৫ম পরিচ্ছেদ: নাটক

(বাংলা) ৬ষ্ঠ: সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি (৫ম পরিচ্ছেদ: নাটক) – সমাধান

Posted on

সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি হচ্ছে ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা বই এর ৬ষ্ঠ অধ্যায়। সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি অধ্যায়ের ৫ম পরিচ্ছেদ: নাটক এর অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

নাটক
মঞ্চে অভিনেতা-অভিনেত্রীর সাহায্যে মানবজীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা যখন সংলাপের মাধ্যমে দর্শকের সামনে উপস্থাপিত হয়, তখন তাকে নাটক বলে। অন্যকথায় রঙ্গমঞ্চে অভিনয়ের উপযোগী করে যে সাহিত্য রচিত হয়, তাকে নাটক বলে।

নাটকের বৈশিষ্ট্য

  • নাটক সাধারণত গদ্যে লেখা হয়।
  • নাটকে একটি কাহিনি থাকে।
  • সংলাপ থাকে।
  • সংলাপ বলার জন্য চরিত্র থাকে।
  • সংলাপ বলার মাধ্যমে নাটকের কাহিনি এগিয়ে যায়।
  • অভিনয়ের উপযোগী হতে হয়।
  • নাটক কয়েকটি দৃশ্যে বিভক্ত থাকে।
  • একটি আদর্শ নাটকে পাঁচটি অঙ্ক থাকে।
  • নাটক দেখা যাবে এবং শোনা যায়।
  • নাটক অবশ্যই মঞ্চস্থ হতে হয়।

নাটকের উপাদান
নাটকের প্রধান উপাদান চারটি। যথা:
১. কাহিনি
২. চরিত্র
৩. সংলাপ
৪. ঘটনা-সমাবেশ

নাটকের প্রকারভেদ
নাটককে বেশ কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
১. ট্র্যাজেডি নাটক
২. ক্ল্যাসিকাল নাটক
৩. পৌরাণিক নাটক
৪. ঐতিহাসিক নাটক
৫. সামাজিক নাটক
৬. রাজনৈতিক নাটক
৭. রোমান্টিক নাটক
৮. কমেডি নাটক
৯. প্রহসন
১০. লোকনাট্য
১১. গীতিনাট্য
১২. নৃত্যনাট্য
১৩. পথনাটক
১৪. বাস্তবধর্মী নাটক
১৫. রূপক নাটক
১৬. সাংকেতিক নাটক

নাটক রচনায় করণীয়

  • প্রথমে নাটক রচনার বিষয় নির্ধারণ করতে হবে।
  • নাটকের চরিত্রগুলোর মুখে সংলাপ থাকতে হবে।
  • নাটক রচনার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন তা মঞ্চে অভিনয় করার উপযোগী হয়।
  • নাটকে কাহিনি থাকতে হবে।
  • একাধিক অঙ্কে ও দৃশ্যে ভাগ করে লিখতে হবে।
  • নাটক একই সঙ্গে দেখা ও শোনার বিষয়। ফলে নাটক রচনার সময় এই ব্যাপারটি খেয়াল রাখতে হবে।

মঞ্চ
বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনের জন্য তৈরি উঁচু স্থানকে মঞ্চ বলে। মঞ্চে বক্তৃতা, নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটক প্রভৃতি নানান রকম উপস্থাপনা করা হয়।

অভিনয়
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার জন্য যে কৃত্রিম ভাবপ্রকাশ করা হয় তাকে অভিনয় বলে। অন্যভাবে মঞ্চে নাটকের বিভিন্ন চরিত্র উপস্থানই অভিনয়।

অভিনেতা
যিনি অভিনয় করেন তাঁকে অভিনেতা বলে। আমরা যখন নাটক দেখি সেখানে বিভিন্ন চরিত্রে যাঁদের ভূমিকা পালন করতে দেখি তাঁকে অভিনেতা বলে।

অভিনেতা
যিনি অভিনয় করেন তাঁকে অভিনেতা বলে। আমরা যখন নাটক দেখি সেখানে বিভিন্ন চরিত্রে যাঁদের ভূমিকা পালন করতে দেখি তাঁকে অভিনেতা বলে

৫ম পরিচ্ছেদ: নাটক

১. ‘সুখী মানুষ’ নাটকটির কাহিনি প্রথমে গল্পের মতো করে বলো, তারপর লেখো।
নির্দেশনা:

‘সুখী মানুষ’ নাটকটি মনোযোগ দিয়ে পড়ো। এবার নাটকের কাহিনি নিজের ভাষায় বলো । যা বলেছ তা খাতায় লেখো।
নমুনা উত্তর : সুবর্ণপুরের মোড়ল খুবই কঠিন হৃদয়ের অধিকারী, অত্যাচারী ব্যক্তি। সে এখানকার মানুষের জীবনকে জ্বালিয়ে দুর্বিষহ করে তুলেছে। মানুষের ধন-সম্পদ লুট করে সে ধনী হয়েছে। সে তার ভাই হাসুকেও রেহাই দেয়নি। তার মুরগি পর্যন্ত জোর করে জবাই করে খেয়েছে। কিন্তু এখন মোড়ল খুবই অসুখী। তার জীবনে কোনো শান্তি নেই। আসলে অন্যের মনে দুঃখ দিলে কোনোদিন সুখ পাওয়া যায় না। তার হাড়-মড়মড় রোগ কোনো কিছুতেই ভালো হচ্ছে না।

