(বাংলা) অষ্টম শ্রেণি: এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম হচ্ছে অষ্টম শ্রেণীর সাহিত্য কণিকা বই এর শেখ মুজিবুর রহমান এর গল্প। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম গল্প থেকে বাছাইকৃত সেরা ৫টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

লেখক-পরিচিতি (Biography)
নাম : শেখ মুজিবুর রহমান
পিতৃমাতৃ পরিচয় –
পিতা : শেখ লুৎফর রহমান, মাতা : সায়েরা খাতুন
জন্ম পরিচয় : ১৭ই মার্চ ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
শিক্ষাজীবন : ম্যাট্রিক (১৯৪১), গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল। আইএ (১৯৪৪), কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ। বিএ (১৯৪৬), কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ল’ ক্লাসে ভর্তি ১৯৪৭।

রাজনৈতিক জীবন : ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার কৃষি, বন ও সমবায় মন্ত্রী নিযুক্ত। ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান দ্বিতীয় গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত। ১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সরকারের শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম ও দুর্নীতি দমন দফতরের মন্ত্রী নিযুক্ত। ১৯৬৬ সালের ২০শে মার্চ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা। ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল তাঁর অবর্তমানে তাঁকে রাষ্ট্রপতি করে মুজিবনগর সরকার গঠন। ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ। ১৯৭২ সালের ১২ই জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রথম বাংলা ভাষায় ভাষণ দেন। ১৯৭৫ সালের ২৫শে জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ।

পুরস্কার ও সম্মাননা : বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের আন্দোলনের অনন্য ভূমিকা পালন করায় এবং এর ভিত্তিতে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তিনি ‘জাতির পিতা’ হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৬৯ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত। ১৯৭৩ সালে বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত ‘জুলিও কুরী’ পদক লাভ। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অভ দি ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত (২০১৭)।

মৃত্যু : ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সামরিক বাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সদস্য কর্তৃক সশস্ত্র হামলায় সপরিবারে নিহত হন।

পাঠ-পরিচিতি (Summary)
পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রকাঠামো ভেঙে বাঙালির সার্বিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে কারাবরণ করেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অর্জন করে নিরঙ্কুশ বিজয়। তবুও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নেয়। ১৯৭১ সালের দোসরা মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে বাংলায় সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ৭ই মার্চ ১৯৭১-এ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দি উদ্যান) প্রায় দশ লাখ লোকের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৮ মিনিটের ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ইউনেস্কো এই ভাষণটিকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্য গৌরবের। এ ভাষণ ৭ই মার্চের ভাষণ হিসেবে বিখ্যাত।

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম গল্পের সৃজনশীল

১. জন গেরাং ছিলেন দক্ষিণ সুদানবাসীর প্রাণপ্রিয় নেতা। তাঁকে দক্ষিণ সুদানের স্বাধীনতার অগ্রদূত বলা হয়। দক্ষিণ সুদানকে উত্তর সুদান থেকে পৃথক করার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন । তাঁর নেতৃত্বের গুণে দক্ষিণ সুদানের জনগণ স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ওঠে। কিন্তু এই মহান নেতা স্বাধীনতা অর্জনের আগেই মারা যান। তবে তাঁর অনুপ্রেরণার কারণেই দক্ষিণ সুদানের জনগণ একসময় তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করে।

ক. বঙ্গবন্ধু কত সালে ৬ দফা ঘোষণা করেন?
খ. ২৩ বছরের করুণ ইতিহাস বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের জন গেরাং-এর সাথে বঙ্গবন্ধুর বৈসাদৃশ্য নিরূপণ কর।
ঘ. “কিছু বৈসাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকের জন গেরাং ও বঙ্গবন্ধু উভয়ে ছিলেন জাতির মুক্তির দিশারি”- মন্তব্যটি ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ রচনার আলোকে মূল্যায়ন কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর

ক. বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালে ছয় দফা ঘোষণা করেন।

খ. ২৩ বছরের করুণ ইতিহাস বলতে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মলগ্ন থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) জনগণের প্রতি শাসকগোষ্ঠীর বে-ইনসাফ, জুলুম ও বঞ্চনার কথা বোঝানো হয়েছে।
১৯৪৭ সালে দেশ-বিভাগের পর নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা চলে যায় তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে। তারা পূর্ব-বাংলার মানুষের ন্যায্য অধিকার কেড়ে নেয়, তাদেরকে নানাভাবে বঞ্চিত করে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ছেষট্টির ৬ দফা আন্দোলন ও উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে এদেশের মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে। চুয়ান্নর নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। তারা এ অঞ্চলের মানুষের ওপর চরম নির্যাতন চালায়। এভাবে তারা পূর্ব-বাংলায় সৃষ্টি করে এক করুণ ইতিহাস।

গ. উদ্দীপকের জন গেরাং-এর সাথে বঙ্গবন্ধুর বৈসাদৃশ্য হলো, জন গেরাং তাঁর দেশের স্বাধীনতা দেখে যাননি, কিন্তু বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা দেখে গিয়েছেন।
সুযোগ্য নেতার সুদক্ষ নেতৃত্ব ছাড়া স্বাধীনতা অর্জন করা যায় না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে এদেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে, দক্ষিণ সুদানবাসীর প্রাণপ্রিয় নেতা জন গেরাংকে সেদেশের স্বাধীনতার অগ্রদূত বলা হয়। তিনি দক্ষিণ সুদানকে উত্তর সুদান থেকে পৃথক করার জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তাঁর নেতৃত্ব গুণেই দক্ষিণ সুদানের জনগণ স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ওঠে এবং একসময় স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে। তবে স্বাধীনতা অর্জনের আগেই জন গেরাং মারা যান। অপরদিকে বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেন। তাঁর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা অর্জনের পরে মৃত্যুবরণ করেন। এ থেকে বোঝা যায়, উদ্দীপকের জন গেরাং-এর সাথে বঙ্গবন্ধুর সুস্পষ্ট বৈসাদৃশ্য রয়েছে।

ঘ. সুযোগ্য নেতৃত্বদানের মাধ্যমে জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামে অনুপ্রাণিত করার দিক থেকে উদ্দীপকের জন গেরাং ও বঙ্গরঙ্কুকে জাতির মুক্তির দিশারি বলা যায়।
জাতিকে যিনি মুক্তির দিশা অর্থাৎ মুক্ত হওয়ার সঠিক দিকনির্দেশনা দেন, তিনিই জাতির মুক্তির দিশারি। সুযোগ্য নেতৃত্বগুণ না থাকলে জাতিকে মুক্তির পথে এগিয়ে নেওয়া যায় না। পূর্বাপর অবস্থা ও পরিবেশ-পরিস্থিতির বাস্তবতা বিবেচনা করে একজন সুদক্ষ নেতাই তাঁর দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে জাতিকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় উদ্বুদ্ধ করতে পারেন।
উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে, দক্ষিণ সুদানবাসীর প্রাণপ্রিয় নেতা জন গেরাংকে সেদেশের স্বাধীনতার অগ্রদূত বলা হয়। তিনি দক্ষিণ সুদানকে উত্তর সুদান থেকে পৃথক করার জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তাঁর নেতৃত্বগুণে দক্ষিণ সুদানের জনগণ স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ওঠে এবং তাঁর অনুপ্রেরণার কারণেই একসময় স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে। অপরদিকে ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ রচনায় উপস্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্নিমন্ত্র। বঙ্গবন্ধু তাঁর ওই ভাষণে জাতিকে পাকিস্তানি শাসন-শোষণ থেকে মুক্ত করার প্রত্যয়ে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তাঁর এই ঘোষণায় অনুপ্রাণিত হয়ে জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে।
উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, “উদ্দীপকের জন গেরাং ও বঙ্গবন্ধু উভয়ে ছিলেন জাতির মুক্তির দিশারি”- মন্তব্যটি। যথার্থ ও যৌক্তিক।

২. শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,
রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে
অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন।
তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,
হৃদয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার
সকল দুয়ার খোলা। কে রোধে তাঁহার বাণী?
গণসূৰ্যে ‘মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি;
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

ক. বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা কে?
খ. “প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল” কথাটি বুঝিয়ে দাও।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রেক্ষাপট ও অভিব্যক্তি ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ রচনার সঙ্গে কতটুকু সংগতিপূর্ণ? বর্ণনা কর।
ঘ. ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণের আলোকে বঙ্গবন্ধুকে ‘কবি’ এবং তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণকে ‘অমর কবিতা’ বলার যথার্থতা বিচার কর।

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

খ. ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল’ -এ কথার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু সবাইকে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের তাৎপর্য অপরিসীম। এ ভাষণে তিনি বাঙালিকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া বাংলার স্বাধীনতা অর্জিত হবে না। তাই সশস্ত্র লড়াইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে প্রতিটি বাঙালিকে তিনি ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার নির্দেশ প্রদান করেছেন।

গ. উদ্দীপকে কবি নির্মলেন্দু গুণ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের পরিবেশ পরিস্থিতি কাব্যময় ভাষায় তুলে ধরেছেন। এ কবিতায় বর্ণিত প্রেক্ষাপট ও অভিব্যক্তি ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ রচনার সঙ্গে সম্পূর্ণ সংগতিপূর্ণ।
উদ্দীপকের কবিতাংশে কবি বলেন, শত বছরের বাঙালির “সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে বঙ্গবন্ধু জনতার মঞ্চে এসে দাঁড়ালেন। সেই ঐতিহাসিক ৭ই মার্চে রেসকোর্স ময়দানের লাখ লাখ মানুষের মধ্যে বঙ্গবন্ধু মঞ্চে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে জনসভায় প্রাণের জোয়ার বয়ে গেল। জনতার কবি বঙ্গবন্ধু সেই গণবিস্ফোরণের মধ্যে তাঁর চির অমর কবিতা পাঠ করে শোনালেন। সেই কবিতাটি হলো ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
কবি উদ্দীপকের কবিতাংশে ৭ই মার্চ ভাষণকে কেন্দ্র করে জনতা ও বঙ্গবন্ধুর যে অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তুলেছেন তা ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ রচনার সঙ্গে পুরোপুরি সংগতিপূর্ণ। কারণ চরম রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও জনবিক্ষোভের পটভূমিতে বাঙালি গভীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষমাণ জনতাকে বঙ্গবন্ধু যে অবিস্মরণীয় ভাষণ দেন, তা কবিতার মতোই তাদের সংক্রমিত ও উজ্জীবিত করে। আলোকিত গণমানুষ তাঁর কবিতার মতো বাণীর মধ্যে খুঁজে পায় মুক্তির ঠিকানা।

ঘ. উদ্দীপকে বঙ্গবন্ধুকে ‘কবি’ ও তাঁর ৭ই মার্চের অবিস্মরণীয় ভাষণকে ‘অমর কবিতা’ বলে অভিহিত করা হয়েছে, যা আমাদের কাছে সম্পূর্ণ যৌক্তিক মনে হয়েছে।
কবির ভাষায় গণমানুষের চাওয়া পাওয়ায় প্রতিধ্বনি থাকে। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ মুক্তিপাগল বাংলার আবাল-বৃদ্ধ-বনিতাকে তুমুলভাবে আন্দোলিত করে, তাই একে ‘অমর কবিতা’ বলা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মহান স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি কবির মতো এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। একজন কবি ও শিল্পী মানুষের বঞ্চনা ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন। বঙ্গবন্ধুও কবির মতো বাঙালি জাতির প্রতি সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। তিনি সামনে থেকে জাতির অধিকার রক্ষার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাই ‘বঙ্গবন্ধু’কে কবির সাথে তুলনা করা যুক্তিসংগত।
তেমনিভাবে এক অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে নতুন আশার আলো দেখিয়েছেন। তিনি তাঁর দৃপ্তকণ্ঠের ভাষণে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্দীপ্ত করেন। বাঙালি জাতি তার ভাষণে নিকনির্দেশনা পেয়ে আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুত হয়। এসব দিক বিচারে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের বাণীকে ‘অমর কবিতা’ বলে অভিহিত করা যথার্থ হয়েছে।

