(ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান) ৬ষ্ঠ: সামাজিক পরিচয় – সমাধান

সামাজিক পরিচয় হচ্ছে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই এর ৮ম অধ্যায়। সামাজিক পরিচয় অধ্যায়টির পাঠ্যবইয়ের প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

সামাজিক পরিচয়

কাজ-১ : বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমাদের মিল-অমিলের ছক।

কাজের উদ্দেশ্য : বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে সমর্থন করার কারণ খুঁজে বের করা।

কাজের নির্দেশনা :

  • শিক্ষার্থীরা দলে ভাগ হয়ে ইন্টারনেট থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ক্রিকেটারদের ছবি দেখবে এবং অন্য আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটারদের ছবিও সংগ্রহ করবে।
  • এরপর দলীয়ভাবে বাংলাদেশ দলের সাথে নিজেদের মিলগুলো খুঁজে বের করে লিখবে।

নমুনা সমাধান
১. তাদের সঙ্গে আমাদের জাতীয়তার মিল রয়েছে। আমরা সবাই জাতীয়তায় বাংলাদেশি।
২. তাদের ভাষা, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-আশাকের সঙ্গে আমাদের ভাষা, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-আশাকের মিল রয়েছে।
৩. তাদের চেহারা, গায়ের রং, আকার আমাদের মতোই। জাতীয়তায় বাংলাদেশি হওয়ায় তাদের এবং আমাদের জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা, জাতীয় প্রতীক একই।
৪. আমরা সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করি এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের শ্রদ্ধা করি ও ভালোবাসি।
৫. তাদের সঙ্গে আমাদের পেশাগত অমিল সবচেয়ে বেশি। তাদের প্রতিদিনের কাজের সঙ্গে আমাদের প্রতিদিনের কাজের অমিল আছে। তাদের প্রতিদিনের কাজ ক্রিকেটকেই কেন্দ্র করে হয়ে থাকে, যা আমাদের কাজের বিপরীত।

কাজ-২ : সামাজিক পরিচয়ের তালিকা।
কাজের উদ্দেশ্য : খেলোয়াড়দের সাথে একাত্ম বোধ করার কারণ খুঁজে বের করা।

কাজের নির্দেশনা :

  • বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের মিলগুলো লেখা হয়ে গেলে তা ক্লাসে দলীয়ভাবে উপস্থাপন করা হবে।
  • উপস্থাপন চলাকালীন খুঁজে পাওয়া উপাদানগুলোর তালিকা শিক্ষার্থীরা বোর্ডে লিখবে।
  • দলীয় আলোচনার মাধ্যমে প্রাপ্ত সামাজিক পরিচয়ের উপাদানের সাথে আগে থেকে প্রস্তুত করা সামাজিক পরিচয়ের ছক শিক্ষার্থীদের দেখানো হবে। তখন তারা বোর্ড ও ছকের লেখা সামাজিক পরিচয়ের বিভিন্ন উপাদানে নিজেদের সাথে বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের মিলগুলো বুঝতে পারবে।
  • এরপর তারা অস্ট্রেলিয়া বা অন্য যেকোনো আন্তর্জাতিক দলের সাথে মিল-অমিলের ছক বা সামাজিক পরিচয়ের তালিকা তৈরি করবে।

নমুনা সমাধান

CamScanner 06 23 2023 10.48 2 1
CamScanner 06 23 2023 10.48 3

কাজ-৩ : বাংলাদেশ ও ভারত নারী ফুটবল দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখা ও মুক্ত আলোচনা।

কাজের উদ্দেশ্য : বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলকে কেন সমর্থন করছি তা বোঝার চেষ্টা করা।

কাজের নির্দেশনা :

  • শিক্ষকের সহযোগিতায় শ্রেণিতে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দলের সাথে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দলের আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচের কিছু চুম্বক অংশের ভিডিও দেখানো হবে।
  • খেলা শেষে সবাই নিজ নিজ অনুভূতি শিক্ষকের কাছে জানাবে।
  • এরপর শিক্ষক তাদেরকে নিচের প্রশ্ন তিনটি জিজ্ঞেস করবেন।

নমুনা সমাধান

CamScanner 06 23 2023 10.48 4

কাজ-৪ : মিল-অমিলের ছক
কাজের উদ্দেশ্য : বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের মেয়েদের সাথে আমাদের কী কী মিল-অমিল আছে তা বের করা।

কাজের নির্দেশনা :

  • শিক্ষকের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা দলে ভাগ হয়ে নারী ফুটবল দলের বিভিন্ন খেলোয়াড়ের ছবি বের করে দেখবে এবং তাদেরকে নিয়ে শিক্ষার্থীরা সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেবে।
  • দলগত কাজের মাধ্যমে নারী ফুটবল দলের সাথে আমাদের মিল-অমিলগুলো খুঁজে বের করবে।

নমুনা সমাধান

CamScanner 06 23 2023 10.48 5 1
CamScanner 06 23 2023 10.48 6

কাজ-৫ : বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর মানুষের মূল বৈশিষ্ট্য কী কী?
কাজের উদ্দেশ্য :
বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর মানুষের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য বোঝা এবং নিজেদের নৃগোষ্ঠীগত পরিচয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভ করা।
কাজের নির্দেশনা :

  • শিক্ষার্থীরা দলে বসে বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর ছবি দেখে তাদের নামের সাথে বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো, যেমন- পোশাক, লিঙ্গ, বাসস্থান, জাতীয়তা, খাদ্যাভ্যাস, অন্যান্য সাংস্কৃতিক উপাদান ইত্যাদি খুঁজে বের করবে।
  • এরপর শিক্ষকের সহায়তায় দলে ভাগ হয়ে এ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করে ছকটি পূরণ করবে।

নমুনা সমাধান :
নৃগোষ্ঠীর নাম → মূল বৈশিষ্ট্য (পোশাক, লিঙ্গ, বাসস্থান, জাতীয়তা, খাদ্যাভ্যাস, বিশেষ দিবস ইত্যাদি)

  • চাকমা → বাংলাদেশের রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় বসবাসকারী বৃহত্তম ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হলো চাকমা। তারা জাতীয়তায় বাংলাদেশি। চাকমা মেয়েদের পরনের কাপড়ের নাম পিনোন এবং হাদি। পুরুষরা ইদানীং শার্ট, প্যান্ট ও লুঙ্গি পরে। চাকমা সমাজ পিতৃতান্ত্রিক। তাদের পরিবার প্রধান হলেন পিতা। তাদের জীবিকার প্রধান উৎস হলো কৃষিকাজ। তাদের প্রধান খাদ্য ভাত। তাছাড়া তারা ভাতের সাথে মাছ, মাংস এবং শাকসবজি খেতে ভালোবাসে। তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সর্ববৃহৎ উৎসব হলো বিজু। তারা মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী।
  • গারো → বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে গারোরা হলো সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারা ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর ও গাজীপুরের শ্রীপুরে বাস করে। গারো সমাজ মাতৃতান্ত্রিক। মা হলেন তাদের পরিবার প্রধান। গারো নারীদের নিজেদের তৈরি পোশাকের নাম দাকমান্দা ও দকশাড়ি এবং পুরুষদের পোশাকের নাম গান্দো। তারা খাবার হিসেবে ভাতের সাথে মাছ ও শাকসবজি খেয়ে থাকে। তাছাড়া তাদের একটি বিশেষ খাবার হচ্ছে। কচি বাঁশের গুড়ি। তাদের প্রধান সামাজিক উৎসব হলো ওয়ানগালা । এই দিনে তারা নতুন ফসল ঘরে তোলে। তাদের নিজস্ব ভাষার নাম আচিকু।
  • মারমা → মারমারা পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাসমূহে বসবাস করে। তবে মূল জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই বান্দরবানে বসবাস করে। তাদের সমাজব্যবস্থা মূলত পিতৃতান্ত্রিক। তবে পুরুষদের মতো নারীরাও পিতার সম্পদের সমান উত্তরাধিকারী হয়। তারা জাতীয়তায় বাংলাদেশি এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তাদের প্রধান খাবার ভাত। বুদ্ধ পূর্ণিমা, কঠিন চীবর দান, সাংগ্রাই ইত্যাদি তাদের জনপ্রিয় উৎসব। মারমা পুরুষেরা মাথায় ‘গবং’ (পাগড়ি বিশেষ), গায়ে জামা ও লুঙ্গি পরে এবং নারীরা গায়ে যে ব্লাউজ পরে তার নাম “আঞ্জি’। এছাড়াও তারা ‘থামি’ পরে।
  • সাঁওতাল → বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি প্রধান নৃগোষ্ঠী হলো সাঁওতাল। তারা রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়া জেলায় বাস করে। সাঁওতাল সমাজ পিতৃতান্ত্রিক। তাদের সমাজে পিতার সূত্র ধরে সন্তানের দল ও গোত্র পরিচয় নির্ণয় করা হয়। প্রধান পেশা কৃষিকাজ। তারা প্রকৃতি পূজারি। তবে তাদের একাংশ এখন খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেছে। তাদের প্রধান খাদ্য ভাত। তাদের উৎসবাদির মধ্যে সোহরাই এবং বাহা উল্লেখযোগ্য। ঝুমুর নাচ তাদের সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান। সাঁওতাল মেয়েরা শাড়ি পরে। তবে পুরুষরা ধুতি ও লুঙ্গি পরে থাকে।

কাজ-৬ : মানচিত্রের ব্যবহার ও ছবির সাথে এর পার্থক্য।
কাজের উদ্দেশ্য :
মানচিত্র কী এবং রাস্তা ও দিক চেনায় মানচিত্রের ভূমিকা বুঝতে পারবে। একইসাথে ছবি ও মানচিত্রের পার্থক্য বের করতে পারবে।

কাজের নির্দেশনা :

  • ক্লাসে শিক্ষকের করা প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমে রাস্তা ও দিক চেনা বিষয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করবে।
  • এরপর দলে ভাগ হয়ে ছবি ও মানচিত্রের পার্থক্য খুঁজে বের করবে।

নমুনা সমাধান

১ম ছবিতে দেখা যাচ্ছে হাতে আঁকা বাংলাদেশের গ্রাম্য পরিবেশের দৃশ্য। যেখানে রয়েছে বসতবাড়ি, গাছপালা, নদী, কৃষিক্ষেত ইত্যাদি। হয় ছবিতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের মানচিত্র। যেখানে বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শিল্পাঞ্চলসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান শিল্পসমূহ হলো— পাট শিল্প, কাগজ শিল্প, বস্ত্র শিল্প, সার শিল্প, যা উক্ত মানচিত্রে দৃশ্যমান।

দুইটি ছবির মধ্যে পার্থক্যসমূহ

১ম ছবির উপাদান

  • হাতে আঁকা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দৃশ্য।
  • গাছপালা, নদী, বসতবাড়ি, কৃষিক্ষেত, রং-তুলি, সবুজ মাঠ।
  • ১ম ছবির জন্য কল্পনা শক্তিই যথেষ্ট, নির্দিষ্ট মাপের প্রয়োজন হয় না।
  • ১ম ছবির উপাদানসমূহ পরিবর্তনশীল।

২য় ছবির উপাদান

  • বাংলাদেশের মানচিত্র।
  • স্কেল, দিক, সাংকেতিক চিহ্ন, নির্দিষ্ট মাপ, বিষয়বস্তু, পেন্সিল, মানচিত্রের পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের নাম।
  • ২য় ছবির জন্য নির্দিষ্ট মাপ এবং ভূখণ্ডের অস্তিত্ব থাকা জরুরি।
  • ২য় ছবির উপাদানসমূহ পরিবর্তনশীল নয়।

কাজ-৭ : প্রাচীন মানুষের অভিবাসন অনুসন্ধান ও অভিবাসনের মানচিত্র আঁকা ও বোঝা।
কাজের উদ্দেশ্য :
প্রাচীনকাল থেকে মানুষের অভিবাসন চিত্র বুঝতে পারবে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ : পাঠ্যবই, কাগজ, কলম, রং পেন্সিল।

কাজের নির্দেশনা :

  • শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে শিক্ষার্থীরা একস্থান থেকে অন্যস্থানে মানুষের অভিবাসিত হওয়ার কারণ খুঁজে বের করবে।
  • এরপর মানচিত্রে বিভিন্ন রং দিয়ে শিক্ষার্থীরা মানুষের অভিবাসনের মানচিত্র আঁকবে।

নমুনা সমাধান

received 1634618014033816

কাজ-৮ : ভাষা মানচিত্র নিয়ে অনুসন্ধানী কাজ।
কাজের উদ্দেশ্য :
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষা সম্পর্কে জানতে পারা।
কাজের নির্দেশনা :

  • শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে শিক্ষার্থীরা ভাষা মানচিত্র দেখবে।
  • এরপর নিজেরা চিন্তা করে নিচের নমুনার মতো অনুসন্ধানী প্রশ্ন তৈরি করবে এবং উত্তর বের করার চেষ্টা করবে।

নমুনা সমাধান

বিষয় : ভাষা মানচিত্র

১. কী? → বিভিন্ন এলাকার ভাষাকে চিহ্নিত করে যে মানচিত্র আঁকা হয় তাকে ভাষা মানচিত্র বলে।
২. কেন? → ভাষা মানচিত্র আঁকা হয় স্থান বা অঞ্চলভেদে মানুষের যে পরিবর্তন হয় তা বোঝার জন্য।
৩. মূল বিষয় কী? → ভাষা মানচিত্রের মূল বিষয় হলো নির্দিষ্ট অঞ্চলের মানুষের মুখের ভাষা চিহ্নিত করা।
৪. অন্যান্য পর্যবেক্ষণ → ভাষা মানচিত্র ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বা দেশে মানুষের মুখের ভাষায় কেমন ভিন্নতা রয়েছে। বাংলাদেশের মতো ছোট একটা দেশেও মানুষের ভাষায় রয়েছে অনেক বৈচিত্র্য। আমাদের দেশে ভাষার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি বৈচিত্র্য দেখা যায় চট্টগ্রাম বিভাগে।

আরো পড়ো → বই পড়া ক্লাব

কাজ-৯ : সময়ের সাথে ভাষার পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ।
কাজের উদ্দেশ্য :
সামাজিক পরিচয়ের অংশ হিসেবে ভাষার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ : গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ, কাগজ, কলম, স্কেল।

কাজের নির্দেশনা :

  • শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে শিক্ষার্থীরা গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ থেকে সোনার তরী কবিতাটি পড়বে।
  • এরপর দলে বসে বিভিন্ন সময়ের ভাষায় লেখা কবিতাটি পড়বে।
  • শিক্ষার্থীরা অনুসন্ধানের মাধ্যমে নিজের ভাষাটা কীভাবে হলো? খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে।

নমুনা সমাধান
নমুনা প্রশ্নমালা

  • নিজের ভাষাটা কীভাবে হলো?
    আমাদের ভাষা বাংলা। বাংলা ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা গোত্রে। সংস্কৃত ভাষা থেকে | সরাসরি বাংলা ভাষার উৎপত্তি, কথাটি প্রচলিত থাকলেও বাংলা ভাষাবিদরা বিশ্বাস করেন, বাংলা মাগধী প্রাকৃত এবং পালির মতো ইন্দো-আর্য ভাষা থেকে এসেছে।
  • ভাষা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
    মানুষের মনের ভাব আদান-প্রদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো ভাষা। মানুষ তার চিন্তা-ভাবনার আদান-প্রদান, আবেগ, ভাব ইত্যাদি ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকে। তাই এটি গুরুত্বপূর্ণ।
  • ভাষা কি সবসময় একই রকম থাকে?
    না, ভাষা সবসময় একই রকম থাকে না। স্থান, কালভেদে ভাষার পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।
  • ভাষা কীভাবে পরিবর্তন হয়?
    ভাষা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে এমনকি এক সম্প্রদায়ের মানুষদের থেকে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে স্থানান্তরিত হওয়ার মাধ্যমে পরিবর্তন হয়।
  • ভাষা কেন পরিবর্তন হয়?
    মানুষের কথা বলার নতুন নতুন উপায় আবিষ্কারের ফলে সব ধরনের ভাষাতে পরিবর্তন ঘটে।
  • ভাষার সাথে আমাদের জীবনযাপনের কোনো বিষয়ের কি মিল আছে?
    হ্যাঁ, ভাষার সাথে আমাদের জীবনযাপনের যে বিষয়ের মিল আছে তা হলো সংস্কৃতি। কারণ সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান হলো ভাষা। কোনো অঞ্চলের মানুষের মুখের ভাষা, আসবাবপত্র, খাদ্যাভ্যাস, বিশ্বাস ইত্যাদি নিয়েই সেই অঞ্চল বা দেশের সংস্কৃতি গড়ে ওঠে।
  • ভাষা কি আমাদের জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
    হ্যাঁ, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একে অপরের সাথে কথা বলা, ভাবের আদান-প্রদান করা বা যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য ভাষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কাজ-১০ : সংস্কৃতির পরিবর্তন।
কাজের উদ্দেশ্য :
সময়ের সাথে আমাদের সংস্কৃতি কীভাবে পরিবর্তন হয়েছে এবং হচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করা।

কাজের নির্দেশনা :

  • শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে সংস্কৃতি বলতে শিক্ষার্থীরা কী বোঝে সে সম্পর্কে ধারণা দিবে।
  • এরপর পাঠ্যবই, ইন্টারনেট প্রভৃতি থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে এ সম্পর্কে নিজেরা আলোচনা করবে।
  • পাঠ্যবই থেকে সংস্কৃতির পরিবর্তনের ছক দেখিয়ে সময়ের সাথে আমাদের সংস্কৃতি কীভাবে পরিবর্তন হয়েছে বা হচ্ছে তা বুঝে ছক পূরণ করবে।

নমুনা সমাধান

CamScanner 06 23 2023 10.48 13

কাল-১১ : আত্মপরিচয়ের মেলা।
কাজের উদ্দেশ্য : সামাজিক পরিচয়ের বিভিন্ন উপাদান সম্বন্ধে জানা।
প্রয়োজনীয় উপকরণ : কাপড়, ডিম, মাটি দিয়ে তৈরি পুতুল, ভাষার বর্ণমালার চার্ট, বাসা থেকে আনা বিভিন্ন খাবার, পারিবারিক পরিভ্রমণ মানচিত্র, কাগজ, কলম।

কাজের নির্দেশনা :

  • শিক্ষকের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা দলে ভাগ হয়ে মেলার আয়োজন করবে।
  • সাথে নিয়ে আসা পুতুলসহ আগে থেকে তৈরি করে রাখা সংস্কৃতির নিদর্শন, বাসা থেকে আনা খাবার, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের সাংস্কৃতিক নিদর্শন দিয়ে স্টল সাজাবে।
  • মেলা শেষ হওয়ার পর এখান থেকে যা শিখেছে সে সম্পর্কে একটি অ্যাসাইনমেন্ট লিখবে।

নমুনা সমাধান
সংস্কৃতি একটি দেশের বা জাতির পরিচয় বহন করে। ভৌগোলিক কারণে এক স্থান বা দেশ থেকে অন্য স্থান বা দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। অন্য দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে হলে, সেদেশের সাংস্কৃতিক বিষয়গুলো জানা অত্যন্ত জরুরি। আর এই বিষয়টি জানা সহজ হয় নিজ নিজ বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক মেলা আয়োজনের মাধ্যমে।
আমরা ৬ষ্ঠ শ্রেণির সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং শ্রেণি শিক্ষক খুশি আপার সহযোগিতায় গতকাল আমাদের বিদ্যালয়ের একটি সাংস্কৃতিক মেলার আয়োজন করি। সেখানে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশসমূহের সাংস্কৃতিক বিষয়গুলো বাড়ি থেকে তৈরি করে এনে বিভিন্ন স্টলে প্রদর্শন করি। সেখানে কেউ কাপড়ের পুতুল, ডিমের পুতুল, মাটির পুতুল ইত্যাদি সাজিয়ে রাখে। আবার কেউ কেউ বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিশেষ নিদর্শন যেমন- পুতুল, ঘরবাড়ি, পোশাক-আশাক ইত্যাদি নিয়েও একটি স্টল সাজায়।

অন্যদিকে কেউ কেউ বাড়ি থেকে খাবার বানিয়ে নিয়ে আসে। অন্য একটি স্টল সাজানো হয় দক্ষিণ এশিয়ার সংস্কৃতির নিদর্শন দিয়ে। যারা পেরেছে তারা এসব দেশের সাংস্কৃতিক নিদর্শন সংগ্রহ করে তা দিয়ে স্টল সাজিয়েছে। আবার কেউ মাটি, কাপড়, কাগজসহ বিভিন্ন উপাদান দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক নিদর্শনের মডেল বা নমুনা তৈরি করে স্টল সাজিয়েছে। সেখানে ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান প্রভৃতি দেশের সাংস্কৃতিক নিদর্শন রাখা হয়। তাছাড়া অন্য একটি স্টলে রাখা হয় আমাদের তৈরি করা মানচিত্র। অন্যদিকে ভাষা স্টলে আমাদের দেশ ও দক্ষিণ এশিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ভাষার কিছু বই, পত্রিকা, গান ইত্যাদি প্রদর্শন করা হয়। সেখানে আমাদের বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা বেড়াতে আসে। আমরা ২/৩ জন করে প্রতি স্টলে দায়িত্ব পালন করি। সারাদিন আমরা মেলায় ঘুরি, বিভিন্ন রকম খাবার খাই এবং বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হই। যা আমাদের অন্য জাতি বা মানুষের সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে সাহায্য করে।

Leave a Comment