(বাংলা) SSC: বই পড়া প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

বই পড়া হচ্ছে মাধ্যমিক অর্থাৎ নবম-দশম শ্রেণীর বাংলা ১ম পত্র বই এর প্রমথ চৌধুরীর প্রবন্ধ। বই পড়া প্রবন্ধ থেকে বাছাইকৃত সেরা ৫টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

বই পড়া প্রবন্ধের সৃজনশীল

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : সাইমন তারিক একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার প্রতি তাঁর রয়েছে প্রবল অনুরাগ। এ জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি নিজ বাড়িতে একটি গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেন। আশপাশের মানুষের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকেন। এ মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সমাজে অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি তার গ্রন্থাগারে অনুদানস্বরূপ বিভিন্ন ধরনের বই দিয়েছেন। কিন্তু তাঁরই এক স্বজন বাদল এহেন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন, “শুধু শুধু বই কিনে অর্থ অপচয় করার মধ্যে কোনো সার্থকতা নেই বরং স্কুল-কলেজের নির্ধারিত পাঠ্যবই পড়লেই আলোকিত সমাজ গড়া সম্ভব।”
ক. মনের দাবি রক্ষা না করলে কী বাঁচে না?
খ. সাহিত্যচর্চাকে শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বলা হয়েছে কেন?
গ. উদ্দীপকের বাদলের মনোভাব বই পড়া প্রবন্ধের কোন দিকটির ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকের সাইমন তারিকের প্রচেষ্টাই ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের মূলসুর”— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. মনের দাবি রক্ষা না করলে মানুষের আত্মা বাঁচে না।

খ. কেবল সাহিত্যের মধ্যেই মানুষের পুরো মনের সাক্ষাৎ পাওয়া যায় বলে সাহিত্যচর্চাকে শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বলা হয়েছে। যে জাতির মন বড়ো, সে জাতি জ্ঞানেও সমৃদ্ধ। কেননা, জ্ঞানের সৃষ্টি মনসাপেক্ষ এবং মানুষের মনকে সরল, সচল এবং সমৃদ্ধ করার দায়িত্ব সাহিত্যের ওপর নাস্ত। মানুষের দর্শন, বিজ্ঞান, ধর্মনীতি, আশা-নৈরাশ্য, তার অন্তরের সত্য ও স্বপ্ন এই সকলের সমন্বয়ে সাহিত্যের জন্ম। অন্যান্য শাস্ত্রে মানুষের মনের ভগ্নাংশের পরিচয় পাওয়া যায়, কিন্তু তার পুরো মনটার সাক্ষাৎ পাওয়া যায় কেবল সাহিত্যে। শুধু সাহিত্যচর্চার মাধ্যমেই সামগ্রিক জ্ঞান অর্জন সম্ভব। তাই সাহিত্যচর্চাকে শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বলা হয়েছে।

গ. উদ্দীপকের বাদলের মনোভাব বই পড়া প্রবন্ধে বর্ণিত প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধতি ও সেটিকে ঘিরে মানুষের চিন্তা-চেতনার দিকটিকে প্রতিফলিত করে।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে দেখি, আমাদের দেশের প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধতি আমাদের চিন্তা-চেতনাকে এমন দিকে নিয়ে গিয়েছে যে পাঠ্যপুস্তক ব্যতীত অন্য বই পড়ায় আমরা কোনো সার্থকতা খুঁজে পাই না। লেখকের মতে, আমরা সাহিত্যের রস উপভোগ করতে প্রস্তুত নই, কিন্তু শিক্ষার ফল লাভে উদ্‌বাহু। পাঠ্যপুস্তক ব্যতীত অন্য বই উদরপূর্তির কাজে লাগে না বলে আমরা শখ করে বই পড়তে চাই না। কেউ শখ করে বই পড়লে তাকে আমরা নিষ্কর্মার দলে ফেলে দিই।
উদ্দীপকের সাইমন তারিক ব্যক্তিগত উদ্যোগে গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি আশপাশের মানুষের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে চান। তাঁর এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে মহান। কিন্তু বাদল সাইমন তারিকের প্রতি কটাক্ষ করেছে। সাহিত্যচর্চার জন্য বই পড়াকে যারা অর্থহীন মনে করেন আলোচ্য উদ্দীপকের বাদল তাদের মন মানসিকতাকেই ধারণ করে।

ঘ. সাহিত্যচর্চার মধ্য দিয়ে উদ্দীপকের সাইমন তারিকের মধ্যে জ্ঞান বিতরণের যে প্রচেষ্টা লক্ষ করা যায়, তা বই পড়া প্রবন্ধেরও মূলসুর।
বই পড়া প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক সাহিত্যচর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। বই পড়া ও জ্ঞানার্জন ছাড়া মানুষের সত্যিকার মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। সাহিত্যচর্চার জন্য প্রয়োজন লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা। লাইব্রেরিতে বই পড়ে ও সাহিত্যচর্চা করে মানুষ স্বশিক্ষিত হতে পারবে। প্রগতিশীল জগতের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য সাহিত্যচর্চা করা আবশ্যক বলে লেখক মনে করেন।
উদ্দীপকে দেখি সাইমন তারিক সাহিত্যচর্চার গুরুত্ব তুলে ধরতে চেয়েছেন। তিনি নিজ প্রচেষ্টায় লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করে সকলের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে চান। তিনি জানেন কেবল বাঁধাধরা কিছু বই পড়ে প্রকৃত জ্ঞানী হওয়া সম্ভব নয়। মানুষের মাঝে প্রকৃত জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে তিনি এ মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ‘বই পড়া’ প্রবন্ধেও এ বিষয়টি লক্ষ করা যায়।
বই পড়া প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বলতে চেয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে লব্ধ শিক্ষা পূর্ণাঙ্গ নয় বলে ব্যাপকভাবে বই পড়া দরকার। যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে মনের প্রসার দরকার। তার জন্য বই পড়ার অভ্যাস বাড়াতে হবে। উদ্দীপকেও সাইমন তারিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করে মানুষের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। কেননা, কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা যথেষ্ট নয়। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : ফজর আলী একজন কৃষক। অবসর সময় নাতি-নাতনিদের বই পড়ে। তার পড়ার আগ্রহ দেখে তার নাতি সাইমন বলে, দাদু তুমি আমাদের পাড়ার লাইব্রেরিতে গেলে অনেক বই পড়তে পারবে। ফজর আলী একদিন লাইব্রেরিতে গিয়ে কৃষিবিষয়ক অনেক বই দেখে তাজ্জব বনে যায়। এরপর সে নিয়মিত লাইব্রেরিতে যায় এবং বইয়ের প্রতি তার একটা অন্যরকম প্রীতি জেগে ওঠে। তার মতে, বই শুধু জ্ঞান পরিবেশন করে না মনের খোরাকও জোগায়।
ক. কাব্যামৃতে আমাদের অরুচি ধরেছে কেন?
খ. সাহিত্যচর্চাকে শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বলা হয়েছে কেন?
গ. উদ্দীপকে ফজর আলীর মধ্যে বই পড়া প্রবন্ধের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “বই শুধু জ্ঞান পরিবেশন করে না মনের খোরাকও জোগায়” – উক্তিটি উদ্দীপক ও বই পড়া প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন করো।

২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. কাব্যামৃতে আমাদের অরুচি ধরেছে প্রচলিত শিক্ষার দোষে।

খ. কেবল সাহিত্যের মধ্যেই মানুষের পুরো মনের সাক্ষাৎ পাওয়া যায় বলে সাহিত্যচর্চাকে শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বলা হয়েছে। যে জাতির মন বড়ো, সে জাতি জ্ঞানেও সমৃদ্ধ। কেননা, জ্ঞানের সৃষ্টি মনসাপেক্ষ এবং মানুষের মনকে সরল, সচল এবং সমৃদ্ধ করার দায়িত্ব সাহিত্যের ওপর নাস্ত। মানুষের দর্শন, বিজ্ঞান, ধর্মনীতি, আশা-নৈরাশ্য, তার অন্তরের সত্য ও স্বপ্ন এই সকলের সমন্বয়ে সাহিত্যের জন্ম। অন্যান্য শাস্ত্রে মানুষের মনের ভগ্নাংশের পরিচয় পাওয়া যায়, কিন্তু তার পুরো মনটার সাক্ষাৎ পাওয়া যায় কেবল সাহিত্যে। শুধু সাহিত্যচর্চার মাধ্যমেই সামগ্রিক জ্ঞান অর্জন সম্ভব। তাই সাহিত্যচর্চাকে শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বলা হয়েছে।

গ. উদ্দীপকের ফজর আলীর মধ্যে বই পড়া প্রবন্ধে বর্ণিত সুশিক্ষায় লাইব্রেরির ভূমিকা এবং বই পড়ে মনের খোরাক জোগানোর দিকটি ফুটে উঠেছে।
বই পড়া প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক মনে করেন, শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে গিয়ে যথার্থ জ্ঞান লাভ করতে পারে। এ কারণে লাইব্রেরিকে তিনি মনের হাসপাতাল বলেছেন। কারণ পাঠ্যবই ও নোটভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় একরকম বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে। এতে তাদের মনের প্রসার না ঘটে তার বিপরীতটা হয়। কিন্তু লাইব্রেরিতে গেলে তারা বাধ্য হয়ে নয় বরং আপন খুশি ও রুচি অনুসারে বই পড়ে নিজেদের আত্মিক উন্নয়ন ঘটাতে পারে। এতে তাদের মনের প্রসার ঘটে, যা সুশিক্ষা অর্জনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উদ্দীপকেও স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠার পেছনে লাইব্রেরির ভূমিকার কথা বলা হয়েছে। লাইব্রেরি আমাদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এতে পাঠকের মনের প্রসার ঘটে, যা স্বশিক্ষিত হয়ে উঠতে অপরিহার্য। আর বই পড়ার মাধ্যমে আমরা মনের খোরাকও জোগাতে পারি । আলোচ্য প্রবন্ধেও প্রাবন্ধিক স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার উপায় ও বই পড়ার মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করার প্রতি জোর দিয়েছেন। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে ফজর আলীর মধ্যে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লাইব্রেরির ভূমিকা ও মনের আনন্দে বই পড়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করার দিকটিই ফুটে উঠেছে।

ঘ. বই পড়ার মাধ্যমে আমরা যেমন মনের খোরাক জোগাতে পারি, তেমনি পারি স্বশিক্ষিত হয়ে উঠতে— উদ্দীপক ও বই পড়া প্রবন্ধে এ দিকটি গুরুত্বের সাথে তুলে ধরা হয়েছে।
বই পড়া প্রবন্ধে প্রমথ চৌধুরী লাইব্রেরির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। তাঁর মতে, বিদ্যাচর্চার সাথে আনন্দের যোগ থাকা চাই। তাহলেই অর্জিত জ্ঞান মানুষের আত্মায় স্থান করে নেবে। সেই জ্ঞানের আলোতে আলোকিত মানুষই পরিপূর্ণ মানুষ। আর বিদ্যাচর্চার ক্ষেত্রে মানুষকে এই সুযোগ করে দেয় লাইব্রেরি। তাই প্রাবন্ধিক লাইব্রেরির মাধ্যমে নিজেকে স্বশিক্ষিত করে তোলার কথা বলেছেন। আর বই পড়ে আমরা শুধু জ্ঞান লাভই করি না, মনের খোরাকও জোগাই— সেদিকটিও অসামান্য দক্ষতায় তুলে ধরেছেন।
উদ্দীপকে ফজর আলী একজন স্বশিক্ষিত মানুষ। কৃষিকাজ করলেও তার বই পড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ। একদিন লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ে তিনি তাজ্জব হন মনের আনন্দে তিনি এরপর নিয়মিত লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়তে শুরু করেন। বই পড়ে তিনি অকৃত্রিম আনন্দ লাভ করেন।
উদ্দীপকে ফজর আলী বই পড়ার মাধ্যমে স্বশিক্ষিত হয়ে মনের খোরাক জোগানোর যে পথ বেছে নিয়েছেন প্রাবন্ধিক ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে সেদিকেই গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয় বরং সাহিত্য-জ্ঞান-বিজ্ঞানের বইয়ের মাধ্যমে আমরা নিজেদের জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে পারি। বই শুধু জ্ঞানই পরিবেশন করে না, বই পড়ে আমরা মনে আনন্দ পাই। মনের খোরাক জোগানোকেই বই পড়ার সার্থকতা হিসেবে প্রাবন্ধিক মনে করেন আর এটিই উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘তোতা কাহিনী’ গল্পে রাজা শখ করে একটি তোতা পাখি কিনে সেটির শিক্ষার ব্যবস্থা করলেন। শিক্ষার জন্য বিখ্যাত সব পণ্ডিত নিয়োগ দেওয়া হলো। মহা সমারোহে তোতার শিক্ষাদান চলতে থাকল। পণ্ডিতেরা সেটিকে জোর করে পুস্তকের পাতা মুখের মধ্যে পুরে দিতে থাকল। অবশেষে একদিন সেটি মারা গেল।
ক. প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম কী?
খ. লেখক লাইব্রেরিকে হাসপাতালের ওপরে স্থান দিয়েছেন কেন?
গ. উদ্দীপকে বই পড়া প্রবন্ধের যে বিশেষ দিকটির প্রতিফলন ঘটেছে, তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকে প্রতিফলিত দিকটি মানুষের স্বশিক্ষিত হবার পথ রুদ্ধ করে দেয়।” বই পড়া প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।

৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম ‘বীরবল’।

খ. মানসিক প্রফুল্লতা ও সুস্থতা দানের জন্য লেখক লাইব্রেরিকে হাসপাতালের মতোই গুরুত্ব দিয়েছেন।
হাসপাতালে রুগণ দেহের চিকিৎসা হয়। কিন্তু লাইব্রেরিতে চিকিৎসা হয় রুগ্ণ মনের। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি লাইব্রেরিতে গিয়ে স্বেচ্ছায় স্বচ্ছন্দচিত্তে তার ভালোলাগা অনুযায়ী বই পড়তে পারে। পাঠক এক্ষেত্রে পরিপূর্ণ স্বাধীন। স্বীয় শক্তি ও রুচি অনুসারে পাঠক যখন বই পড়ার সুযোগ পায় তখন তার মানসিক সুস্থতা তৈরি হয় এবং জ্ঞানার্জন হয় নিবিড় ও গভীর। তাই লেখক লাইব্রেরিকে হাসপাতালের মতোই গুরুত্ব দিয়েছেন।

গ. উদ্দীপকে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটির দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
বই পড়া প্রবন্ধের লেখকের মতে, আমাদের স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয়। মাস্টার মহাশয়েরা নোট দেন আর সেই নোট মুখস্থ করে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় পাশ করে। সার্টিফিকেটসর্বস্ব এ শিক্ষায় মুখস্থবিদ্যায় পারদর্শী শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় ভালো করলেও প্রকৃত অর্থে জ্ঞানার্জন হয় শূন্য। কেননা, শিক্ষার্থীর ভালোলাগা-মন্দলাগা, পছন্দ-অপছন্দ, আগ্রহ-সামর্থ্য এখানে কোনোপ্রকার গুরুত্ব পায় না। বরং চাপিয়ে দিয়ে তাদেরকে শিক্ষার্জনে বাধ্য করা হয়। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা স্বশিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পায় না। বরং তাদের জীবনীশক্তি হ্রাস পায়। লেখক তাই এ শিক্ষাব্যবস্থাকে বাজিকরের বন্দুক-কামানের গুলি খেয়ে আবার তা উদগিরণ করার প্রাণান্তকর বাজির সাথে তুলনা করেছেন।
উদ্দীপকের ‘তোতা কাহিনী’ গল্পেও দেখা যায় জোর করে বিদ্যা গেলানোর ঘটনা। যেখানে তোতা পাখিকে শিক্ষাদানের জন্য আয়োজনের কোনো ঘাটতি তিল না। বিখ্যাত পণ্ডিত নিয়োগ, মহাসমারোহের সাথে শিক্ষাদান এবং এক সময় জোর করে শেখানোর চেষ্টা করা হয়। সবশেষে মৃত্যু ঘটে পাখিটির। এমনিভাবে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরাও উদ্দীপকের তোতা পাখির মতোই করুণ পরিণতির দিকে ধাবিত হয়।

ঘ. বিদ্যার্জনে স্বাধীনতা না থাকলে শিক্ষার্থীরা ছন্দ হারিয়ে ফেলে, আগ্রহ নষ্ট হয়ে যায়, যা স্বশিক্ষিত হবার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
বই পড়া ভবনের দেখা যায়, আমাদের দেশে বিদ্যাদাতার যেমন অভাব নেই, তেমনি দাতাকর্ণেরও অভাব নেই। ছেলেমেয়েরা স্কুলে বিদ্যার্জন করে শিক্ষকের ইচ্ছায়। শিক্ষার্থীর ভালোলাগার কোনো মূল্যায়ন করা হয় না। অর্থাৎ তাদেরকে বিদ্যা গেলানো হয়। তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক সেটি আদৌ বিচার্য বিষয় নয়। গুরুপ্রদত্ত নানা প্রকার নোট মুখস্থ করে তারা পরীক্ষায় পাশ করে। তাছাড়াও পরীক্ষায় পাশ ও ভালো নম্বর পাওয়াই তাদের মুখ্য বিষয় হওয়ায় নির্ধারিত বিষয়ের বাইরে যাওয়ার সুযোগ তাদের নেই। এমনকি পারিবারিক পরিবেশ এবং বিদ্যালয় উভয়াক্ষেত্রেই তাদেরকে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ফলে স্বেচ্ছায়, সাগ্রহে, সানন্দে পাঠগ্রহণের সুযোগ তাদের হয়ে ওঠে না।
উদ্দীপকে দেখা যায়, রাজা তোতা পাখিকে শিক্ষাদানের জন্য বিখ্যাত পণ্ডিত নিয়োগ করেন। পণ্ডিতেরা সেটিকে জোর করে পুস্তকের পাতা মুখে পুরে দেন। অর্থাৎ তোতার ইচ্ছা, আগ্রহ কিংবা সামর্থ্যের ওপর কোনো গুরুত্বারোপ করা হয়নি ফলে পাখিটি সে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুবরণ করে। লেখকের মতে, ‘সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত’। অর্থাৎ সুশিক্ষিত হতে হলে আগে অবশ্যই তাকে স্বশিক্ষিত হতে হবে। আর স্বশিক্ষিত হবার জন্য চাই সাহিত্যচর্চা। সকল জ্ঞানের আধার সাহিত্য। তাই লাইব্রেরিতে স্বেচ্ছায়, সাগ্রহে, সানন্দে সাহিত্যচর্চার মাধ্যমেই কেবল স্বশিক্ষিত হওয়া যায়। কিন্তু উদ্দীপকের তোতার মতোই আমাদের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের পুথিগত বিদ্যার্জনের মাধ্যমে শুধু পরীক্ষায় পাশের জন্য বই মুখস্থ করতে বাধ্য করানো হয়, যা স্বশিক্ষিত হওয়ার পথ বন্ধ করে দেয়।

পড়ুন → সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : বাচ্চাদের শেখানো হয়, ‘লেখাপড়া করে যে, গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সে’ এই শিক্ষা কতটা প্রাসঙ্গিক? এখন তো যারা পড়াশোনা করে না তারাই বেশি গাড়ি-ঘোড়ার মালিক। তাহলে কী শেখাতে হবে? শেখাতে হবে ঐ পুরানো স্বতঃসিদ্ধ বাণী ‘শিক্ষার মানে হলো দেহ, মন ও আত্মার সুষ্ঠু বিকাশ বা স্ফূর্তি।’ মনুষ্যত্বের প্রকৃত ও স্বীকৃত বিকাশই শিক্ষার উদ্দেশ্য হওয়া চাই। ধনের মানুষ আর মনের মানুষ আলাদা। বড়ো বিদ্বান হয়ে পায়ে হাঁটলে মান- সম্মান বাড়বে। আমরা বিদ্যার বৈষয়িক ব্যবহারে আগ্রহী করে তুলছি নতুন প্রজন্মকে, অন্তরজগৎকে আলোকিত করার চিন্তা বাদ দিয়েছি।
ক. মনের আক্ষেপ প্রকাশ করতে মাঝে মাঝে কী লাগাতে হয়?
খ. আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষার পদ্ধতি ঠিক উল্টো? মানে কী?
গ. বই পড়া প্রবন্ধ এবং উদ্দীপকের মধ্যে হতাশা ব্যক্ত হওয়ার কারণ কী? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘শিক্ষার আমূল সংস্কার প্রয়োজন।’— মন্তব্যটির পক্ষে-বিপক্ষে মত দাও।

৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. মনের আক্ষেপ প্রকাশ করতে মাঝে মাঝে কড়ি লাগাতে হয়।

খ. ‘আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষার পদ্ধতি ঠিক উল্টো’— উক্তিটির মাধ্যমে প্রাবন্ধিক প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটির দিকটি তুলে ধরেছেন।
প্রাবন্ধিক মনে করেন, শিক্ষার কাজ শিক্ষার্থীর কাছে জানার স্পৃহা তৈরি করা, তাকে সুশিক্ষিত করে তোলা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নির্দিষ্ট সিলেবাসের ওপর নির্ভর করে কিছু গতানুগতিক বিষয় শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। এটি শিক্ষার্থীদের জানার স্পৃহাকেই বিনষ্ট করে দেয়। প্রশ্নোত্ত, উক্তিটির মাধ্যমে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার এ ত্রুটির বিষয়টিকেই বোঝানো হয়েছে।

গ. বই পড়া প্রবন্ধ এবং আলোচ্য উদ্দীপকে ব্যক্ত হতাশার কারণ আমাদের ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাপদ্ধতি।
বই পড়া প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক শিক্ষার প্রকৃত স্বরূপ ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি তিনি আমাদের দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটিসমূহ তুলে ধরে এর সমালোচনা করেছেন। এর মধ্য দিয়ে আলোচ্য প্রবন্ধটিতে প্রাবন্ধিক শিক্ষার আদর্শ রূপটি উন্মোচন করতে প্রয়াসী হয়েছেন।
উদ্দীপকে শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্য সম্পর্কিত আমাদের ভুল ভাবনার দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে দেখানো হয়েছে শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে সরে গিয়ে আমরা কীভাবে এটিকে বৈষয়িক গুরুত্বের নিরিখে দেখছি। বিষয়টিকে স্পষ্ট করার জন্য উদ্দীপকে একটি প্রচলিত ছড়ার প্রসঙ্গ টানা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে— ‘লেখাপড়া করে যে, গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সে।’ অথচ শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো অন্তর্লোকের ঐশ্বর্যের সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া। তাই এ সম্পর্কিত আমাদের এমন হীনভাবনা প্রকৃত অর্থেই পীড়াদায়ক। একইভাবে, ‘বই পড়া’ প্রবন্ধেও প্রাবন্ধিক প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধতি এবং এর উদ্দেশ্যগত ত্রুটি তুলে ধরে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন।

ঘ. ‘শিক্ষার আমূল সংস্কার প্রয়োজন’- উদ্দীপক ও ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটি যথার্থ।
বই পড়া প্রবন্ধের প্রাবন্ধিক মনে করেন, যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে প্রয়োজন মনের প্রসার। এজন্যই বই পড়ার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। কিন্তু প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় সে সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। আর তাই শিক্ষাব্যবস্থার আমূল সংস্কার একান্ত অপরিহার্য।
উদ্দীপকে শিক্ষার উদ্দেশ্যকে ভুলভাবে গ্রহণ করেই যে আমরা প্রচলিত শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট হই, সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। বস্তুত, শিক্ষাকে আমরা গ্রহণ করেছি অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে। আর তাই এর অন্তর্নিহিত শক্তি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আমরা অবগত নই। ফলে প্রচলিত শিক্ষা অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে সহায়ক হলেও আমরা সুশিক্ষিত হয়ে উঠতে পারছি না। উদ্দীপকে উদাহরণের মাধ্যমে এ বিষয়টিই ব্যক্ত হয়েছে।
বই পড়া প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার দিকটি উল্লেখ করে এর সমালোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন, নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রমে আবার এই শিক্ষা প্রকৃত শিক্ষার্জনে সহায়ক নয়। ক্ষেত্রবিশেষে তা শিক্ষার্থীর জ্ঞানস্পৃহাকে পর্যন্ত নষ্ট করে দেয়। একইভাবে, আলোচ্য উদ্দীপকেও বিষগ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের ভুল উদ্দেশ্যকে যৌত্ত্বিকভাবে তুলে ধরে শিক্ষাপদ্ধতির সমালোচনা করা হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থার আমূল সংস্কারই আমাদের এমন অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে। সে বিবেচনায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ অর্থবহ।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : আলোকায়ন বিদ্যাপীঠের শিখন-শেখানো পদ্ধতিটি একেবারেই অন্যরকম। সেখানে মাঠ-ঘাট, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত আর মানুষের দৈনন্দিন জীবনপ্রণালির সান্নিধ্যে শিক্ষার্থীদের জীবনঘনিষ্ঠ শিক্ষা দেওয়া হয়। পাঠদানে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হয়। সেই সাথে মুখস্থবিদ্যাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এ কারণে বিদ্যাপীঠটি এ অঞ্চলে আদর্শস্থানীয় হয়ে উঠেছে।
ক. আমাদের শিক্ষিত সমাজের লোলুপ দৃষ্টি আজ কীসের ওপর পড়ে রয়েছে?
খ. ‘যে জাতির জ্ঞানের ভাণ্ডার শূন্য সে জাতি ধনের ভাঁড়েরও ভবানী’- বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকটি বই পড়া প্রবন্ধের যে দিকটির ওপর আলোকপাত করেছে, তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তুমি কি মনে করো উদ্দীপকটি বই পড়া প্রবন্ধের যথার্থ প্রতিচ্ছবি? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. আমাদের শিক্ষিত সমাজের লোলুপ দৃষ্টি আজ অর্থের ওপর পড়ে রয়েছে।

খ. ‘যে জাতির জ্ঞানের ভাণ্ডার শূন্য, সে জাতি ধনের ভাঁড়েও ভবানী’- উক্তিটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, জ্ঞানের মাধ্যমে পরিশ্রম করে ধন অর্জন করা যায়, কিন্তু জ্ঞান না থাকলে তা সম্ভব নয়।
জ্ঞানের পরিপূর্ণ বিকাশ ছাড়া কেউ উন্নতি করতে পারে না। ধন উপার্জন করে ধনী হতে হলে তাকে অবশ্যই জ্ঞানী হতে হবে। পরিশ্রমের মাধ্যমে জ্ঞানের প্রসার ঘটিয়ে ধনের ভাড়া বৃদ্ধি করা সম্ভব। প্রশ্নোত্ত উক্তিটি যারা এ বিষয়টিই বোঝানো হয়েছে।

গ. উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বর্ণিত সুশিক্ষার মাধ্যমে মনুষ্যত্ব অর্জনের দিকটির ওপর আলোকপাত করেছে।
“বই পড়া” প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বলেছেন যথার্থ শিক্ষিত হওয়ার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন মনের প্রসার ঘটানো। সুশিক্ষিত হলে মানব-মন বিকশিত হয় এবং মানুষের বহুমাত্রিক মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটে। তাই প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠার জন্য যথার্থ শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
উদ্দীপকে আলোকায়ন বিদ্যাপীঠের ছাত্রছাত্রীদের সুশিক্ষা অর্জনের উপায় হিসেবে প্রকৃতির সান্নিধ্যের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের আনন্দের মাধ্যমে প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গের সাহায্যে শিক্ষাদান করা হয়। আর মুখস্থবিদ্যাকে করা হয় নিরুৎসাহিত। তারা বিশ্বাস করেন, এভাবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের মাধ্যমে তাদের যথার্থ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটিতে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বর্ণিত সুশিক্ষার মাধ্যমে মনুষ্যত্ব অর্জনের দিকটি ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।

ঘ. বিষয়বস্তুর সীমাবদ্ধতার কারণে উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে না।
বই পড়া প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরী বই পড়ার সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেদিক বিবেচনায় এই প্রবন্ধের বিষয়বস্তু বহুমাত্রিকতায় সমৃদ্ধ। তবে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা এ প্রবন্ধের মূল বিষয়। এর জন্য লাইব্রেরির প্রয়োজনীয়তাও তিনি তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি তিনি এ দেশের স্কুল-কলেজের ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাপদ্ধতিকে কটাক্ষ করেছেন।
উদ্দীপকে উল্লিখিত আলোকায়ন বিদ্যাপীঠ নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা অর্জনে ভিন্ন পথ অবলম্বন করা হয়েছে। আর সেটি হলো প্রকৃতির সান্নিধ্যে শিক্ষাদান। এভাবে শিক্ষাগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেমন আনন্দ উপভোগ করে, তেমনি তারা যথার্থ শিক্ষালাভ করে, যা মনুষ্যত্ব অর্জনে সহায়ক। কারণ এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জীবনঘনিষ্ঠ শিক্ষালাভ করতে পারে।
উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার কথা বললেও তার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সাহিত্যচর্চা। তিনি মনে করেন, যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে মনের প্রসারতা দরকার। আর তার জন্য বই পড়ার অভ্যাস বাড়াতে হবে। এ প্রবন্ধে আমাদের দেশে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটিগুলোও তিনি চিহ্নিত করেছেন। আর এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য তিনি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দিয়েছেন। উদ্দীপকের ক্ষুদ্র পরিসরে আলোচ্য প্রবন্ধের এসকল দিক অনুপস্থিত। তাই আমি মনে করি, উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের যথার্থ প্রতিচ্ছবি নয়।

Leave a Comment