রোগের ঘোরে সে বিলাপ করতে থাকে। সে বলে, মানুষকে সে কষ্ট দেবে না, জবরদস্তি করবে না। শুধু তাকে ভালো করে দিতে আকুতি জানায়। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কবিরাজ একটা উপায় বের করলেন। তিনি মোড়লের বিশ্বাসী চাকর রহমত আলী ও ভাই হাসুকে রাতের মধ্যেই একজন সুখী মানুষের ফতুয়া অর্থাৎ জামা খুঁজে আনতে বললেন। সুখী মানুষের জামা মোড়লের গায়ে দিলেই নাকি মোড়লের হাড়-মড়মড় রোগ ভালো হবে। হাসু ও রহমত পাঁচ গ্রাম খুঁজেও একজন সুখী মানুষ পায় না। সকলেরই কিছু না কিছু দুঃখ ছিল। এদিকে রাত বারোটা বাজে। তারা বনের ধারে একটা কুঁড়েঘরের সামনে বসে গালে হাত দিয়ে ভাবতে থাকে। মোড়ল তাহলে এবার মরে যাবে!

হঠাৎ কুঁড়েঘরের মধ্যে একজন লোকের কথা শুনতে পায় তারা। রহমত লোকটিকে ভূত ভেবে ভয় পায়। হাসু লোকটিকে ডাকে। লোকটির সঙ্গে তারা কথা বলে জানতে পারে, লোকটি খুবই সুখী। সে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ দাবি করে। লোকটি প্রতিদিন বনে কাঠ কাটে। সেগুলো বাজারে বিক্রি করে যা পায়, তা দিয়ে চাল-ডাল কিনে খেয়েদেয়ে মনের সুখে গান গাইতে গাইতে ঘুমিয়ে পড়ে। তার কাছে চুরি যাওয়ার মতো কোনো জিনিসই নেই। তাই তার কোনো চোরের ভয়ও নেই। তারা লোকটার কাছে একটা জামা চায়। বিনিময়ে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত দিতে চায়। কিন্তু লোকটার কাছে কোনো প্রকার জামা বা তার ঘরে কিছুই ছিল না, এজন্যই সে সুখী মানুষ।

২. ‘সুখী মানুষ’ নাটকের সঙ্গে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।
নির্দেশনা :
সুখী মানুষ’ নাটকটি মনোযোগ দিয়ে পড়ো। নাটকের কোনো ঘটনা বা চরিত্রের সঙ্গে তোমার চারপাশের দেখা কোনো ঘটনা বা চরিত্রের মিল পাও কি না তা খুঁজে দেখো। কী মিল পেয়েছ তা খাতায় লেখো।
নমুনা উত্তর : ‘সুখী মানুষ’ নাটকের ঘটনার সঙ্গে আমাদের জীবনের চারপাশে অনেক কিছুর মিল পাওয়া যায়। সমাজে উঁচু-নিচু ভেদাভেদ চিরকালীন। দুর্বলদের প্রতি সবলরা, ভৃত্যের প্রতি মালিক, গরিবের প্রতি ধনী, জমিদার তার প্রজাদের প্রতি জুলুম, অত্যাচার করে আসছে। অসহায়, মজলুম মানুষগুলো ন্যূনতম প্রতিবাদও করার সাহস পায় না। সামান্য প্রতিবাদের সীমাহীন অত্যাচার সহ্য করতে হয়।

নাটকেও মোড়ল জোর-জবরদস্তি করে মানুষের সম্পদ লুট করে, অত্যাচার করে ধনী হয়েছে। আমাদের সমাজের কিছু জমিদার ও এমনিভাবেই সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলত। এখনো অনেক অসহায় মানুষদের সঙ্গে এমন নিষ্ঠুর আচরণ করতে দেখি আমরা, সেদিন একজন রিকশাওয়ালাকে সামান্য পাচটা টাকার জন্য একটা লোক কী নির্মমভাবে মেরেছিল। অসহায় রিকশাওয়ালা হাউমাউ করে কেঁদেছিল। শুনেছি লোকটা নাকি এলাকার চেয়ারম্যানের আত্মীয়। তাই কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে আসেনি। এমনি আরও ঘটনা হরহামেশাই আমাদের চারপাশে ঘটে থাকে।

আরো পড়োসাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি ৩য় পরিচ্ছেদ
আরো পড়োসাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি ৪র্থ পরিচ্ছেদ

৩. নাটকের সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খোজার মাধ্যমে বৈশিষ্ট্যগুলো বোঝার চেষ্টা করো।
নির্দেশনা :
‘সুখী মানুষ’ নাটকটি মনোযোগ দিয়ে পড়ো। ছকের কোন কোন বৈশিষ্ট্য নাটকের সঙ্গে মিলছে তাতে হ্যাঁ বা না ঘরে টিক চিহ্ন দাও।
নমুনা উত্তর :

CamScanner 06 20 2023 13.21 3
Gravatar Image
StudyOurs: Your Gateway to Collaborative Learning and Growth.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *