প্রমিত ভাষা শিখি হচ্ছে ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা বই এর ২য় অধ্যায়। প্রমিত ভাষা শিখি অধ্যায়ের ১ম পরিচ্ছেদ প্রমিত ভাষা এর অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
১ম পরিচ্ছেদ: প্রমিত ভাষা
১. নিচের পরিস্থিতি অনুযায়ী আঞ্চলিক ভাষায় কথোপকথন তৈরি করো।
পরিস্থিতি ১: খেলার সময়ে কোনো একটা বিষয় নিয়ে তর্ক হচ্ছে।
পরিস্থিতি ২: পড়াশোনা কেমন চলছে তা নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে কথা হচ্ছে।
পরিস্থিতি ৩: সবজি কিনতে গিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দরাদরি হচ্ছে।
পরিস্থিতি ১: খেলার সময়ে কোনো একটা বিষয় নিয়ে তর্ক হচ্ছে।
নির্দেশনা:
তোমার নিজের এলাকায় যে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহৃত হয় সেই রূপ অনুযায়ী কথোপকথন তৈরি করো।
নমুনা উত্তর:
রাজন : তুমি ব্যাডা সব সময় বেশি বোঝো।
কামাল : য্যা জানো না, হ্যা লইয়া কতা কইতে আইয়্যো না।
রাজন : তুমি তো আল্লার দুইন্নার সব জানো।
কামাল : তুমি আউট হইছ, মাইন্না ন্যাও।
বাবুল : এইডা আউট হয় নাই। পোরথোমে মাড়িতে লাইগ্যা তারপর ক্যাচ উঠছে। তুমি দ্যাহো নাই।
পরিস্থিতি ২: পড়াশোনা কেমন চলছে তা নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে কথা হচ্ছে।
নমুনা উত্তর:
বাবা : আবিদ তুই কী কত্তিছিস?
আবিদ : বাবা হোমওয়ার্ক কত্তিছি।
বাবা : তোর বার্ষিক পরীক্ষা কবে হইবে?
আবিদ : স্যার বলিছেন, পরীক্ষার রুটিন সামনের সপ্তাহে দেবে।
মা : তোর পরীক্ষার পোস্তুতি কেমন?
আবিদ : মা, মোটামুটি ভালো। অঙ্কে একটু সমস্যা আছে।
বাবা : মনির স্যারের সাথে আমি কথা বলি রাখবনে। তুই কালকেত্তে স্যারের কাছে যাস।
আবিদ : আচ্চা, বাবা।
পরিস্থিতি ৩: সবজি কিনতে গিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দরাদরি হচ্ছে।
নমুনা উত্তর:
ক্রেতা : এই যে ভাই, শিম কত টাকা করে?
বিক্রেতা : ৪০ ট্যাকা কেজি।
ক্রেতা : দুই কেজি ৭০ টাকা রাখেন।
বিক্রেতা : না, দুই কেজি লিলে ৫ ট্যাকা কম দিয়েন।
ক্রেতা : আচ্ছা দিন। আর টম্যাটো কত করে?
বিক্রেতা : ৬০ ট্যাকা কেজি।
ক্রেতা : এক কেজি দিন। আর সাথে আধা কেজি কাঁচা মরিচ ও ১০ টাকার ধনিয়া পাতা দিন।
বিক্রেতা : এই লন।
ক্রেতা : সব মিলিয়ে কত টাকা হলো?
বিক্রেতা : ১৭০ ট্যাকা।
ক্রেতা : কাঁচা মরিচ কত করে ধরেছেন?
