অভাগীর স্বর্গ হচ্ছে মাধ্যমিক অর্থাৎ নবম-দশম শ্রেণীর বাংলা ১ম পত্র বই এর শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর গল্প। অভাগীর স্বর্গ গল্প থেকে বাছাইকৃত সেরা ৫টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
অভাগীর স্বর্গ গল্পের সৃজনশীল
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে পুরো বিশ্বই যেন উলট-পালট হয়ে যাচ্ছে। তাই বিশ্বের অনেক দেশেই নানা হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটছে, যার কোনো কোনোটি যথেষ্ট অমানবিকও বটে। এমনই একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে ভারতের আলিগড়ে। স্থানীয় সূত্রে খবর, আলিগড়ের নুমাইশ ময়দানের চা-হেলিংয়ের বাসিন্দা ছিলেন বছর ৪৫ এর সঞ্জয় কুমার। পেশা চা বিক্রেতা হলেও বেশ কিছুদিন ধরে যক্ষ্মা রোগে ভুগছিলেন তিনি। আর সামাজিক দূরত্ব রক্ষার অজুহাতে তার মৃত্যুর পর সৎকারের কাজে এগিয়ে আসেনি কোনো প্রতিবেশী, এমনকি কোনো স্বজনও।
ক. গ্রামে নাড়ি দেখতে জানত কে?
খ. কাঙালীর মায়ের নাম অভাগী রাখা হয়েছিল কেন?
গ. উদ্দীপকের সঞ্জয় কুমারের সাথে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য মেলে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের মূলভাবকে কতটা প্রতিফলিত করতে পেরেছে? বিশ্লেষণ করে।
১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. গ্রামে নাড়ি দেখতে জানত ঈশ্বর নাপিত।
খ. কাঙ্গালীর মায়ের জন্মের সময় তার মা মারা গিয়েছিল বলে বাবা রাগ করে তার নাম রেখেছিল অভাগী।
কাঙালীর মায়ের জীবনের ইতিহাস ছোটো। জন্মের সময় তার মা মারা যান। তার বাবা এই ঘটনায় মর্মাহত হন এবং পৃথিবীতে কাঙালীর মা অভাগী রূপে জন্মগ্রহণ করেছে বলে তার বাবা রাগ করে তার নাম রাখেন অভাগী। অভাগীর জন্মের পর তার মায়ের মৃত্যু হয়েছিল বলেই তার নাম অভাগী।
গ. ভাগ্য বিড়ম্বনা ও করুণ পরিণতির দিক থেকে উদ্দীপকের সঞ্জয় কুমারের সাথে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের অভাগীর সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার অভাগীর করুণ পরিণতির দিকটি ফুটে উঠেছে। জন্মের পর তার মা মারা যায়, বিয়ের কিছুকাল পর স্বামীও তাকে ছেড়ে অন্য পাড়ায় অন্য নারীর সঙ্গে ঘর বাঁধে। দারিদ্র্যের কারণে বিনা চিকিৎসায় অল্প বয়য়েই মৃত্যু হয় অভাগীর। এমনকি শেষ ইচ্ছে ছেলের হাতের আগুনটুকুও কপালে জোটে না তার।
উদ্দীপকে বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রেক্ষাপটে চা বিক্রেতা সঞ্জয় কুমারের করুণ পরিণতির দিকটি ফুটে উঠেছে। বেশ কিছুদিন ধরে যক্ষ্মায় ভুগে মারা যান তিনি। কিন্তু মহামারি করোনার আতঙ্কে তার প্রতিবেশী ও স্বজনরা শেষকৃত্যে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে বাধ্য হয়ে তার চার কন্যা বাবার লাশ কাঁধে বয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে নিয়ে যায়। অন্যদিকে, ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের অভাগীও সামন্তবাদী সমাজের নির্মমতার শিকার হয়ে শেষ ইচ্ছে হিসেবে ছেলের হাতের আগুনটুকু পায় না। অর্থাৎ আলোচ্য গল্পের অভাগী এবং উদ্দীপকের সঞ্জয় কুমার উভয়েই ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার এবং উভয়কেই দুর্ভাগ্যজনকভাবে করুণ পরিণতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এ দিক থেকে তাদের মধ্যে সাদৃশ্য প্রতীয়মান হয়।
ঘ. কেবল ভাগ্য বিড়ম্বনার দিক তুলে ধরার সূত্রে উদ্দীপকটি ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের মূলভাবকে আংশিক প্রতিফলিত করে।
‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের প্রধান চরিত্র অভাগী। আজন্ম সে ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার। দারিদ্র্যক্লিষ্ট জীবনে সে সুখের দেখা পায়নি কোনোদিনই । জন্মের পর মায়ের মৃত্যু, তাকে ছেড়ে স্বামী রসিক বাঘের চলে যাওয়া, মৃত্যুর পর ছেলের হাতের কাঙ্ক্ষিত আগুন না পাওয়া তার ভাগ্য বিড়ম্বনার দিকটিকেই নির্দেশ করে। এছাড়াও গল্পটিতে সামন্তবাদ, বর্ণবাদসহ নানা বিষয়ের অবতারণা ঘটেছে।
উদ্দীপকে করোনাকালীন সঞ্জয় কুমার নামের এক চা বিক্রেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অমানবিক এক ঘটনার কথা উত্থাপিত হয়েছে। ঐ ব্যক্তি বেশ কিছুদিন যক্ষ্মায় ভোগার পর মারা যান। কিন্তু করোনা সংক্রমণের ভয় ও আতঙ্কে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। এমনকি তার প্রতিবেশী ও স্বজনরাও এক্ষেত্রে বিমুখ হয়ে ছিল। ফলে বাধ্য হয়ে প্রথা ভেঙে তার চার মেয়েই পিতার লাশ কাঁধে তুলে নেয়। সঞ্জয় কুমারের ভাগ্য বিড়ম্বনার এই দিকটি ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পেও একইভাবে ফুটে উঠেছে।
‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে আজন্ম ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার অভাগী মৃত্যুর পূর্বে একমাত্র ছেলে কাঙালীর কাছে মুখাগ্নির আগুন কামনা করে। মৃত্যুর পর তার শেষ ইচ্ছে পূরণের জন্য রসিক বাঘ অভাগীর হাতে লাগানো বাড়ির আঙিনার গাছ কাটতে গেলে জমিদারের দারোয়ান বাধা দেয়। নিরুপায় হয়ে কাঙালী দাহের প্রয়োজনীয় কাঠের আশায় জমিদার বাড়িতে গেলে সেখান থেকে অপদস্থ হয়ে তাকে ফিরে আসতে হয়। এভাবে পুরো গল্পটি জুড়ে সামন্তবাদ ও বর্ণপ্রথার কুপ্রভাব, অভাগীর প্রতি স্বপ্নী রসিক বাঘের অবহেলা, একাকী নারীর জীবন-সংগ্রামসহ নানা বিষয় উপস্থাপিত হয়েছে। উদ্দীপকে এ গল্পের অভাগীর ভাগ্যবিড়ম্বনার দিকটি ছাড়া উল্লিখিত অন্য বিষয়ের উল্লেখ নেই। সে বিবেচনায় উদ্দীপকটি আলোচ্য গল্পের মূলভাবকে আংশিক প্রতিনিধিত্ব করে।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : চেয়ারম্যান সাহেবের বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিরাট আয়োজন। এলাকার ধনী-গরিব সবাইকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। দরিদ্র কৃষক খায়ের আলী, ছেলে রনি ও মেয়ে রেণুকে নিয়ে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বসার স্থানে ভুল করে খেতে বসেছেন। চেয়ারম্যানের স্ত্রী চিৎকার করে বললেন, ‘এসব অসভ্য ছোটোলোকদের দাওয়াত দেওয়াই ভুল হয়েছে।’ চেয়ারম্যান সাহেব স্ত্রীকে বুঝিয়ে বললেন, ‘এরা সকলেই আমার মেহমান।’ তিনি রনি ও রেণুকে আদর করলেন এবং স্ত্রীর আচরণের জন্য খয়ের আলীর নিকট দুঃখ প্রকাশ করলেন।
ক. অভাগীকে নদীর চড়ায় মাটি দিতে বলেছিল কে?
