(বাংলা) ৬ষ্ঠ: সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি (২য় পরিচ্ছেদ: গান) – সমাধান

সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি হচ্ছে ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা বই এর ৬ষ্ঠ অধ্যায়। সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি অধ্যায়ের ২য় পরিচ্ছেদ: গান এর অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

গান
গান মানুষের আবেগ প্রকাশের শুদ্ধতম মাধ্যম। অনেকটা কবিতার মতোই গানও অলঙ্কারসমৃদ্ধ বাণী বিশেষ। গান একধরনের শ্রবণযোগ্য শিল্প যা সুসংবদ্ধ শব্দ ও সুরের সমন্বয়ে মানুষের হৃদয়ে আনন্দ রস সৃষ্টি করে। নির্দিষ্ট সুর, তাল ও লয়ে উচ্চারিত ছন্দবদ্ধ রচনা হলো গান। গান দ্বারা গীত, বাদ্য, নৃত্য এই তিনটি বিষয়ের সমাবেশকে বোঝানো হয়। স্বর ও ধ্বনির সমন্বয়ে গানের সৃষ্টি। এই ধ্বনি মানুষের কণ্ঠ নিঃসৃতও হতে পারে আবার যন্ত্রোৎপাদিতও হতে পারে। অথবা দুটোর সংমিশ্রণও হতে পারে। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই সুর ধ্বনির প্রধান বাহন। সুর ছাড়াও তাল গানের অন্যতম উপাদান।
গান যিনি রচনা করেন তাঁকে গীতিকার বলে। যিনি গানে সুর দেন তাঁকে সুরকার বলে। আর যিনি গান গেয়ে থাকেন তাঁকে বলা হয় শিল্পী বা গায়ক।

গানের বৈশিষ্ট্য
গান কোনো একটি ভাব বা বিষয় নিয়ে রচিত হয়।
গান তাল দিয়ে পড়া যায়।
গানে এক লাইনের সঙ্গে পরের লাইনের শেষ শব্দে মিল থাকে। তবে কোনো একটি লাইন গানের মধ্যে বারবার ফিরে আসে।
গান মূলত গাওয়ার জন্য লেখা হয়।
কথা, সুর ও গায়কির সমন্বয়ে সৃষ্টি হয় গান।
গানের চারটি অংশ। স্থায়ী, অন্তরা, সঞ্চারী ও আভোগ।
গানের তিনটি সাধারণ সুর ভিন্ন ভিন্ন হয়। সেগুলো হলো স্থায়ী, অন্তরা ও সঞ্চারী।
গানের সুর ও তাল ঠিক রাখার জন্য নানা ধরনের বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
গানের লেখককে বলা হয় গীতিকার। যিনি সুর দেন তাকে বলা হয় সুরকার আর যিনি গেয়ে শোনান তিনি হলেন গায়ক।

গান রচনার কৌশল
কোন বিষয়ের ওপর গান লেখা হবে তা প্রথমে নির্দিষ্ট করে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আশপাশের সবকিছু থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া যেতে পারে।
এক লাইনের সঙ্গে অন্য লাইনের মিল থাকতে হবে। তাই লাইনের শেষে মিল শব্দ ব্যবহার করতে হবে।
সুর ও তাল দিয়ে গানটি গাওয়া যাচ্ছে কি না, তা খেয়াল করতে হবে।
গান রচনায় কোন শব্দ ব্যবহার করা হবে তা ভেবে ঠিক করতে হবে।
কখনো কখনো আগে সুর ঠিক করে গানের কথা লেখা হয়।

গানের প্রকারভেদ
গান প্রথমত দুই প্রকার। ১. শাস্ত্রীয় সংগীত ২. লঘু সংগীত বা দেশীয় সংগীত।

১. শাস্ত্রীয় সংগীত
শাস্ত্রের নিয়মনীতি মেনে যে সংগীত রচিত হয় তাকে শাস্ত্রীয় সংগীত বলে। এ সংগীতকে উচ্চাঙ্গ সংগীত, রাগ সংগীত, ধ্রুপদি সংগীত বা শুদ্ধ সংগীত বলা হয়। খেয়াল, ঠুমরি, টপ্পা, তারানা ইত্যাদি শাস্ত্রীয় সংগীতের অন্তর্ভুক্ত।
শাস্ত্রীয় সংগীত আবার দুই প্রকার। যেমন :
ক. হিন্দুস্থানি সংগীত পদ্ধতি
খ. কর্ণাটকি সংগীত পদ্ধতি

২. লঘু সংগীত বা দেশীয় সংগীত
উচ্চাঙ্গনির্ভর গানগুলোর বাইরে দ্বিতীয় শ্রেণিভুক্ত লঘু সংগীত বা আমাদের দেশীয় কিছু গানের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক। যেমন: আধুনিক, পল্লিগীতি, ভাটিয়ালি, জারি গান, সারি গান, ধামাইল, ভাওয়াইয়া, গম্ভীরা, কীর্তন ইত্যাদি গানগুলো লঘু সংগীতের নামে পরিচিত। তবে ব্যান্ড ও হিপহপ গানগুলো আমাদের দেশীয় না হলেও লঘু সংগীতের অন্তর্ভুক্ত।

২য় পরিচ্ছেদ: গান

১. ‘আমরা সবাই রাজা’ গানটি পড়ে কী বুঝেছ তা লেখো।

নির্দেশনা :
‘আমরা সবাই রাজা’ গানটি মনোযোগ দিয়ে বারবার শোনো ও পড়ো। এবার কী বুঝতে পেরেছ তা নিজের ভাষায় লেখো। নমুনা উত্তর: ‘আমরা সবাই রাজা’ গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘রাজা’ নাটক থেকে নেওয়া হয়েছে। গানটির মাধ্যমে শিশুমনে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার ভাব জাগ্রত করার চেষ্টা করা হয়েছে। গানটি পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষিত করার মনোভাব নিয়ে রচিত। এতে রাজা-প্রজা, উচ্চ-নিচ ভেদাভেদ ভুলে সাম্য ও ঐক্যের জয়গান গেয়েছেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রাজ্যের সবাইকে সম্মান ও গুরুত্ব দিয়ে সঙ্গে নিয়ে রাজ্য শাসন করলে রাজা ব্যর্থ হন। না, বরং সম্মানিত হন। মূলত গানটির মাধ্যমে সকলের সম অধিকার ও ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে।

আরো পড়োবুঝে পড়ি লিখতে শিখি ৫ম পরিচ্ছেদ
আরো পড়োসাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি ১ম পরিচ্ছেদ

২. গানের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার মাধ্যমে বৈশিষ্ট্যগুলো টিকচিহ্ন দিয়ে বোঝাও।

নির্দেশনা : বৈশিষ্ট্যগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখো। গানের সঙ্গে কোন কোন বৈশিষ্ট্য মিল পাও তা টিক চিহ্ন দিয়ে নির্দেশ করো।
নমুনা উত্তর :
পরপর দুই লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে? – হ্যাঁ
হাতে তালি দিয়ে কি পড়া যায়? – হ্যাঁ
লাইনগুলো কি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের? – না
লাইনগুলো কি সুর করে পড়া যায়? – হ্যাঁ
এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা? – হ্যাঁ
এটি কি গদ্য ভাষায় লেখা? – না
এর মধ্যে কি কোনো কাহিনি আছে? – না
এর মধ্যে কি কোনো চরিত্র আছে? – না
এখানে কি কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে? – না
এটি কি কয়েকটি অনুচ্ছেদে ভাগ করা? – না
এর মধ্যে কি কোনো সংলাপ আছে? – না
এটি কি অভিনয় করা যায়? – না

Leave a Comment