(সাহিত্যপাঠ) এইচএসসি: বিলাসী গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

বিলাসী হচ্ছে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর অর্থাৎ এইচএসসি’র সাহিত্যপাঠের শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর গল্প। বিলাসী গল্প থেকে বাছাইকৃত সেরা ৫টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর এবং অনুশীলনের জন্য আরো ৫টি সৃজনশীলসহ মোট ১০টি সৃজনশীল সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

মূলবক্তব্য : ‘বিলাসী’ গল্পে মৃত্যুঞ্জয় ও বিলাসী নামের দুই মানব-মানবীর অসাধারণ প্রেমের কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে উচ্চবংশীয় মৃত্যুঞ্জয় নিম্নবর্ণের বিলাসীর সেবা-শুশ্রূষায় সুস্থ হয়ে ওঠে। এ নিয়ে মৃত্যুঞ্জয়ের স্বার্থপর খুড়া সমাজে নানা রটনা রটায় এবং মৃত্যুঞ্জয়কে ভিটা থেকে উৎখাত করে। এরপরও মৃত্যুঞ্জয় বিলাসীকে বিয়ে করে সংসার পাতে। কিন্তু তাদের এই সংসার বেশিদিন স্থায়ী হয় না। একদিন সাপ ধরতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয় মৃত্যুঞ্জয়কে। এ ঘটনার পর বিলাসীও আত্মহত্যা করে।

বিলাসী গল্পের সৃজনশীল

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : মুরাদপুর গ্রামে একবার খুলনা থেকে একটা বড় যাত্রার দল আসে। সেই দলে ষোলো কি সতেরো বছরের নন্দিনী নামের একটি মেয়ে ভালো নাচত, মেয়েটি সুন্দরীও ছিল বটে। ওই গ্রামের চেয়ারম্যানের একমাত্র ছেলে দুলাল নন্দিনীর প্রেমে পড়ে যায়। কথাটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রা ভেঙে যায়। কারণ সমাজপতি চেয়ারম্যানের মাথা কাটা যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। কিছুদিন পরে শোনা যায়, নন্দিনীকে বিয়ে করে দুলাল ঢাকায় একটা এনজিওতে চাকরি নিয়েছে।

ক. মৃত্যুঞ্জয়ের অমার্জনীয় অপরাধ কী ছিল?
খ. ‘তারা বাস করিতে থাকিলে তো পল্লির এত দুর্দশা হয় না।’ —ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে বিলাসী গল্পের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? আলোচনা করো।
ঘ. ‘দুলাল দু চোখ ভরে নন্দিনীর রূপ দেখেছে, কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় দেখেছে বিলাসীর হৃদয়’— উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।

১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. মৃত্যুঞ্জয়ের অমার্জনীয় অপরাধ ছিল বিলাসীর হাতে ভাত খাওয়া।

খ. প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে আর্থিকভাবে সংগতিপূর্ণ ব্যক্তিরা পল্লির প্রতি মনোযোগী হলে সেখানকার দুর্দশা লাঘব হতো বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে।
পল্লি অঞ্চলে ঋতুভেদে জল, কাদা এবং প্রখর সূর্যতাপ ও ধুলোর পথ পার হয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দূর-দূরান্তের স্কুলে যেত। লেখক মনে করেন, আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিরা যদি ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য শহরে পাড়ি না জমিয়ে পল্লি অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির চেষ্টা করতেন এবং শহরে বসবাসকারী শিক্ষিত উঁচুতলার মানুষেরা যদি পল্লির দিকে সামান্য সুনজর দিতেন, তবে পল্লির এ দুর্দশা আর থাকত না। প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে লেখকের এমন মনোভাবই প্রকাশিত হয়েছে।

গ. বিলাসী গল্পের আলোকে সংকীর্ণ সমাজের ঊর্ধ্বে উঠে মানব-মানবীর প্রেমের স্বরূপ ব্যাখ্যা করো।

ঘ. বিলাসী গল্পের মূলভাব বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : ১. ‘আমি যেকোনো ধরনের বর্ণবাদী বৈষম্যকে সবচেয়ে তীব্রভাবে ঘৃণা করি। সারাজীবন আমি এর বিরুদ্ধে লড়েছি; আমি এখনো লড়াই করি এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়ে যাব।’ -নেলসন ম্যান্ডেলা
২. ‘আমরা এমন একটি সমাজের জন্য যুদ্ধ করছি, যেখানে মানুষের বর্ণ নিয়ে কেউ চিন্তা করবে না।’ -নেলসন ম্যান্ডেলা

