শখের মৃৎশিল্প

(বাংলা)পঞ্চম: শখের মৃৎশিল্প গল্পের প্রশ্ন উত্তর

শখের মৃৎশিল্প হচ্ছে পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা বই এর গল্প বা গদ্য। শখের মৃৎশিল্প গল্পের অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

শখের মৃৎশিল্প গল্পের প্রশ্ন উত্তর

এক নজরে শখের মৃৎশিল্প গদ্যের মূলকথাটি জেনে নিই-
গল্পকথক পয়লা বৈশাখের ছুটিতে মামার বাড়ি আনন্দপুরে বেড়াতে গেছে। সেখানে বসেছে বৈশাখী মেলা। চারুকলা ইনস্টিটিউটে পড়া মাথার সঙ্গে ভাগ্নে-ভাগ্নি মিলে মেলায় গিয়ে সবাই মেলার সৌন্দর্য উপভোগ করেছে। সেখানে তারা নাগরদোলা, বাঁশের তৈরি জিনিস, মাটির তৈরি জিনিস দেখেছে। মেলায় গিয়ে তারা দেখতে পায় মুড়ি-মুড়কি থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাবারের দোকান। বাংলাদেশের মৃৎশিল্প সম্পর্কে মামা তাদের বিস্তারিত বুঝিয়ে বলেছেন। শুধু মৃৎশিল্পই নয়, বিভিন্ন ধরনের মাটির ধরন, কুমোরদের জীবনপ্রণালি ও প্রাচীন মৃৎশিল্প সম্পর্কে মামা সবাইকে প্রয়োজনীয় তথ্য জানিয়েছেন।

সতর্কতার সাথে নিচের শব্দগুলোর সঠিক বানান জেনে নিই—
মৃৎশিল্প, গ্রাম, আনন্দপুর, হাঁড়ি, বৃষ্টি, ব্যাগ, ইনস্টিটিউট, ক্যাচর ক্যাচর, চাঁই, বর্ণ, অপূর্ব, জিজ্ঞেস, পদ্মা, কৃষক, প্রান্ত, শিল্পকলা, সম্প্রদায়, পরিষ্কার, এঁটেল, দোআশ, নৈপুণ্য, জ্ঞান, পরম্পরা, যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম, উত্তর, দিচ্ছেন, গন্ধ, টেরাকোটা, মহাস্থানগড়, বৌদ্ধ, স্তূপ, কান্তজি, মন্দির, সৌন্দর্য।

অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
শখ, টেপা পুতুল, নকশা, শালবন বিহার, টেরাকোটা, মৃৎশিল্প, শখের হাঁড়ি।

উত্তর :
শেখ – মনের ইচ্ছা, রুচি।

টেপা পুতুল – কুমাররা নরম এঁটেল মাটির চাক হাতে নিয়ে টিপে টিপে নানা ধরনের ও নানা আকারের পুতুল তৈরি করেন। টিপে টিপে তৈরি করা হয় বলে এসব পুতুলের নাম টেপা পুতুল।

নকশা – রেখা দিয়ে আঁকা ছবি। শখের হাঁড়ি, টেপা পুতুল বা পশুপাখির গায়ে গ্রামের কুমার শিল্পীরা নানা রঙের ছবি আঁকেন। এ ছবিগুলোই হলো নকশা।

শালবন বিহার – কুমিল্লার ময়নামতিতে মাটি খুঁড়ে আবিষ্কৃত হয়েছে প্রাচীন বৌদ্ধ সভ্যতার নিদর্শন। অষ্টাদশ শতাব্দীর এই পুরাকীর্তি বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার পরিচায়ক।

টেরাকোটা – ‘টেরা’ অর্থ মাটি, আর ‘কোটা’ অর্থ পোড়ানো। পোড়ামাটির তৈরি মানুষের ব্যবহারের সব রকমের জিনিস টেরাকোটা হিসেবে পরিচিত।

মৃৎশিল্প – মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে আমরা বলি মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প। আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হচ্ছে মৃৎশিল্প।

শখের হাঁড়ি – শখ করে পছন্দের জিনিস এই সুন্দর হাঁড়িতে রাখা হয়, তাই এর নাম শখের হাঁড়ি।

২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।

শেখ, নকশা, মৃৎশিল্প, টেপা পুতুল
ক. এই যে…..দেখছ, এসবই গ্রামের শিল্পীদের তৈরি।
খ. মাটির পুতুল জমানো আমার একটি…..।
গ. মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে…..বলে।
ঘ. আমরা মেলা থেকে অনেক…..কিনলাম।

উত্তর :
ক. এই যে নকশা দেখছ, এসবই গ্রামের শিল্পীদের তৈরি।
খ. মাটির পুতুল জমানো আমার একটি শখ।
গ. মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে মৃৎশিল্প বলে।
ঘ. আমরা মেলা থেকে অনেক টেপা পুতুল কিনলাম।

৩. ঠিক উত্তরটিতে টিক (√) চিহ্ন দিই।
ক. আনন্দপুরে কখন মেলা বসে?
১. ষোলই ডিসেম্বর
√ ২. পহেলা বৈশাখ
৩. একুশে ফেব্রুয়ারি
৪. পহেলা ফাল্গুন

খ. মামা কোথায় পড়েন?
১. ঢাকা কলেজে
২. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে
√ ৩. ঢাকার চারুকলা ইনস্টিটিউটে
৪. চট্টগ্রামের চারুকলা ইনস্টিটিউটে

গ. মৃৎশিল্পের সবচেয়ে প্রাচীন উপাদান হচ্ছে—
১. বাঁশ
২. কাঠ
৩. পানি
√ ৪. মাটি

ঘ. আমাদের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হচ্ছে-
১. চারুশিল্প
২. মৃৎশিল্প
৩. কারুশিল্প
৪. দারুশিল্প

ঙ. কুমার সম্প্রদায় কিসের কাজ করে-
১. বাঁশের কাজ কাজ
২. কাঠের কাজ
৩. পাকা বাড়ির কাজ
√ ৪. মাটির

চ. গ্রামের শিল্পীরা রং তৈরি করেন—
১. আম ও লাউ পাতা থেকে
√ ২. শিম ও কাঁঠাল গাছের বাকল থেকে
৩. সরিষা ফুল থেকে
৪. পান ও চুন থেকে

ছ. পোড়া মাটির ফলকের অন্য নাম-
১. টেপা পুতুল
√ ২. টেরাকোটা
৩. শখের হাঁড়ি
৪. মৃৎশিল্প

পড়ুন → বীরের রক্তে স্বাধীন এ দেশ গল্পের প্রশ্ন উত্তর
পড়ুন → ফেব্রুয়ারির গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর

৪. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
প্রশ্ন ক. মাটির শিল্প বলতে কী বুঝি?
উত্তর :
মাটি দিয়ে তৈরি শিল্পকর্মকে বলে মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প। এ শিল্পের প্রধান উপকরণ হলো মাটি। মাটির শিল্প এঁটেল মাটির সাহায্যে হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান দ্বারা তৈরি শিল্প । যেমন- শখের হাঁড়ি।

প্রশ্ন খ. বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকর্ম কোনটি?
উত্তর :
যখন কোনোকিছু সুন্দর করে আঁকানো বা বানানো অথবা গাওয়া হয় তখন তা হয় শিল্প। আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হচ্ছে মাটির শিল্প। বাংলাদেশের কুমার সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে তৈরি করে আসছেন এই শিল্প।

প্রশ্ন গ. শখের হাঁড়ি কী রকম?
উত্তর :
শখ করে পছন্দের জিনিস এই সুন্দর হাড়িতে রাখা হয়, তাই এর নাম শখের হাঁড়ি। শখের হাঁড়িতে রয়েছে বৈচিত্র। এগুলো অনেক রং ও অনেক বর্ণে সাজানো মাটির হাড়ি। ফুল, পাতা, মাছের অপূর্ব ছবি আঁকা হয় সেই হাঁড়িতে।

