাতীয় আকাঙ্ক্ষার উপযোগী ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তোলেন। সমাজ ও দেশের জন্য শিক্ষকের অবদান অপরিসীম। তাই সমাজে শিক্ষকের মর্যাদা সবার উপরে।

২. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
কুমার, শাহজাদা, বারি, চরণ, শির, শাহানশাহ, প্রক্ষালন, কুর্নিশ।
উত্তর :
কুমার – রাজার ছেলে (রাজকুমার)
শাহজাদা – বাদশাহর পুত্র
বারি – পানি
চরণ – পা
শির – মাথা
শাহানশাহ – বাদশাহ, রাজাধিরাজ
প্রক্ষালন – ধোওয়া, পানি দিয়ে পরিষ্কার করা
কুর্নিশ – মাথা নত করে অভিবাদন করা।

৩. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
কুমার, বারি, চরণ, শির, শাহানশাহ, কুর্নিশ
ক. পিতার ……. হাত রেখে পুত্র দোয়া চাইল।
খ. বর্ষাকালে প্রবল …….. বর্ষণ হয়।
গ. আগের দিনে হাতি-ঘোড়া চড়ে …….. শিকারে যেতেন।
ঘ. উজির বাদশাহকে …….. করলেন।
ঙ. …….. আলমগীর ছিলেন একজন মহৎপ্রাণ শাসক।
চ. অন্যায়ের কাছে কখনো …….. নত করব না।

উত্তর :
ক. পিতার চরণে হাত রেখে পুত্র দোয়া চাইল।
খ. বর্ষাকালে প্রবল বারি বর্ষণ হয়।
গ. আগের দিনে হাতি-ঘোড়া চড়ে কুমার শিকারে যেতেন।
ঘ. উজির বাদশাহকে কুর্নিশ করলেন।
ঙ. শাহানশাহ আলমগীর ছিলেন একজন মহৎপ্রাণ শাসক।
চ. অ্যায়ের কাছে কখনো শির নত করব না।

আরো পড়োমাটির নিচে যে শহর গল্পের প্রশ্ন উত্তর
আরো পড়োঘাসফুল কবিতার প্রশ্ন উত্তর

৪. প্রশ্নগুলোর উত্তর মুখে বলি ও লিখি।
প্রশ্ন ক. বাদশাহ আলমগীরের পুত্রকে কে পড়াতেন?
উত্তর :
বাদশাহ আলমগীরের পুত্রকে দিল্লির এক মৌলবি পড়াতেন।

প্রশ্ন খ. একদিন সকালে বাদশাহ কী দেখতে পেলেন?
উত্তর :
‘একদিন সকালে বাদশাহ দেখতে পেলেন শাহজাদা একটি পাত্র হাতে নিয়ে শিক্ষকের পায়ে পানি ঢেলে দিচ্ছে, আর শিক্ষক নিজ হাতে পা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করছেন।

প্রশ্ন গ. বাদশাহকে দেখে শিক্ষক প্রথমে কী ভাবলেন?
উত্তর :
বাদশাহকে দেখে শিক্ষক প্রথমে ভাবলেন, আজ বুঝি তার নিস্তার নেই, সব বুঝি শেষ হয়ে যাবে। কারণ তিনি শাহজাদাকে পায়ে পানি ঢালতে বলেছিলেন।

প্রশ্ন ঘ. ‘প্রাণের চেয়েও মান বড় – শিক্ষক এ কথা বললেন কেন?
উত্তর :
‘প্রাণের চেয়েও মান বড়- কথাটি দ্বারা শিক্ষক আত্মসম্মানের দিকটি বোঝাতে চেয়েছেন। কেননা একজন মানুষের জীবনে মান-সম্মান সবচেয়ে বড় সম্পদ। একজন শিক্ষাগুরুর কাছে জীবনের চেয়েও আত্মসম্মান মূল্যবান। এ কথা বোঝাতেই শিক্ষক উক্ত কথাটি বলেছেন।

প্রশ্ন ঙ. বাদশাহ আলমগীর শিক্ষককে প্রথমে কী বললেন?
উত্তর :
বাদশাহ আলমগীর প্রথমে শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলেন যে, শাহজাদা তাঁর কাছে আদব-কায়দা-সৌজন্য কিছু শিখেছে কিনা? বরং শিখেছে বেআদবি আর গুরুজনের প্রতি অবহেলা।

প্রশ্ন চ. শিক্ষক কী বলে বাদশাহর সুনাম করলেন?
উত্তর :
শিক্ষক এই বলে বাদাশাহ আলমগীরের সুনাম করলেন যে, তাঁর উদারতা ও মহানুভবতার জন্য আজ থেকে শিক্ষাগুরুর সর্বোচ্চ মর্যাদা রক্ষিত হলো।

৫. নিচের কথাগুলো বুঝে নিই।
শিক্ষকে ডাকি বাদশাহ কহেন, “শুনুন জনাব তবে,
পুত্র আমার আপনার কাছে
সৌজন্য কি কিছু শিখিয়াছে?
বরং শিখেছে বেয়াদবি আর গুরুজনে অবহেলা,
নহিলে সেদিন দেখিলাম যাহা স্বয়ং সকাল বেলা।”
উত্তর : বাদশা আলমগীর শিক্ষককে ডেকে তাঁর পুত্রের শিক্ষা সম্পর্কে জানতে চাইলেন। তাঁর পুত্র ভালো কিছু কি শিখেছে? কারণ তাঁর পুত্রের বেআদবি এবং গুরুজনের প্রতি অবহেলা তিনি সেদিন সকালে নিজের চোখেই দেখেছেন।

৬. ক্ষ, স্ব, স্ম, স্ত্র— প্রত্যেকটি যুক্তবর্ণ ব্যবহার করে তিনটি করে শব্দ লিখি। যেমন—

CamScanner 07 26 2023 18.33 1

৭. বিপরীত শব্দগুলো ঠিকমতো সাজাই।

CamScanner 07 26 2023 18.33 2
Gravatar Image
StudyOurs: Your Gateway to Collaborative Learning and Growth.