বাংলাদেশের সরকারব্যবস্থা হচ্ছে নবম-দশম শ্রেণী অর্থাৎ এসএসসি’র পৌরনীতি বই এর ৬ষ্ঠ অধ্যায়। বাংলাদেশের সরকারব্যবস্থা অধ্যায় থেকে বাছাইকৃত সেরা ৫টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
বাংলাদেশের সরকারব্যবস্থা অধ্যায়ের সৃজনশীল
১.
ক. শাসন বিভাগের অপর নাম কী?
খ. বিভাগীয় প্রশাসন বলতে কী বোঝায়?
গ. ‘A’ চিহ্নিত স্থানটি সরকারের যে বিভাগটি নির্দেশ করছে তার কাজ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বাংলাদেশের ‘B’ চিহ্নিত বিভাগ ‘A’ চিহ্নিত বিভাগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তুমি কি এর সাথে একমত? মতামত দাও।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. শাসন বিভাগের অপর নাম নির্বাহী বিভাগ।
খ. বিভাগীয় প্রশাসন বলতে মাঠ প্রশাসনের প্রথম ধাপকে বোঝায়। বিভাগের প্রতিটি উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন ও তত্ত্বাবধান করে বিভাগীয় প্রশাসন। বাংলাদেশে প্রতিটি বিভাগের প্রশাসনিক প্রধান হলেন একজন বিভাগীয় কমিশনার। কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি বিভাগের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তার কাজের জন্য কেন্দ্রের নিকট দায়ী থাকেন। তিনি বিভাগের উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন ও তত্ত্বাবধান করেন।
গ. ‘A’ চিহ্নিত স্থানটি সরকারের আইন বিভাগকে নির্দেশ করছে।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সরকারব্যবস্থার মতো বাংলাদেশে সরকারের তিনটি বিভাগ আছে। সেগুলো হচ্ছে- ১. শাসন বিভাগ, ২. আইন বিভাগ ও ৩. বিচার বিভাগ। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ এককক্ষবিশিষ্ট। সদস্যসংখ্যা ৩৫০। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ যেকোনো নতুন আইন প্রণয়ন, প্রচলিত আইনের পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারে। কোনো নতুন আইন পাস করতে হলে খসড়া বিলের আকারে তা সংসদে পেশ করা হয়। সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটে গৃহীত হলে বিলটি আইনে পরিণত হয়।
প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যগণ সংসদের নিকট দায়ী থাকেন। জাতীয় সংসদ রাষ্ট্রের তহবিল বা অর্থের রক্ষাকারী। সংসদের অনুমতি ছাড়া কোনো কর বা খাজনা আরোপ ও আদায় করা যায় না। সংসদ প্রতিবছর বাজেট পাস করে। সংসদ সংবিধানে উল্লিখিত নিয়মের ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের কাজ জাতীয় সংসদ অর্থাৎ আইনসভা করে থাকে। তবে আইনসভার মূল কাজ আইন প্রণয়ন ও সংশোধন করা।
ঘ. বাংলাদেশের ‘B’ চিহ্নিত বিভাগ ‘A’ চিহ্নিত বিভাগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আমিও এর সাথে একমত।
বাংলাদেশের ‘B চিহ্নিত বিভাগ দ্বারা শাসন বিভাগকে নির্দেশ করছে। পক্ষান্তরে, ‘A’ চিহ্নিত বিভাগ দ্বারা আইন বিভাগকে নির্দেশ করছে। বাংলাদেশ সরকারের তিনটি বিভাগ আছে। যথা- ১. শাসন বিভাগ, ২. আইন বিভাগ ও ৩. বিচার বিভাগ। শাসন বিভাগ মূলত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ নিয়ে গঠিত। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির নামে দেশের শাসন পরিচালিত হলেও আসলে প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভা দেশের প্রকৃত শাসনক্ষমতার অধিকারী। মন্ত্রিপরিষদের সহযোগিতায় তিনি শাসনসংক্রান্ত সকল দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত সভায় দেশের শাসনসংক্রান্ত সকল বিষয় আলোচিত হয় এবং এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