প্রশ্ন ঘ. বৈশাখী মেলায় কী কী পাওয়া যায়?
উত্তর :
বৈশাখ মাসের প্রথম দিন বৈশাখী মেলা বসে। সেই মেলায় হরেক রকমের জিনিস পাওয়া যায়। যেমন- বাঁশের তৈরি কুলো, ডালা, ঝুড়ি, চালুন, মাছ ধরার চাই, খালুই ইত্যাদি। দোকানে দোকানে পাওয়া যায় বাঙি, তরমুজ, মুড়ি-মুড়কি, জিলাপি আর বাতাসা। মাটির তৈরি জিনিসপত্রও মেলার অনেক বড় আকর্ষণ। মাটির তৈরি জিনিসের মধ্যে শখের হাঁড়ি, মাটির ঘোড়া, হাতি, ষাঁড় আর নানা আকারের মাটির পুতুল পাওয়া যায়।

প্রশ্ন ঙ. মৃৎশিল্পের প্রধান উপাদান কী?
উত্তর :
মৃৎশিল্পের প্রধান উপাদান মাটি। তবে সব ধরনের মাটি দিয়ে এ কাজ হয় না। এজন্য দরকার পরিষ্কার এঁটেল মাটি। এ ধরনের মাটি বেশ আঠালো হয়, তাই যেকোনো জিনিস তৈরি করা যায়। তবে এর জন্য অনেক যত্ন ও শ্রমের প্রয়োজন হয়।

প্রশ্ন চ. কয়েকটি মৃৎশিল্পের নাম বলি।
উত্তর :
মাটির তৈরি শিল্প হচ্ছে মৃৎশিল্প। মৃৎশিল্পের মধ্যে আছে—শখের হাঁড়ি, টেপা পুতুল, কলস, হাঁড়ি, সরা, বাসনকোসন, পেয়ালা, সুরাই, মটকা, জালা, পিঠা তৈরির নানা ছাঁচ, টেরাকোটা ইত্যাদি।

প্রশ্ন ছ. টেরাকোটা কী?
উত্তর :
টেরাকোটা হলো পোড়ামাটির ফলক। এটি এদেশের অনেক পুরনো মাটির শিল্প। নকশা করা মাটির ফলক ইটের মতো পুড়িয়ে টেরাকোটা তৈরি করা হতো। মাটির ফলকে ছবি এঁকে শুকিয়ে পোড়ানোর পর ছোট ছোট ফলককে পাশাপাশি জোড়া দিয়ে বড় করা যায়। টেরাকোটা বা পোড়ামাটির এসব কাজ এ দেশে শুরু হয়েছে হাজার বছর আগে।

প্রশ্ন জ. বাংলাদেশের কোথায় পোড়ামাটির প্রাচীন শিল্প দেখতে পাওয়া যায়?
উত্তর :
পোড়ামাটির ফলক বাংলার প্রাচীন মৃৎশিল্প। টেরাকোটা বা পোড়ামাটির এসব কাজ এ দেশে শুরু হয়েছে হাজার বছর আগে। বাংলাদেশের শালবন বিহার, মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ও দিনাজপুরের কান্তজির মন্দিরে এই টেরাকোটার কাজ রয়েছে।

প্রশ্ন ঝ. মাটির শিল্প কেন আমাদের ঐতিহ্য ও গৌরবের বিষয়?
উত্তর :
মাটির শিল্প বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরবের বিষয়। কারণ হাজার বছর ধরে মৃৎশিল্প বাঙালি জীবনের সাথে মিলেমিশে আছে। শুধু তাই নয়, মাটির শিল্পের সৌন্দর্য অতীতকাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাঙালিকে আনন্দ দিচ্ছে। টেরাকোটাগুলো মৃৎশিল্পের প্রাচীন নিদর্শন। বর্তমানকালেও সরকারি-বেসরকারি ভবনে সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য নানা রকম নকশা করা মাটির ফলক ব্যবহৃত হচ্ছে।