পড়ুন → পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
পড়ুন → ভাব ও কাজ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

৩. অন্যায়, অবিচার, শোষণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেন, প্রতিবাদ করেন, তারাই শাসকদের কোপানলে পড়েন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, এদের ভাগ্যে জোটে জেল-জুলুম, অত্যাচার- নির্যাতন। তবে সাধারণ মানুষ তাদের কথায় জীবন বাজি রাখতেও প্রস্তুত থাকে। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ তেমনি এক চেতনার ফসল।

ক. প্রেসিডেন্ট হিসেবে কে অ্যাসেম্বলি ডেকেছিলেন?
খ. বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে ‘মার্শাল-ল উইন্ত্র’ বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. “তবে সাধারণ মানুষ তাদের কথায় জীবন বাজি রাখতেও প্রস্তুত থাকে” -উদ্দীপকের এ সত্য ও ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ -এর সাদৃশ্য স্থাপন কর।
ঘ. “আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ তেমনি এক চেতনার ফসল ” উদ্দীপকের এ বক্তব্যকে ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম-এর আলোকে আলোচনা কর।

৩নং প্রশ্নের উত্তর

ক. প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইয়াহিয়া খান অ্যাসেম্বলি ডেকেছিলেন।

খ. জনগণের অধিকার হরণের জন্য সামরিক বাহিনী যে নিয়ম জারি করে, বঙ্গবন্ধু ‘মার্শাল-ল উইথড্র’ বলতে সেটাকে তুলে নেওয়ার কথা বুঝিয়েছেন।
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী সামারিক একনায়কতন্ত্র জারি করে বাঙালিদের সব অধিকার হরণ করে। এমনকি তারা বাঙালিদের স্বাভাবিক জীবনযাপনেও বাধা প্রদান করে। বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে সামরিক বাহিনীর ঐ নিয়মকে তুলে নেয়ার জন্যই ‘মার্শাল-ল উইথড্র করার কথা বলেছেন।

গ. তবে সাধারণ মানুষ তাঁদের কথায় জীবন পর্যন্ত বাজি রাখতেও প্রস্তুত’ উদ্দীপকের এ সত্যের সাথে ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’-এর সাদৃশ্য বিদ্যমান।
উদ্দীপকে সেইসব মহান মানুষের কথা বলা হয়েছে, যারা অন্যায়- অবিচারের বিপক্ষে কথা বলেছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে শাসকের কোপানলে পড়েছেন, এসব মহান নেতা সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন। সাধারণ মানুষ এসব মহান মানুষকে খুব শ্রদ্ধা করে। নেতার সামান্য ইশারায় জীবন দিতেও তারা কুণ্ঠিত হয় না
‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণে আমরা তার পরিচয় পাই। বঙ্গবন্ধু ছিলেন সাধারণ মানুষের নেতা। পাকিস্তানি শোষকদের বিরুদ্ধে তিনি যখন যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন তখন সাধারণ মানুষ তাঁর কথায় জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, যা উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. “আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধ তেমনি এক চেতনার ফসল” – উদ্দীপকের এ বক্তব্য ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ -এর সাথে যৌক্তিক।
পৃথিবীতে যত মহান নেতার আবির্ভাব ঘটেছে, তাদের চেতনা ও আদর্শ মানুষের কাছে আদর্শ হয়ে থাকে। মানুষ এসব নেতার চেতনাকে লালন করে মুক্তির পথ অনুসন্ধান করে। মূলত এসব মহান নেতার দিকনির্দেশনাই পৃথিবীর বঞ্চিত মানুষকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে যে, মহান নেতারা অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে কথা বলেন বলে শাসকদের কোপানলে পড়েন। ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণটিতে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু বাংলার বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কথা বলার কারণেই পাকিস্তানি শাসকদের শত্রুতে পরিণত হয়েছিলেন। কিন্তু এই মহান নেতা তাঁর চেতনা থেকে সরে দাঁড়াননি কখনো।
বাংলার মানুষ ছিল চিরদিন শোষিত ও নির্যাতিত। এই শোষণ থেকে মুক্তির জন্য প্রয়োজন ছিল সাহস ও জাগরণী চেতনার। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণে বাঙালির মধ্যে সেই চেতনা জাগ্রত করেছেন। স্বাধীনতার যুদ্ধ সেই চেতনারই ফসল। তাই উদ্দীপক ও ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণের আলোকে বলা যায়, প্রশ্নের উক্তিটি যথার্থ।

৪. জনতাকে জাগাতে নেতারা জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে, আবার এর বিপরীতও করতে পারে। ১৯৭১-এর মার্চে শেখ মুজিবুর রহমান সৃষ্টি করেছিলেন শুভ দাবানল, শুভ প্লাবন, শুভ অগ্নিগিরি, নতুনভাবে সৃষ্টি করেছিলেন বাঙালি জাতিকে, যার ফলে আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম।

ক. ১৯৭০ সালের নির্বাচনে কোন দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে?
খ. বঙ্গবন্ধু কেন প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে বলেছিলেন?
গ. ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণে উদ্দীপকের কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ১৯৭১-এ যে শুভ দাবানল সৃষ্টির কথা হয়েছে ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণের আলোকে তা বিশ্লেষণ কর।

৪নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।

খ. মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করার লক্ষ্যে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য বঙ্গবন্ধু প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে বলেছিলেন।
দীর্ঘ শোষণ, বঞ্চনা ও নির্যাতনের শিকার বাঙালিরা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা ও দিকনির্দেশনা দেন। বাংলার ঘরে ঘরে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

গ. ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জাতির উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। উদ্দীপক ও ‘এবারের সংগ্রাম কস্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণে বলা হয়েছে, এ তেজোদীপ্ত ঘোষণার চেতনায় অর্জিত হয় এদেশের স্বাধীনতা।
৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ লাখ লাখ বাঙালি জনতাকে স্বাধীনতা যুদ্ধে উদ্দীপ্ত করেছিল। এ ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে সর্বস্তরের জনগণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
উদ্দীপকে দেখতে পাই, বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে যে গণজোয়ার সৃষ্টি করেছিলেন, তা ছিল মানব কল্যাণের জোয়ার, ধ্বংসের জোয়ার নয়। এটি ছিল দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে একটি জাতির মুক্তির জোয়ার। উদ্দীপকের বক্তব্যের সাক্ষ্য বহন করে আলোচ্য ভাষণের প্রতিটি শব্দ ও বাক্য।

ঘ. ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মূলসুর ছিল ধ্বংস নয়- সৃষ্টি, অশুভ নয়— শুভ, বাঙালির নতুনভাবে বাঁচার উদ্দীপ্ত আহ্বান।
দাবানল সবকিছুকে পুড়িয়ে নিঃশেষ করে দেয়, সবকিছুকে ধ্বংস করে দেয়; তেমনিভাবে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে যে দাবানল সৃষ্টি হয়েছিল, তা পাকিস্তানিদের সমস্ত অন্যায়, অত্যাচার ও নির্যাতন থেকে বাঙালিদের মুক্তি দিয়েছিল।
আলোচ্য ভাষণে ছিল সাত কোটি বাঙালির প্রাণের আবেগের বহিঃপ্রকাশ। যুদ্ধকালীন এবং যুদ্ধ-পরবর্তী দিকনির্দেশনা ছিল এ ঐতিহাসিক ভাষণে। এ ভাষণের অসাধারণ প্রাণশক্তি মুহুর্তের মধ্যে সমস্ত বাঙালিকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রেরণা জুগিয়েছিল।
উদ্দীপকে যে শুভ দাবানলের কথা বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সে দাবানল ছিল আপামর জনগণকে পাকিস্তানি শাসকদের কবল থেকে মুক্তির, অন্ধকার থেকে আলোর পথে বেরিয়ে আসার প্রবল আকুতি।

৫. জামাল সাহেব ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর এলাকার যুবকদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলেন এবং তাদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেন। মা, মাটি এবং দেশের প্রতি ভালোবাসায় উজ্জীবিত হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনেন।

ক. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কত সালে জন্মগ্রহণ করেন।
খ. এই বাংলায় হিন্দু-মুসলমান, বাঙালি-অবাঙালি যারা আছে তারা আমাদের ভাই। -কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে জামাল সাহেবের কর্মকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণটিকে সমর্থন করে- মন্তব্যটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর।

৫নং প্রশ্নের উত্তর

ক. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

খ. আলোচ্য কথাটি দ্বারা বাংলাদেশের হিন্দু-মুসলমান, বাঙালি- অবাঙালি সবার ঐক্যের কথা বোঝানো হয়েছে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। সে ভাষণে তিনি উক্ত কথাটি বলেন। তাঁর মতে, বাংলাদেশের হিন্দু-মুসলিম, এদেশের বাঙালি- অবাঙালি সে যেই হোক, দেশটা সবার। সবাইকেই দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

গ. উদ্দীপকে জামাল সাহেবের কর্মকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বঙ্গবন্ধুর আহ্বান পালনের দিকটি ফুটে উঠেছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর কয়েকদিন আগে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে তথা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাঙালি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তাঁর ভাষণে তিনি বাঙালিদের ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দেশের আপামর জনতা যে যেখান থেকে পেরেছে স্বাধীনতার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
আলোচ্য উদ্দীপকেও দেখা যায়, জামাল সাহেব ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর এলাকার যুবকদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলেন এবং তাদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেন। মা, মাটি এবং দেশের প্রতি ভালোবাসায় উজ্জীবিত হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনেন। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের জামাল সাহেবের কর্মকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বঙ্গবন্ধুর আহ্বান পালনের দিকটি ফুটে উঠেছে।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণটিকে সমর্থন করে- মন্তব্যটি যথার্থ।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটি ছিল সর্বকালের সেরা ভাষণ। তাঁর ঐ ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়েই বাংলার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ৭ই মার্চ ১৯৭১ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে প্রায় দশ লাখ লোকের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষণটি দেন। ঐ ভাষণেই তিনি বলেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
উদ্দীপকের জামাল সাহেব ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর এলাকার যুবকদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলেন এবং তাদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেন। মা, মাটি এবং দেশের প্রতি ভালোবাসায় উজ্জীবিত হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনেন।
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পূর্বে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির উদ্দেশে তাঁর মহামূল্যবান ভাষণটি দেন। এটি শুধু ভাষণই ছিল না, এটি ছিল জাতির ক্রান্তিকালে বাঙালি জাতির প্রতি চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা । বঙ্গবন্ধুর ঐ ভাষণের পরই বাঙালি জাতি তাদের দিকনির্দেশনা খুঁজে পায়। তাদের কর্তব্য ও করণীয় সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণটিকে সমর্থন করে- মন্তব্যটি যথার্থ।

Leave a Comment