(জীববিজ্ঞান) SSC: জীবকোষ ও টিস্যু অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

জীবকোষ ও টিস্যু হচ্ছে নবম-দশম শ্রেণী অর্থাৎ এসএসসি’র জীববিজ্ঞান বই এর ২য় অধ্যায়। জীবকোষ ও টিস্যু অধ্যায় থেকে বাছাইকৃত সেরা ৫টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

জীবকোষ ও টিস্যু অধ্যায়ের সৃজনশীল

১. নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ কর-

CamScanner 09 21 2023 11.42 1

ক. অ্যারেনকাইমা কী?
খ. নেস্টেড হায়ারার্কি বলতে কী বুঝ?
গ. চিত্রসহ B-এর বৈশিষ্ট্য লিখ।
ঘ. সরল টিস্যুর A, B ও স্ক্লেরেনকাইমার মধ্যে গাঠনিক ও কার্যিক মিল-অমিল আলোচনা কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর

ক. জলজ উদ্ভিদের বড় বড় বায়ুকুঠুরিযুক্ত প্যারেনকাইমাই হলো অ্যারেনকাইমা।

খ. শ্রেণিবিন্যাসে একটি জীবকে প্রজাতি পর্যায়ে বিন্যাসে মূলত আন্তর্জাতিক কোড চিহ্নিত সাতটি ধাপ আছে। উপরের ধাপ যেন বড় একটা সেট আর তার নিচের ধাপ হলো তার উপসেট। রাজ্যের উপসেট হলো পর্ব, পর্বের উপসেট হলো শ্রেণি, শ্রেণির উপসেট হলো বর্গ ইত্যাদি। শ্রেণিবিন্যাসের এই পদ্ধতিকে বলে নেস্টেড হায়ারার্কি।

গ. উদ্দীপকের B নির্দেশিত সরল টিস্যুটি হলো কোলেনকাইমা। নিচে কোলেনকাইমার বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো-

১. এটি বিশেষ ধরনের প্যারেনকাইমা কোষ দিয়ে তৈরি হয়।
২. কোষ প্রাচীরে সেলুলোজ এবং পেকটিন জমা হয়ে পুরু হয়।
৩. কোষগুলো লম্বাটে ও সজীব।
৪. এরা প্রোটোপ্লাজমপূর্ণ কোষ দিয়ে তৈরি হয়।
৫. খাদ্য প্রস্তুত এবং দৃঢ়তা প্রদান করা এদের প্রধান কাজ।
৬. পাতার শিরা এবং পত্রবৃন্তে এদের দেখা যায়।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত A, B, ক্লেরেনকাইমা কোষ দ্বারা গঠিত টিস্যু হলো যথাক্রমে প্যারেনকাইমা, কোলেনকাইমা ও স্ক্লেরেনকাইমা টিস্যু। নিচে এ টিস্যুগুলোর মধ্যে গাঠনিক ও কার্ষিক মিল ও অমিল ছকাকারে আলোচনা করা হলো-

CamScanner 09 21 2023 11.42 2

২. নিচের চিত্র দুটি লক্ষ কর-

CamScanner 09 21 2023 11.42 3

ক. পেশি টিস্যু কী?
খ. প্লাস্টিডকে বর্ণ গঠনকারী অঙ্গাণু বলা হয় কেন?
গ. P ও Q এর গঠনগত অমিল দেখাও।
ঘ. উদ্ভিদের কার্যক্রমে A ও B গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে- বিশ্লেষণ কর।

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ভ্রূণের মেসোডার্ম থেকে তৈরি সংকোচন প্রসারণশীল বিশেষ ধরনের টিস্যুই পেশি টিস্যু।

খ. প্লাস্টিড উদ্ভিদ কোষের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। তিন ধরনের প্লাস্টিডের মধ্যে সবুজ রঙের প্লাস্টিডকে ক্লোরোপ্লাস্ট বলে। এ প্লাস্টিডে ক্লোরোফিল থাকে তাই এদের সবুজ দেখায়। অসবুজ ও রঙিন প্লাস্টিডকে ক্রোমোপ্লাস্ট বলে। এসব প্লাস্টিডের বর্ণ কণিকার মিশ্রণজনিত কারণে ফুল, পাতা ও উদ্ভিদের অন্যান্য অংশ আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। এ বর্ণ কণিকার কারণেই পাতা, ফুল ও ফল হলুদ, কমলা বা লাল হয়ে থাকে। তাই প্লাস্টিডকে বর্ণ গঠনকারী অঙ্গ বলা হয়।

গ. চিত্র-P হলো ভেসেল খন্ড এবং চিত্র-Q সিভনল। নিচে ভেসেল খন্ড ও সিভনলের গঠনগত অমিল ছকে দেখানো হলো-

CamScanner 09 21 2023 11.42 4

ঘ. উদ্দীপকের চিত্র-A এবং চিত্র-B হলো যথাক্রমে জাইলেম টিস্যু এবং ফ্লোয়েম টিস্যু। নিচে উদ্ভিদের পরিবহন কার্যক্রমে জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুর গুরুত্ব বিশ্লেষণ করা হলো-

জাইলেম ভেসেল: জাইলেম ভেসেল কোষগুলো খাটো চোঙের ন্যায়। কোষগুলো একটির মাথায় আরেকটি সজ্জিত হয় এবং প্রান্তীয় প্রাচীরটি গলে গিয়ে একটি দীর্ঘ নলের সৃষ্টি করে। এর ফলে কোষের ঊর্ধ্বরোহণের জন্য একটি সরু পথ সৃষ্টি হয়। এর মাধ্যমে পানি ও খনিজ লবণ মূল হতে পাতায় পৌঁছায়।

ফ্লোয়েম: ফ্লোয়েম টিস্যু শারীরবৃত্তীয় দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ টিস্যু জাইলেমের সাথে একত্রে পরিবহন টিস্যুগুচ্ছ গঠন করে। সিভনল, সঙ্গীকোষ, ফ্লোয়েম প্যারেনকাইমা ও ফ্লোয়েম ফাইবার নিয়ে এটি গঠিত। সিভনল প্রোটোপ্লাজমের প্রাচীর ঘেঁষে থাকে বলে একটি কেন্দ্রীয় ফাঁপা জায়গার সৃষ্টি হয় যা খাদ্য পরিবহনে নল হিসেবে কাজ করে। পাতায় প্রস্তুতকৃত খাদ্য উদ্ভিদ দেহের বিভিন্ন অংশে পরিবহন করে থাকে। খাদ্য চলাচলে সঙ্গীকোষ সিভনলকে সাহায্য করে। সিভনল উদ্ভিদে খাদ্য সঞ্চয়ের কাজও করতে পারে। প্যারেনকাইমা খাদ্য সঞ্চয় করে ও খাদ্য পরিবহনে সহায়তা করে শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলি সম্পন্ন করে।

৩. (i) সরল টিস্যু-যাদের উদ্ভিদের সব অংশে লক্ষ করা যায়।
(ii) বিভিন্ন ধরনের জটিল টিস্যু।

ক. জীবাণু ভক্ষণ করা কোষের কোন অঙ্গাণুটির কাজ?
খ. স্টেইনিং বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের (i) নং এর বৈশিষ্ট্য লেখ।
ঘ. উদ্দীপকের (ii) নং এর গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

৩নং প্রশ্নের উত্তর

ক. জীবাণু ভক্ষণ করা লাইসোজোমের কাজ।

খ. কোষ বা টিস্যুর পাতলা স্তরকে যখন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা হয়, তখন সেটি যে জলীয় মাধ্যমে অবস্থান করে, তার থেকে আলাদা করে চিহ্নিত করা মুশকিল। এ সমস্যা সমাধান করার একটি উপায় হলো ঐ কোষ বা টিস্যুকে রং করা, যাতে সেই রং দেখে পারিপার্শ্বিকতার সাপেক্ষে তার অবস্থান এবং আকৃতি আলাদা করে চিহ্নিত করা যায়। অনেক সময় এই রঞ্জন প্রক্রিয়া এত সুক্ষ্মতার সাথে করা সম্ভব, যাতে করে শুধু বিশেষ ধরনের কোষ কিংবা কোষের বিশেষ কোনো অংশ বা অঙ্গাণু অথবা টিস্যুর নির্দিষ্ট কোনো উপাদানই কেবল রঙিন হয়। একেই বলে স্টেইনিং বা স্লাইড স্টেইনিং।

গ. উদ্দীপকের (i) নং সরল টিস্যুটি হলো প্যারেনকাইমা। উদ্ভিদদেহের সব অংশে এদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। নিচে প্যারেনকাইমা টিস্যুর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো-
১. এ টিস্যুর কোষগুলো জীবিত, সমব্যাসীয়, পাতলা প্রাচীরযুক্ত ও প্রোটোপ্লাজম পূর্ণ।
২. এ টিস্যুতে আন্তঃকোষীয় ফাঁক দেখা যায় না।
৩. কোষপ্রাচীর পাতলা ও সেলুলোজ দ্বারা গঠিত। এসব কোষে যখন ক্লোরোপ্লাস্ট থাকে, তখন তাকে ক্লোরেনকাইমা বলে।
৪. অ্যারেনকাইমা নামক প্যারেনকাইমা টিস্যু জলজ উদ্ভিদে দেখা যায়, যেখানে বড় বড় বায়ুকুঠুরি বিদ্যমান।
৫. দেহ গঠন, খাদ্য প্রস্তুত ও খাদ্য পরিবহন এই টিস্যুর প্রধান কাজ।

ঘ. উদ্দীপকে (ii) নং হলো জটিল টিস্যু। নিচে জটিল টিস্যুর গুরুত্ব বিশ্লেষণ করা হলো-
উদ্ভিদের মূল থেকে কান্ড ও তার শাখা-প্রশাখা হয়ে শিরা-উপশিরার মাধ্যমে পাতা পর্যন্ত জটিল টিস্যু অবিচ্ছেদ্যভাবে অবস্থিত। এরা উদ্ভিদে পরিবহনের কাজ করে, তাই এদের পরিবহন টিস্যুও বলা হয়। এ টিস্যু দুই ধরনের, জাইলেম ও ফ্লোয়েম।

১. জাইলেম এর ট্রাকিড কোষ কোষরসের পরিবহন ও অঙ্গকে দৃঢ়তা প্রদান করে। তবে কখনো খাদ্য সঞ্চয়ের কাজও করে থাকে।
২. ভেসেল কোষটি পানি ও খনিজ লবণ পরিবহন এবং অঙ্গকে দৃঢ়তা প্রদান করে।
৩. জাইলেম প্যারেনকাইমা কোষটি খাদ্য সঞ্চয় এবং পানি পরিবহন করে।
৪. প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় যে পানির প্রয়োজন হয় তা জাইলেম টিস্যুর মাধ্যমেই পাতায় পৌছায়।

৫. জাইলেম ফাইবার পানি ও খনিজ পদার্থ পরিবহন, খাদ্য সঞ্চয়, উদ্ভিদকে যান্ত্রিক শক্তি আর দৃঢ়তা প্রদান করে।
৬. ফ্লোয়েম টিস্যুর সিভকোষ পাতায় প্রস্তুত খাদ্য উদ্ভিদদেহের বিভিন্ন অংশে পরিবহন করে।
৭. ফ্লোয়েম প্যারেনকাইমা খাদ্য সঞ্চয় এবং খাদ্য পরিবহনে সহায়তা করে।
৮. ফ্লোয়েম টিস্যুর মাধ্যমে পাতায় উৎপাদিত শর্করা এবং মূলে সঞ্চিত খাদ্য একই সাথে উপরে নিচে পরিবাহিত হয়।
পরিশেষে বলা যায় জটিল টিস্যুর গুরুত্ব অপরিসীম।

৪. নিচের চিত্রটি লক্ষ কর-

CamScanner 09 21 2023 11.42 5

ক. স্টোন সেল কী?
খ. পাকস্থলীর পেশিকে মসৃণ পেশি বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের A দ্বারা নির্দেশিত টিস্যুর চিত্রসহ গঠন বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্ভিদ দেহে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পদার্থ পরিবহনে উদ্দীপকের B ও C টিস্যুর গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

৪নং প্রশ্নের উত্তর

ক. স্ক্লেরাইড কোষই হচ্ছে স্টোন সেল। এরা খাটো, সমব্যসীয়, অত্যন্ত পুরু এবং লিগনিনযুক্ত।

খ. পাকস্থলীর পেশি সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন। এ পেশির কোষগুলো মাকু আকৃতির। এদের গায়ে আড়াআড়ি দাগ থাকে না। এ কারণে পাকস্থলীর পেশিকে মসৃণ পেশি বলা হয়।

গ. উদ্দীপকের A দ্বারা নির্দেশিত টিস্যু হলো কোলেনকাইমা। নিচে কোলেনকাইমা টিস্যুর চিত্রসহ গঠন বর্ণনা করা হলো-
এগুলো বিশেষ ধরনের প্যারেনকাইমা কোষ দিয়ে তৈরি হয়। কোষপ্রাচীরে সেলুলোজ এবং পেকটিন জমা হয়ে পুরু হয়। তবে এদের কোষপ্রাচীর অসমভাবে পুরু এবং কোাগুলো অধিক পুরু হয়। এ টিস্যুর কোষগুলো লম্বাটে ও সজীব। এরা প্রোটোপ্লাজমপূর্ণ কোষ দিয়ে তৈরি হয়। এতে আন্তঃকোষীয় ফাঁক থাকতে পারে। কোষপ্রান্ত চৌকোনাকার, সরু বা তির্যক হতে পারে। খাদ্য প্রস্তুত এবং উদ্ভিদদেহকে দৃঢ়তা প্রদান করা এদের প্রধান কাজ। পাতার শিরা এবং পত্রবৃন্তে এদের দেখা যায়। কচি ও নমনীয় কাণ্ড, যেমন কুমড়া ও দণ্ডকলসের কান্ডে এ টিস্যু দৃঢ়তা প্রদান করে। এ কোষে যখন ক্লোরোপ্লাস্ট থাকে, তখন এরা খাদ্য প্রস্তুত করে।

CamScanner 09 21 2023 11.42 6

ঘ. উদ্দীপকের B ও C টিস্যুর যথাক্রমে জাইলেম ও ফ্লোয়েম। উদ্ভিদদেহে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পদার্থ পরিবহনে জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুর গুরুত্ব বিশ্লেষণ করা হলো-

জাইলেম ও ফ্লোয়েম নামক জটিল টিস্যুর সমন্বয়ে উদ্ভিদের পরিবহনতন্ত্র গঠিত হয়। পরিবহন টিস্যু না থাকলে সকল উদ্ভিদই মারা যেত যার ফলে জীবকুল ধ্বংস হয়ে যেত। উদ্ভিদের প্রোটোপ্লাজমের শতকরা ৯০ ভাগই পানি। প্রোটোপ্লাজমের সজীবতা রক্ষা ও এর প্রয়োজনীয় ক্রিয়া-বিক্রিয়া পরিচালনার জন্য পানির প্রয়োজন। প্রতিটি কোষের মূল থেকে পাতায় পানি ও খনিজ লবণ পৌঁছাতে জাইলেম টিস্যু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ পাতায় পানি না পৌঁছালে উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া ঘটতো না।

অন্যদিকে ফ্লোয়েম টিস্যুও পাতায় প্রস্তুতকৃত খাদ্য উদ্ভিদদেহের প্রয়োজনীয় সকল অঙ্গে পৌঁছে দেয় ফলে উদ্ভিদের বৃদ্ধি প্রক্রিয়া সুনিয়ন্ত্রিত থাকে। এ টিস্যুর ফ্লোয়েম প্যারেনকাইমা কোষ উদ্ভিদের অঙ্গকে দৃঢ়তা প্রদান করে। এর অনুপস্থিতিতে উদ্ভিদ দেহ খুব নমনীয় ও ভঙ্গুর হয়ে যাবে। তাছাড়া ফ্লোয়েম টিস্যু প্রয়োজনে কিছু খাদ্য সঞ্চয় করে বলে এ টিস্যুর অনুপস্থিতিতে উদ্ভিদদেহে খাদ্য সঞ্চয়ে ব্যাঘাত ঘটবে।
অর্থাৎ উপরিউক্ত আলোচনা হতে বলা যায় যে, উদ্দীপকের টিস্যুগুলোর মাধ্যমেই উদ্ভিদের পরিবহন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

আরো পড়োজীবন পাঠ অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
আরো পড়ো

৫. নিচের চিত্রটি লক্ষ কর-

CamScanner 09 21 2023 11.42 7

ক. জাইগোট কাকে বলে?
খ. সাইটোপ্লাজমীয় কোন অঙ্গাণুকে কোষরসের আধার বলা হয় এবং কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. চিত্র A এর গঠন বর্ণনা কর।
ঘ. চিত্র A, B এবং C এর মূল/প্রধান কাজ একই কিন্তু ধরন আলাদা – বিশ্লেষণ কর।

৫নং প্রশ্নের উত্তর

ক. পুং ও স্ত্রী গ্যামেটের মিলনের ফলে সৃষ্ট ডিপ্লয়েড অবস্থাই হলো জাইগোট।

খ. সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু কোষগহ্বরকে কোষরসের আধার বলা হয়। কারণ কোষগহ্বরের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অজৈব লবণ, আমিষ, শর্করা, চর্বিজাতীয় পদার্থ, জৈব এসিড, রঞ্জক পদার্থ, পানি ইত্যাদি এই কোষরসের মধ্যে জমা থাকে।

গ. উদ্দীপকের চিত্র-A হলো ফ্লোয়েম টিস্যু। ফ্লোয়েম টিস্যু চার ধরনের কোষ দ্বারা গঠিত। নিচে কোষগুলোর বর্ণনা করা হলো-

১. সিভনল বা সিভকোষ : এ কোষগুলো লম্বা এবং ভেতরটা ফাঁপা। একটি কোষের মাথায় আর একটি কোষ বসে একটি লম্বা নলের সৃষ্টি করে। মাথায় মাথায় অবস্থিত দুটি কোষের মধ্যপ্রাচীর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্রযুক্ত।
২. সঙ্গীকোষ : এগুলো সরু, লম্বা, এদের সাইটোপ্লাজম ঘন, কোষগহ্বর ক্ষুদ্র এবং নিউক্লিয়াস বড়।
৩. ফ্লোয়েম প্যারেনকাইমা : এ কোষগুলো লম্বাটে, বেলনাকার। এদের কোষপ্রাচীর পাতলা সেলুলোজ নির্মিত এবং সমান পুরু, কোষগহ্বর বড়। সব ধরনের ফ্লোয়েম টিস্যুতে এদের দেখা যায় না।
৪. ফ্লোয়েম ফাইবার : এগুলো একপ্রকার দীর্ঘকোষ যাদের প্রান্তদেশ পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে। এরা বাস্টফাইবার নামেও পরিচিত। পাটের আঁশ বাস্টফাইবার। উদ্ভিদ অঙ্গের সেকেন্ডারি বৃদ্ধির সময় এ ফাইবার তৈরি হয়। এসব কোষের প্রাচীরে কূপ দেখা যায়।

ঘ. চিত্র-A, B এবং C যথাক্রমে ফ্লোয়েম টিস্যু, রক্তকণিকা এবং স্নায়ুকোষ। এদের প্রধান কাজগুলো পরিবহন করা। যেমন- ফ্লোয়েম টিস্যু উদ্ভিদের পাতায় প্রস্তুতকৃত খাদ্য উদ্ভিদ দেহের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করে। রক্তকণিকা, ধমনি, শিরা ও কৈশিক নালির মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে প্রাণিদেহের অভ্যন্তরীণ পরিবহনে অংশ নেয় এবং স্নায়ুকোষ পরিবেশ থেকে উদ্দীপনা, যেমন তাপ, স্পর্শ, চাপ ইত্যাদি গ্রহণ করে দেহের ভিতরে মস্তিষ্কে পরিবহন করে এবং মস্তিষ্কের বিশ্লেষণের পর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপযুক্ত কাজ করে। অর্থাৎ A, B এবং C তিন ধরনের কোষই জীবের জন্য প্রায় একই ধরনের কাজ করে থাকে। কিন্তু এদের গঠনগত ধরন ভিন্ন।

এক্ষেত্রে ফ্লোয়েম টিস্যু সিভনল, সঙ্গীকোষ ফ্লোয়েম প্যারেনকাইমা এবং ফ্লোয়েম তন্তু নিয়ে গঠিত। রক্তকণিকা তিন ধরনের। যথা- লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা এবং অণুচক্রিকা। লোহিত রক্তকণিকায় হিমোগ্লোবিন নামে একটি লৌহজাত যৌগ থাকে যার জন্য রক্ত লাল হয়। শ্বেত রক্তকণিকা জীবাণু ধ্বংস করে দেহের প্রকৃতিগত আত্মরক্ষায় অংশ নেয়। অণুচক্রিকা রক্ত জমাট বাঁধায় অংশ নেয়। আবার স্নায়ুকোষ অসংখ্য নিউরন নিয়ে গঠিত। একটি আদর্শ নিউরনের তিনটি অংশ থাকে। যথা- কোষদেহ, ডেনড্রাইট এবং অ্যাক্সন।
উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, ফ্লোয়েম টিস্যু, রক্তকণিকা এবং স্নায়ুকোষের প্রধান কাজ একই হলেও এদের গঠনগত ভিন্নতা রয়েছে।

Leave a Comment