দশে মিলে করি কাজ হচ্ছে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর জীবন ও জীবিকা বই এর ৬ষ্ঠ অধ্যায়। দশে মিলে করি কাজ অধ্যায়টির পাঠ্যবইয়ের প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
দশে মিলে করি কাজ
অ্যাক্টিভিটি ১: অনুপদের ক্লাসে সবাই মিলে কেন ডিসপ্লে বোর্ড বানালো?
সম্ভাব্য উপকরণ: পাঠ্যপুস্তক, ফ্লিপ চার্ট/পোস্টার, মার্কার, চক, বোর্ড, ডাস্টার ইত্যাদি।
নির্দেশনা: পাঠ্যবইয়ের ৯৮ পৃষ্ঠার অনুপদের গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়ো। গল্পের গুরুত্বপূর্ণ শব্দসমূহ পেন্সিল দিয়ে দাগিয়ে রেখো। অনুপদের ক্লাসে সবাই মিলে কেন ডিসপ্লে বোর্ড বানালো সে সম্পর্কে ভাবো। এরপর ছকটি পূরণ করো। নিচে নমুনা হিসেবে ছকটি পূরণ করে দেওয়া হলো।
নমুনা উত্তর: অনুপদের ক্লাসে শিক্ষকরা প্রায়ই বিভিন্ন বিষয়ের পোস্টার তৈরি করতে দিতেন। ওরা পোস্টার বানিয়ে রশিতে ঝুলিয়ে দিত। এতে ক্লাস জুড়ে রশি ঝুলে থাকত। ফলে ক্লাসের সৌন্দর্য নষ্ট হতো। অনেক সময় ফ্যানের বাতাসে পোস্টারগুলো ছিড়ে পড়ে যেত। এতে ক্লাসের পরিবেশ নষ্ট হতো। এ কারণে অনুপরা সবাই মিলে মিটিং করল। তারা এ সমস্যা সমাধানের জন্য একটি ডিসপ্লে বোর্ড তৈরির সিদ্ধান্ত নিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুপরা ডিসপ্লে বোর্ড বানিয়ে তাদের সমস্যার সমাধান করল। এখন অনুপরা নিজের আঁকাছবি, গল্প, কবিতা এখানে টানিয়ে দিতে পারে। আবার পোস্টারও ডিসপ্লে করতে পারে।
অ্যাক্টিভিটি ২: নির্দিষ্ট স্থান পরিদর্শন করে দলগত আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা অনুসন্ধান।
সম্ভাব্য উপকরণ: পাঠ্যপুস্তক, ফ্লিপ চার্ট/পোস্টার, মার্কার, চক, বোর্ড, ডাস্টার ইত্যাদি।
নির্দেশনা: তোমরা ৫ জন করে শিক্ষার্থীর ৬টি দল গঠন করো। এরপর নির্দিষ্ট স্থান হিসেবে বিদ্যালয় পরিদর্শন করো। বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো সম্পর্কে ধারণা নিতে পারো। বিদ্যালয়ের পাশে বসবাসকারী মানুষের সাথে কথা বলেও তথ্য সংগ্রহ করতে পারো। প্রতিটি দল তাদের নির্ধারিত সমস্যা নিয়ে দলগতভাবে আলোচনা করো। এবার সমস্যাগুলো অনুসন্ধান করে। সমস্যা অনুসন্ধান ছকটি পূরণ করো। এবার নমুনা উত্তরের সাথে তোমাদের উত্তর মিলিয়ে নাও।
নমুনা উত্তর: নিচের ছকটি নমুনা হিসেবে পূরণ করে দেওয়া হলো-
অ্যাক্টিভিটি ৩: তোমার পাঠ্যবইয়ের চিত্র ৬.৩ থেকে যোগাযোগের ধরন চিহ্নিত করা।
সম্ভাব্য উপকরণ: গল্প লেখার চিরকুট, ফ্লিপ চার্ট, সাদা/রঙিন পোস্টার পেপার, মার্কার, চক, বোর্ড, ডাস্টার ইত্যাদি।
নির্দেশনা: পাঠ্যবইয়ের ১০৩ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো ভালোভাবে খেয়াল করো। বুঝতে না পারলে পাঠ্যবই বা শিক্ষকের সহায়তা নিতে পারো। এবার চিত্রগুলো থেকে যোগাযোগের বিভিন্ন ধরন চিহ্নিত করে পাঠ্যবইয়ের চিত্রগুলোর নিচে লেখো। নিচে নমুনা উত্তর দেওয়া হলো। তোমার উত্তরের সাথে মিলিয়ে নিও।
নমুনা উত্তর:
অ্যাক্টিভিটি ৪: তোমার পাঠ্যবইয়ের চিত্র ৬.৫ এর ইশারা ভাষার প্রতীকগুলো দ্বারা কী প্রকাশ করে তা লেখো।
সম্ভাব্য উপকরণ: গল্প লেখার চিরকুট, ফ্লিপ চার্ট, সাদা/রঙিন পোস্টার পেপার, মার্কার, চক, বোর্ড, ডাস্টার ইত্যাদি।
নির্দেশনা: তোমার পাঠ্যবইয়ের চিত্র ৬.৫ খেয়াল করো। চিত্রের ইশারা গুলো দ্বারা কী প্রকাশ করে তা ভাবো। প্রয়োজনে শিক্ষক বা অভিভাবক বা ইন্টারনেট থেকে জেনে নিতে পারো। এবার প্রতীকগুলো দ্বারা কী প্রকাশ করে তা পাশে লিখে পূরণ করো। নিচে নমুনা উত্তর দেওয়া হলো। তোমার উত্তরের সাথে মিলিয়ে নিও।
অ্যাক্টিভিটি ৫: কার্যকর যোগাযোগ দক্ষতার অনুশীলন।
সম্ভাব্য উপকরণ: পাঠ্যপুস্তক, ফ্লিপ চার্ট/পোস্টার, মার্কার, চক, বোর্ড, ডাস্টার ইত্যাদি।
নির্দেশনা: তোমরা ৫ জন করে ৬টি শিক্ষার্থীর দল গঠন করো। এখানে কয়েকটি ঘটনা দেওয়া আছে। ঘটনাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ো। এগুলো পড়ে তোমাদের দলে আলোচনা করো। কীভাবে কার্যকর যোগাযোগ করে সমস্যাটি কাটিয়ে ওঠা যায় তা লেখো। নিচের নমুনা উত্তরের সাথে তোমার উত্তর মিলিয়ে নাও এবং ভূমিকাভিনয় করে অন্য বন্ধুদের দেখাও।
ক. তুমি বাসে ওঠার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। লম্বা লাইন। এমন সময় একজন এসে মাঝখানে তোমার সামনে ঢুকে গেল। লোকটা নিয়ম ভঙ্গ করেছে। তুমি এখন কী করবে?
নমুনা উত্তর:
কেউ লাইনের মাঝে ঢুকে গেলে প্রথমে আমি তাকে সুস্পষ্টভাবে যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করবো যে লাইনের মাঝে ঢোকা উচিত না। আমরা লাইনে অনেকক্ষণ যাবত দাঁড়িয়ে আছি। নিয়ম অনুযায়ী তার পিছনে দাঁড়ানো উচিত। শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে লাইনে না দাঁড়ালে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে। এতে কেউই তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে না। কিন্তু এসব আলোচনায় অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করব। তাকে আঘাত করে কথা বলব না।
নমুনা ভূমিকাভিনয়:
আমি: ভাই, আপনি হঠাৎ লাইনে ঢুকে গেলেন কেন? আপনি কি আগে থেকেই এখানে ছিলেন?
নিয়ম ভঙ্গকারী ব্যক্তি: একজন ঢুকলে তেমন সমস্যা হবে না। আমি সব সময় এই বাসেই যাই ভাই।
লাইনে দাঁড়ানো আরেক ব্যক্তি: আমরা তো অনেকক্ষণ যাবত এখানে দাঁড়িয়ে আছি। আমরাও তো এ বাসেই যাই।
নিয়ম ভঙ্গকারী ব্যক্তি: আমার একটু তাড়া আছে ভাই। তাই একটু আগে যেতে দিন।
আমি: ভাই আমরা সবাই এখানে সুন্দরভাবে লাইন মেনে চলছি। আপনি লাইনে ঢুকে পড়লে অন্যরাও আসতে চাইবে। এতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। তাই সবাই নিয়ম মতো লাইনে দাঁড়াই। তাতে সবার সুবিধা হবে।
নিয়ম ভঙ্গকারী ব্যক্তি: তা ঠিক। আচ্ছা আমি পিছনে গিয়ে দাঁড়াই। দুঃখিত।
আমি: ধন্যবাদ ভাই।
খ. তুমি ফুটবল খেলতে ভালোবাসো। কিন্তু প্রতিদিনই ফুটবল খেলতে গিয়ে তুমি হাতে, পায়ে, নাকে, মুখে বা কোথাও ব্যথা পেয়ে বাড়ি ফিরে আসো। এতে মা রাগ করে বললেন, ‘এখন থেকে তোমার ফুটবল খেলতে যাওয়া বন্ধ।’ তুমি এখন কী করবে?
নমুনা উত্তর:
আমি আমার মায়ের মতামতকে সম্মান জানাব। এরপর মাকে যুক্তি সহকারে বুঝিয়ে বলব যে, ফুটবল খেলা আমার শখ। এছাড়াও খেলাধুলা আমাদের সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে। এমনকি মানসিক বিকাশে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। প্রয়োজনে মাকে আশ্বস্ত করবো, যে এরপর সতর্কতার সাথে খেলব।
নমুনা ভূমিকাভিনয়:
মা : তুমি খুড়িয়ে হাঁটছো কেন?
আমি : ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ে ব্যথা পেয়েছি।
মা : তোমাকে না নিষেধ করছি ফুটবল খেলতে। তারপরেও কেন খেলতে যাও?
আমি : মা, আমি ফুটবল খেলতে পছন্দ করি।
মা : কোনো বাহানা চলবে না। আজকে থেকে তোমার ফুটবল খেলা সম্পূর্ণ নিষেধ।
আমি : পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলাও প্রয়োজন আছে। খেলাধুলা আমাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সাহায্য করে।
মা : আমি জানি। কিন্তু তোমাকে নিয়ে চিন্তা হয়। যদি বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনায় পড়ো।
আমি : এরপর থেকে সতর্কভাবে খেলব মা। আর নিজের খেয়াল রাখব।
মা : আচ্ছা ঠিক আছে। এবার হাত-মুখ ধুয়ে বিশ্রাম নাও।
আমি : ধন্যবাদ মা।
গ. তুমি প্রতিদিন বান্ধবীদের সঙ্গে স্কুলে যাও। রাস্তায় যাওয়ার পথে চায়ের দোকানের সামনে প্রায়ই কয়েকজন দুষ্ট ছেলে তোমাকে ও তোমার বান্ধবীদের উদ্দেশ্য করে টিপ্পনী কাটে, হাসাহাসি করে। তুমি/তোমরা এখন কী করবে?
নমুনা উত্তর:
আমি তাদেরকে যুক্তিসহকারে বুঝিয়ে বলব যে ইভটিজিং একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। এটা শিক্ষার্থীদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। অনেক শিক্ষার্থী ইভটিজিংয়ের কারণে বিদ্যালয়ে যাওয়া ছেড়ে দেয়। এভাবে সচেতন করার পরেও তারা না শুনলে প্রয়োজনে অভিভাবক বা শিক্ষককে জানাব।
নমুনা ভূমিকাভিনয়:
আমি: ভাই, আপনারা প্রতিদিন কেন বিদ্যালয়ে যাওয়া মেয়েদের উত্যক্ত করেন। রাস্তাঘাটে মেয়েদের ইভটিজিং করা উচিত না।
ইভটিজার ২: তোমার সমস্যা কী এতে?
আমার সহপাঠী: ইভটিজিং আইনত অপরাধ। ইভটিজিংয়ের কারণে মেয়েদের মনোবল ভেঙ্গে যায়। অনেক মেয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া ছেড়ে দেয়।
ইভটিজার ১: যাও তো তুমি । জ্ঞান দিতে এসো না।
আমি: আপনারা এর ক্ষতিকর প্রভাবটা বুঝতে পারছেন না। অনেকে এর জন্য জীবনও দিয়ে দেয়। যখন আপনার পরিবারের কেউ ইভটিজিংয়ের শিকার হবে তখন বুঝতে পারবেন। আর আপনারা যদি এ কাজ বন্ধ না করেন আমি আপনার অভিভাবক ডাকতে বাধ্য হব।
ইভটিজার ১: দুঃখিত ভাই। আমরা বুঝতে পারিনি ইভটিজিংয়ের ভয়াবহতা।
ইভটিজার ২: আমরা এসব আর কখনো করব না।
আমি: ধন্যবাদ ভাই।
ঘ. টিফিন ঘণ্টায় তোমরা কয়েকজন মিলে মাঠে বসে গল্প করছিলে। এমন সময় দোতলায় বারান্দা থেকে একজন বোতল থেকে পানি নিয়ে হাত ধুচ্ছিল আর পানির ছিটা এসে তোমাদের গায়ে পড়ল। তোমরা এখন কী করবে?
নমুনা উত্তর:
প্রথমত, আমরা দোতলার বারান্দায় তার কাছে যাব। গিয়ে বলব মাঠে মানুষ চলাফেরা করে। তাই এখানে পানি ফেললে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়বে। পাশাপাশি তাকে বেসিনে বা বাথরুমে গিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শ দিব। সে পানি ভুল করে বা না জেনে ফেলতে পারে। এজন্য রাগ করব না।
নমুনা ভূমিকাভিনয়:
আমি : তোমার নাম কী ভাইয়া?
শিক্ষার্থী : আমি আরিফ।
আমি : তুমি কোন ক্লাসে পড়? আরিফ : ক্লাস ফাইভ-এ।
আমি : এখানে একটু আগে তুমি হাত ধুচ্ছিলে?
আরিফ : জি ভাইয়া।
আমি : বারান্দার নিচে মানুষ চলাফেরা করে। তাই এখান থেকে পানি ফেললে তাদের গায়ে গিয়ে পড়ে।
আরিফ : দুঃখিত ভাইয়া, আমি বুঝতে পারিনি।
আমি : আশা করি আর কখনও এমন ভুল হবে না। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে বিদ্যালয় পরিষ্কার রাখা তো আমাদেরই দায়িত্ব।
আরিফ : আমি খেয়াল রাখব যেন এমন ভুল না হয়।
আমি : ধন্যবাদ আরিফ।
ঙ. তোমাদের ক্লাসে গণিতের স্যার ভীষণ কড়া। তিনি একটানা অঙ্ক করিয়ে যান। মাঝখানে কেউ প্রশ্ন করলে রাগ করেন। তুমি কিছুতেই অঙ্কের দুটো জায়গায় বুঝতে পারছ না। তোমার পাশের জনও বুঝতে পারছে না। তুমি/তোমরা এখন কী করবে?
নমুনা উত্তর:
আমি কিছু বুঝতে না পারলে শিক্ষকের থেকে জানতে চাইব। কিন্তু তা অবশ্যই বিনীতভাবে। শিক্ষক একটি অঙ্ক শেষ করলে, হাত তুলে সুশৃঙ্খলভাবে ঐ অঙ্কের কোনো সমস্যা থাকলে, জানতে চাইৰ। উনি একটানা অঙ্ক করিয়ে গেলে আমরা সম্মানের সাথে তাকে আমাদের সমস্যা বুঝিয়ে বলব। সমস্যার তৎক্ষণাৎ সমাধানের গুরুত্ব বলব। যেনো একটি অঙ্ক শেষ হলে বিরতি দিয়ে আমাদের প্রশ্নগুলোর সমাধান দেয় সেই অনুরোধ করব।
নমুনা ভূমিকাভিনয়:
[গণিত শিক্ষক ক্লাসে অঙ্ক করাচ্ছেন। শিক্ষকের অঙ্কের মাঝে আমি হাত তুলবো।]
আমি : স্যার আমার একটা প্রশ্ন আছে।
শিক্ষক : আমার অঙ্কের মাঝে কেউ প্রশ্ন করবে না।
আমি : আপনাকে থামানোর জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত স্যার।
শিক্ষক : কোনো সমস্যা থাকলে ক্লাস শেষে আলোচনা করব।
আমি : স্যার আমি অঙ্কটির কিছু অংশ বুঝেছি। এই দুটো জায়গায় আমার একটু সমস্যা হচ্ছে। এখন যদি সমাধানটা বুঝে নিই আমার জন্য সহজ হবে।
শিক্ষক : ঠিক আছে, তাহলে প্রশ্ন থাকলে অঙ্কের মাঝে করবে না। অঙ্কের শেষে আমাকে জিজ্ঞেস করে নিবে।
আমি : অনেক ধন্যবাদ স্যার, আমাদের বোঝার সুযোগ দেওয়ার জন্য।
চ. তোমাদের ক্লাসে একজন সহপাঠী খুব আবেগপ্রবণ। অল্পতেই কষ্ট পায়; কান্নাকাটি করে। দুষ্টামীর ছলে কেউ তাকে কিছু বললেও সে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলে। একদিন বেঞ্চ টান দিতে গিয়ে ওর ব্যাগটি নিচে পড়ে যায়। তখন বাংলার ক্লাস চলছিল। ও চিৎকার দিয়ে কাঁদতে শুরু করল। সবাই ঘাবড়ে গেল। তুমি/তোমরা এখন কী করবে?
নমুনা উত্তর:
প্রথম আমরা তার ব্যাগটি উঠিয়ে দিব। তাকে কান্না থামাতে অনুরোধ করব। বুঝিয়ে বলব যে ঘটনাটি ইচ্ছাকৃত ছিল না। এরপর ক্লাসের শিক্ষকের কাছে অনুতপ্ত হব।
ভূমিকাভিনয় :
সহপাঠী : [চিৎকার দিয়ে কাঁদছে]
আমি : [ব্যাগ উঠিয়ে দিব] আমি খুবই দুঃখিত।
অন্য সহপাঠী : আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাগ ফেলিনি। দয়া করে কান্না থামাও।
শিক্ষক : কি হয়েছে ওখানে?
আমি : স্যার, আমরা বেঞ্জ টান দিতে গিয়ে ভুলবশত ওর ব্যাগ মাটিতে ফেলে দিয়েছি।
অন্য সহপাঠী : দুঃখিত স্যার, ক্লাসে বিরক্তি সৃষ্টি করার জন্য।
আমি : স্যার, পরবর্তীতে আমরা খেয়াল রাখব, এমন ভুল যেন না হয়।
শিক্ষক : ঠিক আছে, ক্লাস চলাকালীন সময় অন্য কোনো কাজে মনোযোগ দিবে না। শুধু পড়াশোনায় খেয়াল করবে। আর মিনা (আবেগপ্রবণ সহপাঠী), তুমি কান্না করো না। ওরা ইচ্ছা করে করেনি।
আমি: ধন্যবাদ স্যার।
অ্যাক্টিভিটি ৬: সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান খুঁজে বের করা।
সম্ভাব্য উপকরণ: পাঠ্যপুস্তক, ফ্লিপ চার্ট/পোস্টার, মার্কার, চক, বোর্ড, ডাস্টার ইত্যাদি।
নির্দেশনা: ৫ জন করে শিক্ষার্থী মিলে দল গঠন করো। তারপর তোমরা দলগতভাবে সমস্যা খুঁজে বের করো। নিজেরা দলগতভাবে আলোচনা করো। সমস্যাটির সম্ভাব্য সমাধানের উপায়সমূহ খুঁজে বের করো। এরপর সম্ভাব্য সমাধানের উপায়গুলো লিখে নিচের ছকটি পূরণ করো। নিচে একটি নমুনা ছক পূরণ করে দেওয়া হলো। তোমার ভাবনার সাথে মিলিয়ে নাও।
অ্যাক্টিভিটি ৭: সমস্যার সমাধান পর্যালোচনা।
নির্দেশনা: তোমরা ইতোমধ্যে অ্যাক্টিভিটি ৬-এ একটি সমস্যা এবং তা সমাধানের সম্ভাব্য উপায়গুলো চিহ্নিত করেছ। এবার তোমরা নিজেদের দলে সম্ভাব্য সমাধানের উপায়সমূহ নিয়ে আলোচনা করো। প্রয়োজনে তোমরা শিক্ষকের সাথে আলোচনা করে নিতে পারো। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য একটি উপায় বেছে নাও। অন্য উপায়গুলো কেন যৌক্তিক মনে হয়নি তা নিয়ে দলের সাথে আলোচনা করো। এবার তোমরা কেন উপায়টি বেছে নিয়েছো তার যৌক্তিক কারণ লিখে ছকটি পূরণ করো। নিচে একটি নমুনা ছক পূরণ করে দেওয়া হলো।
নমুনা উত্তর:
অ্যাক্টিভিটি ৮: সমস্যা সমাধানে আমার প্রয়াস
নির্দেশনা: তোমরা ইতোমধ্যে দল গঠন করে নির্ধারিত সমস্যার নির্দিষ্ট একটি সমাধানের উপায় চিহ্নিত করেছো। এবার কে, কোন দায়িত্ব পালন করবে তা ঠিক করো। দায়িত্ব কখন পালন করবে, কীভাবে পালন করবে তার একটি সম্পূর্ণ পরিকল্পনা তৈরি করো। সেই অনুযায়ী সমাধানের চেষ্টা করো। দলগত সমস্যা সমাধান সম্পর্কে শিক্ষকের নির্দেশনা মোতাবেক রিপোর্ট করো। নিচে একটি নমুনা রিপোর্ট দেওয়া হলো। তোমার ভাবনার সাথে নমুনা উত্তর মিলিয়ে নাও।
নমুনা রিপোর্ট:
আরো পড়ো → আমার জীবন আমার লক্ষ্য
অ্যাক্টিভিটি ৯: স্বমূল্যায়ন
নির্দেশনা: স্বমূল্যায়নটি নিজে পূরণ করো। সততা বজায় রেখে সঠিক ঘরে টিক (√) চিহ্ন দাও। পূরণ করে বাবা-মা কিংবা পরিবারের অন্য কোনো সদস্যকে দেখাও। এরপর তাদের যেকোনো একজনের স্বাক্ষর নিয়ে শিক্ষকের কাছে জমা দাও। নিচে স্বমূল্যায়নের একটি নমুনা দেওয়া হলো।
নমুনা উত্তর:
নির্দেশনা: স্বমূল্যায়নের ১ম ছকটি পূরণ করার পর তা পর্যবেক্ষণ করে তোমার প্রাপ্তি চিহ্নিত করো। শিক্ষকের মন্তব্য ভালোভাবে পড়ে নাও। কোন কোন বিষয়গুলো তোমাকে আরো ভালোভাবে জানতে হবে এবং চর্চা চালিয়ে যেতে হবে তা চিহ্নিত করো। উক্ত বিষয়গুলো ভালোভাবে জানার জন্য পাঠ সহায়ক বিষয়বস্তু পুনরায় পড়ো। প্রয়োজনে শিক্ষক ও অভিভাবকের সহায়তা নাও। তোমার প্রাপ্ত স্কোর সন্তোষজনক হলে তা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করো।
নমুনা উত্তর:
আমার প্রাপ্তি
আমার ভালো লাগছে; কিন্তু সমস্যা সমাধানের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি দক্ষতা এবং বিষয় সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা ও চর্চা করা প্রয়োজন।
সুতরাং এভাবে হাসতে হলে এই অধ্যায়ের যেসব বিষয়গুলো আমাকে আরো ভালোভাবে জানতে হব—
- কার্যকর যোগাযোগ দক্ষতার বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে জানতে হবে।
- বাস্তব জীবনে কার্যকর যোগাযোগ দক্ষতার অনুশীলন করতে হবে।
আমার যোগাযোগ ও সমস্যা সমাধান দক্ষতা উন্নয়নের জন্য আমাকে নিয়মিত যেসব চর্চা চালিয়ে যেতে হবে—
- সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
- সমস্যা নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে চিন্তা করতে হবে।
- যোগাযোগ কার্যকর করার লক্ষ্যণীয় বিষয়গুলো বাস্তব সমস্যায় কাজে লাগাতে হবে।