ক. ‘দেবদাস’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কী ধরনের সাহিত্যকর্ম?
খ. মৃত্যুঞ্জয় নিজে রেঁধে খেত কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. ১ নং উদ্দীপকে বিলাসী গল্পের কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? আলোচনা করো।
ঘ. ২ নং উদ্দীপকটি বিলাসী গল্পের অন্তর্লীন প্রত্যাশাকে তুলে ধরতে পেরেছে কি? বিশ্লেষণ করো।

২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘দেবদাস’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি উপন্যাস।

খ. মা-বাবা বা পরিজন না থাকায় মৃত্যুঞ্জয় নিজের খাবার নিজেই রান্না করে খেতো।
মৃত্যুঞ্জয় একটি বিশাল পুরনো বাড়িতে একা থাকতো। এক জ্ঞাতি খুড়া ছাড়া তার মা-বাবা বা পরিজন কেউ ছিল না। সেই খুড়াও আবার তার কুৎসা রটাত। ফলে তার দেখভালের মতো মানুষের অভাব ছিল। এ কারণে নিজের রান্নার দায়িত্ব মৃত্যুঞ্জয় নিজের কাঁধে তুলে নেয়।

গ. বিলাসী গল্পের আলোকে বর্ণবাদী সমাজের স্বরূপ ব্যাখ্যা করো।

ঘ. বিলাসী গল্পের মূলভাব বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : প্রায় একশ বছর আগের কথা। তৎকালীন সমাজকে বর্ণপ্রথা কঠিনভাবে আঁকড়ে ধরেছিল। বিশেষ করে হিন্দু সমাজে জাতপাতের সমস্যা ছিল প্রকট। এই জাতপাতের সমস্যার কারণে বহু ছেলেমেয়ের জীবন অকালে ঝরে পড়ত। হিন্দু রক্ষণশীল সমাজ নিচু উঁচুকুলের প্রেমকে মেনে নিতে পারত না। তারা নানা কুৎসা রটনা করে তাদের গ্রামছাড়া করতেও দ্বিধাবোধ করত না।

ক. গোয়ালার বাড়িতে মৃত্যুঞ্জয় কী জাতের সাপ ধরেছিল?
খ. খুড়া মৃত্যুঞ্জয়কে অন্নপাপের জন্য কেন দায়ী করেছে?
গ. উদ্দীপকের যে নিচু-উঁচুকুলের প্রেম সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে তা ‘বিলাসী’ গল্পে কার প্রেম সম্পর্কে ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে যে সমাজ ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে তা যেন বিলাসী গল্পের সমাজব্যবস্থারই প্রতিচ্ছবি—বিশ্লেষণ করো।

৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. গোয়ালার বাড়িতে মৃত্যুঞ্জয় খরিশ গোখরা জাতের সাপ ধরেছিল।

খ. অন্নপাপের জন্য মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়া মৃত্যুঞ্জয়কে দায়ী করেছে নিচু জাতের বিলাসীর হাতে ভাত খাওয়ার কারণে। তৎকালীন মূঢ় হিন্দু সমাজব্যবস্থায় জাত প্রথার বিষবাষ্প ছিল প্রবল। নিচু জাতের কারো হাতে রান্না করা খাবার বিশেষত ভাত খেলে অন্নপাপ হয় বলে অন্নপাপকে সকল পাপের বড় পাপ বলে মনে করা হতো এবং এর কোনো প্রায়শ্চিত্তও নেই। অসুস্থ মৃত্যুপথযাত্রী মৃত্যুঞ্জয়ের শুশ্রূষা করতে আসা তৎকালীন হিন্দুসমাজের চোখে নিচু বলে আখ্যায়িত সাপুড়েকন্যা বিলাসীর হাতে মৃত্যুঞ্জয়ের ভাত খাওয়ার কারণেই মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়া মৃত্যুঞ্জয়কে অন্নপাপের জন্যে দায়ী করেছে।

গ. বিলাসী ও মৃত্যুঞ্জয়ের প্রেমের সম্পর্কের ব্যাখ্যা দাও।

ঘ. ‘বিলাসী’ গল্পে চিত্রায়িত সমাজব্যবস্থা মূল্যায়ন করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : হরিচরণ ঠাকুর নিঃসন্তান। হঠাৎ একদিন একই পাড়ার সুলেমানের ছয় বছরের ফুটফুটে ছেলে জহির তার নজরে পড়ে। জহির একবার পানিতে পড়ে প্রায় মারা যাচ্ছিল, হরিচরণ তাকে বাঁচায়। স্নেহের বশে তাকে কোলে নিয়ে একবার ঠাকুর পূজাও করে। এতেই হলো কাল। সমাজপতিরা হরিচরণকে সমাজচ্যুত করল। কেউ একজন বলতে গিয়েছিল, স্নেহের বশে সে ছেলেটিকে কোলে নিয়ে পূজা করেছে, এজন্য প্রায়শ্চিত্ত করলেই হয়। তখন ন্যায়রত্ন বলে— ‘ধর্ম যুক্তিতে চলে না, ধর্ম চলে বিশ্বাসে।

ক. পিণ্ডি কী?
খ. ‘সাপের বিষ যে বাঙালির বিষ নয়, তাহা আমিও বুঝিয়াছিলাম’— উক্তিটি বুঝিয়ে বলো।
গ. ‘হরিচরণ ও বিলাসীর পরিণতি একসূত্রে গাঁথা’— কীভাবে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের ধর্মীয় অনুদারতাই বিলাসীকে মৃত্যু পর্যন্ত টেনে নিয়েছে— উক্তিটির আলোকে এই অনুদারতার স্বরূপ বিশ্লেষণ করো।

৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. পিণ্ডি এক ধরনের ঢেলা, যা মৃতের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়।

খ. উক্তিটির মাধ্যমে ন্যাড়া সাপের বিষের অব্যর্থ প্রভাব সম্পর্কে তার ধারণা নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যক্ত করেছে।
বিলাসী গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় সাপুড়ে পেশা গ্রহণ করার পর একদিন সাপ ধরতে গিয়ে সাপের দংশনেই মৃত্যুর মুখে পড়ে। গল্পের কথক ন্যাড়া বুঝেছিল সাপের বিষ একেবারেই অব্যর্থ। তা মন্ত্র, তন্ত্র, মাদুলি, বিষহরীর আজ্ঞা কিছুই মানে না। অন্যদিকে ‘বাঙালির বিষ’ অর্থাৎ বাঙালির ক্ষোভ ও রোষ স্বল্পস্থায়ী ও অকার্যকর। ন্যাড়া কিছুটা ব্যঙ্গাত্মকভাবে সাপের বিষের সঙ্গে বাঙালির মুখের বিষের তুলনা করেছে।

গ. ‘বিলাসী’ গল্পে বিলাসীর যে পরিণতি তুলে ধরা হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো।

ঘ. ‘বিলাসী’ গল্পে ধর্মীয় সংকীর্ণতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : রবি একজন উদারচেতা ছেলে। কোনো সংকীর্ণতা বা কুসংস্কার তার মধ্যে স্থান পায়নি। রবির পিতা প্রচুর ভূসম্পত্তি রেখে বছর দুই আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। রবির কাকা নগেন বাবু এলাকার চেয়ারম্যান, তবে স্বার্থের ক্ষেত্রে কূটাচারী। রবির মাকে সে অপবাদ দিয়ে গ্রামছাড়া করে। একা একা বাস করা রবিকে তার কাকা বিভিন্নভাবে অপদস্থ করার চেষ্টা করে। একবার রবির ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি। এবার সে রবির নামে মুসলমানদের সাথে ওঠা-বসা, খাওয়া- দাওয়া প্রভৃতি অপবাদ দিয়ে একঘরে করে দিয়েছে। সবকিছুর মূলে রয়েছে রবির সম্পত্তি আত্মসাতের ইচ্ছা। সামাজিক মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তির স্থলিত নীতিবোধ সমাজে ঘুণ ধরায়।

ক. বিলাসী গল্পের ন্যাড়া কে?
খ. মৃত্যুঞ্জয়ের অন্তঃকরণে অসাম্প্রদায়িক চেতনার কারণ কী?
গ. মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়ার সঙ্গে রবির কাকার চরিত্রের তুলনামূলক আলোচনা করো।
ঘ. ‘সামাজিক মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তির স্থলিত নীতিবোধ সমাজে ঘুণ ধরায়’— বক্তব্যটি বিলাসী গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. বিলাসী গল্পের ন্যাড়া গল্পকথক।

খ. পঙ্কিল সমাজের বাইরে একাকী বেড়ে ওঠার কারণেই মৃত্যুঞ্জয়ের অন্তঃকরণ অসাম্প্রদায়িক চেতনা-সমৃদ্ধ।
তৎকালীন হিন্দু সমাজব্যবস্থা ছিল মূঢ়, মানবিকতাবিরোধী, শুভ বুদ্ধি-শুভচিন্তার প্রতিপক্ষ। এমন সমাজ ব্যবস্থায় সমাজের তথাকথিত আচারসর্বস্ব নিষ্ঠুর মানুষদের সাথে মিশে বেড়ে উঠে অসাম্প্রদায়িক চেতনাসমৃদ্ধ হওয়া অসম্ভব। একাকী জীবন কাটানোর কারণেই সাম্প্রদায়িকতার অন্ধকার মৃত্যুঞ্জয়কে গ্রাস করতে পারেনি বলেই মৃত্যুঞ্জয় অসাম্প্রদায়িক চেতনাসমৃদ্ধ হয়ে উঠেছিল।

গ. ‘বিলাসী‘ গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ে খুড়ার যে স্বার্থপরতার পরিচয় পাওয়া যায় তা ব্যাখ্যা করো।

ঘ. মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়া সমাজে প্রভাব বিস্তার করে মৃত্যুঞ্জয় ও বিলাসীর প্রতি যে অন্যায় করেছিল তার স্বরূপ বিশ্লেষণ করো।

অনুশীলনের জন্য আরও প্রশ্ন

সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : আরমান সাহেব বনেদী বংশের লোক। তাঁর বাগান বাড়িতে শফিক নামের এক মালি কাজ করে। দরিদ্র ও নিচু বংশের বলে তিনি মালিকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের চোখে দেখেন। এর কিছুদিন পর বাড়িতে একলা থাকা অবস্থায় তিনি হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় তাঁকে চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য শফিক অস্থির হয়ে পড়ে। সে সময়ক্ষেপণ না করে আরমান সাহেবকে নিয়ে চিকিৎসাকেন্দ্রে পৌঁছায়। সময়মতো চিকিৎসা-সেবা পেয়ে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

ক. মৃত্যুঞ্জয় কোন ক্লাসে পড়তো?
খ. কোন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে খুড়া মৃত্যুঞ্জয়ের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে? ব্যাখ্যা করো।
গ. আরমান সাহেবের আচরণে বিলাসী গল্পের কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? তুলে ধরো।
ঘ. ‘সেবাধর্মী মানসিকতায় উদ্দীপকের শফিক যেন গল্পের বিলাসীর প্রতিচ্ছবি’- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : ব্রাহ্মণ সন্তান দেবেন্দ্র নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের শেফালী মল্লিককে বিয়ে করে বাবা-মায়ের অমতে। কারণ সনাতন ধর্মমতে এ বিয়ে অসমবর্ণ। পরিবার এবং সমাজ কারোর কাছেই এ বিয়ে কোনোক্রমে গ্রহণযোগ্য নয়। প্রতিনিয়ত শ্বশুর-শাশুড়ির মুখভার আর শাশুড়ির আড়চোখে তাকানো শেফালীর ভালোবাসার পৃথিবীকে বদলে ফেলে। দেবেন্দ্র একথা আঁচ করতে পেরে তার স্ত্রীকে নিয়ে গাঁয়ের এককোণে আলাদা ঘর বাঁধে। সমাজের মোড়লেরা এ অসবর্ণ বিয়ে মানে না। রাতে সদলবলে সে বাড়িতে হামলা করে এবং তাদের ঘর, এক তাদের ভালোবাসার ঘর জ্বালিয়ে দেয়। দেবেন্দ্র পোড়ে, শেফালী পোড়ে, ঘর পোড়ে সমাজের আগুনে, অশিক্ষার আগুনে।

ক. ‘দেনা-পাওনা’ শরৎচন্দ্রের কোন জাতীয় রচনা?
খ. ঠিক যেন ফুলদানিতে জল দিয়া ভিজাইয়া রাখা বাসি ফুলের মতো’— কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. ‘শেফালী ও বিলাসীর জীবন অচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ’— উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে বিলাসী গল্পের অসমবর্ণ বিয়ের বিষয়টি বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৮ : আবুল বাশার বছর আগে বাবা-মা দুজনকে চিরতরে হারায়। একমাত্র চাচা তার আইনি অভিভাবক। কথা ছিল, বাশার প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরে চাচা তার পৈতৃক সম্পত্তি তাকে বুঝিয়ে দেবে। প্রথম প্রথম লোক দেখানো হলেও চাচা তার যত্ন-আত্তি করত। বর্তমানে তার চাচার সাথে দূরত্ব বাড়ছে। বিভিন্ন ছুতোয় আজকাল তার চাচা পাড়া-পড়শির কাছে তার নামে বদনাম ছড়ায়। বাশার বোঝে, সম্পত্তির জন্যই চাচা তার প্রতি এমন বিরূপ।

ক. মৃত্যুঞ্জয় কোন ক্লাসে পড়ত?
খ. বিলাসীকে কেন টেনে হিচড়ে গ্রামের বাইরে নেয়া হলো? ব্যাখ্যা করো।
গ. বিলাসী গল্পের মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়ার সাথে বাশারের চাচার মানসিকতার সাদৃশ্য নির্ণয় করো।
ঘ. ‘সম্পত্তির জন্যই চাচা তার প্রতি এমন বিরূপ’ – উদ্দীপকের এই উক্তিটিতে বিলাসী গল্পের কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে, বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৯ : জমিজমা সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের কারণে প্রতাপশালী বাদল চেয়ারম্যান কর্তৃক নানাভাবে হেনস্তার শিকার হয় মজনু মিয়া। বিয়ের অনেক বছর পরও মজনু নিঃসন্তান বলে এটাকে তার পাপের ফল বলে সবার কাছে বলে বেড়ান চেয়ারম্যান। মজনু করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে চেয়ারম্যান তাকে অভিশপ্ত ঘোষণা করেন এবং গ্রামের লোকদের ভুল বুঝিয়ে তাকে একঘরে, করে দেন। সবাই মজনুর স্ত্রী সখিনাকে স্বামী-পরিত্যাগের পরামর্শ দিলেও সখিনা তাদের কথায় কান না দিয়ে স্বামীর সেবা-শুশ্রুষা করে। একসময় মজনু মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লেও গ্রামের কেউ এগিয়ে আসে না। ফলে চরম কষ্টে ধুঁকে ধুঁকে মারা যায় মজনু। স্বামীর মৃত্যুর দুদিনের মাথায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে সখিনা বাড়ি ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়।

ক. মৃত্যুঞ্জয়ের বাগানের অর্ধেকটা নিজের বলে দাবি করত কে?
খ. খুড়ার নেতৃত্বে গ্রামবাসী মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়িতে হামলা করল কেন?
গ. উদ্দীপকের বাদল চেয়ারম্যান বিলাসী গল্পের কোন চরিত্রের প্রতিনিধি? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে বিলাসী গল্পের মূলকথা সার্থকতার সাথে ফুটে উঠেছে কি? বিশ্লেষণী মতামত দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন ১০ : জামাল একজন মুদি দোকানদার। বেশি লাভের আশায় সে কম ওজনের বাটখারা ব্যবহার করে। তার স্ত্রী আয়না বলে ‘মানুষ ঠকিয়ে লাভ কী’। জামাল স্ত্রীর কথা শোনে না। একদিন ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ধরা পড়ে জামালকে মোটা অঙ্কের জরিমানা গুনতে হয়।

ক. মৃত্যুঞ্জয় কী পাপ করেছিল?
খ. ‘বাবা আমারে বাবুর সাথে নিকা দিয়েছে জানো’— কথাটি দ্বারা বিলাসী কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের আয়না চরিত্রের সাথে বিলাসী চরিত্রের মিল দেখাও।
ঘ. জামালের পরিণতি আর মৃত্যুঞ্জয়ের পরিণতি কি একই? তোমার মতের পক্ষে যুক্তি দাও।

Leave a Comment