হংকং টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড গড়ল, ও পাকিস্তান পেলো নিজেদের সবচেয়ে বড় জয় পেল।
পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের শুরুটাও একদম সাদামাটা। তবে শেষ দিকের ঝড়ে দলটি পেল বড় পুঁজি। পরে পাকিস্তানের বোলিংয়ের সামনেই দাড়াতেই পারে নি হংকং এর ব্যাটসম্যানরা। ১৫৫ রানের বিশাল জয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে উঠল পাকিস্তান।
শক্তি ও সামর্থে পাকিস্তান ও হংকং আকাশ পাতাল তফাত। মাঠের লড়াইয়েও হলো তেমন
শারজাহতে ১৯৩ রান করে, হংকংকে স্রেফ ৩৮ রানে গুটিয়ে দেয় বাবর, রিজওয়ানের দল।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রানের দিক থেকে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় জয় এটি।
টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় হংকং। ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ১০ ওভারে ৬৪ রান করা পাকিস্তান পরের ১০ ওভারে করে পাহার সমান রান ১৯৩ রান।
পাকিস্তানের হয়ে হাফ সেঞ্চুরি করেন দুই জন। রিজওয়ান অপরাজিত ৭৮, ফখর জামান করেন ৫৩ রান। শেষ দিকে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৫ ছক্কায় অপরাজিত ৩৫ রান করেন খুশদিল শাহ।
জবাবে হংকং এর কোনো ব্যাটসম্যান করতে পারেন নি দুই অংকের রান। পাকিস্তানের বোলারদের কেউই দেন নি দুই সংখার রান।
৮ রানে ৪ উইকেট নেন লেগ স্পিনার শাদাব খান। বাঁহাতি স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজ ৫ রানে নেন ৩টি উইকেট। ভারত পাকিস্তান ম্যাচের নায়ক নাসিম শাহ ২ উইকেট নেন ৭ রান দিয়ে।
এশিয়া কাপ ২০২২ এ দুই দলই তাদের প্রথম ম্যাচে হেরেছিল ভারতের বিপক্ষে।
টি-টোয়েন্টিতে হংকংয়ের বিপক্ষে প্রথম দেখায় প্রথম দুই ওভারে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৭ রান। তৃতীয় ওভারে অফ স্পিনার এহসান খানকে একটি চার মারার পরের বলেই বোলারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সজঘরে ফিরেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম।
রিজওয়ান ও ফখর এরপর শতরানের জুটি করে এগিয়ে নেন দলকে। শুরুতে দুজনই সাদামাটা থাকলেও পরে বাড়ান রানের গতি। ফখর জামান ১৮ রানে বেঁচে যান আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নিয়ে।
৪২ বলে রিজওয়ান ১৪তম টি-টোয়েন্টি হাফ সেঞ্চুরি করেন । ৩৮ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন ফখর জামান। ২য় উইকেট জুটি শতরান স্পর্শ করে ৭৩ বলে।
হাফ সেঞ্চুরির পরপরই ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ফখর জামান। ৮১ বলে ১১৬ রানের জুটি ভেঙে যায় এখানেই। ৩ চার ও ২ ছক্কায় গড়েন ৫৩ রানের ইনিংস।
শেষ ওভারে তিনি চারটি ছক্কা মারেন খুশদিল।
অপরাজিত থাকা রিজওয়ানের ৭৮ রানের ইনিংস সাজানো হয়েছিলো ৬ চার ও এক ছক্কায়।
৩য় উইকেট জুটিতে ৬৪ রান আসে ২৩ বলে। শেষ পাঁচ ওভারে পাকিস্তান তুলে নেয় ৭৭ রান।
হংকং রান তাড়ায় নেমে শুরু থেকে নিয়মিত উইকেট হারায়। টি-টোয়েন্টি অভিষেকে ভারতের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করে সবার মনে জায়গা করে নেওয়া নাসিম এবার নিজের দ্বিতীয় ওভারে ধরেন জোড়া শিকার। তিনি সাজঘরে পাঠান নিজাকাত খান ও বাবর হায়াতকে। হংকং অধিনায়ক নিজাকাতের ৮ রানই শেষ পর্যন্ত হয়ে থাকে ইনিংসের সর্বোচ্চ!
পঞ্চম ওভারে পেসার শাহনওয়াজ দাহানির বলে খুশদিলের দারুণ ক্যাচে বিদায় নেন ইয়াসিম।
এরপর শুরু হয় দুই স্পিনার শাদাব ও নওয়াজের ‘শো’। প্রথমবার আক্রমণে এসে নিজের দ্বিতীয় বলে আইজাজ খানকে বোল্ড করেন শাদাব। প্রথম ওভারে নেওয়াজ তুলে নেন ২ উইকেট।
শাদাব ও নেওয়াজ বাকি চারটি উইকেটও ভাগ করে নেন নিজেদের মধ্যে।
অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন অবশ্য রিজওয়ান।
সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে শনিবার মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। রোববার আবার ভারত-পাকিস্তান হাই ভোল্টেজ ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৯৩/২ (রিজওয়ান ৭৮, বাবর ৯, ফখর ৫৩, খুশদিল ৩৫; হারুন ২-০-১৪-০, আয়ুশ ৩-০-৩৩-০, এহসান ৪-০-২৮-২, আইজাজ ৩-০-৪৪-০, ইয়াসিম ৪-০-৩৬-০, গজনফার ৪-০-৩৮-০)
হংকং: ১০.৪ ওভারে ৩৮ (নিজাকাত ৮, ইয়াসিম ২, বাবর ০, কিঞ্চিৎ ৬, আইজাজ ১, ম্যাককেনি ৪, জিশান ৩, এহসান ০*, আয়ুশ ১, গজনফার ০; নাসিম ২-০-৭-২, দাহানি ২-১-৭-১, রউফ ১-০-৬-০, শাদাব ২.৪-০-৮-৪, নওয়াজ ২-০-৫-৩)
ফল: পাকিস্তান ১৫৫ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ রিজওয়ান
লিখেছেন,
অসীম দেব।
কন্টেন্ট ক্রিয়েটর।
স্পোর্টস রাইটার, স্টাডিআওয়ার।