(বাংলা) SSC: মমতাদি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

মমতাদি হচ্ছে মাধ্যমিক অর্থাৎ নবম-দশম শ্রেণীর বাংলা ১ম পত্র বই এর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর গল্প। মমতাদি গল্প থেকে বাছাইকৃত সেরা ৫টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

মমতাদি গল্পের সৃজনশীল

১. দশ বছরের মেয়ে রাহেলা ইসলাম সাহেবের বাসায় রান্না, কাপড় ধোয়া, ঐশীকে স্কুলে নেওয়া, কেনাকাটা থেকে শুরু করে সব কাজ নিপুণভাবে করে। স্বামী-স্ত্রীর অবর্তমানে দুই যমজ সন্তানদের দেখাশুনাও করে। তাকে কারণে অকারণে তার স্ত্রী সাকিলা বকাঝকা করে। একদিন চায়ের কাপ ভাঙার কারণে তাকে অমানবিক নির্যাতন করে। এতে রাহেলার কঙ্কালসার শরীরে কমপক্ষে ত্রিশটি আঘাতের চিহ্ন ও দগদগে ঘা রয়েছে।

ক. ‘মমতাদি’ গল্পটি কোন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত?
খ. স্বামীর চাকরি হওয়ার পরও কেন মমতাদি রাঁধুনির কাজ করতে চাইল?
গ. উদ্দীপকের গৃহকর্মী রাহেলার চরিত্রের সাথে ‘মমতাদি’ গল্পের মমতার মিল আছে কিনা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘মমতাদি’ গল্পের বিপরীত চিত্র তুলে ধরে- মন্তব্যটি যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘মমতাদি’ গল্পটি ‘সরীসৃপ’ গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত

খ. স্বামীর চাকরি হওয়ার পরও বাড়তি আয়ের আশায় মমতাদি রাঁধুনির কাজ করতে চাইল।

মমতাদির সংসারে অভাব বলেই মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারী হয়েও তাকে লেখকের বাড়িতে কাজ নিতে হয়। তাছাড়া মমতাদির স্বামীর চাকিরও ছিল না। লেখকের মা শুনলেন যে মমতাদির স্বামীর চাকরি হয়েছে। তাই তিনি তাকে কাজ ছেড়ে দিতে বলেন বিনা সংকোচে। কিন্তু মমতাদি জানায় স্বামীর চাকরি হলেও বেতন অল্প। এখানে কাজ করে যা আয় হবে তাতে তার সংসার একটু ভালোভাবে চলবে। তাই মমতাদি একটু বাড়তি আয়ের আশায় স্বামীর চাকরি হওয়ার পরও রাঁধুনির কাজ করতে চাইল।

গ. কর্মনিষ্ঠা, দায়িত্ববোধ ও দরিদ্রতার দিক থেকে উদ্দীপকের গৃহকর্মী রাহেলার সঙ্গে ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির মিল রয়েছে। আমাদের সমাজে যারা গৃহকর্মীর কাজ করে অনেকে তাদের ছোট করে দেখে। গৃহকর্ত্রীরা তাদের কাজের মর্যাদা দেয় না। তবুও তারা নিষ্ঠা ও দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করে যায়। তারা সবসময় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে গৃহকর্ত্রীকে খুশি করতে চায়।

‘মমতাদি’ গল্পে মমতাদির কাজের মধ্যে রয়েছে শৃঙ্খলা ও ক্ষিপ্রতা। সে বেশি কথা বলে না। নিজ দায়িত্বে বাড়ির সব কাজ করে সে। কারও সঙ্গে কথা না বলে মনোযোগসহকারে কাজ করে। তাকে কিছু বলে দিতেও হয় না। বাড়ির সবাইকে সে আপন করে নেয়। স্কুলপড়ুয়া ছেলেটিকেও সে স্নেহ করে। যেসব কাজের জন্য আদেশ পায় তাও করে, আবার যেগুলো করা উচিত বলে মনে করে সেগুলোও করে।