প্রশ্ন ঞ. মামার বাড়ি রসের হাঁড়ি— প্রচলিত এই কথাটি দিয়ে কী বোঝানো হয়?
উত্তর :
মানুষ ছোটবেলায় শীত, গ্রীষ্ম বা বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ছুটিতে মামার বাড়ি যায়। সেখানে পড়া নেই, বাধা নেই, যেখানে খুশি ঘুরে বেড়ানো যায়, যা ইচ্ছা তাই খাওয়া যায়। মামার বাড়িতে নানা-নানি, খালা, মামা সবাই আদরে আহ্লাদে ভরিয়ে দেন। আর এ সবকিছুকে বোঝাতেই ‘মামার বাড়ি রসের হাঁড়ি’ কথাটি প্রচলিত হয়েছে।

৫. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ি এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখি।
যখন কোনো কিছু সুন্দর করে আঁকি বা বানাই অথবা গাই, তখন তা হয় শিল্প। শিল্পের এ কাজকে বলে শিল্পকলা। আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হচ্ছে মাটির শিল্প। এ দেশের কুমার সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে তৈরি করে আসছে মাটির জিনিস, যেমন- কলস, হাঁড়ি, সরা, বাসনকোসন, পেয়ালা, সুরাই, মটকা, জালা, পিঠে তৈরির নানা ছাঁচ। আরও কত কী। মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে আমরা বলি মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প। এ শিল্পের প্রধান উপকরণ হলো মাটি। মাটি হলেই যে তা দিয়ে শিল্পের কাজ করা যাবে তাও নয়। এজন্য অনেক যত্ন আর শ্রম দরকার। দরকার হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান। কুমারদের কাছে এসব খুব সহজ। কারণ তাঁরা বংশ পরম্পরায় এ কাজ করে আসছেন।

প্রশ্ন ক. শিল্পকলা বলতে কী বোঝ?
উত্তর : যখন কোনো কিছু সুন্দর করে আঁকা বা বানানো বা গাওয়া হয়, তখন তা শিল্প। শিল্পের এ কাজকে বলে শিল্পকলা।

প্রশ্ন খ. শিল্পের কাজের জন্য কী কী প্রয়োজন?
উত্তর : শিল্পের কাজের জন্য শিল্প অনুযায়ী উপকরণ দরকার। আরও দরকার যত্ন ও শ্রম। এছাড়াও শিল্পের জন্য দরকার হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান।

প্রশ্ন গ. কেন কুমারদের কাছে এসব কাজ সহজ?
উত্তর: বাংলাদেশের কুমার সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে মাটির জিনিস তৈরি করে আসছেন। কুমারদের কাছে এসব খুব সহজ। কারণ তাঁরা বংশ পরম্পরায় এ কাজ করে আসছেন।

৬. নিচের শব্দগুলো দিয়ে যা বুঝি তা লিখি।
ক. মৃৎশিল্প
খ. শখের হাঁড়ি
গ. টেরাকোটা
ঘ. টেপা পুতুল

উত্তর :
ক. মৃৎশিল্প : মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে আমরা বলি মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প। আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হচ্ছে মৃৎশিল্প। যেমন- নানা রকম মাটির পুতুল, পেয়ালা, সুরাই, পিঠে তৈরির নকশা ইত্যাদি।

খ. শখের হাঁড়ি : শখ করে পছন্দের জিনিস এই সুন্দর হাঁড়িতে রাখা হয়। তাই এর নাম শখের হাঁড়ি। ফুল, পাতা, মাছের ছবি আঁকা হয় এসব হাড়িতে। এগুলো দেখতে খুব সুন্দর হয়।

গ. টেরাকোটা : ‘টেরা’ অর্থ মাটি, আর ‘কোটা’ অর্থ পোড়ানো। পোড়ামাটির তৈরি মানুষের ব্যবহারের সব রকমের জিনিস টেরাকোটা হিসেবে পরিচিত। শালবন বিহার, মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ও দিনাজপুর কান্তজির মন্দিরে এই টেরাকোটার কাজ রয়েছে।

ঘ. টেপা পুতুল : টিপে টিপে তৈরি করা হয় বলে এসব পুতুলের নাম টেপা পুতুল। কুমাররা নরম এঁটেল মাটির চাক হাতে নিয়ে টিপে টিপে নানা ধরনের ও নানা আকারের পুতুল তৈরি করেন। তবে এসব মাটির পুতুলের হাত-পা বা জোড়াগুলো একটু ভিজে ভিজে মাটি দিয়ে যত্ন করে লাগাতে হয়।