বিক্রেতা : হাপ কেজি ২৫ ট্যাকা।
ক্রেতা : আধা কেজি ২০ টাকা রাখেন।
বিক্রেতা : আচ্চা দ্যান।
২. ওপরের পরিস্থিতিগুলোতে উচ্চারিত আঞ্চলিক ভাষার শব্দগুলো খুঁজে বের করে বাম কলামে লেখো এবং তার প্রমিত রূপ ডান কলামে লেখো।
নির্দেশনা:
কথোপকথন তৈরির পর সেখানে কোন কোন শব্দগুলোর আঞ্চলিক রূপ ব্যবহার করেছ সেগুলোর তালিকা করে তার প্রমিত রূপ লেখো।
৩. রেডিও-টেলিভিশনে পঠিত সংবাদ ও প্রতিবেদনের ভাষা কেমন হয় তা বুঝিয়ে লেখো।
নির্দেশনা:
মনোযোগ দিয়ে রেডিও ও টেলিভিশনের সংবাদ শোনো। সেখানে ব্যবহৃত ভাষার শব্দগুলো ভালোভাবে শোনো। এবার নিজে নিজে উত্তর লেখো।
নমুনা উত্তর: আমরা দৈনন্দিন জীবনে যে ভাষায় কথা বলি রেডিও-টেলিভিশনে পঠিত সংবাদ ও প্রতিবেদনের ভাষা তার থেকে অনেকটাই আলাদা। সাধারণত আমরা শুদ্ধ উচ্চারণে, প্রমিত রীতিতে রেডিও-টেলিভিশনে সংবাদ ও প্রতিবেদন পাঠ করতে দেখি। এই ভাষা অনেকটাই কৃত্রিম এবং কেতাদুরস্ত। এর সঙ্গে আমাদের ঘরোয়া আঞ্চলিক ভাষার কোনো সম্পর্ক নেই। রেডিও-টেলিভিশনের সংবাদ পাঠক বা উপস্থাপক সাধারণত শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে অতি সাবধানি হন এবং এখানে ব্যবহৃত সব শব্দ আমাদের পরিচিত না-ও হতে পারে। তাই রেডিও, টেলিভিশনের এই ভাষাকে আনুষ্ঠানিক ভাষাও বলা যায়।
৪. সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনের ভাষা কেমন হয় তা নিজের ভাষায় লেখো।
নমুনা উত্তর: সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনার ভাষা প্রমিত এবং উচ্চারণরীতি সাধারণত শুদ্ধ হলেও এই ভাষা গুরুগম্ভীর নয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনের ভাষা অনেকটাই আবেগমিশ্রিত ও নাটকীয়। আঞ্চলিক ভাষায় পুরো অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা না করা হলেও কখনো কখনো আঞ্চলিক সংলাপ থাকতে পারে। এই ভাষা সব সময় আনুষ্ঠানিক না-ও হতে পারে। উপস্থাপনার সময় উপস্থাপক শব্দ চয়নে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি হাস্যরসের দিকেও মনোযোগ দেন। নাটকীয়ভাবে বিষয় উপস্থাপনের প্রবণতা লক্ষ করা যায় উপস্থাপকের ভাষায়।
৫. পাঠ্যবইয়ের ভাষা সাধারণত কেমন হয় তা নিজের ভাষায় গুছিয়ে লেখো।
নমুনা উত্তর: পাঠ্যবইয়ের ভাষায় সাধারণত প্রমিত রীতির ব্যবহার লক্ষ করা যায়। তবে পাঠ্যবইয়ে থাকা সাহিত্যিকদের রচনায় ভাষা সব সময় প্রমিত না-ও হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে আমরা সাধুভাষা বা আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহারও দেখি। তবে পাঠ্যবইয়ে উপস্থাপিত তথ্য বা বর্ণনার ক্ষেত্রে প্রমিত রীতিই ব্যবহৃত হয়। কেননা, প্রমিত রীতি সর্বজনস্বীকৃত এবং সকলের জন্য বোধগম্য। ফলে অন্যকোনো ভাষারীতি পাঠ্যবইয়ের জন্য উপযুক্ত নয়।।