খ. মাকে বিশ্বাস করাই কাঙালীর অভ্যাস কেন?
গ. উদ্দীপকের চেয়ারম্যানের স্ত্রীর আচরণে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘সমাজের ধনী ব্যক্তিরা যদি উদ্দীপকের চেয়ারম্যানের মতো হতো তাহলে অভাগীকে বৈষম্যের শিকার হতে হতো না’ – উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. অভাগীকে নদীর চড়ায় মাটি দিতে বলেছিল ভট্টাচার্য মহাশয়।
খ. ছোটোবেলা থেকেই কাঙালী মাকে বিশ্বাস করে আসছে বলে তাকে বিশ্বাস করাই কাঙালীর অভ্যাস।
কাঙালীর একমাত্র আপনজন তার মা। ছোটোবেলা থেকেই মায়ের আদর আর মায়ের প্রতি অগাধ বিশ্বাস নিয়ে বেড়ে উঠেছে সে। তাই যত আশ্চর্যজনক কথাই হোক, মা যখন বলেছে তখন কাঙালী তা বিশ্বাস করবেই।
গ. উদ্দীপকের চেয়ারম্যানের স্ত্রীর আচরণে অভাগীর স্বর্গ গল্পের শ্রেণিবৈষম্যের দিকটি ফুটে উঠেছে।
‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে আমরা দেখতে পাই, উঁচু জাতের বাড়ির গৃহকর্ত্রীর মৃত্যুর পর সৎকার ছিল আড়ম্বরপূর্ণ। পাশাপাশি দরিদ্র নিম্নশ্রেণির অভাগীর সৎকারের কাঠের জন্য তার ছেলে কাঙালীর দুর্দশা ছিল সীমাহীন। সামন্তবাদের নির্মম রূপটি গল্পে মর্মস্পর্শীভাবে ফুটে উঠেছে।
উদ্দীপকে চেয়ারম্যানের স্ত্রীর আচরণে সামন্তবাদী মানসিকতার প্রতিফলন দেখতে পাই। দরিদ্র কৃষকের সন্তানদের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের স্থানে বসতে দিতে তার গুরুতর আপত্তি ছিল । দরিদ্র, হতভাগ্য কাঙালী আর উদ্দীপকের কৃষকের সন্তান রনি ও রেণু একই ধরনের অপমানের সম্মুখীন হয়েছে। চেয়ারম্যানের স্ত্রী এবং গল্পের জমিদার ও তার সহযোগীরা একই মানসিকতার ধারক। সামন্তবাদী মনোভাবের এই দিকটিই চেয়ারম্যানের স্ত্রী ধারণ করেছে।
ঘ. উদ্দীপকের চেয়ারম্যানের মতো উদার ও মানবিকবোধসম্পন্ন মানুষ সমাজে থাকলে নিম্নশ্রেণির লোকেরা নির্মমতার শিকার হতো না।
‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে আমরা দেখি দরিদ্র অভাগী মৃত্যুর পর সৎকারের জন্য কাঠটুকুও পাচ্ছে না। মায়ের শেষ ইচ্ছা পূরণের জন্য কাঙালী জমিদারের বাড়িতে অনুনয়-বিনয় করেও এক টুকরো কাঠের বন্দোবস্ত করতে পারেনি। সামন্তবাদের প্রতিভূ অধর রায় ও তার সহযোগীদের কাছে কাঙালীর আর্তনাদ ছিল মূল্যহীন।
উদ্দীপকে দরিদ্র কৃষক ও তার দুই সন্তান আমন্ত্রণে গিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে যে মানবিক আচরণ পায়, তা অতুলনীয়। চেয়ারম্যানের স্ত্রীর আপত্তি সত্ত্বেও দরিদ্র কৃষক পরিবার, সমাজের উঁচু শ্রেণির লোকদের বসার স্থানে বসে খাবারের সুযোগ পায়। চেয়ারম্যানের উদার মানবিকবোধের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।
উঁচু বর্ণ ও শ্রেণির লোকেরা বরাবরই নিম্নশ্রেণির লোকদের অবজ্ঞার চোখে দেখে। নিম্নশ্রেণির লোকদের ইচ্ছার কোনো মূল্য নেই বিত্তবানদের কাছে। তবে সমাজে অনেক ভালো মানুষের দেখাও মেলে। এরা শ্রেণি বা বর্ণ নয়, মানুষ হিসেবে অন্যদের বিবেচনা করে। উদ্দীপকের চেয়ারম্যান তেমনি একজন। ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে জমিদার বাবু মশায় চেয়ারম্যানের মতো হলে অভাগীর বৈষম্যের শিকার হতে হতো না। অভাগীও কাঙ্ক্ষিত সৎকার লাভ করতে পারত। অতএব, বলা যায়, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।
পড়ুন → বই পড়া প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : সাপ ধরার মন্ত্র শিখে মৃত্যুঞ্জয় মস্তবড়ো সাপুড়ে হয়ে উঠল। একদিন সাপ ধরতে গেলে বিষধর সাপের দংশনে সে আহত হয়। তার শ্বশুরের দেওয়া সব তাবিজ-কবচ তার হাতে বেঁধে দেওয়া হলো আর সেই সাথে বহুসংখ্যক ওঝা মিলে বহু দেব-দেবীর দোহাই এবং ঝাড়ফুঁক করেও তাকে বাঁচাতে পারল না।
ক. গ্রামে কে নাড়ি দেখতে জানত?