৭. নিচের কথাগুলো বুঝে নিই ।

কান্তজির মন্দির : ১৭৫২ খ্রিস্টাব্দে মহারাজা রামনাথ রায় দিনাজপুরের কান্তজির মন্দির নির্মাণ করেন। এ মন্দিরের গায়ে স্থাপিত অপূর্ব সুন্দর টেরাকোটা বাংলার মাটির শিল্পের প্রাচীন নিদর্শন।

পাহাড়পুর : নওগাঁ জেলার পাহাড়পুরে আবিষ্কৃত হয়েছে প্রাচীন বৌদ্ধ সভ্যতার নিদর্শন সোমপুর বিহার। এই সোমপুর বিহারের আশ-পাশের বড় বৌদ্ধ মন্দিরে পাওয়া গেছে অনেক সুন্দর টেরাকোটা। এগুলো অষ্টম শতকের অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় বারো শ বছর আগের তৈরি।

শালবন বিহার : কুমিল্লার ময়নামতিতে মাটি খুঁড়ে আবিষ্কৃত হয়েছে প্রাচীন বৌদ্ধ সভ্যতার নিদর্শন। অষ্টম শতকের এই পুরাকীর্তি বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার পরিচায়ক। শালবন বিহারে পাওয়া গেছে নানা ধরনের পোড়ামাটির ফলক।

মহাস্থানগড় : বগুড়া শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার উত্তরে করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত মহাস্থানগড়। যিশু খ্রিস্টের জন্মের পূর্বে তৃতীয় থেকে পরবর্তী পনেরো শতকে বাংলার এ প্রাচীন নগর গড়ে ওঠে। মহাস্থানগড়ে পাওয়া গেছে অনেক পোড়ামাটির ফলক, পাত্র, অলংকার ও মূর্তি।

৮. কর্ম-অনুশীলন

ক. আমার দেখা কুমারপাড়ার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিই।
অথবা, আমার দেখা কোনো হস্তশিল্প বা হাতের কাজ সম্পর্কে লিখি।

উত্তর :

কুমারপাড়া

আমার গ্রামের দক্ষিণে একটি কুমারপাড়া আছে। কুমারদের প্রত্যেকের বাড়িতে এক বা একাধিক কাঠের চাকা থাকে। এই চাকার সাহায্যে তারা মাটির জিনিস তৈরি করেন। সারাদিনই এখানে সবাই কম-বেশি ব্যস্ত থাকেন। কেউ মাটির তাল ঢাক করে সাজিয়ে রাখছেন। কেউবা কাঠের চাকায় মাটি লাগিয়ে নানা আকারের পাত্র বানাচ্ছেন। কেউবা এগুলো সারি সারি করে রোদে দিচ্ছেন শুকানোর জন্য। উঁচু ঢিবির মতো চুলাতে এই মাটির জিনিসগুলো পোড়ানো হয়। কুমারবাড়িতে একটা আলাদা ঘরও থাকে এসব মাটির জিনিস সাজিয়ে রাখার জন্য। কুমারপাড়ার এসব কাজ দেখতে খুব ভালো

হস্তশিল্প বা হাতের কাজ

বাংলাদেশের গ্রামের মেয়েদের কাছে শিকা একটি অতি পরিচিতি হস্তশিল্প বা হাতের কাজ। পাট বা রঙিন সুতার সাহায্যে এই শিকা বানানো হয়। প্রথমে পাট বা সুতা ঝুলিয়ে বেঁধে নিতে হয়। তারপর সেই পাট বা সুতা চুলের বেণির মতো করে পাকিয়ে অতি যত্নে তৈরি করতে হয় এই শিকা। বাংলাদেশের গ্রামে এক সময় এই শিকাতেই প্রয়োজনীয় গৃহস্থালি জিনিস সাজিয়ে রাখা হতো। এছাড়া ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজেও শিকার ব্যবহার লক্ষ করা যেত। গ্রামের বউ-মেয়েরা অবসর সময়ে এই শিকা তৈরি করে থাকে। এটি আমাদের লোকশিল্পের অন্যতম উপাদান।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *