প্রবাস বন্ধু হচ্ছে মাধ্যমিক অর্থাৎ নবম-দশম শ্রেণীর বাংলা ১ম পত্র বই এর সৈয়দ মুজতবা আলীর ভ্রমণকাহিনী। প্রবাস বন্ধু গল্প থেকে বাছাইকৃত সেরা ৫টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
প্রবাস বন্ধু গল্পের সৃজনশীল
১. রাচি শহরটা অপেক্ষাকৃত সমতল ভূমিতে অবস্থিত। তবে চারদিকে সুন্দর পাহাড় স্থানটিকে মনোরম করে রেখেছে। রাঁচিতে রয়েছে Ranchi Lake নামক প্রকান্ড একটি কৃত্রিম হ্রদ। হ্রদটি দেখতে খুব সুন্দর ঠিক প্রাকৃতিক হ্রদের মতো। মাঝখানে একটি দ্বীপ হ্রদের শোভা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। হ্রদের উপকূলে মসজিদ, মন্দির প্রভৃতি স্থানটির প্রাকৃতিক শোভার মধ্যে আধ্যাত্মিক ভাব মিলিয়ে দিয়েছে।
ক. আবদুর রহমানের দেশের নাম কী?
খ. আবদুর রহমান তার গোঁফ কামিয়ে ফেলার কথা বলেছিলেন কেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির কোন বিষয়ের প্রতিবিঘ্ন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির খণ্ডাংশ মাত্র- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. আবদুর রহমানের দেশের নাম উত্তর-আফগানিস্তান।
খ. আবদুর রহমান তার গোঁফ কামিয়ে ফেলার কথা বলেছিলেন শীতকালে পানশিরের স্বাস্থ্যকর পরিবেশে ঘুরে এসে লেখকের পক্ষে অনেক বেশি খাবার গ্রহণের যৌক্তিকতা বোঝাতে।
‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে কাবুলে লেখকের কাজ-কর্ম করে দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষ জিরার সাহেব উত্তর-আফগানিস্তানের বাসিন্দা আবদুর রহমানকে নিয়োগ দেন। তিনি লেখকের জন্য প্রথমবার যতটা খাবারের আয়োজন করেছিলেন, লেখক ততটা খেতে পরেননি। তখন কাবুলের খারাপ আবহাওয়ার সঙ্গে আবদুর রহমান তার জন্মস্থান ‘পানশির’-এর আবহাওয়া ও পরিবেশের তুলনামূলক বর্ণনা দেন। তার মতে শীতকালে পানশিরের স্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকলে মানুষের ক্ষুধা বেশি হয়, যা কাবুলের পরিবেশে নেই।
পানশিরে রাতে বরফ পড়া, সকালে সূর্য ওঠা, ধুলো-বালু- ময়লাহীন নির্মল পরিবেশে ঠান্ডা হাওয়া যেন ধারালো ছুরির মতো। বুক ভরে নির্মল বাতাস নেওয়া এবং ছেড়ে দেওয়ার সময় ভিতরের ময়লা, রোগ-জীবাণু সব পরিষ্কার হয়ে চলে যাওয়ার কথা বলেন আবদুর রহমান। পানশিরের পরিবেশে খাদ্য গ্রহণের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, তখন সকাল বেলা বাইরে থেকে ফিরে এসে লেখকের পক্ষে একটা আস্ত দুম্বা খেয়ে ফেলা সম্ভব। আর যদি লেখক তা খেতে না পারেন তাহলে আবদুর রহমান নিজের গোঁফ কামিয়ে ফেলবেন।
গ. উদ্দীপকটি ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির আবদুর রহমানের জন্মস্থান উত্তর-আফগানিস্তানের পানশিরের বর্ণনা বিষয়ের প্রতিবিম্ব।
প্রতিটি মানুষের কাছে তার জন্মভূমির সৌন্দর্য সেরা। সে চায় তার দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে সবাই মুগ্ধ হোক। প্রত্যেকেই তার জন্মস্থানের সৌন্দর্যের কথা সবার সামনে বলতে গর্ববোধ করে। সবাইকে ডেকে দেখাতে চায় সেই সৌন্দর্য।