খ. ‘মা মরেচে ত যা নিচে নেবে দাঁড়া’– অধর রায়ের এরূপ উক্তির কারণ কী?
গ. উদ্দীপকে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের যে বিশেষ দিকের প্রতিফলন ঘটেছে, তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের একটি বিশেষ দিকের প্রতিফলন ঘটলেও গল্পের মূল বিষয়টি অনুপস্থিত।” মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।
৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. গ্রামে ঈশ্বর নাপিত নাড়ি দেখতে জানত।
খ. ‘অধর রায়ের প্রশ্নোক্ত উক্তির কারণ’ – জাত বৈষম্য।
অভাগীর সৎকারের জন্য রসিক বাঘ উঠানের বেলগাছটি কাটতে গেলে পেয়াদা তাকে চড় মারে। এ অন্যায়ের প্রতিকার ও মাকে পোড়ানোর কাঠের ব্যবস্থা করতে কাঙালী ছুটে যায় জমিদারের গোমস্তা অধর রায়ের কাছে। শোক ও উত্তেজনায় কাঙালী একেবারে কাছারির উপরে উঠে যায়। তার কান্নাভেজা নালিশ শুনে অধর ক্রুব্ধ ও বিস্মিত হয়। মরা ছুঁয়ে এসেছে মনে করে, জাত বৈষম্যের কারণে অধর রায় ধমক দিয়ে তাকে নিচে নেমে দাঁড়াতে বলে।
গ. উদ্দীপকে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের প্রতিফলিত দিকটি হলো— অভাগীর করুণ পরিণতি।
‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে দেখা যায়- অভাগী অসুস্থ হলে তার ছেলে কাঙালী ঘটি বন্ধক দিয়ে এক টাকা প্রণামী দেয় কবিরাজকে। কিন্তু নিচুজাত বলে কবিরাজ আসে না বরং গোটা চারেক বড়ি দেয়। কিন্তু অভাগী সে বড়ি হাতে নিয়ে তার মাথায় ঠেকিয়ে উনোনে ফেলে দেয়। পাড়া-প্রতিবেশীরা হরিণের শিং-ঘষা জল, পেঁটে-কড়ি পুড়িয়ে মধুতে মাখিয়ে চাটিয়ে দেওয়াসহ নানা চিকিৎসা পদ্ধতির সন্ধান দেয়। কিন্তু ভাগ্যদেবতায় বিশ্বাসী অভাগী এ সকল আয়োজন উপেক্ষা করে। অমোঘ নিয়তির টানে একসময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে অভাগী।
উদ্দীপকে দেখা যায়, সাপ ধরতে গিয়ে মৃত্যুঞ্জয় সাপের কামড়ে আহত হয়। তাকে সুস্থ করতে বহু তাবিজ-কবচ, দেব-দেবীর দোহাই, ওঝার ঝাড়ফুঁক ইত্যাদি আয়োজন চলতে থাকে। কিন্তু এত আয়োজনের পরও সবাইকে ছেড়ে অভাগীর মতো মৃত্যুঞ্জয়ও না ফেরার দেশে পাড়ি জমায়। এমনিভাবে উদ্দীপকে অভাগীর স্বর্গ পক্ষের মৃত্যুর অনিবার্যতার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
ঘ. গল্পের মূল বিষয় জাত বৈষম্য ও সামন্তবাদের নির্মম রূপ অনুপস্থিত থাকায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