উদ্দীপকের রাহেলাও মমতাদির মতো কর্মনিষ্ঠ, দায়িত্ববোধসম্পন্ন। তারা উভয়েই দরিদ্র। সব কাজের পাশাপাশি বাড়ির সন্তানদের দেখাশুনাও করে রাহেলা। রান্না, কেনাকাটা, কাপড় ধোয়া, ঐশীকে স্কুলে নেওয়া এসব কাজ সে যথাযথভাবে করে। তাই বলা যায়, কর্মনিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের দিক থেকে উদ্দীপকের গৃহকর্মী রাহেলার সঙ্গে ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির মিল রয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘মমতাদি’ গল্পের বিপরীত চিত্র তুলে ধরে- মন্তব্যটি সত্য।

সাম্যবাদের দৃষ্টিতে পৃথিবীর সব মানুষই সমান। ধনী-দরিদ্রের যে বৈষম্য আমাদের সমাজে বিদ্যমান তা মানুষের সুখ-শান্তির অন্তরায়। এতে মূল্যবোধ বিঘ্নিত হয়। তাই সমস্ত বৈষম্য অবসানে মানুষের মধ্যে মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে। মানবিক আচরণ করতে হবে।

‘মমতাদি’ গল্পে বাড়ির কাজের লোকের সঙ্গে মানবিক আচরণের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। গল্পে মমতাদিকে সবাই আন্তরিকতা দেখায়। মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের মেয়ে বলে গৃহকর্ত্রী তার আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখে। মমতাদিকে রাঁধুনির মর্যাদা দেওয়া হয়। গৃহকর্ত্রী তার সুবিধা- অসুবিধার কথা চিন্তা করে। এমনকি মমতাদির চাহিদার থেকেও বেশি মাইনে নির্ধারণ করে। আর উদ্দীপকের গৃহকর্ত্রীর আচরণ সম্পূর্ণ বিপরীত। এখানে গৃহকর্মীর ওপর অমানবিক অত্যাচার করে গৃহকর্ত্রী। তাকে প্রহার ও বকাঝকা করে।

‘মমতাদি’ গল্পে বাড়ির কাজের লোকের প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ প্রকাশ পেয়েছে। অন্যদিকে উদ্দীপকে অমানবিক আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। তাই ‘মমতাদি’ গল্পের মানবিক আচরণের বিপরীতে উদ্দীপকে অমানবিক ও নিষ্ঠুর নির্যাতনের প্রকাশ ঘটায় উদ্দীপকটি ‘মমতাদি’ গল্পের বিপরীত চিত্র তুলে ধরে।

২. দৈন্য যদি আসে আসুক, লজ্জা কিবা তাহে
মাথা উঁচু রাখিস।
সুখের সাথী মুখের পানে, যদি না চাহে
ধৈর্য ধরে থাকিস।
‘রুদ্র রূপে তীব্র দুঃখ যদি আসে নেমে
বুক ফুলিয়ে দাঁড়াস।

ক. মমতাদির বাসার গলির নাম কী?
খ. কারো কাছে যা পাই না, তুমি তা দেবে কেন?’— কথাটি বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের বিষয়বস্তুতে মমতাদির যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়েছে- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের মূলভাব ও ‘মমতাদি গল্পের লেখকের চাওয়া একই সূত্রে গাঁথা।— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক. মমতাদির বাসার গলির নাম জীবনময়ের গলি।

খ. গল্পকথক মমতাদির দাগপড়া গালে হাত বোলাতে গেলে আলোচ্য উক্তিটি মমতাদি করে।

গল্পকথক একদিন খেয়াল করে মমতাদির গালে তিনটি দাগ। তার বন্ধু অবনীকে মাস্টারমশাই মারার পর যেমন দাগ হয়েছিল, তেমন দাগ। তাই মমতাদির কাছে গল্পকথক গালের দাগ সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু মমতাদি অস্বীকার করে যে তাকে কেউ মেরেছে। গল্পকথক যখন স্পষ্ট বুঝতে পারে কেউ সত্যিই মমতাদিকে মেরেছে, তখন সে মমতাদিকে আদর করে গালে হাত বুলিয়ে দিতে চায়। কিন্তু নিষ্ঠুর এই পৃথিবীতে মমতাদি কখনই কারও ভালোবাসা পায়নি। তাই গল্পকথক তাকে আদর করে গালে হাত বোলাতে গেলে আলোচ্য উক্তিটি সে করে।

গ. উদ্দীপকের বিষয়বস্তুতে মমতাদির আত্মমর্যাদা বজায় রেখে আত্মনির্ভরতা অর্জনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়েছে।

অন্যের বাড়িতে যারা গৃহকর্মে সহায়তা করে তাদেরকে গৃহকর্মী বলে। নিতান্ত অভাবে পড়েই তাঁরা অন্যের বাড়িতে কাজ নেয়। গৃহকর্মী হলেও তারা আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ। তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করা উচিত।

উদ্দীপকের কবিতাংশে জীবনে দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা-বেদনা, জরা-মৃত্যু এলে হতাশ না হয়ে সাহসের সঙ্গে তা মোকাবিলার আহ্বান ধ্বনিত হয়েছে। দুঃখের দিনে ধৈর্য না হারিয়ে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে সব বাধা জয় করে সম্মুখে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে আত্মমর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু রাখতে হবে। উদ্দীপকের এই বিষয়বস্তুর সঙ্গে ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির আত্মমর্যাদা বজায় রেখে অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে আত্মনির্ভরতা অর্জনের দিকটি সাদৃশ্যপূর্ণ। স্বামীর চাকরি চলে যাওয়ায় মমতাদির সংসারে অভাব নেমে আসে।

সংসারের হাল ধরতে সে বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেয়। সেখানে সে আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেয়নি। সে কাজ করতে এসে সবার কাছ থেকে নিজেকে আলাদা করে রাখত। প্রয়োজন ছাড়া কারও সঙ্গে কথা বলত না। সে সব সময় মনোযোগ দিয়ে গৃহকর্ত্রীর বাড়ির সব কাজ করে দিত। সততা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে সে বাড়ির সবার সুদৃষ্টি অর্জন করে। গৃহকর্ত্রীসহ সবাই তার সঙ্গে অত্যন্ত মানবিক আচরণ করে। মমতাদিও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞচিত্তে দায়িত্ব পালন করে নিজের দৈন্য ঘোচাতে তৎপর হয়। এভাবে উদ্দীপকের বিষয়বস্তুতে মমতাদির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকের মূলভাব ও ‘মমতাদি‘ গল্পের লেখকের চাওয়া একই সূত্রে গাঁথা।— মন্তব্যটি যথার্থ।

গৃহকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কাজের মূল্যায়ন করা উচিত। তারাও সবার স্নেহ-মমতা, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও সম্মান পাওয়ার অধিকার রাখে। ছোট কাজ করে বলে তাদেরকে অবহেলা ও অমর্যাদা করা উচিত নয়।

‘মমতাদি’ গল্পে মমতাদি একজন আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নারী। সে অভাবে পড়ে গৃহকর্মী হিসেবে লেখকদের বাড়িতে কাজ করতে যায়। এ গৃহকর্ত্রী তাকে যথার্থ ভালোবাসা ও সম্মান দিয়েছেন। মমতাদিও তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে নিজের সংসারের অর্থনৈতিক সমস লাঘব করতে তৎপর। স্বামীর চাকরি নেই বলে সে হাল ছেড়ে দেয়নি। সাহসের সঙ্গে ধৈর্য ধারণ করে সামনে এগিয়ে গেছে।

‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির এই সাহসী কর্মচেতনার প্রতিফলন লক্ষ করা যা উদ্দীপকের কবিতাংশের মূলভাবে। কবি এখানে সংসারে দুঃখ-দৈন এলে তা ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াে বলেছেন। কারণ আত্মশক্তিতে বলীয়ান হলে যেকোনো বিপন মোকাবেলা সহজ হয়। জীবনে দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা-বেদনা, জরা-মৃত্যু এলে তাতে দমে গিয়ে হতাশ হলে চলে না। সাহসের সঙ্গে তা জয় করতে হয়।

‘মমতাদি’ গল্পে মমতাদি অভাব-অনটনের সংসারে জীর্ণশীর পরিবেশে থাকলেও আত্মর্যাদাহীন নয়। গৃহকর্মীর কাজ করেও মমতাদি আত্মসম্মান বজায় রেখেছে। নিজের মতো করে সব কাজ করে দিয়েছে। গৃহকর্ত্রীর বলার অপেক্ষায় কোনো কাজ ফেলে রাখেনি বাড়ির স্কুলপড়ুয়া চল ছেলেটিকেও স্নেহের ছায়ায় স্থান দিয়েছে। ধৈর্য এবং উদার না হলে তা করা সম্ভব হতো না।

উদ্দীপকের মূলভাবেও মানুষকে ধৈর্য ধারণ করতে বলা হয়েছে। দুঃখের দিলো সুখের বন্ধুদের সহায়তা না পেলেও হাল ছেড়ে না দিয়ে আত্মশক্তি নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই বিষয়টি ‘মমতাদি’ গল্পের লেখকের বক্তব্যের মধ্যেও প্রতিফলিত হয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের মূলভাব ও ‘মমতাদি’ গল্পের লেখকের চাওয়া একই সূত্রে গাঁথা।

৩. চঞ্চল পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। তাদের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেনা নূরজাহান। একদিন চঞ্চল নূরজাহানের ওপর বিরক্ত হয়ে তাকে ধাক্কা দেয়। তাই দেখে তার আম্মা তাকে খুব বকা দিলেন। যদিও নূরজাহান বলতে থাকলেন, ‘খালাম্মা, কিচ্ছু হইব না। ও তো ছোট মানুষ, রাগা হইয়া করছে।’ কিন্তু, চঞ্চলের বাবা-মায়ের কাছে তার এই আচরণটি ছিল খুবই গর্হিত অপরাধ। তার মা তাকে নূরজাহানের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আদেশ দিয়ে বললেন, ‘মনে রাখবি, দুটো খাবারের জন্য মেয়েটি আমাদের বাসায় কাজ করতে এসেছে। ওর জন্য এটা খুব কষ্টের একটা অনুভূতি।’ মা আরও বলেছিলেন, এরপর থেকে যেন কখনো গৃহকর্মীর গায়ে হাত না তুলি।

ক. মমতাদির কপালে ক্ষত চিহ্নটি কেমন?
খ. ‘কারো কাছে যা পাই না, তুমি তা দেবে কেন?’ মমতাদি একথা কেন বলেছিল?
গ. উদ্দীপকের চালের মা ও ‘মমতাদি’ গল্পের ছেলেটির মা কোন দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ?— ব্যাখ্যা কর।
ঘ. গৃহকর্মী হিসেবে অন্যের বাসায় কাজ করা খুব কষ্টের একটা অনুভূতি। – উদ্দীপক ও ‘মমতাদি’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

৩ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. মমতাদির কপালে ক্ষত-চিহ্নটি আন্দাজে পরা টিপের মতো।

খ. গল্পকথক মমতাদির দাগপড়া গালে হাত বোলাতে গেলে মমতাদি আলোচ্য উক্তিটি করে।

গল্পকথক একদিন খেয়াল করে মমতাদির গালে তিনটি দাগ। তার বন্ধু অবনীকে মাস্টারমশাই মারার পর যেমন দাগ হয়েছিল, তেমন দাগ। তাই মমতাদির কাছে গল্পকথক গালের দাগ সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু মমতাদি অস্বীকার করে যে তাকে কেউ মেরেছে। গল্পকথক যখন স্পষ্ট বুঝতে পারে কেউ সত্যিই মমতাদিকে মেরেছে, তখন সে মমতাদিকে আদর করে গালে হাত বুলিয়ে দিল চায়। কিন্তু নিষ্ঠুর এই পৃথিবীতে মমতাদি কখনই কারও ভালোবাসা পায়নি। তাই গল্পকথক তাকে আদর করে গালে হাত বোলাতে গে সে আলোচ্য উক্তিটি করে।

গ. উদ্দীপকের চঞ্চলের মা ও ‘মমতাদি’ গল্পে ছেলেটির মায়ের মধ্যে সাদৃশ্যপূর্ণ দিক হলো গৃহকর্মীর প্রতি মানবিক আচরণের।

অভাবে পড়ে অনেকে অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে থাকেন। কিন্তু আমরা অনেক সময় তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করি। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে তারাও আমাদের মতো মানুষ তাদেরও আত্মসম্মানবোধ আছে।

উদ্দীপকের নূরজাহান চঞ্চলদের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেয়। চঞ্চল একদিন নূরজাহানের ওপর বিরক্ত হয়ে তাকে ধাক্কা দেয়। চঞ্চলের এমন আচরণের কারণে তার মা তাকে খুব বকা দেন। চঞ্চলের মা-বাবা মনে করেন চঞ্চল খুবই গর্হিত কাজ করেছে। তাকে নূরজাহানের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। অন্যদিকে ‘মমতাদি’ গল্পের গৃহকর্ত্রীও মমতাদির প্রতি ভীষণ সৌহার্দপূর্ণ মনোভাব পোষণ করেন।

প্রত্যাশার চেয়েও মমতাদির বেতন বেশি নির্ধারণ করেন। স্কুলপড়ুয়া ছেলেটি মমতাদিকে সম্মান করে। উভয় জায়গায় গৃহকর্মীর প্রতি গৃহকর্ত্রী মানবিক আচরণ প্রকাশ পেয়েছে। তারা গৃহকর্মীর কষ্টের অনুভূতি হৃদয় দিয়ে অনুভব করেন। তাই বলা যায় যে, গৃহকর্মীর প্রতি বাড়ি কর্ত্রীর মানবিক আচরণ করার দিক থেকে উদ্দীপকের চঞ্চলের মা ‘মমতাদি’ গল্পের ছেলেটির মায়ের সাদৃশ্য রয়েছে।

ঘ. “গৃহকর্মী হিসেবে অন্যের বাসায় কাজ করা খুব কষ্টের একটা অনুভূতি”- মন্তব্যটি যথার্থ।

গৃহকর্মী তাদের বলা হয় যারা অন্যের বাসায় কাজ করেন। তারা দারিদ্র্যের কশাঘাতে বাধ্য হয়ে অন্যের বাসায় কাজ করতে যান। অথচ তাদেরও আত্মসম্মানবোধ রয়েছে। আমাদের উচিত তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করা।

উদ্দীপকের নূরজাহান অভাবের তাড়নায় চঞ্চলদের বাসায় কাজ করতে আসেন। চঞ্চল তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে তার মা এটি মেনে না নিয়ে চঞ্চলকে বকা দেন এবং নূরজাহানের প্রতি সদয় মনোভাব পোষণ করেন। তিনি চঞ্চলকে নূরজাহানের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। কারণ তিনি মনে করেন নূরজাহান দুটো খাবারের জন্য তাদের বাসায় কাজ করতে এসেছে। এটা তার জন্য খুব কষ্টের একটা অনুভূতি।

‘মমতাদি’ গল্পে ছেলেটির মায়ের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও চঞ্চলের মায়ের মতো সহানুভূতিশীল ও আন্তরিক। তাই মমতাদি যখন বিপদে পড়ে কাজ চাইতে আসে তখন তিনি তাকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বেতনে কাজ দেন। ছেলেটিকে মমতাদি আদর করলে তিনি খুশি হন। ছেলেটির মা মমতাদির আত্মসম্মানবোধ সমুন্নত রেখেছেন।

উদ্দীপক ও আলোচ্য গল্পে দুজন গৃহকর্মীর সততা ও নিষ্ঠার সে কাজ করার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। তারা অভাবের তাড়নায় অনে বাড়িতে কাজ নিলেও আত্মসম্মানবোধ তাদের অক্ষুণ্ণ ছিল। অনে বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করা যে খুব কষ্টের একটা অনুভূতি তা উত্ত গৃহকর্ত্রী অনুধাবন করেছেন এবং গৃহকর্মীর প্রতি সদয় মনোভা পোষণ করেছেন। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

৪. রোজিনা ব্যাংক কর্মকর্তা হালিমার বাড়িতে কাজ করে। সে খুব চালা ও বাড়ির সব কাজ ঠিকমতো বুদ্ধি খাটিয়ে করে। হালিমাে অনুপস্থিতিতে রোজিনা তার বাচ্চাটির খুব যত্ন করে। এরপর সামান্য একটু ভুল হলেই হালিমা রোজিনাকে বকাঝকা করে।

ক. ‘মমতাদি’ গল্পটি কোন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত?
খ. অমন কথা তোমার শত্রুও বলতে পারবে না মা কে, কাকে কেন একথা বলেছিল?
গ. উদ্দীপকের রোজিনার সাথে ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি চরিত্রের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য তুলে ধর।
ঘ. উদ্দীপকের হালিমা চরিত্রে ‘মমতাদি’ গল্পের লেখকের মায়ের বিপরীত চিত্র ফুটে উঠেছে।- মন্তব্যটি যুক্তিসহ আলোচনা কর।

৪নং প্রশ্নের উত্তর

ক। ‘মমতাদি’ গল্পটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সরীসৃপ’ গ্রেন্থের অন্তর্ভুক্ত।

খ. অমন কথা তোমার শত্রুও বলতে পারবে না মা গল্পকথকের মা মমতাদিকে উদ্দেশ করে এ কথা বলেছেন।

মমতাদি কাজে-কর্মে অত্যন্ত সুনিপুণা, গোছানো এবং কাজে কোনো ত্রুটি নেই। সারা দিন নীরবে সে কাজ করে যায় যে কাজের নির্দেশনা পায় সেটা তো করেই, আর যেটার পায় না সেটাও সে নিলা বুদ্ধি খাটিয়ে করে ফেলে। তাই মমতাদির বরের চাকরির কথা শুে গল্পকথকের মা তাকে রান্নার কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন। কারণ মমতাদি কাজ নেওয়ার সময় জানিয়েছিল, চার মাস যাবৎ তার স্বামীর চাকরি নেই। তাই তার কাজটি খুব প্রয়োজন।

তাছাড়া ইতঃপূর্বে মমতাদি কখনো গৃহকর্মীর কাজ করেনি। স্বামীর চাকরি না থাকা বাধ্য হয়ে কাজ করতে বেরিয়েছে। কিন্তু যখন জানা গেল তার স্বামীর চাকরি হয়েছে, এখন নিশ্চয় সে কাজ করবে না। কিন্তু মমতাদি কাজটি ছাড়তে চায় না। তাই মমতাদি কিছুটা বিস্ময়ের স্বরে জানতে চায়, কাজে তার কোনো ভুলত্রুটি হয়েছে কিনা। তখন তিনি মমতাদিকে উদ্দেশ করে বলেন যে- অমন কথা তোমার শত্রুও বলতে পারবে না মা।

গ. উদ্দীপকের রোজিনার সঙ্গে ‘মমতাদি’ গল্পের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য উভয়ই রয়েছে।

পৃথিবীর সব মানুষকে প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়াই মনুষ্যত্ব। অর্থ-বিনা দিয়ে কখনই মানুষকে বিচার করা উচিত নয়। প্রত্যেকের রয়েছো আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার।

উদ্দীপকের রোজিনা ব্যাংক কর্মকর্তা হালিমা নামের এক গৃহকর্ত্রীর বাড়িতে কাজ করে। নিজের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে গৃহের সমস্ত কাজকর সুনিপুণভাবে সম্পন্ন করে। নিজের সাধ্যমতো সর্বোচ্চটা দিয়ে রোজিন চেষ্টা করে নির্ভুলভাবে সবকিছু করার। হালিমার অনুপস্থিতিতে তারা বাচ্চাটির খুব যত্ন করে। কিন্তু তার একটুখানি ভুল হলেই হালিম। তাকে খুব বকাঝকা করেন।

‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদিও একজন গৃহকর্মী। সে তার কর্মদক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে গৃহের সব কাজ; সুচারুভাবে সম্পন্ন করে। এ জন্য গৃহকর্ত্রী তাকে খুব ভালোবাসেন রোজিনার সঙ্গে তার গৃহকর্ত্রী খারাপ আচরণ করলেও ‘মমতাদি গল্পের মমতাদির সঙ্গে গৃহকর্ত্রী সবসময় ভালো ব্যবহার করেন, প্রাণ! সম্মান দিয়ে কথা বলেন, সহমর্মিতা জানান। তাই বলা যায়, মমতাদিত সঙ্গে রোজিনার পেশাগত সাদৃশ্য যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে প্রাপ্য মর্যাদা ও সম্মানের দিক থেকে বৈসাদৃশ্য।

ঘ. উদ্দীপকের হালিমা চরিত্রে ‘মমতাদি’ গল্পের লেখকের, মায়ের বিপরীত চিত্র ফুটে উঠেছে।- মন্তব্যটি যথার্থ।

সবার উচিত অপরের প্রতি সহনশীল হওয়া। তাছাড়া সবাইকে আন্তরিকভাবে তাদের প্রাপ্য সম্মানও দেওয়া উচিত। অথচ অনেক মানুষ অর্থের অহংকারে অভাবী মানুষের সঙ্গে অবজ্ঞা ও অবহেলাপূর্ণ আচরণ করে। এভাবে শ্রেণিবৈষম্য তৈরি হয়।

উদ্দীপকের গৃহকর্ত্রী হালিমা ব্যাংকে চাকরি করেন। রোজিনা তার ঘরের সমস্ত কাজকর্ম সুনিপুণভাবে সম্পন্ন করে। নিজের সাধ্যমতো সর্বোচ্চটা দিয়ে রোজিনা চেষ্টা করে নির্ভুলভাবে সবকিছু করার। হালিমার অবর্তমানে গৃহকর্মী রোজিনা সংসারের সব কাজের পাশাপাশি বাচ্চা সামলায়। অথচ রোজিনাকে তিনি গাল-মন্দ করেন সামান্য ভুলের কারণে। ‘মমতাদি’ গল্পের লেখকের মা হালিমার স্বভাবের সম্পূর্ণ বিপরীত চরিত্রের মানুষ। তিনি গৃহকর্মীর প্রতি সহানুভূতিশীল এবং আন্তরিক। গৃহকর্মীর সঙ্গে তিনি হৃদ্যতাপূর্ণা আচরণ করেন।

‘মমতাদি’ গল্পের লেখকের মায়ের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সবার জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। কারণ তিনি মানুষকে যোগ্য সম্মান দিতে পারেন। মমতাদি যখন বিপদে পড়ে তার কাছে কাজ চাইতে এসেছিল, তখন তিনি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি টাকায় কাজ দিয়েছেন। মমতাদির প্রতি গৃহকর্মীর মতো আচরণ তিনি করেননি, তাকে পরিবারের একজন সদস্য মনে করতেন এবং তার প্রতি সহমর্মিতা ও সহানুভূতি দেখাতেন। উদ্দীপকের হালিমা যেটা কখনই করেননি। তাই আমর! বলতে পারি, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

আরো পড়োপ্রবাস বন্ধু গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
আরো পড়োসুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

৫. গ্রামের মেয়ে শাহেদা অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালায়। সে অত্যন্ত করিৎকর্মা। রান্নাবান্নাসহ ঘর গোছানোর কাজ সবই সে করে। তারপরও তাকে নানা কথা শুনতে হয়। ভালো বেতনের লোভে সে তা মুখ বুজে সহ্য করে। এ কাজটি হারালে ছেলেমেয়ে নিয়ে পথে বসতে হবে।

ক. ‘অপ্রতিভ’ শব্দের অর্থ কী?
খ. কাজগুলিকে সে আপনার করে নিল, মানুষগুলির দিকে ফিরেও তাকাল না’- উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।
গ. কোন দিক থেকে ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির সাথে শাহেদার মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সাদৃশ্য থাকলেও শাহেদা পুরোপুরি মমতাদি হয়ে উঠতে পারেনি, উক্তিটির সত্যতা নিরূপণ কর।

৫নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘অপ্রতিভ’ শব্দের অর্থ অপ্রস্তুত।

খ. কাজের মধ্যে ডুবে থাকার কারণে লেখক মমতাদিকে কেন্দ্র করে আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।

মমতাদি কাজ করতে এসে সবার কাছ থেকে নিজেকে আলাদা করে রাখত। প্রয়োজনের বাইরে কারও সঙ্গে কথা বলত না। নিজেল খেয়ালে খুব দক্ষতার সঙ্গে নিপুণভাবে সকল কাজ করে যেটা খাওয়ার জল চাওয়া, এমনকি চার-পাঁচবার রান্নাঘরে তার কাছে গিয়ে দাঁড়ালেও মমতাদি লেখকের দিকে খেয়াল না করে আপন কাজে ছিল। লেখককে গুরুত্ব না দিয়ে কাজের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ায় লেখক মমতাদি সম্পর্কে আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।

গ. দারিদ্র্যপীড়িত ও অসহায়ত্বের জন্য অন্যের বাড়িতে কাজ করলা দিক থেকে ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদির সঙ্গে উদ্দীপকের শাহেদার মিল রয়েছে।

যারা অন্যের বাড়িতে কাজ করে তাদের বলা হয় গৃহকর্মী গৃহকর্মীরা অন্যদের মতোই সাধারণ মানুষ। তাই তারাও স্নেহ- ভালোবাসা প্রত্যাশা করে। একজন মানুষ হিসেবে গৃহকর্মীকে তা প্রাপ্য সম্মান ও ভালোবাসা দেওয়া উচিত। আর এটা পেয়ে গৃহকর্মীরাও নিজেদের আর ছোট, হীন ভাববে না। প্রতিদানস্বরূপ তা গৃহকর্তার গৃহে কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ বজায় রাখবে।

উদ্দীপকের শাহেদা অন্যের বাড়িতে কাজ করে। কাজে সে অত্যন্ত করিৎকর্মা। কোনো কিছুই তাকে বলে দিতে হয় না। রান্নাবান্নাসহ ঘর গোছানোর কাজ সবই সে করে। তারপরও তাকে নানা কথা শুনতে হয়। ভালো বেতনের লোভে সে তা মুখ বুজে সহ্য করে। এ কাজটি হারালে ছেলেমেয়ে নিয়ে তাকে পথে বসতে হবে। অন্যদিকে ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদিও গৃহকর্মী। মমতাদি গৃহকর্ত্রীর বাড়িতে কাজ করে মাসিক বেতন হিসেবে পনেরো টাকা গ্রহণ করে, আর কিছুই নেয় না। এতে তার এক সন্তান এবং চাকরি হারানো স্বামীকে নিয়ে তিনজনের সংসার এক রকম চলে যায়। সুতরাং উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্টই বোঝা যায় যে, দারিদ্র্যপীড়িত ও অসহায়ত্বের জন্য অন্যের বাড়িতে কাজ করার দিক থেকে ‘মমতাদি’ গল্পের মমতার সঙ্গে উদ্দীপকের শাহেদার মিল রয়েছে।

ঘ. “সাদৃশ্য থাকলেও শাহেদা পুরোপুরি মমতাদি হয়ে উঠতে পারেনি”- উক্তিটি সত্য।

নিতান্ত অভাবে পড়েই মানুষ অন্যের বাড়িতে কাজ করতে বাধ্য হয়। গৃহকর্মী হলেও তারা আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ। তারাও গৃহকর্তা বা গৃহকর্ত্রীর কাছ থেকে স্নেহ-মমতা, ভালোবাসা সর্বোপরি ভালো আচরণ আশা করে। তবে অনেকে তা পায়, অনেকে পায় না।

উদ্দীপকের শাহেদা অন্যের বাড়িতে কাজ করে। সে অত্যন্ত করিৎকর্মা। কোনোকিছু তাকে বলে দিতে হয় না। রান্নাবান্নাসহ ঘর গোছানোর কাজ সবই সে করে। তারপরও তাকে নানা কথা শুনতে হয়। ভালো বেতনের লোভে সে তা মুখ বুজে সহ্য করে। কারণ কাজটি হারালে তাকে ছেলেমেয়ে নিয়ে পথে বসতে হবে। ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি স্কুলপড়ুয়া এক ছেলের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে এসেছে।

ছেলেটি মমতাদিকে দেখে খুব আনন্দিত হয় এবং তাকে পরিবারের একজন ভাবতে শুরু করে। ছেলেটিও মমতাদির ছোট ভাইয়ের মর্যাদা লাভ করে। তারাও মমতাদিকে সম্মান করে। এমনকি মমতাদির প্রত্যাশার চেয়েও বেশি মাইনে নির্ধারণ করে তার গৃহকর্ত্রী। সম্মান ও সহমর্মিতা নিয়ে মমতাদির পাশেও দাঁড়ায় স্কুলপড়ুয়া ছেলেটি ও তার পরিবার।

উদ্দীপকের শাহেদা ও ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি উভয়েই গৃহকর্মী। তবে শাহেদা তার কাজ দিয়েও গৃহকর্ত্রীর মনে জায়গা করে নিতে পারেনি। সেটি সম্ভব হয়েছে মমতাদির মাধ্যমে। মমতাদি যেমন পরম আদর, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা দিয়ে গৃহকর্ত্রী ও স্কুলপড়ুয়া ছেলেটির মন জয় করেছে তেমনই তারাও মমতাদিকে সম্মান, ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা দিয়ে কাছে টেনে নিয়েছে। তাই প্রমাণিত হয় যে, গৃহকর্মীর দিক দিয়ে সাদৃশ্য থাকলেও শাহেদা পুরোপুরি মমতাদি হয়ে উঠতে পারেনি সুতরাং উক্তিটি সত্য।