পক্ষান্তরে, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ এক কক্ষবিশিষ্ট, সদস্যসংখ্যা ৩৫০। প্রধানমন্ত্রী সংসদের নেতা। বাংলাদেশের আইন প্রণয়নের সব ক্ষমতা জাতীয় সংসদের। সংসদ যেকোনো নতুন আইন প্রণয়ন, প্রচলিত আইনের পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারে। সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটে গৃহীত হলে বিলটি আইনে পরিণত হয়। শাসন বিভাগকে সংসদ নিয়ন্ত্রণ করে। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যগণ সংসদের নিকট দায়ী থাকেন। কোনো কারণে সংসদ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনাস্থা আনলে মন্ত্রিসভা ভেঙে যায়। মূলতবি প্রস্তাব, নিন্দা প্রস্তাব, অনাস্থা প্রস্তাব, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা, সংসদীয় বিভিন্ন কমিটি ও সংসদে সাধারণ আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় সংসদ শাসন বিভাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। সুতরাং, বাংলাদেশে ‘A’ চিহ্নিত বিভাগ তথা আইন বিভাগ ‘B’ চিহ্নিত বিভাগ তথা শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে।
তাই বলা যায়, ‘B’ চিহ্নিত বিভাগ ‘A’ চিহ্নিত বিভাগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
২. পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সরকারব্যবস্থার মতো বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থারও তিনটি অঙ্গ রয়েছে। যার একটির সদস্যসংখ্যা ৩৫০ জন। এটি এক কক্ষবিশিষ্ট। প্রজাতন্ত্রের সব আইন প্রণয়নের ক্ষমতা রয়েছে এটির। তাই বলা হয়, সর জাতীয় কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু এটি।
ক. বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার সর্বনিম্ন আদালত কোনটি?
খ. জেলা প্রশাসককে জেলার মূল স্তম্ভ বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের বিভাগটির গঠন ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকের বিভাগটি সকল জাতীয় কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু”- পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার সর্বনিম্ন আদালত হলো গ্রাম আদালত।
খ. জেলা প্রশাসনব্যবস্থা মাঠ বা স্থানীয় প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর। এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয় জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক কেন্দ্র থেকে আসা সকল আদেশ, নির্দেশ ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন। তিনি জেলা কোষাগারের রক্ষক ও পরিচালক। তাছাড়া জেলার মধ্যে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনগণের জীবনের নিরাপত্তার দায়িত্ব তার ওপর ন্যস্ত থাকে। এছাড়া তিনি জেলার সার্বিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। এসব গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাই তাকে জেলার মূল স্তন্ড বলা হয়।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিভাগটি দ্বারা আইন বিভাগকে বোঝানো হয়েছে।
সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে আইনসভা অন্যতম। বাংলাদেশের আইনসভার নাম জাতীয় সংসদ। এটি এক কক্ষবিশিষ্ট। এর সদস্য সংখ্যা ৩৫০। এর মধ্যে ৩০০ আসনের সদস্যগণ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। বাকি ৫০টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। এলাকাভিত্তিক সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যগণ ৩০০টি আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হন। তবে মহিলারা ইচ্ছা করলে ৩০০ আসনের যেকোনোটিতে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমেও নির্বাচিত হতে পারেন। সংসদে একজন স্পিকার ও একজন ডেপুটি স্পিকার থাকেন, তারা সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হন। সংসদের কার্যকাল ৫ বছর। এর পূর্বেও রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে সংসদ ভেঙে দিতে পারেন। ন্যূনতম ২৫ বছর বয়সি বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারেন।
ঘ. ‘সকল জাতীয় কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ’- আমি এ বক্তব্যের সাথে একমত।
বাংলাদেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার রয়েছে। এ ধরনের শাসনব্যবস্থায় সংসদ সকল জাতীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। বাংলাদেশের আইন প্রণয়নের সব ক্ষমতা জাতীয় সংসদের। সংসদ যেকোনো নতুন আইন প্রণয়ন, প্রচলিত আইনের পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারে। জাতীয় সংসদ শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যগণ সংসদের নিকট দায়ী থাকেন। কোনো কারণে সংসদ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনাস্থা আনলে মন্ত্রিসভা ভেঙে যায়। মূলতবি প্রস্তাব, নিন্দা প্রস্তাব, অনাস্থা প্রস্তাব, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা, সংসদীয় বিভিন্ন কমিটি ও সংসদে সাধারণ আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় সংসদ শাসন বিভাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।
জাতীয় সংসদ রাষ্ট্রের তহবিল বা অর্থের রক্ষাকারী। সংসদের অনুমতি ছাড়া কোনো কর বা খাজনা আরোপ ও আদায় করা যায় না। সংসদই প্রতিবছর জাতীয় বাজেট পাস করে। আবার, কোনো সংসদ সদস্য অসংসদীয় আচরণ করলে স্পিকার তাকে বহিষ্কার করতে পারেন। তাছাড়া সংবিধান লঙ্ঘন করলে সংসদ স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভা ও রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে রা তাদের অপসারণ করতে পারে। জাতীয় সংসদের সদস্যগণ সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার এবং সংসদের বিভিন্ন কমিটির সদস্যদের. নির্বাচিত করেন। সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যগণও সংসদ সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে থাকেন। এছাড়া সংসদ সদস্যগণ দেশের রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন করে থাকেন। তাই বলা যায়, জাতীয় সংসদই সকল জাতীয় কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু।
৩. বাংলাদেশ সরকারের ৩টি বিভাগ রয়েছে। যার একটির সদস্য সংখ্যা ৩৫০ জন। এটি এক কক্ষবিশিষ্ট। প্রজাতন্ত্রের সকল প্রকার আইন প্রণয়নের ক্ষমতা রয়েছে এটির। তাই বলা হয় সকল প্রকার জাতীয় কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু এটি।
ক. সচিবালয় কী?
খ. মন্ত্রিসভা কীভাবে গঠিত হয়?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিভাগের গঠন ব্যাখ্যা কর।
ঘ. জাতীয় সকল কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু এটি- পাঠ্যপুস্তকের আলোকে এর কার্যাবলি বিশ্লেষণ কর।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. সচিবালয় হচ্ছে কেন্দ্রীয় প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু। দেশের সকল প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত এখানে গৃহীত হয়।
খ. সরকার পরিচালনার জন্য দেশে একটি মন্ত্রিপরিষদ আছে। প্রধানমন্ত্রী এর নেতা। তিনি যেরূপ সংখ্যক প্রয়োজন মনে করেন সেরূপ সংখ্যক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ পঠন। করেন। মন্ত্রিপরিষদের মন্ত্রিগণ সাধারণত সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে নিযুক্ত হন। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য কিন্তু সংসদ সদস্য নন এমন ব্যক্তিও মন্ত্রী নিযুক্ত হতে পারেন। তবে তার সংখ্যা মন্ত্রিপরিষদের মোট সদস্যসংখ্যার এক-দশমাংশের বেশি হবে না। প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করেন। মন্ত্রিসভার সদস্যগণ একক ও যৌথভাবে সংসদের নিকট দায়ী থেকে দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছে করলে মন্ত্রিসভার যেকোনো মন্ত্রীকে পরিবর্তন করতে পারেন। আবার যেকোনো মন্ত্রী ইচ্ছে করলে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে পারেন। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীকে কেন্দ্র করে উপরোক্তভাবে মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয়।
গ. উদ্দীপকের ইঙ্গিতপূর্ণ বিভাগটি হলো বাংলাদেশ সরকারের আইন বিভাগ। কেননা, বাংলাদেশের আইনসভা ৩৫০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত, এককক্ষ বিশিষ্ট ও প্রজাতন্ত্রের সকল প্রকার আইন প্রণয়নের ক্ষমতা রয়েছে। এসব বৈশিষ্ট্য কেবল আইন বিভাগের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হয়। বাংলাদেশ সরকারের ৩টি বিভাগের মধ্যে আইন বিভাগ অন্যতম। বাংলাদেশের আইসভার নাম জাতীয় সংসদ, যা এককক্ষ বিশিষ্ট এবং এর মোট সদস্য সংখ্যা ৩৫০ জন। এর মধ্যে ৩০০ আসনের সদস্যগণ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। বাকি ৫০টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত।
এলাকাভিত্তিক সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যগণ ৩০০টি আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হন। তবে মহিলারা ইচ্ছা করলে ৩০০ আসনের যেকোনোটিতে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমেও নির্বাচিত হতে পারেন। সংসদে একজন স্পিকার ও একজন ডেপুটি স্পিকার থাকেন, তারা সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হন। সংসদের কার্যকাল ৫ বছর। এর পূর্বেও রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে সংসদ ভেঙে দিতে পারেন। ন্যূনতম ২৫ বছর বয়সী বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারেন।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে, উক্ত বিভাগটি অর্থাৎ আইন বিভাগ, যা সকল জাতীয় কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত হয়।
বাংলাদেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার রয়েছে। এ ধরনের শাসনব্যবস্থায় সংসদ সকল জাতীয় কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু। বাংলাদেশের আইন প্রণয়নের সব ক্ষমতা জাতীয় সংসদের। সংসদ যেকোনো নতুন আইন প্রণয়ন, প্রচলিত আইনের পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারে। জাতীয় সংসদ শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যগণ সংসদের নিকট দায়ী থাকেন। কোনো কারণে সংসদ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনাস্থা আনলে মন্ত্রিসভা ভেঙে যায়।
মুলতবি প্রস্তাব, নিন্দা প্রস্তাব, অনাস্থা প্রস্তাব, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা, সংসদীয় বিভিন্ন কমিটি ও সংসদে সাধারণ আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় সংসদ শাসন বিভাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। জাতীয় সংসদ রাষ্ট্রের তহবিল বা অর্থের রক্ষাকারী। সংসদের অনুমতি ছাড়া কোনো কর বা খাজনা আরোপ ও আদায় করা যায় না। সংসদই প্রতিবছর জাতীয় বাজেট পাস করে। আবার, কোনো সংসদ সদস্য অসংসদীয় আচরণ করলে স্পিকার তাকে বহিষ্কার করতে পারেন। তাছাড়া সংবিধান লঙ্ঘন করলে সংসদ
৪.
ক. সচিবালয় কাকে বলে?
খ. জাতীয় সংসদের দুটি কাজ ব্যাখ্যা কর।
গ. ‘A’ চিহ্নিত স্থানটি বাংলাদেশ সরকারের যে বিভাগকে নির্দেশ করছে তার কার্যাবলি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘C’ বিভাগের নিরপেক্ষতাই নাগরিকের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও মৌলিক অধিকার রক্ষা করে- যুক্তি দাও।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রশাসনের যে স্তরে দেশের সকল প্রশাসনিক নীতি ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাকে সচিবালয় বলে। সচিবালয় কেন্দ্রীয় প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু।
খ. নিচে জাতীয় সংসদের দুটি কাজ ব্যাখ্যা করা হলো-
১. বাংলাদেশের আইন প্রণয়নের সব ক্ষমতা জাতীয় সংসদের। সংসদ যেকোনো নতুন আইন প্রণয়ন, প্রচলিত আইনের পরিবর্তন বা সংশোধণ করতে পারে। কোনো নতুন আইন পাস করতে হলে খসড়া বিলের আকারে তা সংসদে পেশ করা হয়। সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটে গৃহীত হলে বিলটি আইনে পরিণত হয়।
২. শাসন বিভাগকে সংসদ নিয়ন্ত্রণ করে। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যগণ সংসদের নিকট দায়ী থাকেন। কোনো কারণে সংসদ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনাস্থা আনলে মন্ত্রিসভা ভেঙে যায়। মুলতুবি প্রস্তাব, নিন্দা প্রস্তাব, অনাস্থা প্রস্তাব, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা, সংসদীয় বিভিন্ন কমিটি ও সংসদে সাধারণ আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় সংসদ শাসন বিভাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।
গ. উদ্দীপকের ‘A’ চিহ্নিত স্থানটি বাংলাদেশ সরকারের যে বিভাগকে নির্দেশ করছে তা হলো আইন বিভাগ।
সরকারের যে বিভাগ রাষ্ট্রের শাসনকাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করে এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের চাহিদা অনুযায়ী আইনের সংশোধণ ও পরিবর্ধন করে তাকে আইন বিভাগ বলে। উদ্দীপকের ‘A’ বিভাগও অনুরূপ কাজ করে। যেমন- আইন প্রণয়ন, আইন সংশোধনসংক্রান্ত কাজ পরিচালনা করে। এছাড়া ‘A’ বিভাগের মতো বাংলাদেশের আইন বিভাগ প্রতিবছর জাতীয় বাজেট পাস করে।
বিভিন্ন দেশের আইন বিভাগ বিভিন্ন নামে পরিচিত। বাংলাদেশের আইনসভা জাতীয় সংসদ নামে অভিহিত। বাংলাদেশের আইন প্রণয়নের সব ক্ষমতা জাতীয় সংসদের। সংসদ যেকোনো আইন প্রণয়ন, প্রচলিত আইনের পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারে। সংসদ শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যগণ সংসদের নিকট দায়ী থাকে। কোনো কারণে সংসদ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনাস্থা আনলে মন্ত্রিসভা ভেঙে যায়। এছাড়া সংসদ প্রতি বছর জাতীয় বাজেট পাস করে। সংসদ সংবিধানে উল্লিখিত নিয়মের ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করতে পারে। তবে এজন্যে সংসদের মোট সদস্যের কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের দরকার হয়।
ঘ. উদ্দীপকে ‘C’ বিভাগের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতাই নাগরিকের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও মৌলিক অধিকার রক্ষা করে- উক্তিটি যথার্থ।
বাংলাদেশ সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে অন্যতম হলো বিচার বিভাগ। বিচার বিভাগের মাধ্যমে দেশে আইনের অনুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি রাষ্ট্রীয় সংবিধানের অভিভাবক বা রক্ষক হিসেবে কাজ করে। উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘C’ বিভাগ যেমন- মৌলিক অধিকার রক্ষা এবং সংবিধানের ব্যাখ্যা দেয় অনুরূপ কাজ বিচার বিভাগও করে থাকে। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতার কারণে নাগরিকের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও মৌলিক অধিকার রক্ষা পায়। এটি অপরাধীকে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করে থাকে এবং নিরাপরাধ ব্যক্তিকে মুক্তিপণদানের মাধ্যমে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা রাখে।
এছাড়া দুর্বলকে সবলের হাত থেকে রক্ষার জন্য নিরপেক্ষ বিচার বিভাগের গুরুত্ব অপরিসীম। আবার, নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষায়ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগের গুরুত্ব অপরিসীম। সমাজে সুখে- শান্তিতে বসবাস, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, আইনের দৃষ্টিতে সমান সুযোগ লাভের অধিকার, ধর্মচর্চার অধিকার, নির্বাচিত হওয়ার অধিকার, নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ প্রভৃতি নাগরিকের অধিকার রক্ষায় নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতাই নাগরিকের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও মৌলিক অধিকার রক্ষা করে।
আরো পড়ো → রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
আরো পড়ো → সংবিধান অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
৫. সরকারের বিশেষ বিভাগের সদস্য হিসেবে ‘A’ জনস্বাস্থ্য বিষয়ক একটি বিল উপস্থাপন করলে অধিকাংশ সদস্যের সমর্থনে তা গৃহীত হয়। পরবর্তীতে বিলটি আইনে পরিণত, হয়। অন্যদিকে, ‘B’ রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত এবং ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত নিজ পদে কর্মরত থাকতে পারেন। তার বিভাগের মূলমন্ত্র হলো: দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন।
ক. কাদের নিয়ে শাসন বিভাগ গঠিত হয়?
খ. প্রশাসন হলো রাষ্ট্রের হৃৎপিণ্ডস্বরূপ- বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকে ‘A’ ব্যক্তি বাংলাদেশ সরকারের কোন বিভাগের সদস্য? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় উদ্দীপকের ‘B’-এর বিভাগের কোনো বিকল্প নেই- উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর।
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ নিয়ে শাসন বিভাগ গঠিত হয়।
খ. প্রশাসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের যাবতীয় কার্যাবলি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয় বলে প্রশাসনকে রাষ্ট্রের হূৎপিন্ড বলা হয়। রাষ্ট্রের শাসনকার্য পরিচালনার দায়িত্ব প্রশাসনের। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে গৃহীত.. নীতি ও সিদ্ধান্ত প্রশাসনের মাধ্যমে সারাদেশে পরিচালিত ও বাস্তবায়িত হয়। রাষ্ট্রের ভেতরে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও রাষ্ট্রের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে সুষ্ঠু প্রশাসনের কোনো বিকল্প নেই। তাই প্রশাসনকে রাষ্ট্রের হৃৎপিণ্ড বলা হয়।
গ. উদ্দীপকে A ব্যক্তি বাংলাদেশ সরকারের আইন বিভাগের সদস্য। বাংলাদেশ সরকারের তিনটি বিভাগ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম একটি বিভাগ হলো আইন বিভাগ। সারাদেশ থেকে মোট ৩০০ জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং ৫০ জন সংরক্ষিত সদস্যসহ ৩৫০ জন সদস্য নিয়ে আইন বিভাগ গঠিত। বাংলাদেশের আইন বিভাগের নাম জাতীয় সংসদ।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে, A একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন যা সর্বসম্মতক্রমে পাস হয় এবং পরবর্তীতে তা আইনে পরিণত হয়। এ থেকে বোঝা যায়, রহমান সাহেবের বিভাগটি বাংলাদেশের আইন বিভাগকে উপস্থাপন করে। কেননা বাংলাদেশের আইন প্রণয়নের সব ক্ষমতা জাতীয় সংসদের। সংসদ যেকোনো নতুন আইন প্রণয়ন, প্রচলিত আইনের পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারে।
কোনো নতুন আইন পাস করতে হলে তা খসড়া বিল আকারে সংসদে পেশ করা হয়। সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটে গৃহীত হলে বিলটি আইনে পরিণত হয়। এছাড়া আইনবিভাগ শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। মুলতুবি প্রস্তাব, নিন্দা প্রস্তাব, অনাস্থা প্রস্তাব, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা, সংসদীয় বিভিন্ন কমিটি ও সংসদে সাধারণ আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় সংসদ এ কাজটি করে থাকেন। সুতরাং এটি প্রতীয়মান হয় A বিভাগটি বাংলাদেশ সরকারের আইন বিভাগকে নির্দেশ করে।
ঘ. জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় উদ্দীপকের ‘B’ তথা বিচার বিভাগের কোনো বিকল্প নেই- উক্তিটি যথার্থ।
বাংলাদেশ সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হলো বিচার বিভাগ। নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, অপরাধীর শাস্তি বিধান এবং দুর্বলকে সবলের হাত থেকে রক্ষার জন্য বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিচার বিভাগ আইনের অনুশাসন ও দেশের সংবিধানকে অক্ষুণ্ণ রাখে।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে B রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত এবং ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি তার পদে নিযুক্ত থাকতে পারেন। আর তার বিভাগের মূলমন্ত্র হলো দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন। এরূপ বর্ণনায় আমরা বিচার বিভাগের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাই। জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের কোনো বিকল্প নেই। কেননা, বিচার বিভাগ নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলো সংরক্ষণে ভূমিকা পালন করে।
কখনো কারো অধিকার ক্ষুণ্ণ হবার আশঙ্কা দেখা দিলে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। বিচার বিভাগের প্রধানতম কাজ হলো সর্বস্তরে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। আইন অনুযায়ী মামলা মোকদ্দমা পরিচালনা ও উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণাদির ভিত্তিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে বিচার বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর বিচার বিভাগের প্রধান দায়িত্ব হলো আইনের অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। সবার জন্য আইনের সমতা বিধান করে সে অনুযায়ী শাসন পরিচালনা করতে বিচার বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, সুষ্ঠুভাবে একটি রাষ্ট্রে বসবাস করতে গেলে মৌলিক অধিকার রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। আর এটি রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে বিচার বিভাগ রক্ষকের ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগ অদ্বিতীয়।