অভাগীর স্বর্গ গল্পে গরিব-দুঃখী ও নিচুজাতের মেয়ে অভাগী তার পনেরো বছর বয়সি ছেলে কাঙালী জীবন-যন্ত্রণার নানা দিক উঠে এসেছে। জন্মের সময় মা মারা যাওয়ায় তার বাবা রাগ করে তার নাম রাখেন অভাগী। কিশোরী বয়সে তার বিয়ে হয় রসিক বাঘের সাথে। সেও কিছুদিন পর অভাগীকে ছেড়ে আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র চলে যায়। প্রতিকূল পরিবেশে ছোটো কাঙালীকে নিয়ে জীবনসংগ্রাম শুরু হয় অভাগীর । একদিন প্রতিবেশী ঠাকুরদাস মুখুয্যের স্ত্রীর অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া দেখে তার মধ্যে স্বর্গে যাবার বাসনা জাগে। কয়েক দিন জ্বরে ভুগে অভাগী মারা গেলে সতীসাধ্বী অভাগীর স্বর্গে যাবার অন্যান্য সকল আয়োজন যেমন— আলতা-সিঁদুর, স্বামীর পায়ের ধুলা, ছেলের হাতের আগুন ইত্যাদি সবই প্রস্তুত ছিল। শুধু ছিল না মড়া পোড়ানোর কাঠ। জমিদারি প্রথার নিষ্ঠুরতার কারণে নিজেদের গাছের কাঠ চাইতে গিয়ে অধর রায়ের কাছ থেকে অপমানিত হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে কাঙালীকে। অগত্যা নদীর চড়ায় অভাগীকে মাটি চাপা দেওয়ার মধ্য দিয়ে তার স্বর্গে যাবার ঐকান্তিক বাসনাও মাটি চাপা পড়ে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, সাপের কামড়ে মৃত্যুঞ্জয় মারা যায়। তাবিজ-কবচ, ঝাড়ফুক, দেব-দেবীর দোহাই কোনোকিছুই তাকে রক্ষা করতে পারেনি। এখানে মৃত্যুঞ্জয়ের করুণ মৃত্যু ছাড়া অন্যকোনো বিষয়ের উল্লেখ নেই।
‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে অভাগীর করুণ মৃত্যুর বিষয়টি মুখ্য নয়। এ গল্পের মূল বিষয় সামন্তবাদী সমাজব্যবস্থায় শ্রেণিভেদ ও অমানবিকতার স্বরূপ। মৃত অভাগীর শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে তার পুত্র কাঙালী সমাজের এই কুৎসিত দিক প্রত্যক্ষ করে। অভাগীর মৃত্যুর অনিবার্যতা গল্পের সামান্য একটি দিক। সুতরাং উপর্যুক্ত আলোচনায় বলা যায়, উদ্দীপকে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের একটি বিশেষ দিকের প্রতিফলন ঘটেছে, কিন্তু গল্পের মূল বিষয় অনুপস্থিত।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : কোমলমতী কমলা স্বামীর সংসারের যে শান্তি তার দেখা পায়নি কখনো। অবহেলায় ও অনাদরে বেড়ে উঠা কমলার স্বামীর সংসারে সুখ খোঁজার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। অকালে প্রাণ যায় তার। মৃত্যুর পরেও স্বামীর মুখাগ্নি থেকে বঞ্চিত হতে হয় তাকে। স্ত্রী মারা যাওয়ার অল্পদিনের মধ্যেই বিয়ে করে পরান। একমাত্র সন্তান প্রতুল সৎমায়ের অনাদর ও নির্যাতনের শিকার হতে থাকে। ফলে প্রতুল অল্পদিনের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে।
ক. কাঙালীর মা কোন বংশের মেয়ে?
খ. মুধুয্যে বিস্মিত ও বিরক্ত হয়েছিল কেন?
গ. উদ্দীপকের প্রতুল চরিত্রের সাথে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের কাঙালীর সাদৃশ্য বা বৈসাদৃশ্য তুলে ধরো।
ঘ. “উদ্দীপকের কমলা ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের অভাগীর প্রতিরূপ হয়ে উঠেছে” তোমার যুক্তি তুলে ধরো।
৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. কাঙালীর মা দুলে বংশের মেয়ে।
খ. নিচু জাতের ছেলে কাঙালী মায়ের চিতার জন্য কাঠ চাওয়ায় মুখুয্যে বিস্মিত ও বিরক্ত হয়েছিল।
হিন্দুরীতিতে মৃতদেহ সঞ্চারের জন্য শুকনো কাঠের প্রয়োজন হয়। অভাগীর মৃত্যুর পর কাঙালী কাঠ জোগাড়ের চেষ্টা করে। এজন্য সে মুখুয্যেদের শাড়ি যায় এবং মায়ের মৃতদেহ সৎকারের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠ দাবি করে। নিচু জাতের ছেলের মুখে এমন দাবি শুনে মুখুয্যে একইসাথে বিস্মিত ও বিরক্ত হন। এর মাধ্যমে সমাজের নিচু শ্রেণির মানুষদের প্রতি উচ্চশ্রেণির মানুষদের চরম অবজ্ঞা ও অবহেলাই প্রকাশ পেয়েছে।
গ. উদ্দীপকের প্রতুল চরিত্রের সঙ্গে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের কাঙালীর জীবনের বৈসাদৃশ্যই অধিক লক্ষণীয়।
কাঙালী নিচু জাতের ঘরে জন্ম নেওয়া গরিব-দুঃখী ছেলে। পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত কাঙালী মায়ের আদর-স্নেহ ষোলোআনাই পেয়েছে। মা অভাগী তাকে নিজের একমাত্র ছেলে বলে সবসময় আগলে রেখেছে। স্বামী রসিক দুলে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ছেলের মুখের দিকে চেয়ে অভাগী আর বিয়ে করেন। তাই পারিব পর জন্মেও কাঙালী মায়ের আদরে বড়ো হয়েছে।
উদ্দীপকের প্রতুল অকালে মাঝে হারিয়ে মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। মায়ের মৃত্যুর পর সংসারে সৎমায়ের আগমন তার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ফলে সে সংসারবিচ্ছিন্ন হয়ে অপরাধের জগতে পা বাড়ায়। কিন্তু ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের কাঙালীর এমন কোনো অন্ধকারাচ্ছন্ন ভবিষ্যতের ইঙ্গিত আমরা দেখতে পাই না। মায়ের মৃত্যুশোকে হতবিহ্বল কাঙালীর চিত্র দিয়েই গল্পটির সমাপ্তি হয়েছে। তাই বলা যেতে পারে, উদ্দীপকের প্রতুলের সঙ্গে গল্পের কাজলীর আংশিক সাদৃশ্য থাকলেও মূলত বৈসাদৃশ্যই বেশি বিদ্যমান।
ঘ. উদ্দীপকের কমলা এবং ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের অভাগী একই রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের অভাগী জনমদুঃখী এক নারী চরিত্র। জন্মের পরই মাকে হারিয়ে অযত্ন-অবহেলায় বড়ো হয়েছে সে। বিয়ের পরও তার দুর্ভাগ্য কমেনি। স্বামীর অবহেলা এবং সংসারের সমস্ত দুঃখ নীরবে সয়ে গেছে। সন্তান কাঙালীকে নিয়েই অভাগী তার সমস্ত স্বপ্ন বুনেছে। মৃত্যুর পর যথাযোগ্য সৎকারের ব্যবস্থা তার হয়নি। শেষ মুহূর্তে ছেলের হাতের আগুন পাওয়ার ইচ্ছাটাও অভাগীর অপূর্ণই থেকে গিয়েছে।
উদ্দীপকের কমলাও সৌভাগ্যবঞ্চিত এক দুঃখিনী নারী হিসেবে দৃশ্যমান। কোমলমতি কমলা স্বামীর সংসারে শুধু অশান্তিই ভোগ করেছে। একটু সুখ জীবনের খোঁজ করতে গিয়ে সে পদে পদে শুধু কষ্টই পেয়েছে। একটু সুখ খোঁজার অবিরাম চেষ্টা করেও সে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি মৃত্যুর পরও স্বামী তার প্রতি যথাযথ কর্তব্য পালন করেনি।
উদ্দীপকের কমলার মতোই দুর্ভাগা চরিত্র ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের অভাগী। বিয়ের পর স্বামী তাকে ত্যাগ করে চলে যায়। জমিদারের গোমস্তার অমানবিক আচরণের ফলে জীবনভর দুঃখ ভোগ করা অভাগী মরার পর স্বাভাবিক সৎকারটুকু পায়নি সমাজের নিম্নশ্রেণির দুঃখী মানুষগুলোর জীবন বরাবরই এক সূত্রে গাঁথা হয়ে থাকে। উদ্দীপকের কমলা কিংবা গল্পের অভাগীও তার ব্যতিক্রম নয়। তাইতো দেখা যায়, জীবনভর তারা শুধু বঞ্চনা ও অনাদরই পেয়ে থাকে। এ দিক থেকে কমলা গল্পের অভাগীর যথার্থ প্রতিরূপ হয়ে উঠেছে।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : শুধু বিঘে দুই ছিল মোর ভুঁই আর সবই গেছে ঋণে,
বাবু বলিলেন, বুঝেছো উপেন, এ জমি লইব কিনে।
কহিলাম আমি, বক্ষে জুড়িয়া পাণি,
সজল চক্ষে করুণ রক্ষে গরিবের ভিটা খানি।
পরে মাস দেড়ে ভিটে মাটি ছেড়ে বাহির হইনু পথে
করিল ডিক্রি সকলি বিক্রি মিথ্যে দেনার খতে।
ক. বামুন মা রথে চড়ে কোথায় যাচ্ছেন?
খ. অধর রায় কাঙালীকে কেন গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে বলল?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত উপেনের জমি কিনে নেওয়ার ঘটনার সাথে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের কোন ঘটনার সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ‘বাবু’র মধ্য দিয়ে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের অধর রায়ের চেতনাই প্রকাশিত হয়েছে’— উক্তিটি মূল্যায়ন করো।
৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. বামুন মা রথে চড়ে স্বর্গে যাচ্ছেন।
খ. মৃত মায়ের সৎকারের জন্য গাছ কাটার অনুমতি চাইতে গেলে অধর রায় কাঙালীকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে বলল।
কাঙালীর মা মারা যাওয়ার পূর্বে কাঙালিকে বলে যায় মৃত্যুর পর তার সৎকার যেন উঁচু জাতের হিন্দু পরিবারের মৃতের সৎকারের মতো হয়। তাই কাঙালীর মা মারা যাওয়ার পর তার হাতেই লাগানো সামান্য বেলগাছটা তার বাবা কাটতে যায়। কিন্তু তাতে বাধা দেয় জমিদারের দারোয়ান। জমিদারের কাছে গেলে জমিদার অত্যন্ত বিরক্ত হয়। একপর্যায়ে কাঙালী বেলগাছটা তার মায়ের হাতের পোঁতা গাছ বলে দাবি করলে অধর রায় রাগান্বিত হয়ে তাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে বলল।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত উপেনের জমি কিনে নেওয়ার ঘটনার সাথে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের সামন্ততান্ত্রিক সমাজে শ্রেণিশোষণের দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে।
সামন্ততান্ত্রিক সমাজে জাত্যাভিমানের বশবর্তী হয়ে উঁচু শ্রেণির মানুষ নিচু শ্রেণির মানুষকে অত্যন্ত ঘৃণার চোখে দেখত। নিচু শ্রেণির মানুষ প্রতিনিয়ত অত্যাচারিত ও নির্বাচিত হতো। আলোচ্য গল্পে আমরা এর বাস্তব দৃষ্টান্ত দেখতে পাই।
উদ্দীপকে সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষ দ্বারা নিচুতলার মানুষের শোষিত হওয়ার চিত্র ফুটে উঠেছে। উদ্দীপকের হতদরিদ্র কৃষকের শেষ সম্বল হল দুই বিঘা জমি। কিন্তু জমিদার বাবুর কুনজর পড়ে এই জমির ওপর। যদিও শেষ সম্বল জমিটুকু উপেন বিক্রি করতে চায় না; কিন্তু জমিদার জোর করে এ জমির দখল নিতে চান। তিনি মিথ্যা মামলা দিয়ে এ জমিটির দখল নিয়ে নেন। আর উপেন ভিটেমাটি হারিয়ে ভবঘুরে হয়ে যায়। শ্রেণিশোষণের এই চিত্র আমরা “অভাগীর স্বর্গ” গল্পেও দেখতে পাই। গল্পের কাঙালী নিচু জাতের ও দরিদ্র হওয়ার কারণে অধর রায় কর্তৃক অপমানিত ও লাঞ্ছিত হয়। মায়ের শবদাহের জন্য কাঠ জোগাড় করতে উঠানের বেলগাছটা কাটতে গেলে জমিদার অধর রায়ের দারোয়ান বাধা দেয়। যদিও গাছটি কাঙালীর মায়ের নিজের হাতে লাগানো ছিল। দুর্বলের প্রতি এই শোষণ-অত্যাচারের ঘটনার দিক দিয়ে আলোচ্য গল্পের সাথে জমিদার কর্তৃক উপনের জমি কিনে নেওয়ার প্রহসনের সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত বাবুর মধ্য দিয়ে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের অধর রায়ের অত্যাচার ও শোষণের দিকটি প্রকাশিত হয়েছে।
যুগে যুগে দুর্বলেরা সবলদের দ্বারা অত্যাচারিত ও শোষিত হয়ে আসছে। সমাজের উঁচুতলার মানুষেরা নিচু ও ছোট জাতের মানুষদের ঘৃণা ও অবজ্ঞার চোখে দেখে। কিন্তু এটা মোটেই কাম্য নয়। শ্রেণিবৈষম্য ভুলে ধনী ও গরিবের সহাবস্থান ও পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়েই একটি সুন্দর ও সুখী সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।
উদ্দীপকের কবিতাংশে শ্রেণিশোষণের চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রতাপশালী জমিদার হতদরিদ্র উপেনের শেষ সম্বল দুই বিঘা জমি কিনে নিতে চায়। ঋণের দায়ে উপেনের সব জমিই গেছে। বাকি আছে মাত্র এই দুই বিঘা জমি। এটা তার ভিটেমাটি— সাত পুরুষের স্মৃতিবিজড়িত স্থান। শত দৈন্য-দুর্দশা এলেও উপেন এ জমি বিক্রি করতে চায় না। কিন্তু জমিদার জোর করে এই জমির দখল নিতে চায়। শত মিনতি, অনুরোধ উপেক্ষা করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জমিদার উপেনের জমি দখল করে নেয়। আর উপেন গৃহহীন হয়ে পথে পথে ঘুরতে থাকে।
অভাগীর স্বর্গ গরেও আমরা অধর রায়ের মাঝে নিষ্ঠুর ও অত্যাচারী মনোভাব দেখতে পাই। অধর রায় কাঙালীকে ঘৃণা ও অবজ্ঞা করে। কেননা, সে তথাকথিত নিচু জাতের। শুধু তাই-ই নয়, নিচু জাতের হয়েও শবদাহের ইচ্ছা পোষণ করায় তিনি কাঙালীর প্রতি উপহাস করেন । মায়ের শবদাহের জন্য কাঙালীর একমাত্র সম্বল ছিল উঠানের বেলগাছটা, যা থেকে সে প্রয়োজনীয় কাঠ সংগ্রহ করতে পারত। কিন্তু অত্যাচারী অধর রায় তা দখল করে নেয়। একইভাবে, উদ্দীপকের জমিদার বাবুও উপেনের শেষ সম্বল দুই বিঘা জমি জোর করে দখল নেয়। এক্ষেত্রে বলা যায়, উদ্দীপকের বাবু এবং আলোচ্য গল্পের অধর রায় উভয়ই একই মানসিকতার অধিকারী।