৬. অনেক শব্দ তোমার অঞ্চলের মানুষ ভিন্নভাবে উচ্চারণ করে। আবার, অনেক প্রমিত শব্দের বদলে তোমার অঞ্চলের মানুষ আলাদা শব্দ ব্যবহার করে। এ রকম শব্দ খুঁজে বের করো এবং নিচের ছক অনুযায়ী তালিকা করো।
নির্দেশনা:
তোমার অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় মনোযোগ দিয়ে তাদের কথাগুলো শোনো। তারা কোন কোন শব্দের উচ্চারণ অন্যরকম করছে, সেগুলোর তালিকা করো। এবার শব্দগুলো ঘরে লেখো।
নমুনা উত্তর:
আরো পড়ো →২য় পরিচ্ছেদ: আলোচনা করতে শেখা
আরো পড়ো →১ম পরিচ্ছেদ: প্রশ্ন করতে শেখা
৭. নিচের পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রমিত ভাষায় কথোপকথন তৈরি করো।
পরিস্থিতি ১: খেলার সময়ে কোনো একটা বিষয় নিয়ে তর্ক হচ্ছে।
পরিস্থিতি ২: পড়াশোনা কেমন চলছে তা নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে কথা হচ্ছে।
পরিস্থিতি ৩: সবজি কিনতে গিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দরাদরি হচ্ছে।
পরিস্থিতি ১: খেলার সময়ে কোনো একটা বিষয় নিয়ে তর্ক হচ্ছে।
নমুনা উত্তর:
রাজন : তুমি সব সময় বেশি বোঝো।
কামাল : যা জানো না, তা নিয়ে কথা বলতে এসো না।
রাজন : তুমি তো আল্লাহ্র দুনিয়ার সব জানো।
কামাল : তুমি আউট হয়েছ, মেনে নাও।
বাবুল : এটা আউট হয়নি। প্রথমে মাটিতে লেগে তারপর ক্যাচ উঠেছে। তুমি দেখোনি।
পরিস্থিতি ২: পড়াশোনা কেমন চলছে তা নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে কথা হচ্ছে।
নমুনা উত্তর:
বাবা : আবিদ তুই কী করছিস?
আবিদ : বাবা হোমওয়ার্ক করছি।
বাবা : তোর বার্ষিক পরীক্ষা কবে হবে?
আবিদ : স্যার বলেছেন, পরীক্ষার রুটিন সামনের সপ্তাহে দেবে।
মা : তোর পরীক্ষার প্রস্তুতি কেমন?
আবিদ : মা, মোটামুটি ভালো। অঙ্কে একটু সমস্যা আছে।
বাবা : মনির স্যারের সাথে আমি কথা বলে রাখব। তুই কাল থেকে স্যারের কাছে যাস।
আবিদ : আচ্ছা, বাবা।
পরিস্থিতি ৩: সবজি কিনতে গিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দরাদরি হচ্ছে।
নমুনা উত্তর:
ক্রেতা : এই যে ভাই, শিম কত টাকা করে?
বিক্রেতা : ৪০ টাকা কেজি।
ক্রেতা : দুই কেজি ৭০ টাকা রাখুন।
বিক্রেতা : না, দুই কেজি নিলে ৫ টাকা কম দিয়েন।
ক্রেতা : আচ্ছা দিন। আর টম্যাটো কত করে?
বিক্রেতা : ৬০ টাকা কেজি।
ক্রেতা : এক কেজি দিন। আর সাথে আধা কেজি কাঁচা মরিচ ও ১০ টাকার ধনিয়া পাতা দিন।
বিক্রেতা : এই নিন।
ক্রেতা : সব মিলিয়ে কত টাকা হলো?
বিক্রেতা : ১৭০ টাকা।
ক্রেতা : কাঁচা মরিচ কত করে ধরেছেন?
বিক্রেতা : আধা কেজি ২৫ টাকা।
ক্রেতা : আধা কেজি ২০ টাকা রাখুন।
বিক্রেতা : আচ্ছা দিন।