(ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান) ৬ষ্ঠ: সক্রিয় নাগরিক ক্লাব – সমাধান

সক্রিয় নাগরিক ক্লাব হচ্ছে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই এর শিখন অভিজ্ঞতা। সক্রিয় নাগরিক ক্লাব অধ্যায়টির পাঠ্যবইয়ের প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

সক্রিয় নাগরিক ক্লাব

কাজ-১: “নিয়ম ছাড়া কোনো কিছুই কাজ করে না” শীর্ষক বিষয়ের ওপর প্রশ্নের উত্তর খোঁজা।
কাজের উদ্দেশ্য: শ্রেণিকক্ষ, বিদ্যালয়, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে বিদ্যমান নিয়ম খুঁজে বের করা এবং সে নিয়ম মেনে না চলার কুফল বুঝতে পারা।

কাজের নির্দেশনা:

  • পাঠ্যবইয়ে উল্লেখিত নিয়মে ফুটবল খেলার পর তা নিয়ে শিক্ষার্থীরা উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করবে।
  • শিক্ষার্থীরা ৫/৬ জনের ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে পাঠ্যবইয়ে উল্লেখিত প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজবে।
  • প্রতিটি দল তাদের প্রাপ্ত ফলাফল মৌখিকভাবে উপস্থাপন করবে।
  • তাদের ফলাফল বোর্ডে বা পোস্টার পেপারে লিখে একটি তালিকা তৈরি করবে।

নমুনা সমাধান
পাঠ্যবইয়ে উল্লেখিত প্রশ্নের নমুনা উত্তর নিচে দেওয়া হলো-

প্রশ্ন-১. নিয়ম কি শুধু খেলাতেই থাকে?
উত্তর: নিয়ম শুধু খেলাতেই থাকে না। বরং আমাদের জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা নিয়ম থাকে।

প্রশ্ন-২. আর কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা নিয়ম দেখতে পাই? তার একটি তালিকা তৈরি করি।
উত্তর: বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যমান নিয়মের তালিকা: ১. বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার নিয়ম; ২. শ্রেণিকক্ষের নিয়ম; ৩. পারিবারিক নিয়ম; ৪. সামাজিক নিয়ম; ৫. পড়ালেখার নিয়ম; ৬. আচার-আচরণের নিয়ম ইত্যাদি।

প্রশ্ন-৩. কোথায় কী ধরনের নিয়ম রয়েছে?
উত্তর:
১. বিদ্যালয়ে যাওয়া ও আসার ক্ষেত্রে রাস্তার বাম পাশ দিয়ে যাওয়া, যানবাহনে একে অন্যের সাথে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করা ইত্যাদি।
২. শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে শৃঙ্খলা বজায় রাখা, শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার রাখা, শিক্ষক ক্লাসে প্রবেশ করলে দাঁড়িয়ে সালাম দেওয়া, প্রতিদিনের বাড়ির কাজ ও পড়া তৈরি করা ইত্যাদি।
৩. একজন মানুষ তার জীবনে সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় পরিবারের সাথে। তাই সেখানেও অনেক নিয়ম কানুন আছে। যেমন: পিতা- মাতার কথা মতো চলা, বড়দের শ্রদ্ধা করা, ছোটদের স্নেহ করা, পরিবারের সদস্যদের কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করা ইত্যাদি।

৪. মানুষকে সমাজেরও অনেক নিয়ম মানতে হয়। যেমন- একে অপরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা, প্রতিবেশীর বিপদে এগিয়ে আসা, অন্যের সমস্যা বা ক্ষতি হয় এমন কাজ না করা, ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ, সামাজিক অবস্থান ভুলে সকলের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা ইত্যাদি।
৫. একজন শিক্ষার্থীর প্রধান অনুসরণীয় নিয়ম হলো প্রতিদিনের পাঠ প্রতিদিন শেষ করা, পড়াশোনায় ফাঁকি না দেওয়া ইত্যাদি।
৬. আচার-আচরণের ক্ষেত্রে ভালো আচরণগুলোকে গ্রহণ করা এবং মন্দ বা খারাপ আচরণকে পরিহার করা।

প্রশ্ন-৪. নিয়ম না থাকলে ঐসব ক্ষেত্রে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে?
উত্তর: প্রত্যেকটি কাজের ক্ষেত্রে নিয়ম আছে। যদি কাজ করার ক্ষেত্রে নিয়ম না থাকে তাহলে কোনো কাজ সফলভাবে করা সম্ভব না। যথার্থ নিয়ম-কানুন যেকোনো কাজ সফল হওয়ার পেছনে মূল ভূমিকা পালন করে। যদি নিয়ম অনুপস্থিত থাকে তাহলে কাজ সম্পূর্ণ করা কোনোভাবেই সম্ভব হয় না। ফলে সৃষ্টি হয় নানারকম বিশৃঙ্খলা।

আরো পড়োসামাজিক পরিচয়
আরো পড়োপ্রাকৃতিক ও সামাজিক কাঠামো

কাজ-২: একটি সক্রিয় নাগরিক ক্লাব গড়ে তুলে কার্যক্রম শুরু করা।
কাজের উদ্দেশ্য : সক্রিয় নাগরিক ক্লাব গড়ে তোলার মাধ্যমে বিদ্যালয়, পরিবার ও সমাজের প্রতি নিজেদের দায়িত্ব অনুধাবন এবং সে অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করা।

কাজের নির্দেশনা:

  • শিক্ষার্থীদের ৫/৬ জনের দলে ভাগ হয়ে সক্রিয় নাগরিক ক্লাবের কাজের তালিকা তৈরি করা।
  • কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে করার জন্য ক্লাবের একটি কমিটি গঠন করা।
  • কমিটির সদস্যদের পদবি এবং কাজ নির্ধারণ করা।
  • পরিকল্পনা অনুযায়ী ক্লাবের কার্যক্রম শুরু করা।

নমুনা সমাধান

একটি সক্রিয় নাগরিক ক্লাব কমিটির নমুনা কাঠামো হলো-

  • মোট ১১ জন সদস্য।
  • কমিটির পদ/পদবিগুলো হচ্ছে-
  • সভাপতি
  • সহ-সভাপতি
  • সাধারণ সম্পাদক
  • যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক
  • কোষাধ্যক্ষ
  • দপ্তর সম্পাদক
  • তথ্য ও প্রচার সম্পাদক
  • গণসচেতনতা বিষয়ক সম্পাদক
  • সদস্য
  • (i)…………….
  • (ii)…………….
  • (iii)……………

(ক্লাব গঠনে আগ্রহীরা চাইলে কোনো পদ সংযোজন অথবা বিয়োজন করতে পারে)

  • কমিটিতে থাকা প্রত্যেক সদস্য তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে এবং তাদের তদারকি করবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যগণ।
  • এই ক্লাবের সাধারণ সদস্য পদ তারা পাবে যারা এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং যারা নিয়ম মেনে চলা ও জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন কাজ করতে আগ্রহী।
  • সাধারণ সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো এই ক্লাবের সার্বিক বিষয়ে খেয়াল রাখা এবং প্রয়োজনীয় সকল কাজ সম্পাদন করা।

কমিটি নির্বাচন

সক্রিয় নাগরিক ক্লাবের কমিটি নির্বাচনের জন্য নির্বাচন পরিচালনা কমিটি শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কারা নির্বাচন করতে আগ্রহী এবং কোন দল। ও কোন পদে তা জেনে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনের জন্য একটি নির্ধারিত দিন ঠিক করবেন। নির্দিষ্ট দিনে শিক্ষার্থীরা সবাই তাদের বন্ধুদের বা প্রতিনিধিদের ভোট দেবে। ভোট গ্রহণ শেষ হলে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ভোট গণনা করার পর নির্বাচিত ছাত্র-ছাত্রীদের নাম ঘোষণা করবেন। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘সক্রিয় নাগরিক ক্লাবের’ কমিটি গঠন করা হবে।

নমুনা কমিটি

আগামী এক বছরের জন্য ‘সক্রিয় নাগরিক ক্লাব’-এর অনুমোদিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলো-

  • সভাপতি: রবিন
  • সহ-সভাপতি: মিলি
  • সাধারণ সম্পাদক: দীপা
  • যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক: দীপঙ্কর
  • কোষাধ্যক্ষ: বুশরা
  • দপ্তর সম্পাদক: শামীমা
  • তথ্য ও প্রচার সম্পাদক: নীলা
  • গণসচেতনতা বিষয়ক সম্পাদক: রূপা
  • সদস্য:
  • (i) ফ্রান্সিস
  • (ii) খাদিজা
  • (iii) চিংময়

কার্যক্রম

নতুন কমিটি ঘোষণার পর কমিটির সদস্যরা তাদের প্রথম সভা ও কর্ম পরিকল্পনা ঠিক করার জন্য একটি তারিখ ঠিক করবে। সভায় কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি সাধারণ সদস্যরাও অংশগ্রহণ করবে। সবাই বিভিন্ন পরামর্শ দিবে এবং যে কাজগুলো বেশি সমর্থন পাবে তার তালিকা তৈরি করে তা অনুযায়ী কমিটি তার কার্যক্রম শুরু করবে।

Leave a Comment