(সমাজকর্ম-১ম) এইচএসসি:- সমাজকর্ম: প্রকৃতি এবং পরিধি’র সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

সমাজকর্ম: প্রকৃতি এবং পরিধি হচ্ছে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর সমাজকর্ম ১ম পত্রের প্রথম অধ্যায়। সমাজকর্ম: প্রকৃতি এবং পরিধি অধ্যায় থেকে বাছাইকৃত সেরা ৫টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

সমাজকর্ম: প্রকৃতি এবং পরিধি’র সৃজনশীল

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : ঘূর্ণিঝড় আইলার প্রভাবে সাতক্ষীরা জেলার অধিকাংশ মানুষ অসহায় ও নিঃস্ব হয়ে পড়ে। ২ বছর অতিবাহিত হলেও আজও তাদের দুঃখ-দুর্দশার শেষ নেই। কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান শুধু ত্রাণ বিতরণের মাধ্যমেই তাদের দুর্দশা দূর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এরই মধ্যে অনেকে অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েছে। পেশাদার সমাজকর্মী রিপন মনে করে শুধু ত্রাণ বিতরণ নয়, এসব মানুষের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।

ক. NASW-এর পূর্ণ অর্থ লিখ।
খ. সমাজকর্মকে সক্ষমকারী প্রক্রিয়া বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকে সমাজকর্মী রিপনের মনোভাবে সমাজকর্মের কোন বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়েছে? বুঝিয়ে লিখ।
ঘ. উদ্দীপকের সমাজকর্মী রিপনের মনোভাবে সমাজকর্মের সার্বিক বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেনি- মন্তব্যটির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ কর।

১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. NASW এর পূর্ণ অর্থ হলো National Association of Social Workers.

খ. ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যা সমাধানে সহায়তার মাধ্যমে তাদের সমস্যা মোকাবিলায় সক্ষম করে তোলে বলে সমাজকর্মকে সক্ষমকারী প্রক্রিয়া বলা হয়।
সমাজকর্ম বর্তমান বিশ্বে একটি মানবসেবামূলক সাহায্যকারী পেশা হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত। এটি ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যা সমাধানে এমনভাবে সহায়তা করে যেন তারা নিজেদের সমস্যা নিজেরাই মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়। এজন্যই এটি সক্ষমকারী প্রক্রিয়া হিসেবে পরিচিত।

গ. সমাজকর্মী রিপনের মনোভাবে সমাজকর্মের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য সমস্যা সমাধানে প্রতিকার, প্রতিরোধ ও উন্নয়নমূলক সেবা প্রদানের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
সমাজকর্ম বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিনির্ভর একটি সাহায্যকারী পেশা। এটি ব্যক্তি, দল এবং সমষ্টির সামাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতার উন্নয়ন ঘটিয়ে পরিবেশের সাথে তাদের সামঞ্জস্য বিধানে সহায়তা করে। সমাজকর্ম সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বিশ্বাস করে। আর এ বিশ্বাসেরই প্রতিফলন ঘটেছে জনাব রিপনের মনোভাবে।
ধরা যাক, একজন সমাজকর্মী মনে করেন, আইলা দুর্গত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জনসমষ্টিকে চিহ্নিত করে তাদের সমস্যার ধরন নির্ণয় করে সে অনুযায়ী স্থায়ী সেবা প্রদান করলে তারা বেশি উপকৃত হবেন। তার এ ধারণাটি সমাজকর্মের প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ সমাজকর্ম সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে এর কারণ, প্রকৃতি, প্রভাব প্রভৃতি সম্পর্কে অনুসন্ধান করে, যাতে ঐ সমস্যাটি পুনরায় সৃষ্টি হতে না পারে। অর্থাৎ সমাজকর্ম প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এরপর প্রতিরোধ এবং সবশেষে সমস্যার সাথে জনগণের সামঞ্জস্য বিধান অর্থাৎ উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। উদ্দীপকের রিপনও একইভাবে বিশ্বাস করে, শুধু ত্রাণ কার্যক্রমের মাধ্যমে আইলা দুর্গতদের সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন দুর্যোগ পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা, প্রতিকারমূলক বিধান গ্রহণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য সমস্যার স্থায়ী সমাধান। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, রিপনের মনোভাব সমাজকর্মের প্রতিকার, প্রতিরোধ এবং উন্নয়নমূলক সেবা কার্যক্রমকেই প্রতিফলিত করে।

ঘ. সমাজকর্মের বৃহত্তর পরিধির ক্ষুদ্র অংশ উদ্দীপকে প্রকাশ পাওয়ায় প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি সঠিক ও যথার্থ।
প্রকৃতপক্ষে সমাজকর্ম গোটা সমাজকে নিয়ে অনুসন্ধান করে। কারণ সমাজের সার্বিক কল্যাণ সাধনই এর প্রধান উদ্দেশ্য। সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ যাতে সুখী, সমৃদ্ধ জীবনযাপন করতে পারে, সেই লক্ষ্যে সমাজকর্ম আর্থ-সামাজিক সমস্যার কার্যকর মোকাবিলায় উদ্যোগ গ্রহণ করে। সমাজকর্মের এ বৃহত্তর কর্মসূচির প্রয়োগক্ষেত্র গোটা সমাজ, যার একটি খণ্ডাংশ উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে।
উদ্দীপকে সমাজকর্মের প্রয়োগক্ষেত্র হিসেবে বেকার যুবকদের আত্মনির্ভরশীল করা ও তাদের অপরাধ সংশোধন করা এবং মানুষের মৌল মানবিক চাহিদা পূরণের ইঙ্গিত রয়েছে। কিন্তু সমাজকর্ম শুধু মৌল মানবিক চাহিদা পূরণই নয়, সকল জনগোষ্ঠীর সামাজিক, অর্থনৈতিক, আবেগীয়, মানসিক প্রভৃতি দিকেরও কল্যাণ সাধনের প্রচেষ্টা চালায়। সমাজের সার্বিক কল্যাণে প্রতিকারমূলক কর্মসূচি হিসেবে অপরাধ সংশোধনের পাশাপাশি অক্ষম ও পঙ্গুদের পুনর্বাসন, ভিক্ষুক পুনর্বাসন, মুক্ত কয়েদি পুনর্বাসন প্রভৃতি ক্ষেত্রে কল্যাণ অর্জনের প্রচেষ্টা চালায় সমাজকর্ম। এছাড়া শিক্ষা ও সচেতনতা, গ্রামীণ সমাজসেবা, পরিবার ও শিশুকল্যাণ, বিদ্যালয় সমাজকর্ম, শ্রমকল্যাণ, দুস্থ মহিলাদের বৃত্তিমূলক শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন প্রভৃতি কার্যক্রমও সমাজকর্মের আওতাভুক্ত।
সমাজকাঠামোতে পরিকল্পিত ও গঠনমূলক পরিবর্তন আনয়নে সমাজকর্ম উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করে। এছাড়া সমস্যার মূলোৎপাটনে সমাজকর্ম গবেষণা, সামাজিক কার্যক্রম প্রভৃতি বিষয়ের সাহায্য নেয়, যা সমাজকর্মের আলোচনার বিষয়।
সার্বিক আলোচনায় এটি স্পষ্ট যে, মানবসমাজের প্রতিটি দিকই সমাজকর্মের আলোচনার বিষয়। সমাজকর্মের আলোচনার এই বৃহত্তর ক্ষেত্রের সামান্যতমই উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি সমাজকর্মের বৃহত্তর পরিধির একটি খণ্ডাংশ মাত্র।

প্রকৃতি এবং পরিধি’র সৃজনশীল

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : নাজনীন দেশের একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি পুলিশ তাকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করে। অপরাধচক্রের সদস্য নাজনীন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে জানায়, সে বিভিন্ন সময় শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে এবং কৌশলে সাধারণ কোনো ব্যক্তিকে তার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। এক পর্যায়ে কৌশলে সে তাকে তার ব্যক্তিগত গাড়ির সহযাত্রী হতে প্রলুদ্ধ করে এবং তাকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাত্রা করে। এখানেই শেষ নয়, নাজনীনের নিত্যনতুন কৌশলের ফাঁদে পড়ে তার সহযাত্রী সর্বস্ব বিসর্জন দেন।

ক. সামাজিক কার্যক্রম কী?
খ. সমাজকর্মকে সাহায্যকারী পেশা বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের অনুরূপ সমস্যা মোকাবিলায় সমাজকর্মের পরিধিভুক্ত জ্ঞান কীভাবে সহায়তা করতে পারে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উল্লিখিত’ প্রেক্ষাপটটি সমাজকর্মের কার্যক্রমের কোন দিকটিকে প্রতিফলিত করে? বিশ্লেষণ কর।

২ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. সামাজিক কার্যক্রম হলো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য সুসংগঠিত দলীয় প্রচেষ্টা।

খ. ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যা সমাধানে সাহায্য প্রদান করে বলে সমাজকর্মকে সাহায্যকারী পেশা বলা হয়।। সমাজকর্ম বর্তমান বিশ্বে একটি মানবসেবামূলক সাহায্যকারী পেশা হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত। এটি ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যা সমাধানে এমনভাবে সহায়তা করে যেন তারা নিজেদের সমস্যা নিজেরাই মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়। পেশাগত কাঠামোর মধ্যে থেকে সমাজকর্ম সমস্যা সমাধানে এরূপ সহায়তা দিয়ে থাকে। এজন্যই এটি সাহায্যকারী পেশা হিসেবে পরিচিত।

গ. উদ্দীপকের অনুরূপ সমস্যা মোকাবিলায় সমাজকর্মের পরিধিভুক্ত জ্ঞান মানুষের সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ জীবন গঠনে সহায়তা করতে পারে।
সমাজকর্মের পরিধির মধ্যে ব্যক্তি সমাজকর্ম, দল সমাজকর্ম ও সমষ্টি সমাজকর্মের পদ্ধতির জ্ঞান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের সামগ্রিক সমস্যা সমাধান করে সামাজিক ভূমিকা পালনে সক্ষম করে তুলতে এসব পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
উদ্দীপকের সমস্যাটির প্রেক্ষিতে বলা যায়, এটি সমষ্টি পর্যায়ের একটি সমস্যা। এখানে নারীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার চিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে। তারা অপরাধচক্রের অন্য সদস্যদের সাথে যুক্ত হয়ে সাধারণ লোকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে। নারীদের সহজে কেউ অবিশ্বাস না করায় অনেকেই সরল বিশ্বাসে গাড়িতে উঠে প্রতারণার শিকার হয় এবং পরে সর্বস্ব হারায়। এ ধরনের সমস্যায় নিপতিত হওয়ায় উদ্দীপকের জনসমষ্টির সমস্যা সমাধানে সমাজকর্মের পরিধিভুক্ত সমষ্টি সমাজকর্ম পদ্ধতি প্রয়োগ করে। সমস্যার সমাধান করা যায়। কেননা, সমাজকর্মের পরিধিভুক্ত জ্ঞানই সমাজের মানুষের সন্তোষজনক জীবনমান রক্ষায় সাহায্য করে। এর পাশাপাশি ব্যক্তি, দলীয় ও সমষ্টি পর্যায়ে সমস্যার অনুসন্ধান করে তা সমাধানের মাধ্যমে ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করতেও সমাজকর্মের পরিধিভুক্ত জ্ঞান সাহায্য করে। তাই উদ্দীপকের সমষ্টির সমস্যা সমাধানে সমষ্টি সমাজকর্মের পদ্ধতি প্রয়োগ করে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সফল হওয়া যায়।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রেক্ষাপটটি সমাজকর্মের কার্যক্রমের ব্যর্থতার দিককেই প্রতিফলিত করে।
সমাজকর্মের পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক সমাজের কল্যাণে সমাজকর্ম নানাভাবে জ্ঞান প্রয়োগ করে সহায়তা করে। ব্যক্তি, দল ও সমষ্টি পর্যায়ে সমাজকর্মের সংশ্লিষ্ট পদ্ধতিসমূহ প্রয়োগ করে সমস্যা সমাধান করা যায়। এক্ষেত্রে সমাজকর্মের জ্ঞান সম্পর্কে অবহিত সমাজকর্মী ব্যক্তি, দল ও সমষ্টি পর্যায়ের কল্যাণে সমাজকর্মের পরিধিভুক্ত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে জনগণকে সচেতন করে তাদের কল্যাণ করতে পারে। ফলে সমাজের অনভিপ্রেত অবস্থা দূরীভূত হয়।
উদ্দীপকের পরিস্থিতি ভিন্ন চিত্রের ইঙ্গিত দেয়। এখানে সামাজিক সমস্যার একটি দিক উপস্থাপন করা হয়েছে। সেখানে নারীদের ক্রমশ অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। সমাজকর্মের জ্ঞান প্রয়োগ করা হলে এ সমস্যা সৃষ্টির প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করার পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টিরও প্রয়াস চালানো যেত। এর ফলে মানুষের ভোগান্তি কমানো যেত এবং এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতো না। কিন্তু সমাজকর্মের জ্ঞানের অভাবেই উদ্দীপকে আলোচিত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সমাজকর্মের পরিধিভুক্ত জ্ঞানের ব্যর্থতাই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। এ কারণেই জনসমষ্টির সন্তোষজনক জীবনমান রক্ষা সম্ভব হয়নি। সমাজের সকল স্তরে সমাজকর্মের কার্যক্রম বিস্তৃত থাকলেও উদ্দীপকের ঘটনার প্রেক্ষিতে এর অনুপস্থিতিই লক্ষণীয়।
উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সামাজিক সমস্যার দৃশ্যপট সমাজকর্মের কার্যক্রমের ব্যর্থতার দিককেই প্রতিফলিত করে।

সমাজকর্ম: প্রকৃতি এবং পরিধি’র সৃজনশীল

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : আল মামুন উচ্চ শিক্ষিত যুবক। তিনি নিজ এলাকার গ্রামীণ পরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করতে চান। তিনি এ লক্ষ্যে তার এলাকার ওপর একটি জরিপ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। জরিপ গবেষণার ফলাফলে তিনি লক্ষ করেন নিরক্ষরতা ও সম্পদের অপ্রতুলতা এলাকার উন্নয়নের মূল প্রতিবন্ধকতা। তিনি এ সমস্যা উত্তরণে একজন পেশাদার সমাজকর্মীর সাথে পরামর্শ করে একটি সমাধান পরিকল্পনা করেন।

ক. সমাজকর্ম ধারণার ওপর একজন সমাজবিজ্ঞানী প্রদত্ত সংজ্ঞ লিখ।
খ. সমাজকর্মের একটি লক্ষ্য ব্যাখ্যা করো।
গ. আল মামুন তার নিজ এলাকার সমস্যা উত্তরণে সমাজকর্মের কোন ক্ষেত্রসমূহ বিবেচনায় রেখে পরিকল্পনা করতে পারেন? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. আল মামুনের জরিপ গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের প্রতিবন্ধকতা উত্তরণে সমাজকর্ম শিক্ষার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করো।

৩নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ডব্লিউ এ ফ্রিডল্যান্ডার সমাজকর্মের সংজ্ঞায় বলেন, ‘সমাজকর্ম বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও মানবিক সম্পর্ক বিষয়ক দক্ষতাসম্পন্ন এমন একটি পেশাদার সেবাকর্ম যা ব্যক্তিকে একক বা দলীয়ভাবে সামাজিক ও ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি ও স্বাধীনতা লাভে সহায়তা করে’।

খ. সমাজকর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সামগ্রিক কল্যাণ সাধন করা।
সমাজকর্ম একটি সাহায্যকারী প্রক্রিয়া। এটি সাহায্যাথী তথা ব্যক্তি, দল বা সমষ্টির সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে। সেই সাথে দৈহিক, মানসিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক দিয়ে সাহায্যার্থীকে মঙ্গলজনক অবস্থানে নিয়ে যেতে সর্বতোভাবে সহায়তা করে। অর্থাৎ সমাজকর্মের মূল লক্ষ্যই হলো মানুষের সার্বিক কল্যাণ সাধন। আর এ লক্ষ্য অর্জন করতে সমাজকর্ম নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে।

গ. আল মামুন তার নিজ এলাকার সমস্যা উত্তরণে সমাজকল্যাণ কর্মসূচি বিবেচনায় রেখে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারেন।
সমাজকল্যাণ কর্মসূচি প্রণয়নের মাধ্যমে আমাদের সমাজে বিদ্যমান বহুমুখী জটিল সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব। এক্ষেত্রে এসব কর্মসূচি আমাদের বৃহত্তর সমাজে বসবাসরত মানুষের মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির সাথে সংগতিপূর্ণ হওয়া যৌক্তিক। আর এ বিষয়গুলো সমাজকর্মের পরিধিভুক্ত। সমাজে বিদ্যমান মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতির মধ্যে বিদ্যমান দ্বন্দ্ব ও মিথস্ক্রিয়ার কারণে বহুমুখী সমস্যার সৃষ্টি হয়। এসব সমস্যা সমাধানে সামাজিক নীতিকে জনগণের জন্য সেবা উপযোগী করে তুলতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হয়। আর এসব কর্মসূচিই হলো সমাজকল্যাণ কর্মসূচি।
উদ্দীপকে দেখা যায়, আল মামুন নিজ এলাকায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে চান। তার এলাকার প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো নিরক্ষরতা ও সম্পদের অপ্রতুলতা। এক্ষেত্রে আল মামুন সমাজকল্যাগের বিভিন্ন কর্মসূচি যেমন গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত বৃত্তিমূলক ও আয় বৃদ্ধিমূলক সুদমুক্ত ঋণ কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেন। এছাড়া দক্ষ কর্মী তৈরির মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে পারেন। এছাড়াও সমবায় কৃষি উন্নয়ন, বয়স্ক ও সামাজিক শিক্ষামূলক ক্ষেত্রভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে নিজ এলাকার সমস্যা উত্তরণে ভূমিকা রাখতে পারেন।

ঘ. আল মামুনের জরিপ গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের প্রতিবন্ধকতা উত্তরণে সমাজকর্ম শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।
সমাজকর্ম সমাজের নানাবিধ আর্থ-সামাজিক সমস্যা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আল মামুনের এলাকায় উন্নয়নের মূল প্রতিবন্ধকতা হিসেবে নিরক্ষরতা ও সীমিত সম্পদের দিকটি উঠে এসেছে। এক্ষেত্রে সমাজকর্মের মৌলিক শিক্ষার প্রয়োগ সমস্যা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সমাজকর্ম সমাজে বসবাসরত মানুষের আচরণ, সামাজিক নীতি, মূল্যবোধ, সংস্কৃতি, সামাজিক সমস্যার কারণ, প্রভাব, ব্যাপ্তি ও পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্কের উন্নয়ন প্রভৃতি নিয়ে গবেষণা করে। সমাজে বহুমুখী সমস্যা বিদ্যমান। এসব সমস্যার প্রকৃতি বিস্তৃতি সম্পর্কে গভীর তথ্য অনুসন্ধানের জন্য সমাজকর্ম গবেষণার জ্ঞান অপরিহার্য। সমাজকর্ম তাত্ত্বিক জ্ঞান বাস্তবে প্রয়োগ করে মানুষের সর্বাধিক কল্যাণ সাধনের চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা যাতে দেশের জনগণের চাহিদাকেন্দ্রিক হয়, সমাজকর্ম সে বিষয়টিকে গুরুত্ব প্রদান করে।
সমাজ, সমাজের মানুষের চাহিদা, সামাজিক সমস্যা, সম্পদ এবং উন্নয়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকলে সুষ্ঠু সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন সম্ভব নয়। আর সমাজকর্মের মাধ্যমে আমরা এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জ্ঞাত হতে পারি। তাই আল মামুনের এলাকার সমস্যা উত্তরণে সমাজকর্মের শিক্ষা গ্রহণ করে এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব।

সমাজকর্ম: প্রকৃতি এবং পরিধি’র সৃজনশীল

সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : জনাব “X” ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত শিশু পরিবার (বালিকার) উপ-তত্ত্বাবধায়ক। তিনি তার প্রতিষ্ঠানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে এতিম মেয়েদের জন্য মৌল মানবিক চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি এসব শিশুদের সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কর্মমুখী শিক্ষা দিয়ে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলেন যা উন্নত জীবনের সহায়ক।

ক. সমাজকর্ম প্রত্যয়টির ইংরেজী প্রতিশব্দ কী?
খ. W. A. Friedlander প্রদত্ত সমাজকর্মের সংজ্ঞাটি লিখ।
গ. জনাব “X” এর প্রতিষ্ঠানে সমাজকর্মের কোন কোন বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন ঘটেছে—ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উক্ত বৈশিষ্ট্য সমাজের কল্যাণের জন্য যথেষ্ট নয়”-মূল্যায়ন করো।

৪নং প্রশ্নের উত্তর

ক. সমাজকর্ম প্রত্যয়টির ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো-Social Work.

খ. W. A. Friedlander সমাজকর্মের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, “সমাজকর্ম বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও মানবিক সম্পর্কবিষয়ক দক্ষতা সম্পন্ন এমন এক পেশাদার সেবাকর্ম, যা ব্যক্তিকে একক বা দলীয়ভাবে, ব্যক্তিগত ও সামাজিক সন্তুষ্টি অর্জনে সহায়তা করে”। তার এ সংজ্ঞার মাধ্যমে সমাজকর্মের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হয়েছে।

গ. জনাব “x” এর প্রতিষ্ঠানে সমাজকর্মের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিনির্ভর সাহায্যকারী ও সক্ষমকারী পেশার বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন ঘটেছে।
আধুনিক বিশ্বে সমাজকর্ম কল্যাণকামী পেশা হিসেবে স্বীকৃত। এটি একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নির্ভর সাহায্যকারী পেশা। যা ব্যক্তি, দল ও সমন্টির সামাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতার উন্নয়ন ঘটায়। সেই সাথে পরিবেশের সাথে সাহায্যাথীর সামঞ্জস্য বিধানে সহায়তা করে। সমাজকর্ম সাহায্যদানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বিশ্বাসী।
উদ্দীপকে জনাৰ “X” এর প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে সমাজকর্মের এসকল বৈশিষ্ট্যে প্রতিফলন লক্ষ করা যায়। জনাব “X” ময়মনসিংহ শিশু পরিবার বালিকার উপ-তত্ত্বাবধায়ক এবং তিনি তার প্রতিষ্ঠানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে এতিম মেয়েদের মৌল মানবিক চাহিদা পূরণ করে। পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষা ও কর্মসূচি শিক্ষা দিয়ে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলে। উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটির এ সব বৈশিষ্ট্য সমাজকর্মের উপরোল্লিখিত বৈশিষ্ট্যর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, জনাব “X” এর প্রতিষ্ঠানটির বৈশিষ্ট্য সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্যকেই নির্দেশ করে।

ঘ. হ্যা, সমাজের কল্যাণের জন্য উদ্দীপকে উল্লিখিত বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ সমাজকর্মের বৈশিষ্ট্য যথেষ্ট নয়।
সমাজকর্ম একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নির্ভর সাহায্যকারী পেশা। সমাজ থেকে যেকোনো ধরনের অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি দূরীকরণে গঠনমূলক পরিবেশ সৃষ্টি করা সমাজকর্মের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এ ছাড়া সমাজকর্মের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো সংগঠিত ও পরিকল্পিত উপায়ে সমাজের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা করা। সমাজকর্ম মানবকল্যাণে বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা নির্ভর সেবাকর্ম প্রদান করে। পাশাপাশি এর অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য হলো এটি একটি বহুমাত্রিক পেশা। সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিকে সামাজিক পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য বহুমুখী সমাজকর্মীকে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। সেই সাথে তাকে সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তি বা দলের নিজস্ব সম্পদের সদ্ব্যবহারের প্রতিও গুরুত্ব দিতে হয়।
উদ্দীপকের জনাব “X” একটি শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক। এতিম মেয়েদের জন্য মৌল মানবিক চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি সাধারণ কর্মমুখী শিক্ষা দিয়ে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলেন। কিন্তু বৈশিষ্ট্যগতভাবে সমাজকর্ম শুধুমাত্র মৌল মানবিক চাহিদা ও কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে না। ব্যক্তি, দল বা সমষ্টির সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানসিক, আবেগীয়সহ বিভিন্ন দিকের কল্যাণে সমাজকর্মের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
সামগ্রিক আলোচনা শেষে বলা যায়, উদ্দীপকে উল্লিখিত বৈশিষ্ট্য সমাজের কল্যাণের জন্য যথেষ্ট নয়।

সমাজকর্ম: প্রকৃতি এবং পরিধি’র সৃজনশীল

সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : সুমন সাহেব এমন একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, যে প্রতিষ্ঠানটি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত লোকদের নিয়ে কাজ করেন। যারা এর সুবিধাভোগী তাদের মধ্যে কেউ কেউ হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর। কেউ আবার তাদের ন্যূনতম চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারছে না তাদের রয়েছে নানা সামাজিক সমস্যা। প্রতিষ্ঠানটি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজও করে থাকে।

ক. Introduction to Social Welfare গ্রন্থটি কার লেখা?
খ. সমাজকর্ম একটি ব্যবহারিক বিজ্ঞান ব্যাখ্যা করো।
গ. সুমন সাহেবের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের মধ্যে সমাজকর্মের যে উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হয় তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সুমন সাহেবের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের মধ্যে সমাজকর্মের সকল লক্ষ্য অর্জন হয়েছে কি? তোমার মতামত দাও।

৫নং প্রশ্নের উত্তর

ক. Introduction to Social Welfare গ্রন্থটির লেখক ওয়াল্টার এ ফ্রিডল্যান্ডার।

খ. সমাজকর্ম হচ্ছে সমস্যা সমাধানের আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক ও সেবামূলক ব্যবহারিক বিজ্ঞান।
সমাজকর্ম মানুষকে মনো-সামাজিক ভূমিকা পালনে একটি কার্যকর পর্যায়ে উপনীত করে সেইসাথে এটি মানুষের কল্যাণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে অর্থবহ সামাজিক পরিবর্তন আনয়নে সহায়তা করে। সমাজকর্ম মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োগিক জ্ঞান, কৌশল ও পদ্ধতি প্রয়োগ করে। ফলে সমাজকর্মকে ব্যবহারিক বিজ্ঞান হিসেবে অভিহিত করা হয়।

গ. সুমন সাহেবের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের মধ্যে সমাজকর্মের অন্যতম উদ্দেশ্য দুস্থ ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধিতে সাহায্য করার প্রতিফলন দেখা যায়।
সমাজকর্ম দারিদ্র্য বিমোচন করে সামাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতার উন্নয়ন ঘটাতে সাহায্য করে। সমাজের মানুষকে শারীরিক ও মানবীয় দক্ষতা বৃদ্ধি করে সীমিত সম্পদের দ্বারা অসীম অভাব পূরণে সক্ষম করে তোলে সমাজকর্ম। এটি সামাজিক ভূমিকার বিশেষ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনয়নে পেশাগত সাহায্য প্রদান করে। অর্থাৎ সমাজকর্মের অন্যতম উদ্দেশ্য মানুষের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও মানবীয় সম্পদের উন্নয়ন।
উদ্দীপকে সুমন সাহেবের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের মধ্যে দেখা যায় যে, প্রতিষ্ঠানটি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত লোকদের নিয়ে কাজ করে। এদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যারা হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর। এদের অনেকে নিজেদের নূন্যতম চাহিদা পূরণে অক্ষম। এধরনের জনগণকে সাহায্য করতে প্রতিষ্ঠানটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে মানবীয় দক্ষতা বৃদ্ধিতেও কাজ করে থাকে। আমরা জানি, সমাজকর্মেরও অন্যতম উদ্দেশ্য হলো সকল স্তরের জনগণের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি। উদ্দীপকে সমাজকর্মের এই অন্যতম উদ্দেশ্যটি প্রতিফলিত হয়েছে।

ঘ. হ্যা, উদ্দীপকে উল্লিখিত সুমন সাহেবের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের মধ্যে সমাজকর্মের সব লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। বরং কয়েকটি লক্ষ্যের প্রতিফলন ঘটেছে মাত্র।
সমাজে পরিকল্পিত ও গঠনমূলক পরিবর্তন আনয়নের লক্ষ্যে সমাজকর্ম কাজ করে। সেই সাথে সামাজিক বিভিন্ন অবাঞ্ছিত সমস্যা দূর করে কাঙ্ক্ষিত। পরিবর্তনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে সমাজকর্ম কাজ করে। এছাড়াও সমাজের দুস্থ, অসহায় মানবগোষ্ঠী এবং আর্থ-সামাজিক জীবনে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় জীবনযাপনকৃত জনগণের কল্যাণ সমাজকর্মের অন্যতম লক্ষ্য। যার প্রতিফলন উদ্দীপকের সুমন সাহেবের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে রয়েছে।
জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ, গ্রাম ও শহর পুনর্বাসনমূলক প্রভৃতি কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব সৃষ্টি ও মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে সমাজকর্ম ব্যক্তির সুপ্ত ক্ষমতা ও প্রতিভার বিকাশ সাধনের উদ্দেশ্যে কাজ করে। উদ্দীপকেও দেখা যায়, সুমন সাহেবের চাকরির প্রতিষ্ঠানটি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত লোকদের নিয়ে কাজ করে। এদের মাঝে হতদরিদ্র জনগণ যেমন আছেন, তেমনি বিভিন্ন সামাজিক সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিও আছেন। প্রতিষ্ঠানটি তাদের কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে, যা সমাজকর্মের অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
সার্বিক আলোচনা থেকে বলা যায়, সমাজকর্মের বিস্তৃত লক্ষ্যের একাংশ অর্থাৎ সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করার চিত্র উদ্দীপকে উঠে এসেছে, যা সমাজকর্মের সকল লক্ষ্য অর্জনের ইঙ্গিত দেয় না।

Leave a Comment