উদ্দীপকে রাঁচি শহরের সৌন্দর্য তুলে ধরা হয়েছে। এখানে Ranchi Lake নামক কৃত্রিম হ্রদ, হ্রদের উপকূলে মসজিদ, মন্দির প্রভৃতি থাকায় রাঁচি শহরের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। উদ্দীপকে রাঁচির এই সৌন্দর্যের দিক ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির উত্তর-আফগানিস্তানের পানশিরের সৌন্দর্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এখানে আবদুর রহমানের ভাষায় তার জন্মস্থান পানশিরের শীতকালীন সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে।
শীতকালে সেখানে বরফ পড়ে; মাঠ, পথ, পাহাড়, নদী, গাছপালা সব ঢাকা পড়ে যায়। সূর্য উঠলে সাদা বরফের ওপর সে রোশনির দিকে চোখ মেলে তাকানো যায় না, এমন উজ্জ্বল মনে হয়। আবদুর রহমানের মতে- সেখানে একরত্তি গুলো নেই, বালু নেই, ময়লা নেই।’ অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর পরিবেশ। উদ্দীপকে রাঁচি শহরের যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তাতে এর মনোরম পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা করা যায়। এভাবে উদ্দীপকটি ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির পানশিরের বর্ণনা বিষয়ের প্রতিবিঘ্ন হয়ে উঠেছে।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘প্রবাস বন্ধু‘ ভ্রমণকাহিনির খণ্ডাংশ মাত্র- মন্তব্যটি যথার্থ।
জ্ঞান অর্জনের প্রধান উপায় দুটি বই পড়ে এবং ভ্রমণ করে। ভ্রমণে বের হয়ে মানুষ আনন্দের মধ্য দিয়ে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করে। ভ্রমণের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সেখানকার লোকজন, আচার-সংস্কৃতি সম্পর্কে মানুষ সম্যক ধারণা লাভ করে।
‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে লেখক আফগানিস্তানের ভূমি, পরিবেশ, অধিবাসীদের সহজ-সরল জীবনাচরণ, বিচিত্র খাদ্য, অতিথিপরায়ণতা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। কাবুলে লেখকের কাজে নিয়োজিত আবদুর রহমানের জবানিতে লেখক উত্তর- আফগানিস্তানের পানশিরের সৌন্দর্য বর্ণনা করেছেন। এই সৌন্দর্যের বর্ণনার সঙ্গে উদ্দীপকের রাঁচির মিল আছে। উদ্দীপকের এ বিষয়টি ছাড়াও ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে আরও কিছু বিষয় রয়েছে। অধ্যক্ষ জিরার সাহেব কর্তৃক লেখকের কাজে নিয়োজিত আবদুর রহমানের যে পরিচয় এ ভ্রমণকাহিনিতে পাওয়া যায় তা উদ্দীপকে নেই।
‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে লেখক তার কাজের জন্য নিয়োজিত আফগান আবদুর রহমানের দেহের এবং তার খাবার পরিবেশনের যে বর্ণনা দিয়েছেন তা উদ্দীপকে নেই। আবদুর রহমান সম্পর্কে অধ্যক্ষ জিরার সাহেবের মন্তব্য এবং পানশির সম্পর্কে আবদুর রহমানের অতি কথন, বাগেবালার বরফি আঙুরের বর্ণনাসহ আফগানিস্তানের বিচিত্র ও সুস্বাস্থ্য খাদ্যবস্তুর যে পরিচয় ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে পাওয়া যায় তা উদ্দীপকে নেই। এসব দিক বিচারে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ
২. বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর, অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড় পাতাটির নিচে বসে আছে ভোরের দোয়েল পাখি চারদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ জাম-বট কাঁঠালের-হিজলের-অশ্বত্থের করে আছে চুপ।
ক. আবদুর রহমানের উচ্চতা কত ছিল?
খ. “আমাকে থ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আবদুর রহমান, তাড়াতাড়ি এগিয়ে অভয়বাণী দিল- রান্নাঘরে আরো আছে”- ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির কোন বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বিষয়গত সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপক ও ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির মূলভাবে বৈসাদৃশ্য রয়েছে। মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. আবদুর রহমানের উচ্চতা ছিল ছয় ফুট চার ইঞ্চি।
খ. শুধু নিজের জন্য লেখক ছয়জনের খাবার টেবিলে দেখে বিস্ময়ে থ হয়ে গেলেও আবদুর রহমান মনে করেছে অল্প খাবার দেখে লেখক মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন।
লেখক একা মানুষ। আবদুর রহমান একা একজন মানুষের জন্য ছয়জনের খাবার রান্না করে। এত খাবার খাওয়া একজন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় দেখে লেখক থ হয়ে দাঁড়িয়ে যান। কিন্তু আবদুর রহমান মনে করে টেবিলে খাবার কম পরিবেশন করা হয়েছে দেখে লেখক মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন। তাই সে লেখককে এ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাড়াতাড়ি এগিয়ে এসে রান্নাঘরে আরও খাবার আছে বলে অভয়বাণী দিয়েছে।
গ. উদ্দীপকে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির আবদুর রহমানের দেশপ্রেমের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
স্বদেশপ্রেম মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য। প্রতিটি মানুষ স্বদেশের প্রতি গভীর আকর্ষণ অনুভব করে। তাই স্বদেশের প্রকৃতি, জনপদসহ প্রতিটি উপকরণ মানুষকে মুগ্ধ ও বিমোহিত করে।
উদ্দীপকে জন্মভূমির প্রকৃতির সৌন্দর্যের বর্ণনা করা হয়েছে। কবির মতে, বাংলা অপরূপ ৰূপ ও মাধুর্যে সমৃদ্ধ। বাংলার এই রূপ যেকোনো মানুষকে বিমোহিত করে। কবি দেশের সৌন্দর্যে এতটাই মুগ্ধ যে তিনি পৃথিবীর অন্য কোনো সৌন্দর্য খুঁজতে যান না। ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে লেখক আবদুর রহমানের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি আবদুর রহমানের স্বদেশপ্রেমের এক অনন্য চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন।
আমরা দেখি, জন্মস্থান উত্তর আফগানিস্তানের পানশির তার কাছে সব দিক বিবেচনায় শ্রেষ্ঠ। সেখানকার আবহাওয়া, খাদ্য, পরিবেশ সবই তার বিবেচনায় সেরা। তার মধ্যে প্রগাঢ় দেশপ্রেম লক্ষণীয়। প্রবল দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়েই সে তার দেশের বরফ শীতল আকর্ষণীয় জলবায়ুর মুগ্ধতার কথা লেখককে বর্ণনা করে। এভাবেই উদ্দীপকে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির আবদুর রহমানের দেশপ্রেমের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
ঘ. “বিষয়গত সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপক ও ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির মূলভাবে বৈসাদৃশ্য রয়েছে।”- মন্তব্যটি যথার্থ।
প্রকৃতি মানুষের সবচেয়ে ভালো বন্ধু। মানুষ প্রকৃতির মধ্যে খুঁজে নেয় নিজেকে। প্রকৃতির সঙ্গে মিশে থাকে মানুষের সত্তা। তাই প্রকৃতির পরিচয় থেকেও নির্দিষ্ট কোনো জাতির পরিচয় পাওয়া যায়।
উদ্দীপকে বাংলাদেশের স্নিগ্ধ প্রকৃতির সন্ধান মেলে। ভোরে দোয়েল পাখির ডাক শুনে মন ভরে ওঠে। জাম, বট, কাঁঠাল, হিজল, অশ্বত্থের ডালে ডালে পত্র-পল্লবের স্তূপ পৃথিবীর অন্য কোথাও দেখা যায় না। এখানে প্রকৃতি তার বৈচিত্র্য ভিন্ন মাত্রায় স্বতন্ত্রভাবে প্রকাশ ঘটিয়েছে। তাই প্রকৃতির অপার মহিমা ও সৌন্দর্য এখানে বাঙময় হয়ে ফুটে উঠেছে। অন্যদিকে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্যের পরিচয়ই আমরা পাই না, বরং আফগানিস্তানের সংস্কৃতি, পোশাক, জীবনপ্রণালি সবকিছুর পরিচয় পাই। লেখক যেন পুরো আফগানিস্তানের দৃশ্য তাঁর বর্ণনার মধ্যে ফুটিয়ে তুলেছেন।
উদ্দীপকে শুধু বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা পাওয়া গেলেও আলোচ্য ভ্রমণকাহিনিতে আমরা নির্দিষ্ট দেশ ও জাতি সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য পাই। এই তথ্যগুলোর মাধ্যমে আমরা একটি দেশের সংস্কৃতি, সেই দেশের মানুষের জীবনপ্রণালি, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক ইত্যাদির পরিচয় পাই। তাছাড়া সেখানকার মানুষের সরলতা, স্বদেশপ্রেম, অতিথিপরায়ণতার পাশাপাশি বিচিত্র ও সুস্বাদু খাদ্যবস্তুর আকর্ষণীয় বর্ণনা পাওয়া যায়। তাই আমরা বলতে পারি, বিষয় বর্ণনায় সাদৃশ্য দেখা গেলেও প্রেক্ষাপটের দিক থেকে উদ্দীপক এবং ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির মধ্যে রয়েছে বিস্তর বৈসাদৃশ্য।
৩. পল্লিকবি জসীমউদদীন ‘আমার বাড়ি’ কবিতায় তাঁর বন্ধু বা প্রিয়জনকে নিজের গ্রামের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেছেন। তিনি তাঁর বন্ধুকে আপ্যায়ন করতে চান শালি ধানের চিড়া, বিন্নি ধানের খই কবরী কলা এবং গামছা বাঁধা দই দিয়ে। প্রকৃতির সান্নিধ্যে কেমন করে অতিথির প্রাণ জুড়াবে তারও এক নিবিড় পরিচয় দেন তাঁর কবিতায়।
ক. পানশির কোথায় অবস্থিত?
খ. আবদুর রহমানকে ‘সকল কাজের কাজি’ বলা হয়েছে কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির কোন বিশেষ দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের বক্তব্য ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির সম্পূর্ণ ভাব প্রকাশ করতে পারেনি। মূল্যায়ন কর।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. পানসির উত্তর আফগানিস্তানে অবস্থিত।
খ. আবদুর রহমান জুতো বুরুশ থেকে শুরু করে সব কাজ করতে পারে বলে তাকে ‘সকল কাজের কাজি’ বলা হয়েছে।
কাবুলে লেখকের কাজে সহায়তা করার জন্য আবদুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাকে লেখকের সাথে আলাপ করিয়ে দেওয়ার সময় জিরার সাহেব লেখককে বলেন, ‘এর নাম আবদুর রহমান, আপনার সব কাজ করে দেবে— জুতো বুরুশ থেকে খুনখারাবি।’ তাকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে এবং কথা বলে লেখকও আশ্বস্ত হলেন যে, সে ভীমসেনের মতো রান্না করবে এবং বিপদে-আপদে উদ্ধার করবে। কিন্তু কখনো যদি সে বিগড়ে যায়- সেই আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ দেখেও তাকে মনে হয়েছে- ‘সকল কাজের কাজি’।
গ. উদ্দীপকে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির অতিথিপরায়ণতা ও আন্তরিকতার দিকটি ফুটে উঠেছে।
মানুষের সঙ্গে মানুষের আন্তরিকতার সম্পর্কই সমাজকে টিকিয়ে রেখেছে। মানুষের প্রতি মানুষের আচার-আচরণের মধ্য দিয়েই আন্তরিকতা ফুটে ওঠে। আন্তরিকতাই মানুষকে মহান করে তোলে।
