আকাশ কত বড়? হচ্ছে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর বিজ্ঞান বই এর ১ম শিখন অভিজ্ঞতা। আকাশ কত বড়? অধ্যায়টির পাঠ্যবইয়ের প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
আকাশ কত বড়?
প্রথম সেশন
প্রয়োজনীয় সামগ্রী
কাগজ, কলম, পেন্সিল, রড পেন্সিল, পোস্টার পেপার বা আর্ট পেপার, রঙিন কাগজ, আঠা, সহায়ক বই ইত্যাদি।
ধাপ-১
কাজের ধারা
প্রথমে আমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে লক্ষ করি কী কী দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া রাতের আকাশে আমরা কী কী দেখেছি তাও মনে করি। এখন নিচের মতো করে ছক পূরণ করি-
নমুনা উত্তর
ধাপ-২
চলো এঁকে ফেলা যাক!
কাজের ধারা
নমুনা ছবি: আমার চোখে অন্যের আকাশ
- দিনের বেলায় বিভিন্ন সময় আকাশের রং কেমন থাকে, আবার রাতের বেলায় আকাশের রং কেমন থাকে তা নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে আলোচনা করি।
- কোন সময়ের আকাশ আমার সবচেয়ে পছন্দ সেটা আমার সহপাঠীদেরকে বলি।
- আমার পাশের বন্ধুর কোন সময়ের আকাশ সবচেয়ে প্রিয় সেটা জানতে চাই।
- কাগজ অথবা পোস্টার পেপার কিংবা আর্ট পেপারে রং পেন্সিল দিয়ে বন্ধুর পছন্দের আকাশ আঁকার চেষ্টা করি।
ধাপ-৩
কাজের ধারা
- আঁকা হয়ে গেলে বন্ধুকে দেখাই এটা তার পছন্দ হয়েছে কিনা।
- ক্লাসের অন্যদের কাজও দেখি। অন্যদেরকে আমার আঁকা ছবিটি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করি ওরা শুনতে পারে কিনা এটা কোন সময়ের আকাশ।
- রাতে বাসায় গিয়ে রাতের আকাশটা ভালোমতো দেখি। আকাশের তারাগুলো সবই একই ব্লক। নাকি ভিন্নরকম, একই রঙের আলো নাকি ভিন্ন রঙের, সবগুলোই কী একইভাবে মিটিমিটি জ্বলে কিনা তা দেখে বোবার চেষ্টা করি।
প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
প্রশ্ন-১, রাতের আকাশে আমরা তারা মনে করে যা যা দেখি সবই কী নক্ষত্র?
উত্তর: রাতের আকাশে আমরা তারা মনে করে যা যা দেখি সবই নক্ষত্র নয়। যেগুলো মিটমিট করে জ্বলে সেগুলো নক্ষত্র, আর যেগুলো স্থিরভাবে জ্বলে সেগুলো নক্ষত্র নয়।
প্রশ্ন-২, দিনের আকাশে আমরা কোন নক্ষত্রকে দেখতে পাই?
উত্তর: দিনের আকাশে আমরা যে নক্ষত্রকে দেখতে পাই সেটি হলো সূর্য।
প্রশ্ন-৩. রাতের আকাশে গ্রহদের কীভাবে জ্বলতে দেখাখায়?
উত্তর: রাতের আকাশে গ্রহদের নিশ্বরভাবে বস্তু লতে দেখা যায়।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেশন
প্রয়োজনীয় সামগ্রী
কাগজ, কলম, মোমবাতি, পাঠ্যবই, সহায়ক বই।
ধাপ-১
কাজের ধারা
- গতরাতে আকাশের তারাগুলোর মধ্যে কী কী পার্থক্য খেয়াল করেছি সেগুলো নিয়ে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করি।
- কেন সবগুলো তারা মিটিমিটি জ্বলে না, অনেকগুলো স্থির হয়ে জ্বলে সে বিষয়ে নিজেরা আলোচনা করে কী কারণ হতে পারে চিন্তা করি।
- সূর্যকে ঘিরে যে আমাদের সৌরজগৎ সে সম্পর্কে আমরা কে কী জানি সেটা নিয়ে আলোচনা করি। এছাড়াও অন্যান্য নক্ষত্রেরও গ্রহ-উপঃগ্রহ নিয়ে আমাদের সৌরজগতের মতো সৌরজগৎ আছে কিনা সে বিষয়ে আমাদের ভাবনা সবাইকে জানাই।
- সূর্যের মতো অনেক নক্ষত্র মিলে এক একটা গ্যালাক্সির মধ্যে যে দল বেঁধে অবস্থান করে, সে সম্পর্কে আমরা কী কী জানি তা আলোচনা করি।
- আমাদের সূর্য যে গ্যালাক্সির মধ্যে রয়েছে তার নাম যে মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা সেটা কি আমরা সবাই জানি, তা একে অপরকে জিজ্ঞেস করি।
- আমাদের এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির মতো আরও কত গ্যালাক্সি যে মহাবিশ্বে রয়েছে সে সম্পর্কে আমাদের আন্দাজ বা চিন্তাভাবনা কী সেটা একে অপরকে জানাই।
- আমরা কেউ কি আকাশের দিকে তাকিয়ে আমাদের গ্যালাক্সিকে দেখতে পেয়েছি কিনা তা সবাইকে জানাই।
- আমাদের মহাবিশ্বে কতগুলো গ্যালাক্সি থাকতে পারে, আর এক একটি গ্যালাক্সিতে কতগুলো করে নক্ষত্র থাকতে পারে সে সম্পর্কে একটা অনুমান করি এবং সে বিষয়ে পাশের বন্ধুটির সাথে আলাপ করি। দুজনের অনুমান অনুযায়ী নিচের মতো করে খাতায় লিখি বা আঁকি।
নমুনা উত্তর:
ধাপ-২
কাজের ধারা
- এখন দুজনে মিলে বিজ্ঞান বইয়ে গ্যালাক্সি সম্পর্কে যা লেখা আছে তা পড়ে গ্যালাক্সি কেমন হয় সেটা জানার চেষ্টা করি।
- এক একাটি গ্যালাক্সিতে সূর্যের মতো কতগুলো গ্যালাক্সি থাকতে পারে এবং মহাবিশ্বে মোট কতগুলো গ্যালাক্সি থাকতে পারে সেম্পর্কে বই থেকে জানি।
- বইয়ের সাথে মিলিয়ে দেখি আমাদের অনুমান ঠিক আছে কিনা। এবার নিচের মতো করে ছক পূরণ করি।
নমুনা উত্তর:
ধাপ-৩
কাজের ধারা
আমাদের বইয়ে মহাবিশ্বের সৃষ্টি নিয়ে সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ‘বিগ ব্যাং’ সম্পর্কে পড়ে, একটু চিন্তা করে নি চের প্রশ্নের উত্তর দেই।
নমুনা উত্তর:
- বিগ ব্যাং’ তত্ত্ব মানুষের কল্পনা নয়, ‘বিগ ব্যাং’ তত্ত্ব বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
- মহাবিশ্বের কোটি কোটি গ্যালাক্সি নিয়ে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন যে গ্যালাক্সিগুলো এব এটি আরেকটি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। অর্থাৎ একসময় সেগুলো নিশ্চয়ই কাছাকাছি ছিলো। এ থেকে বোঝা যায় মহাবিশ্ব সৃষ্টির শুরুতে একটি বিন্দুতে থাকা বৈজ্ঞানিকভাবে যুক্তিসঙ্গত। এটাই ‘বিগ ব্যাং’ তত্ত্বের সপক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।
ধাপ-৪
কাজের ধারা
নক্ষত্রের জন্ম থেকেই যে আলো দিয়ে যাচ্ছে তা কি অনন্তকাল ধরেই চলবে নাকি নক্ষত্রের জ্বালানি বোনো একসময় ফুরিয়ে যাবে, এ নিয়ে পাশের সহপাঠীদ। সাথে আলোচনা করি।
রাতে আবার আকাশের দিকে তাকিয়ে নক্ষত্রের জন্ম-মৃত্যুর কথা চিন্তা করি। এছাড়া খেয়াল করি নিচের দুইটি ছবির মতো তারার বিন্যাস খুঁজে পাই কিনা। এক্ষেত্রে বইয়ের বা অন্য কারো সাহায্য নিতে পারি অথবা অন্যদের অভিজ্ঞতাও শুনতে পারি।
প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
প্রশ্ন-১, রাতের আকাশে নক্ষত্র আমরা মিটমিট করে জ্বলতে দেখি কেন?
উত্তর: নক্ষত্রগুলো এতই দূরে যে এগুলো থেকে আলো আসতে বার বার বাঁধা পায় বলে আলোটা স্থির না দেখে আমরা মিটমিট করতে দেখি।
প্রশ্ন-২, সূর্যকে আমরা কেন নক্ষত্র বলি?
উত্তর: সূর্য থেকে আলো ও তাপ পাওয়া যায় তাই আমরা সূর্যকে নক্ষত্র বলি।
প্রশ্ন-৩. আমাদের পৃথিবী সূর্যের চারদিকে কেন ঘোরে?
উত্তর: সৌরজগতের গ্রহরা নক্ষত্রের চারদিকে ঘোরে। আমাদের সৌরজগতে সূর্য হলো নক্ষত্র আর আমাদের পৃথিবী হলো গ্রহ, তাই আমাদের পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে।
প্রশ্ন-৪, আমাদের সূর্যসহ অন্যান্য কোটি কোটি নক্ষত্র যে গ্যালাক্সির মধ্যে অবস্থান করে তার নাম কী?
উত্তর: আমাদের সূর্যসহ অন্যান্য কোটি যে গটি দক্ষত্র যে গ্যালাক্সির মধ্যে অবস্থান করে তার নাম আকাশগঙ্গা বা মিল্কিওয়ে।
প্রশ্ন-৫. আমরা আমাদের গ্যালাক্সিকে অন্যান্য গ্যালাক্সির মতো চ্যাপ্টা থালার আকৃতিতে দেখতে পাই না কেন?
উত্তর: আমরা আমাদের গ্যালাক্সির কিনারার দিকে থাকি বলে আমরা আমাদের গ্যালাক্সিকে অন্যান্য গ্যালাক্সির মতো চ্যাপ্টা থালার আকৃতিতে দেখতে পাই না।
প্রশ্ন-৬, নক্ষত্রের জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে কী পরিণতি ঘটে?
উত্তর: নক্ষত্রের জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে ধীরে ধীরে এর মৃত্যু হয়।
প্রশ্ন-৭. আমাদের সূর্য কত বছর পর রেড জায়ান্টে পরিণত হবে?
উত্তর: আমাদের সূর্য ৫ বিলিয়ন বছর পর রেড জায়ান্টে পরিণত হবে।
প্রশ্ন-৮. আমাদের সূর্যের মৃত্যুর সময় এর বয়স কত হবে?
উত্তর: আমাদের সূর্যের মৃত্যুর সময় এর বয়স হবে ১০ বিলিয়ন বছর।
চতুর্থ সেশন
প্রয়োজনীয় সামগ্রী:
কাগজ, কলম, মোমবাতি, পাঠ্যবই, সহায়ক বই।
ধাপ-১
কাজের ধারা
- আগের দিনে যে তারার বিন্যাসের ছবি দেওয়া হয়েছিল তা আমি খুঁজে পেয়েছিলাম কিনা ক্লাসের অন্যদের জানাই, এছাড়া ক্লাসে আর কে কে খুঁজে পেয়েছে তা সবার সাথে আলোচনা করে জানি।
- বিভিন্ন নক্ষত্রমণ্ডলীর আকারের ভিত্তিতে এদের পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী যে সকল নামকরণ করা হয়েছে সে সম্পর্কে অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে একনজর দেখে জেনে নেই।
ধাপ-২
অন্যদের ছবি আর গল্পের সাথে নিজেদেরটা মিলিয়ে দেখো, তোমার শিক্ষককেও দেখাও।
কাজের ধারা
উপরের তিনটি ছবির সাথে প্রাচীন পুরাণের কিছু গল্প রয়েছে। আমরাও তারার এই বিন্যাসগুলো থেকে একদম নিজের কল্পনা অনুযায়ী ছবি আর গল্প তৈরি করার চেষ্টা করি।
নমুনা গল্প:
বৃশ্চিক
গ্রীক পুরাণ মতে, বৃশ্চিক ছিল সেই বিশালাকার বিষ্ণু যা দেবী গাইয়া শিকারী অরিয়নকে হত্যা করার জন্য পাঠিয়েছিলেন। অরিয়ন ছিলেন একজন গর্বিত এবং ভয়ানক শিকারী যিনি দাবি করেছিলেন যে তিনি পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীকে হত্যা করতে সক্ষম। এটি পৃথিবীর দেবী গাইয়াকে ক্ষুদ্ধ করেছিল, যিনি তাকে থামাতে স্করপিয়াসকে পাঠিয়েছিলেন। দু’জনের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্করপিয়াস তার বিষাক্ত হুল দিয়ে এরিয়নকে হত্যা করতে সক্ষম হয়। যুদ্ধকে স্মরণ করার জন্য, দেবতারা বৃশ্চিক এবং ওরিয়ন উভয়কেই নক্ষত্রপুঞ্জ হিসাবে আকাশে স্থাপন করেছিলেন।
কালপুরুষ বা অরিয়ন
প্রাচীন গ্রীক পুরাণে অরিয়ন ছিলেন একজন কিংবদন্তি শিকারী। তাকে দেবতা পোসেইডন এবং পৃথিবীর দেবী ইউরিয়ালের পুত্র বলা হয়। তার শক্তি, সাহস এবং শিকারের দক্ষতার জন্য তাকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ শিকারীদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হতো। অরিয়ন চিওসের রাজার কন্যার প্রেমে পড়েছিলেন এবং রাজা তার শিকারের দক্ষতায় এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তিনি তাকে তার মেয়ের সাথে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু, রাজ্যর মেয়ে অন্য কারো প্রেমে পড়েছিল এবং সে অরিয়নকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেছিল। এত অরিয়ন খুব রেগে যায় এবং সে দ্বীপের সব প্রাণীকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। দেবী আর্টেমিস, যিনি শিকার এবং বন্য প্রাণীর দেবী ছিলেন, তিনি অরিয়নের হুমকির কথা শুনে তাকে একটি শিকার প্রতিযোগিতায় চ্যালেঞ্জ করেছিলেন এবং যদিও অরিয়ন একজন দক্ষ শিকারী ছিলেন, কিন্তু দেবী আর্টেমিসের কাছে প্রতিযোগিতায় পরাজিত হন। তারপরও অরিয়ন রাজার কন্যাকে অনুসরণ করতে থাকে, এতে দেবী আর্টেমিস বিরক্ত হয়ে। তাকে তীরবিদ্ধ করে হত্যা করেন। মৃত্যুর পর, দেবতারা অরিয়নকে নক্ষত্রমণ্ডলীর মধ্যে রেখেছিলেন, যাতে তিনি অনন্তকাল ধরে স্বর্ণে শিকার চালিয়ে যেতে পারেনা আজ অবধি, অরিয়ন নক্ষত্রমণ্ডলটি শীতের আকাশে দেখা যায় এবং এটি রাতের আকাশে সবচেয়ে স্বীকৃত এবং সুপরিচিত নক্ষত্রমণ্ডলগুলির মধ্যে একটি।
উসরা মেজর
উসরা মেজর, গ্রেট বিয়ার নামেও পরিচিত। গ্রীক পুরাণের একটি গল্প। অনুসারে, নক্ষত্রমণ্ডলটি ক্যালিস্টোকে প্রতিনিধিত্ব করে, একজন জলপরী এবং দেবী আর্টেমিসের সহচর। উসী মেজর হলো সেই বৃহৎ ভাল্লুক যাকে ক্যালিস্টোর ছেলে আর্কাস শিকার করেছিল। ভাল্লুকটি প্রায় আর্কাসের দ্বারা নিহত হয়েছিল, কিন্তু জিউস হস্তক্ষেপ করেন এবং ভাল্লুক এবং শিকারী উভয়কেই আকাশে যথাক্রমে উরসা মেজর এবং উরসা মাইনর নক্ষত্রমণ্ডলী হিসাবে স্থাপন করেন।
পার্সিয়াস
গ্রীক পৌরাণিক কাহিনীতে, পার্সিয়াস একজন কিংবদন্তী নায়ক যিনি তার সাহসিকতা এবং বুদ্ধিমত্তার জন্য পরিচিত। পার্সিয়াস সম্পর্কে সবচেয়ে বিখ্যাত পৌরাণিক কাহিনীগুলির মধ্যে একটি হলো রাজকুমারী অ্যান্ড্রোমিডাকে উদ্ধার করা, যাকে একটি সমুদ্র দানবের কাছে বলি দেওয়া হয়েছিল। পাসিয়াস দেবতাদের সাহায্যে সমুদ্র দানবকে পরাজিত করেন এবং রাজকুমারীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। আকাশে, পার্সিয়াসের নক্ষত্রমণ্ডল সাহসী বীরের প্রতিনিধিত্ব করে এবং এর তারাগুলি তার বীরত্বপূর্ণ কাজের গল্পকে চিত্রিত করে। নক্ষত্রমণ্ডলীর গঠন “ভাবল ক্লাস্টার (Double Cluster)” হওয়ায় এটি খালি চোখে দৃশ্যমান এবং রাতের। আকাশে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বস্তুগুলির মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত।
ক্যাসিওপিয়া
গ্রীক পৌরাণিক মতে, ক্যাসিওপিয়া হলো ইথিওপিয়ার রাজা সেফিয়াসের স্ত্রী। ক্যাসিওপিয়া অত্যন্ত সুন্দরী ছিলেন, নিজের সৌন্দর্য নিয়ে গর্ব করে বলেছিলেন যে তিনি নেরিডস, সমুদ্রের জলপরী যারা দেবতা পোসেইডনের বন্ধু ছিলেন তাদের চেয়েও বেশি সুন্দরী। এই অহংকার সমুদ্রের দেবতা পোসেইডনকে রাগান্বিত করেছিল, যিনি তাকে নক্ষত্রমণ্ডলী হিসাবে উল্টো করে আকাশে রেখে তাকে শান্তি দিয়েছিলেন। তাই প্রায়শই তারার একটি ডব্লিউ-আকৃতির (W) দল উত্তর গোলার্ধে দেখা যায়।
অন্যদের ছবি আর গল্পের সাথে নিজেরটা মিলিয়ে দেখি, শিক্ষককে দেখাই।
ধাপ-৩
কাজের ধারা
- নক্ষত্রমণ্ডলীতে যত নক্ষত্র থাকে সেগুলো, কাছাকাছি দেখা গেলেও আসলে এগুলো অনেক দূরে যা খালি চোখে বোঝা সম্ভব না। আবার যেহেতু পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে এবং একবার সূর্যকে ঘুরে আসতে এক বছর লাগে, তাই একই নক্ষত্রমণ্ডলীকে সারাবছর দেখা যায় না। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে আমরা গ্রীষ্মকালে কালপুরুষ নক্ষত্রমণ্ডলীকে খোঁজার চেষ্টা করে দেখতে পারি।
- সারাবছর যে যে নক্ষত্রমণ্ডলী দেখা যায় তার ভিত্তিতে জ্যোতির্বিদরা আকাশকে যে বারো ভাগে ভাগ করেছেন তার এক একটা ভাগকে রাশি বলা হয় আর পৃথিবী এই বারোটি ভাগকে এক বছরে ঘুরে আসলে যে চক্র পুরো হয় তা হলো রাশিচক্র। রাশিচক্রের একটি ব্যবহার হলো বাংলা বর্ষপুঞ্জি আর একটি ব্যবহার হলো জ্যোতিষবিদ্যা বা ভাগ্য গণনা। রাশিচক্রের এই দুইটি ব্যবহার সম্পর্কে অনুসন্ধানী পাঠ বইতে পড়ে দেখি।
- এখন বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে নিচের ছকটির প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখি।
নমুনা ছক
প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
প্রশ্ন-১. আকাশে নক্ষত্রমণ্ডলীর অবস্থান পরিবর্তন হলেও কীভাবে আমরা এদেরকে শনাক্ত করতে পারি?
উত্তর: নক্ষত্রমণ্ডলীর অবস্থান পরিবর্তন হলেও এদের আকার পরিবর্তন হয় না, তাই আকার দেখে আমরা এদেরকে শনাক্ত করতে পারি।
প্রশ্ন-২, আমাদের বাংলা বর্ষপঞ্জিতে বারোটি মাস কীসের সাথে মিল রেখে নির্ধারণ করা হয়েছে?
উত্তর: বারোটি নক্ষত্রমণ্ডলীর উদয়ের সাথে মিল রেখে বারো মাস নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রশ্ন-৩, নক্ষত্রমণ্ডলীকে ব্যবহার করে ভাগ্য গণনার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কী?
উত্তর: নক্ষত্রমণ্ডলীকে ব্যবহার করে ভাগ্য গণনার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, এটা কুসংস্কার।
পঞ্চম সেশন
প্রয়োজনীয় সামগ্রী: কাগজ, কলম, পাঠ্যবই, সহায়ক বই।
ধাপ-১
কাজের ধারা
- আগের দিনের রাশিচক্রের ব্যবহার নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে আমরা যে সব অবৈজ্ঞানিক চর্চা বা কুসংস্কার শনাক্ত করেছি, সেগুলো সম্পর্কে আমাদের দায়িত্ব কী হওয়া উচিত সে সম্পর্কে শিক্ষক সহ সকলের সাথে আলোচনা করি।
- কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে আলোচনার মাধ্যমে নিজস্ব চিন্তাগুলো একত্র করে কিছু প্রস্তাব তৈরি করি।
- আলোচনা শেষে সকলের মতামত উপস্থাপন করি। প্রয়োজনে সহায়ক বই বা পাঠ্যবই ব্যবহার করি।
- সবশেষে নিচের ছকটি পূরণ করি এবং পাশের জনের সাথে তা শেয়ার করি।
নমুনা ছক
- নিজের যখন ইচ্ছা হবে আকাশ দেখতে পারি, আকাশের বিশালতা সম্পর্কে ভাবতে পারি।
- আকাশ সম্পর্কে নিজের চিন্তাভাবনা নিচের ছকের মতো করে টুকে রাখি।
ধাপ-২
কাজের ধারা
নমুনা ছক
প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর
প্রশ্ন-১, গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে তোমার আশেপাশে কী ধরনের কুসংস্কার দেখতে পাও?
উত্তর: গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে আমার আশেপাশে ভাগ্য গণনা, শুভ-অশুভ সময় নির্ধারণ করতে দেখতে পাই।
প্রশ্ন-২, নক্ষত্রমণ্ডলীর একটি বৈজ্ঞানিক ব্যবহার লেখো।
উত্তর: নক্ষত্রমণ্ডলীর একটি বৈজ্ঞানিক ব্যবহার হলো বর্ষপঞ্জি বা বারো মাসের হিসাব নির্ধারণ।
প্রশ্ন-৩, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিষবিদ্যার মধ্যে কোনটি বিজ্ঞানসম্মত?
উত্তর: জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিষবিদ্যার মধ্যে জ্যোতির্বিজ্ঞান বিজ্ঞানসম্মত, আর জ্যোতিষবিদ্যা হলো কুসংস্কার।