আগামীর স্বপ্ন হচ্ছে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর জীবন ও জীবিকা বই এর ৩য় অধ্যায়। আগামীর স্বপ্ন অধ্যায়টির পাঠ্যবইয়ের প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
আগামীর স্বপ্ন
অ্যাক্টিভিটি ১: নিচের ছবি দেখে যে শব্দ বা শব্দগুলো বা বাক্য প্রথমেই মনে পড়ে তা ছবির পাশে লেখো।
সম্ভাব্য উপকরণ: প্রজেক্টর, ল্যাপটপ, পাঠ্যপুস্তক, কাগজ, কলম, পেন্সিল, মার্কার, চক, বোর্ড, ডাস্টার ইত্যাদি।
নির্দেশনা: পাঠ্যবইয়ে প্রদত্ত ছবিগুলো দেখো। ছবিগুলো তোমরা হয়ত পত্রিকা, ম্যাগাজিক, টেলিভিশন বা সিনেমাতে দেখে থাকতে পারো। ছবি দেখে যে শব্দ বা শব্দগুলো বা বাক্য প্রথমেই মনে পড়ে তা ছবির পাশে লেখো। প্রয়োজনে নমুনা উত্তর অনুসরণ করো।
নমুনা উত্তর: ছবি দেখে যে শব্দগুলো বা বাক্য প্রথমেই মনে পড়ে তা নিচে ছবির পাশে লেখা হলো-
চিত্রে একটি যন্ত্র দেখতে পাচ্ছি। যন্ত্রটির ওপরে 3D Printing ROBOT লেখা আছে। একজন ব্যক্তিকেও দেখা যাচ্ছে। তিনি মনিটরে রোবট তৈরির নির্দেশ দিচ্ছেন। যন্ত্রটিতে মনে হচ্ছে কোনো রোবট প্রিন্ট হয়ে বের হবে। তাই মনে হয় এই যন্ত্রটি একটি থ্রিডি প্রিন্টার। এটি কোনো বস্তুর ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরির প্রযুক্তি।
এটি দেখতে একদম মানুষের মতোই। কিন্তু এটি মানুষ নয়, বরং মনে হয় রোবট। রোবটটির হাতে একটি মাইক্রোফোনও দেখতে পাচ্ছি। রোবটটি হয়ত মাইক্রোফোন দিয়ে গান গাইছে। ঠিক যেন মানুষের মতো করেই।
এ যন্ত্রটি আমি একটি সিনেমায় দেখেছিলাম। এটি হয়ত সিনেমার সেই টাইম মেশিন। এ মেশিনের মাধ্যমে মানুষ নাকি অতীত বা ভবিষ্যতেও যেতে পারবে। চিত্রটিতে একটি শিশু ও তার মাকে দেখা যাচ্ছে। তারাও হয়ত ভবিষ্যৎ বা অতীতে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
এটি উড়ন্ত গাড়ির চিত্র বলে, মনে হচ্ছে। এটি হয়ত ভবিষ্যতে আমরা দেখতে পারব। গাড়িটির চারপাশে পাখার মতো হয়ত কিছু আছে। গাড়িটিতে আবার কোনো চালকও দেখা যাচ্ছে না। ভবিষ্যতে এরকম উড়ন্ত গাড়িতে করেই হয়ত আমরা স্কুলে যাব।
চিত্রটিতে একটি আধুনিক শহ্য দেখা যাচ্ছে। শহরটিতে উঁচু উচু দালানকোঠা দেখতে পাচ্ছি। আবার শহরটির রাস্তাঘাটও বেশ উন্নত মানে হচ্ছে। আকাশের দিকে তাকালে আমরা একটি উড়ন্ত পাড়িও দেখতে পাচ্ছি। সেই সাথে উড়ন্ত বাসর দেখা যাচ্ছে। নিশ্চয়ই শহরটি অনেক উন্নত।
এটি একটি শহর। তবে এটি সাধারণ কোনো শহর নয়। চিত্রটি মনে হচ্ছে একটি উড়ন্ত শহরের। শহরটি হয়ত মহাকাশে ভেসে আছে। উড়ন্ত শহর হলেও এটিতে দালানকোঠা, গাছপালা সবই দেখা যাচ্ছে। এরকম শহর হয়ত আমরা ভবিষ্যতে দেখতে পাব।
চিত্রটি দেখে মনে হচ্ছে এটি একটি রকেট। এতে আবার MARS লেখা আছে। নিশ্চয়ই এটি মঙ্গল গ্রহে যাবে। একসময় হয়ত এরকম মহাকাশযান দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মঙ্গল গ্রহে যাতায়াত করা যাবে।
চিত্রে একজন উড়ন্ত মানুষকে দেখতে পাচ্ছি। চিত্রের ব্যক্তির পেছনে একটি বিশেষ যন্ত্র দেখা যাচ্ছে। তার পায়েও বিশেষ ধরনের জুতোও দেখা যাচ্ছে। এর মাধ্যমে মানুষ হয়ত ভবিষ্যতে একাই আকাশে উড়তে পারবে।
অ্যাক্টিভিটি ২: তোমার পাঠ্যবইয়ের চিত্র ৩.১.১ – ৩.১.৮ এর কোন ছবিটি তোমার কাছে সবচেয়ে বিস্ময়কর মনে হচ্ছে? ছবিটি সম্পর্কে তোমার অনুভূতি লেখো।
নির্দেশনা: তোমরা পাঠ্যবইয়ের চিত্র ৩.১.১ – ৩.১.৮ দেখো। চিত্রগুলোর মধ্যে যে চিত্রটি তোমার কাছে সবচেয়ে বিস্ময়কর মনে হয়েছে সেটি বাছাই করো। এবার চিত্র সম্পর্কে ‘আমার বিস্ময়’ বক্সে নিজের অনুভূতি লেখো। জোড়ায় একজনের অনুভূতি আরেকজনের সাথে শেয়ার করো। নিচের নমুনা উত্তরের সাথে তোমার অনুভূতি মিলিয়ে দেখতে পারো।
নমুনা উত্তর: আমার কাছে সবচেয়ে বেশি বিস্ময়কর মনে হচ্ছে চিত্র ৩.১.৮-এর ছবিটি। চিত্রটিতে একজন উড়ন্ত মানুষকে দেখতে পাচ্ছি।
আমার অনুভূতি: মানুষ কীভাবে উড়তে পারবে সেটি ভাবতেই আমার বেশ অবাক লাগছে। কারণ মানুষের তো ভানা নেই। আমি ও আমার বন্ধুরা সবসময় খোলা আকাশে পাখিদের দেখি। পাখিরা জানা জাপটিয়ে কী সুন্দর করেই না উড়ে বেড়ায়। পাখিদের দেখে ভাবি আমরাও যদি এমন করে উড়তে পারতাম! উড়ে উড়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঘুড়ে বেড়াতে পারতাম! আগামীতে সেই স্বপ্নটাই হয়ত সত্যি হতে যাচ্ছে। আমরাও হয়ত পাখিদের মতো উড়তে পারব। চিত্রের মানুষটির পেছনে একটি বিশেষ যন্ত্র দেখতে পাচ্ছি। এ যন্ত্রটির মাধ্যমে হয়ত মানুষ ভানা ছাড়াও উড়তে পারবে। আমরাও ভবিষ্যতে কোনো একদিন এমন যন্ত্রের মাধ্যমে আকাশে উড়ে বেড়াব। বিষয়টা ভেবেই আমার অনেক খুশি লাগছে।
অ্যাক্টিভিটি ৩: “২০৬২ এর এক দিন” গল্পটি পড়ো। গল্পটি পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ক. গল্পটি কেমন লাগলো?
খ. গল্পটি কি সম্ভব না অসম্ভব?
গ. গল্পের সবচেয়ে বিস্ময়কর অংশ কোনটি?
সম্ভাব্য উপকরণ: পাঠ্যপুস্তক, কাগজ, কলম, পেন্সিল, মার্কার, চক, বোর্ড, ডাস্টার ইত্যাদি।
নির্দেশনা: পাঠ্যবইয়ের ভবিষ্যতের গল্পটি নিজে নিজে পড়ো। গল্পের কোনো অংশ না বুঝলে শিক্ষকের কাছ থেকে বুঝে নাও। পাঠ সহায়ক বিষয়বস্তু পড়েও বুঝে নিতে পারো। এবার জোড়ায় গল্প নিয়ে আলোচনা করো। আলোচনা করার সময় উপরের প্রশ্নগুলো নিয়ে চিন্তা করে উত্তর দাও। তোমার উত্তর কেমন হবে তা নমুনা উত্তর থেকে ধারণা নিতে পারে।
নমুনা উত্তর:
ক. ‘২০৬২ এর এক দিন’ গল্পটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। গল্পের ইলমা চরিত্রে আমি নিজেকেই কল্পনা করেছি। গল্পটি যেন আমাকে ভবিষ্যতের কোনো এক সময়ে নিয়ে গেছে। গল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পেরেছি।
যেমন: শিক্ষা ড্রোন, অ্যালার্মওয়ালা বালিশ, থ্রিডি মাইক্রোওয়েব, উড়ন্ত গাড়ি প্রভৃতি। গল্পে অজানা ও নতুন কিছু শিখতে পেরেছি। তাই আমার অনেক ভালো লেগেছে।
খ. গল্পটি শুরুতে অদ্ভুত মনে হলেও আমার ধারণা এটি সম্ভব। অনেক জিনিস প্রথম দিকে অসম্ভব মনে হয়। তবে পরে তা বাস্তবে সম্ভব হতে পারে। যেমন: আমরা কি কখনও অনলাইন ক্লাসের কথা চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু করোনার সময় উন্নত প্রযুক্তির জন্য এটি সম্ভব হয়েছিল। তেমনি চিঠির জায়গা একসময় মোবাইল বার্তা দখল করবে তাও ভাবা হয়নি। তাই এখন অনেকের কাছে গল্পটি অবাস্তব মনে হতে পারে। তবে ভবিষ্যতে এ গল্পটি সম্ভব বলে আমি মনে করি।
গ. আমার কাছে কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশনের অংশকে সবচেয়ে বেশি বিস্ময়কর মনে হয়েছে।
এ প্রযুক্তির মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় তথ্য পাঠানো যায়। তথ্যের পাশাপাশি মানুষও নাকি পাঠানো সম্ভব হবে। ভবিষ্যতে এর মাধ্যমে আমরা হয়তো পৃথিবী থেকে মঙ্গলগ্রহে যেতে পারবো। বিষয়টি আমার কাছে অনেক বিস্ময়কর মনে হয়েছে। নিমিষেই এ প্রযুক্তি মানুষকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠাবে। আসলেই এটি অনেক বিস্ময়কর।
অ্যাক্টিভিটি ৪: ৪০ বছর পরে তোমার এলাকার প্রত্যাশিত ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা নিয়ে একটি গল্প লেখো বা ছবি আঁকো।
নির্দেশনা: পাঠ্যবইয়ের ভবিষ্যতের গল্পটি তোমার ইতোমধ্যে পড়া হয়েছে। এবার গল্পের ধারণা থেকে তোমার এলাকার ৪০ বছর পরের প্রত্যাশিত ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা ভাবো। তোমার ভাবনাগুলোর ওপর ভিত্তি করে পাঠ্যবইয়ের নির্ধারিত বক্সে একটি গল্প লেখো বা ছবি আঁকো। গল্প বা ছবিতে যেন তোমার এলাকার ৪০ বছর পরের প্রত্যাশিত ভবিষ্যৎ ফুটে ওঠে। প্রয়োজনে নিচের নমুনা উত্তর থেকে ধারণা নিতে পারো।
নমুনা ছবি: নিচে আমার এলাকার প্রত্যাশিত ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি ছবি আঁকা হলো এবং একটি গল্পও দেওয়া হলো-
এলাকার ঠিকানা: মিরপুর, ঢাকা
সাল: ২০৬৩
নমুনা গল্প: ৪০ বছর পরে আমার এলাকার প্রত্যাশিত ভবিষ্যৎ আমি পাশের চিত্রের মতো কল্পনা করি। তখন এলাকায় অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন বড় বড় দালান থাকবে। উন্নত রাস্তাঘাট থাকবে। আকাশে চলবে উড়ন্ত গাড়ি। কিছু উড়ন্ত গাড়ি আবার চালক ছাড়াও চলবে। রাস্তাঘাটে এখনকার মতো ট্রাফিক জ্যাম থাকবে না। গাড়ির পাশাপাশি আকাশে ড্রোনও দেখা যাবে। এলাকার মানুষ সহজেই যাতায়াত করতে পারবে। শিক্ষার্থীরা উড়ন্ত বাস বা গাড়িতে করে স্কুলে যাবে। প্রকৃতির ওপর খারাপ প্রভাব ফেলবে না এমন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে। বরং প্রযুক্তিগুলো প্রকৃতিকে রক্ষা করবে এবং সমৃদ্ধ করবে। তাই এলাকাটি হবে সবুজ শহর। এমনই হবে আমার এলাকার প্রত্যাশিত ভবিষ্যৎ।
চিত্র: আমাদের এলাকার ৪০ বছর পরের চিত্র
অ্যাক্টিভিটি ৫: সারাদেশে চালকবিহীন গাড়ি চালু হলে কেমন প্রভাব পড়বে তা নিয়ে ভবিষ্যৎ চক্র আঁকো। এ প্রভাবগুলোর কোনগুলো ইতিবাচক ও কোনগুলো নেতিবাচক তা উল্লেখ করো।
সম্ভাব্য উপকরণ: প্রজেক্টর, ল্যাপটপ, পাঠ্যপুস্তক, কাগজ, কলম, ফ্লিপচার্ট, ভিডিও, মার্কার, চক, বোর্ড, ডাস্টার ইত্যাদি।
নির্দেশনা: সারাদেশে চালকবিহীন গাড়ি চালু হলে কী ধরনের প্রভাব পড়বে তা ভাবো। খাতার মাঝখানে চালকবিহীন গাড়ি লিখে তার চারপাশে প্রথমেই যে প্রভাব মনে আসে তা লেখো। এই প্রভাবগুলোই প্রাথমিক প্রভাব। প্রাথমিক প্রভাব থেকে দ্বিতীয় স্তরের প্রভাব বের করো। যেমন- চালকবিহীন গাড়ির একটি প্রাথমিক প্রভাব হলো বর্তমান সময়ের চালকদের চাকরি চলে যাবে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্তরের প্রভাব – হলো চালকদের চাকরি চলে গেলে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে। প্রয়োজনে তোমার শিক্ষক বা সহপাঠীর সাথে আলোচনা করো। এভাবে দ্বিতীয় স্তরের প্রভাব থেকে তৃতীয় বা চতুর্থ স্তরের প্রভাব বের করতে পারো। সহপাঠীর সাথে আলোচনা করে কোন প্রভাবগুলো ইতিবাচক এবং কোন প্রভাবগুলো নেতিবাচক তা বের করো। এক্ষেত্রে নমুনা উত্তর থেকে সহায়তা নিতে পারো।
নমুনা ভবিষ্যৎ চক্র: নিচে চালকবিহীন গাড়ির প্রভাব ভবিষ্যৎ চক্রে তুলে ধরা হলো-
ইতিবাচক প্রভাব: চালকবিহীন গাড়ি চালু হলে রাস্তায় দুর্ঘটনা কমবে। এটি ইতিবাচক প্রভাব। এছাড়া জ্বালানির সাশ্রয়, কম ট্রাফিক জ্যাম, নতুন পেশা সৃষ্টিও ইতিবাচক প্রভাব।
নেতিবাচক প্রভাব: চালকবিহীন গাড়ির কারণে চালকদের চাকরি চলে যাবে। ফলে বেকারত্ব বাড়বে। এটি নেতিবাচক প্রভাব।
অ্যাক্টিভিটি ৬: তোমার ইচ্ছা মতো একটি ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি বাছাই করে নিজের মতো করে একটি ভবিষ্যৎ চক্র আঁকো।
নির্দেশনা: পাঠ্যবইয়ের ৫৩-৫৪ পৃষ্ঠার ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি থেকে ইচ্ছা মতো একটি প্রযুক্তি বাছাই করো। এবার নিজের মতো করে পাঠ্যবইয়ের নির্ধারিত বক্সে ভবিষ্যৎ চক্র আঁকো। ভবিষ্যৎ চক্রে তোমার বাছাইকৃত প্রযুক্তির প্রাথমিক প্রভাব ও দ্বিতীয় স্তরের প্রভাব ফুটিয়ে তোল। প্রয়োজনে নমুনা উত্তর দেখে নাও।
নমুনা ভবিষ্যৎ চক্র: নিচে মানুষের মতো দেখতে রোবটের ভবিষ্যৎ চক্র দেওয়া হলো-
অ্যাক্টিভিটি ৭: নাটক প্রদর্শনের প্রস্তুতি গ্রহণ করো এবং সবাই মিলে নাটক প্রদর্শন করো।
সম্ভাব্য উপকরণ: নাটক মঞ্চস্থ করার জন্য সম্ভাব্য যা যা উপকরণ লাগতে পারে, নাটকের স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী, স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করা।
আরো পড়ো → পেশার রূপ বদল
আরো পড়ো → কাজের মাঝে আনন্দ
নির্দেশনা: ৮ থেকে ১০ জনের দল গঠন করো। ৪০ বছর পরে রা (এখন ২০২৩ হলে ২০৬৩ সালে) তোমার এলাকার প্রত্যাশিত ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা নিয়ে মঞ্চ নাটকের পরিকল্পনা করো। নাটকে ৪০ বছর অ পর নিজেদের কোন পেশায় দেখতে চাও তা অভিনয় করে দেখাতে হবে। অভিনয় করবে ৪০ বছর পরের এমন একটা সময়ে যেখানে অন্যান্য সদস্যের সাথে দেখা হবে। নাটক ৮-১২ মিনিটের হবে। নাটকের গান, কবিতা, নাচ থাকতে পারে। মঞ্চ কেমন হবে, কি পোশাক পরবে, হাতে কেমন প্রযুক্তি থাকবে তা চিন্তা করতে হবে ও নাটকে দেখাতে হবে। নাটকটি ক্লাসে বা বিদ্যালয়ের কোনো অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা যেতে পারে।
নমুনা উত্তর: নাটক প্রদর্শনের প্রস্তুতি: নাটক প্রদর্শনের প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে নাটকের গল্প তৈরি করব। গল্প তৈরির পর নাটকের স্থান নির্বাচন করব ও রিহার্সেল করব।
নাটকের গল্প: ৪০ বছর পরে (২০৬৩ সালে) আমাদের এলাকার প্রত্যাশিত ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে তা নিয়ে একটি মঞ্চ নাটক প্রস্তুত করব। নাটকের মাধ্যমে ৪০ বছর পরে আমার এলাকার ভবিষ্যৎ কী তা তুলে ধরব। নাটকে ৪০ বছর পর নিজেদের যে পেশায় দেখতে চাই তা নিয়ে অভিনয় করব। আমরা অভিনয় করব ৪০ বছর পরের এমন একটি সময়ে যেখানে আমাদের দলের অন্যান্য সদস্যদের সাথে আমাদের দেখা হবে।
নাটকের চরিত্র সংক্ষেপ:
নিতি: আন্তঃগ্রহ সম্পর্কের বিশেষজ্ঞ
রোবট বুশো ৩.০ নিতির বাড়ির রোবট
আরিফ: ঢাকা টু মঙ্গল বাসের সুপারভাইজার
রফিদ: মঙ্গল গ্রহের গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
নাটকের দৃশ্য: নাটকে মোট তিনটি দৃশ্য রয়েছে।
দৃশ্য-১
২০৬৩ সালের কোনো একদিন সকাল ৮টায় অ্যালার্মওয়ালা বালিশ নিতিকে ধীরে ধীরে জাগালো। নিতি অ্যালার্মের শব্দে বিছানা ছেড়ে উঠলো ও ইশারা করলো। সাথে সাথেই বিছানাটি নিজে নিজে গুছিয়ে গেল।
নিতি: রোবট রুশো ৩.০ আমার নাস্তা কি তৈরি হয়েছে?
রোবট রুশো ৩.০: হ্যাঁ। আমি থ্রিডি মাইক্রোওয়েবে নাস্তা তৈরি করে টেবিলে সাজিয়ে রেখেছি।
নিতি: ধন্যবাদ রুশো ৩.০। আচ্ছা শুনো, আজ আমি মঙ্গলগ্রহে যাব। তাই আজ ফিরতে হয়ত সন্ধ্যে হবে।
রোবট রুশো ৩.০: ঠিক আছে। আমি রাতের খাবার তৈরি করে রাখব।
দৃশ্য-২
নিতি ঢাকা টু মঙ্গল বাসের স্টেশনে যাওয়ার উদ্দেশে উড়ন্ত গাড়িতে বসল। গাড়ি কোনো চালক ছাড়াই নিতিকে স্টেশনে নিয়ে যাচ্ছে। নিতি উপরের থেকে তাকালো। দেখলো শহরে কোনো ট্রাফিক জ্যাম নেই। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিতি স্টেশনে পৌঁছালো। সেখানে তার বন্ধু আরিফ অপেক্ষা করছে। সে ঢাকা টু মঙ্গল বাসের সুপারভাইজার।
আরিফ: কেমন আছ নিতি? আজ হঠাৎ মঙ্গল গ্রহে যাচ্ছ? কোনো বিশেষ কারণ?
নিতি: আমি বেশ ভালো আছি। তুমি তো জানোই আন্তঃগ্রহ সম্পর্কের বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন গ্রহের খোঁজ-খবর রাখতে হয়। আমি আজ তাই মঙ্গলগ্রহের সবকিছুর খবর নিতে যাচ্ছি। আর কাল আমি একটি অনলাইনে ইন্টারপ্ল্যানেটরি ক্লাস নিব। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদেরত এ বিষয়ে অনেক আগ্রহ। তাই ভাবলাম আজ মঙ্গল গ্রহে যাই।
আরিফ: বেশ ভালোই হয়েছে। এই সুযোগে তোমার ও রাফিদের সঙ্গে দেখাও হয়ে গেল। তবে রাফিদ কোথায়? দেখি রাফিদকে একটা কল দিই। আরিফ, তার ডান হাতের মুঠো খুলে বাম হাত দিয়ে ইশারা করে রাফিদকে কল দিল। রাফিদের হলোগ্রাফিক চিত্র আরিফের মুঠোর ওপর চলে এল।।
আরিফ: কী খবর রাফিদ? কোথায় তুমি? আমি আর নিতি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।
রাফিদ: এই তো চলে এসেছি।
[কিছুক্ষনের মধ্যেই রাফিদের প্রবেশ।
নিতি: কেমন আছ রাফিদ? আজ কী মঙ্গলবাসীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মঙ্গলগ্রহে যাচ্ছ?
রাফিদ: ঠিক ধরেছ নিতি। ওখানকার সবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্যই যাচ্ছি। আচ্ছা আরিফ, তোমার বাস কী প্রস্তুত?
আরিফ: হ্যাঁ, ঐ যে দেখো ঢাকা টু মঙ্গল বাস চলে এসেছে।
নিতি: দেখো তোমরা, বাসটির সামনে কী লেখা- ‘যাচ্ছি ছুটে মঙ্গল গ্রহে, মঙ্গল এক্সপ্রেস বাসে করে।’
দৃশ্য-৩
তারা একে একে বাসে উঠে বসলো। আকাশে বাসের পাশাপাশি অনেকগুলো ড্রোনও দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে নিতি দৈনিক অগমেন্টেড খবর দেখতে লাগল। একসময় তিন বন্ধুর আড্ডা জমে উঠল। তাদের আড্ডার মূল বিষয়ই নিত্যনতুন প্রযুক্তি।
নিতি: আচ্ছা তোমরা কী কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশনের কথা ভেবে দেখেছ? [অগমেন্টেড খবর দেখতে দেখতে জিজ্ঞেস করল।]
আরিফ: হ্যাঁ, বিষয়টি নিয়ে আমিও অনেক কৌতূহলী। বিজ্ঞানীরা কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন।
রাফিদ: কিছুদিন পর হয়তো আমরা আর বাসে নয়, কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশনের মাধ্যমে মঙ্গল গ্রহে যাব। তখন আমরা এক মুহূর্তে পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহে পৌঁছে যাব।
আরিফ: এই যে ড্রোনের কথাই ধরো। বর্তমানে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ কত কাজেই না লাগছে! আমার ধারণা আমরা আরও উন্নত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
রাফিদ ও নিতি: অবশ্যই। আমাদের ধারণাও তাই। [একসাথে বলে উঠল।] এরই মধ্যে বাস এসে মঙ্গল গ্রহে থামল।
আরিফ: বন্ধুরা আমরা চলে এসেছি মঙ্গল গ্রহে। তোমাদের সাথে আবার দেখা হবে।
এই বলে সবাই নেমে পড়ল ও যার যার কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। নাটকের তৈরির পর স্থান নির্বাচন ও রিহার্সেল করা হবে। নিচে তা তুলে ধরা হলো-
স্থান নির্বাচন: নাটক প্রদর্শনের প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমেই স্থান নির্বাচন করব। স্থান নির্বাচন করার ক্ষেত্রে শিক্ষকের সাথে আলোচনা করব। স্থান নির্বাচন করে সে স্থানে নাটক প্রদর্শনের জন্য কর্তৃপক্ষের থেকে অনুমতি নেব।
রিহার্সেল করা: রিহার্সেল করলে নাটকটি আরও ভালোভাবে উপস্থাপন করা যাবে। তাই ক্লাসে সবাই মিলে রিহার্সেল করব। রিহার্সেল করার সময় প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষকের সহায়তা নেব। শিক্ষকের পরামর্শ না নিয়ে রিহার্সেল করলে আমরা আরও ভালো অভিনয় করতে পারব।
সবাই মিলে নাটক প্রদর্শন: পূর্বনির্ধারিত সময় ও স্থানে সবাই উপস্থিত হব। নাটকের চরিত্র অনুযায়ী নিজেরা সাজব। অবশেষে দর্শকরা ভাই উপস্থিত হলে গল্প অনুযায়ী নাটকটি মঞ্চে প্রদর্শন করব।
অ্যাক্টিভিটি ৮: স্বমূল্যায়ন
নির্দেশনা: স্বমূল্যায়নটি নিজে পূরণ করো। সততা বজায় রেখে তোমার পছন্দের ঘরে টিক (✔) চিহ্ন দাও। পূরণ করে শিক্ষকের কাছে জমা দাও। নিচে স্বমূল্যায়নের একটি নমুনা দেওয়া হলো।
নমুনা উত্তর: এই অধ্যায়ে আমরা যা যা করেছি তা পছন্দের ঘরে টিক (✔) চিহ্ন দেওয়া হলো-
নির্দেশনা: স্বমূল্যায়নের প্রথম ছক পূরণ করে তোমার প্রাপ্তি চিহ্নিত করো। কোনো কাজ আরও ভালভাবে করতে হবে কি না তা বের করো। কোন কোন বিষয় আরও ভালভাবে জানতে হবে তাও বের করো। কীভাবে তা করবে ও জানবে তা শিক্ষক ও অভিভাবকের কাছ থেকে জেনে নাও। পাঠ সহায়ক বিষয়বস্তু পুনরায় পড়েও নিতে পারো।
নমুনা উত্তর:
আমার প্রাপ্তি
আমার ভালো লাগছে; কিন্তু অধ্যায়ের প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা প্রয়োজন।
যেসব বিষয় আমাকে আরও ভালোভাবে জানতে হবে: ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন সম্পর্কে আমাকে আরও জানতে হবে। এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে আমাদের জীবনে কী রকম প্রভাব রাখবে তা বুঝতে হবে। এছাড়া টাইম মেশিন ও সবুজ শহর সম্পর্কেও জ্ঞান অর্জন করতে হবে। টাইম মেশিন কীভাবে কাজ করবে ও সবুজ শহর কীভাবে তৈরি করা যাবে তা জানতে হবে।