উদ্দীপকে পল্লিকবি জসীমউদ্দীন তার বন্ধু বা প্রিয়জনকে নিজের গ্রামের বাড়িতে নিমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ‘আমার বাড়ি’ কবিতার মধ্য দিয়ে কবি অতিথি বন্ধুকে কীভাবে আপ্যায়ন করবেন সেই কথাও বলেছেন। উদ্দীপকের বর্ণনায় ফুটে উঠেছে কবির অতিথিপরায়ণতা ও আন্তরিকতা। যা ‘প্রবাস বন্ধু’ রচনার আবদুর রহমানের আতিথেয়তা ও আন্তরিকতার কথা মনে করিয়ে দেয়। আবদুর রহমান লেখককে সাদরে গ্রহণ করেন এবং লেখকের সব কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন।
নিজ হাতে বিভিন্ন খাবার রান্না করে লেখককে আপ্যায়ন করেন। এমনকি তার দেশ পানসিরে যেতেও লেখককে আমন্ত্রণ জানান। তার এই অতিথিপরায়ণতায় কোনো কৃত্রিমতা নেই, নেই লোক দেখানো বাহুল্যতা। উদ্দীপকেও দেখা যায় অন্তরের অন্তস্তল থেকে অতিথিকে বরণ করার আয়োজন। তাই আমরা বলতে পারি, উদ্দীপকে ‘প্রবাস বন্ধু ভ্রমণকাহিনির অতিথিপরায়ণতা আন্তরিকতার দিকটি ফুটে উঠেছে।
ঘ. “উদ্দীপকের বক্তব্য ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির সম্পূর্ণ ভাব প্রকাশ করতে পারেনি ।”- মন্তব্যটি যথার্থ।
ভ্রমণের মাধ্যমে মানুষ জ্ঞান ও আনন্দ লাভ করে। এই ভ্রমণের কারণেই মানুষ অজানাকে জানতে পারে এবং অদেখাকে দেখতে পারে। ভ্রমণের মধ্য দিয়ে মানুষ নিজের চোখে সবকিছু দেখতে পায় বলে তা থেকে অর্জিত জ্ঞান অনেক বেশি বাস্তব ও আনন্দদায়ক হয়ে থাকে।
‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে লেখকের প্রবাস ভ্রমণের অভিজ্ঞতা একটি ভিন্ন মাত্রা লাভ করেছে। প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তানের মানুষের জীবন, সংস্কৃতি ও প্রকৃতি আলোচ্য রচনায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও আবদুর রহমানের জীবন, কর্ম ও লেখকের প্রতি আন্তরিকতা পাঠককে মুগ্ধ করেছে। অন্যদিকে উদ্দীপকে পল্লিকবি জসীমউদ্দীন রচিত ‘আমার বাড়ি’ কবিতার কথা বলা হয়েছে, যে কবিতায় কবি তাঁর বন্ধুকে নিজ গ্রামে নিমন্ত্রণ করেন। তিনি শালি ধানের চিঁড়া, বিন্নি ধানের খই, কবরী কলা এবং গামছা বাঁধা দই দিয়ে বন্ধুকে আপ্যায়ন করাতে চান। তাঁর এই মানসিকতার সঙ্গে আলোচ্য রচনার আবদুর রহমানের মানসিকতার সাদৃশ্য রয়েছে মাত্র।
‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে লেখকের প্রবাস জীবন, আফগানিস্তানের প্রকৃতি ও সংস্কৃতির বর্ণনা বিষদভাবে ফুটে উঠেছে। এছাড়াও বিশেষভাবে প্রকাশ পেয়েছে লেখকের প্রতি আবদুর রহমানের আন্তরিকতা ও অতিথিপরায়ণতা। কিন্তু উদ্দীপকে শুধু কবির বন্ধুকে নিজ গ্রামে আমন্ত্রণ ও আপ্যায়ন করানোর দিকটি ফুটে উঠেছে। আলোচ্য রচনার অন্যান্য বিষয় উদ্দীপকে প্রকাশ না পাওয়ায় বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
৪. শুভ পরিবারের সবার সঙ্গে রাঙ্গামাটি বেড়াতে যায়। পরদিন সে প্রকৃতির সান্নিধ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। স্থানীয় পাহাড়ি মানুষের বাড়িঘর, পাহাড়, তাদের পোশাক, জিনিসপত্র, আচরণ, কথাবার্তা ও দৈহিক গড়ন তাকে অন্যরকম অনুভূতি এনে দেয়। এমনকি ওদের খাবারের বৈচিত্র্যে শুভ একটা ভিন্ন স্বাদের সন্ধান পেয়ে মুগ্ধ হয়ে যায়।
ক. লেখক কোন গ্রামে বাসা খুঁজে পেয়েছিলেন?
খ. “আপনার সব কাজ করে দেবে- জুতো ৰুৰুশ থেকে খুনখারাবি”- বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের শুভর অনুভূতির সঙ্গে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির মিল কোথায়? – বুঝিয়ে লেখ।
ঘ. তুমি কি মনে কর উদ্দীপকের শুভ ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির লেখকের প্রতিনিধিত্ব করে? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. লেখক খাজা মোল্লা গ্রামে বাসা খুঁজে পেয়েছিলেন।
খ. “আপনার সব কাজ করে দেবে- জুতো বুরুশ থেকে খুন- খারাবি।” কথাটির মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে, আবদুর রহমান লেখকের সব কাজ করে দেবে; কারণ সে সব কাজ করতে পারে।
‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির লেখক কাবুলে গিয়ে গৃহকর্মী হিসেবে আবদুর রহমানকে পান। অধ্যক্ষ জিরার লেখকের সঙ্গে আবদুর রহমানের পরিচয় করিয়ে দেন। আবদুর রহমানের কথা বলতে গিয়ে তিনি প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন। যে, আবদুর রহমান শুধু গৃহকর্মী নয়, কাবুলে লেখকের যখন যে ধরনের প্রয়োজন হবে সে তা পূরণ করতে পারবে। মূলত আবদুর রহমানের কর্মদক্ষতার দিকটি প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে ফুটে উঠেছে।
ঘ. উদ্দীপকের শুভর অনুভূতির সঙ্গে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির মিল হলো প্রকৃতির প্রতি মুগ্ধতায়।
ভ্রমণের মাধ্যমে মানুষ অনেক অজানা বিষয় জানতে পারে। এই অজানাকে জানার নেশায় মানুষ নিত্যনতুন জায়গায় ছুটে বেড়ায়। আর সেই নিত্যনতুন জায়গা যদি মানুষকে মুগ্ধ করে তবে তার হৃদয়ানুভূতি হয় অসাধারণ।
উদ্দীপকের শুভ রাঙ্গামাটি ভ্রমণে গিয়ে রাঙ্গামাটির প্রকৃতি, পাহাড়ি মানুষের বাড়িঘর, তাদের পোশাক, আচার-আচরণ ও খাবারের বৈচিত্র্যে মুগ্ধ হয়। সেখানকার প্রকৃতি ও মানুষের জীবনযাপন দেখে শুভর মন ভরে যায়। ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে লেখকের কাবুল ভ্রমণের স্মৃতি প্রকাশ পেয়েছে। সেখানকার পাগমান পাহাড়ের গায়ের সাদা শরফ, কাবুলের পরিবেশ, সেখানকার মানুষের জীবনাচরণ প্রভৃতি দেখে মুগ্ধ হন লেখক। উদ্দীপক ও আলোচ্য ভ্রমণকাহিনিতে ফুটে উঠেছে প্রকৃতির প্রতি মুগ্ধতা। তাই বলা যায় যে, প্রকৃতির প্রতি মুগ্ধতার দিক থেকে উদ্দীপকের শুভর অনুভূতির সঙ্গে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির মিল রয়েছে।
ঘ. হ্যাঁ, আমি মনে করি উদ্দীপকের শুভ ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির লেখকের প্রতিনিধিত্ব করে।
কৌতূহলী মানুষ ভ্রমণের মধ্য দিয়ে অজানাকে জানতে পারে। বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের কারণে মানুষ বিভিন্ন দেশের প্রকৃতি, আচার- আচরণ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারে। ভ্রমণের মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতা মানুষের জীবনে বিভিন্নভাবে কাজে লাগে।
‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে লেখক আফগানিস্তানের বিভিন্ন বিষয়ের বর্ণনা করেছেন। তিনি উপভোগ করেছেন দেশটির প্রকৃতি ও সাংস্কৃতিক সৌন্দর্য। তিনি বর্ণনা করেছেন বিচিত্র ও সুস্বাদু সব খাদ্যের কথা। বর্ণনা করেছেন প্রস্তরভূমি এবং একই সঙ্গে নিকট-প্রতিবেশী বরফ শীতল জলবায়ুরও। সেখানকার মানুষ ও তাদের অনাড়ম্বর জীবনাচরণ, বিচিত্র স্বভাব-চরিত্র হাস্যরসাত্মকভাবে বর্ণনা করেছেন। উদ্দীপকের শুভও একজন ভ্রমণপিয়াসী মানুষ। সে রাঙ্গামাটি ভ্রমণে গিয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্যে মুগ্ধ হয়।
সেখানকার মানুষের খাদ্য, জীবনযাপন পদ্ধতি, আচরণ, কথাবার্তা ও মানুষের দৈহিক গড়ন শুভকে ভিন্ন কিছু দর্শনের স্বাদ এনে দেয়। প্রাত্যহিক জীবন থেকে ভিন্ন কিছু দর্শনের অভিজ্ঞতা শুভকে অভিভূত করে। অদেখা ভুবনের মায়া ও জাদুতে শুভ আপনাকে বিস্মৃত হয়ে যায়, খুঁজে পায় স্বপ্নিল আবেশ। উদ্দীপকের শুভ ও ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির লেখক উভয়ই নতুন জায়গায় ভ্রমণ করেছেন। সেই নতুন স্থানের প্রকৃতি, মানুষ, তাদের জীবনাচরণ, সংস্কৃতি উভয়কেই মুগ্ধ করে। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকের শুভ প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির লেখকের প্রতিনিধিত্ব করে।
আরো পড়ো → নিমগাছ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
আরো পড়ো → আম-আঁটির ভেঁপু গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
৫. ১ম অংশ : আমেরিকানদের চোখে পারী হচ্ছে ইউরোপের রাজধানী। পারীর আসল সৌন্দর্য তার প্রশস্ত সরল রাজপথগুলো। পারীর যারা আসল অধিবাসী তারা খুব খাটতে পারে। আহার সম্বন্ধে এদের মোগলাই রুচি।
২য় অংশ : একি অপরূপ রূপে মা তোমার হেরিনু পল্লিজননী। ফুলে ও ফসলে কাদা-মাটি জলে, ঝলমল করে লাবণী হেরিনু পল্লিজননী।
ক. সৈয়দ মুজতবা আলী কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
খ. রিলিফ ম্যাপের চেহারা বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির আবদুর রহমানের চেতনার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে— ব্যাখ্যা- কর।
ঘ. উদ্দীপকের প্রথম অংশে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির লেখকের আফগানিস্তান ভ্রমণের আংশিক প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে— উক্তিটি মূল্যায়ন কর।
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. সৈয়দ মুজতবা আলী ১৯৭৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
খ. রিলিফ ম্যাপের চেহারা বলতে লেখক আবদুর রহমানের শরীরের ত্বক শীত-গ্রীষ্মের রুক্ষতায় চিরে ফেঁড়ে যাওয়াকে ইঙ্গিত করেছেন।
লেখক আফগানিস্তানে গেলে আবদুর রহমান নামক এক কাজের লোক ঠিক করা হয়। আবদুর রহমানের গায়ের রং ফর্সা। তবে শীতে গ্রীষ্মে চামড়া চিরে ফেঁড়ে যায়। তার ফর্সা শরীরের চিরে ফেঁড়ে যাওয়া চামড়া আফগানিস্তানের বরফাচ্ছন্ন অসমতল পাহাড় ভূমির মতো মনে হয়। তাই লেখক প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।
গ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির আবদুর রহমানের সৌন্দর্যচেতনার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক নিবিড়। মানুষ আদিমকাল থেকে প্রকৃতিতেই নিজের মনের শান্তি খুঁজে ফিরেছে। প্রকৃতি নানা উপাদান দিয়ে মানুষকে মমতার আলিঙ্গনে বেঁধে নিয়েছে। তাই প্রকৃতি হয়ে উঠেছে মানুষের গর্বের ও অহংকারের পরিচায়ক। যাকে অবলম্বন করে মানুষ খুঁজে নেয় শান্তি ও স্বস্তি।
উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশে পল্লিজননীর অপার রূপসৌন্দর্যের বর্ণনা ফুটে উঠেছে। পল্লির ফুল, ফল, ফসলের মাঠে যে সৌন্দর্য পরিলক্ষিত হয় তা কবি নিবিড়ভাবে দেখেছেন। পল্লির এই অপরূপ সৌন্দর্য বাংলামায়ের নিভৃত কোল ছাড়া অন্যত্র বিরল ও দুর্লভ। পল্লিমায়ের এই রূপের জাদুতে তার সন্তান মাত্রই পাগলপারা। আবেগে, শ্রদ্ধায়, মুগ্ধতায় নত হয়ে আসে গরবিনীর দামাল সন্তানের উদ্ধৃত শির।
‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির আবদুর রহমান যখন লেখকের কাছে পানশিরের সৌন্দর্য বর্ণনা করে তখন পানশিরের সৌন্দর্য অনন্য, মাত্রা সৃষ্টি করে। শীতে পানশির বাহারি ও বৈচিত্র্যপূর্ণ বরফ আচ্ছাদনে যতটা চিত্তাকর্ষক হয়, আবদুর রহমানের বর্ণনায় তা আরও মনোহর হয়ে ফুটে উঠেছে। সেখানকার স্বাস্থ্যকর পরিবেশের নির্মল অনুভূতি যে কাউকে আকর্ষণ করবে। সুতরাং উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির আবদুর রহমানের সৌন্দর্যচেতনার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকের প্রথম অংশে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির লেখকের আফগানিস্তান ভ্রমণের আংশিক প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে।— উক্তিটি যথার্থ।
কৌতূহলী মানুষ ভ্রমণের মধ্য দিয়ে অজানাকে জানতে পারে। বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণের মধ্য দিয়ে জানা যায় সেই দেশের প্রকৃতি, মানুষের আচার-আচরণ, সংসার ও সংস্কৃতি সম্পর্কে।
উদ্দীপকের প্রথম অংশে ফ্রান্সের শহর পারীর অপরূপ সৌন্দর্যের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া পারীর আসল অধিবাসীদের কর্মমুখী জীবন ও আহার সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে। আধুনিক সভ্যতার সূতিকাগার পারীকে বলা হয় আমেরিকানদের চোখে ইউরোপের রাজধানী। এমনিতেই পারী পরিচ্ছন্ন ও সুশৃঙ্খল নগরী, তার ওপর ওখানকার সরল ও প্রশস্ত রাজপথগুলো আসল সৌন্দর্যের জানান দেয়। আর সেখানকার কর্মঠ অধিবাসীরা সেখানকার সম্পদ।
‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে লেখক আফগানিস্তানের রূপসৌন্দর্য, সেখানকার মানুষের আতিথেয়তা, সহজ-সরল মনোভাব, দেশপ্রেম এবং সেখানকার মানুষের আকার-আকৃতির সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন, যা উদ্দীপকের অনেকাংশেই উল্লিখিত হয়নি। বিশেষ করে আবদুর রহমানের কর্মনিপুণতা, আতিথেয়তা, তার স্বদেশপ্রেম, সৌন্দর্যবোধ, তার চারিত্রিক সরলতার যে বিশেষ দিকগুলো ভ্রমণকাহিনিতে বর্ণিত হয়েছে তা উদ্দীপকে নেই। তাই আমরা বলতে পারি, উদ্দীপকের প্রথম অংশে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনির লেখকের আফগানিস্তান ভ্রমণের আংশিক প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে।
‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে লেখক যেসব বর্ণনা দিয়েছেন, উদ্দীপকের প্রথম অংশ তার কয়েকটি বর্ণনার প্রতিনিধিত্ব করে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের প্রথম অংশে ‘প্রবাস বন্ধু’ ভ্রমণকাহিনিতে লেখকের আফগানিস্তান ভ্রমণের আংশিক প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে।