অনুচ্ছেদ: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বা শহিদ দিবস বা একুশে ফেব্রুয়ারি

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
বা, শহিদ দিবস
বা, একুশে ফেব্রুয়ারি

‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ বাঙালি জাতিসত্তার ইতিহাসে অত্যন্ত স্মরণীয় ও মর্যাদাপূর্ণ দিবস। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতি মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার্থে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করেছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে অন্য কোনো জাতি তাদের ভাষা রক্ষার জন্য এভাবে আত্মদান করেনি। এদিন ভাষাকে কেন্দ্র করে বাংলার বীর সন্তানেরা যে রক্তবীজ বপন করেছিল, তারই সফল পরিণতি হলো একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। আর তাই মাতৃভাষা বাংলা আর স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ যেন বাঙালির অস্তিত্বের সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা। বাঙালির এই অর্জনকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদ ২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাঙালি জাতির জন্য এ এক বিরাট গৌরব। এর ফলে একদিকে যেমন সারাবিশ্বের মানুষ জানতে পারবে বাংলাদেশ নামে একটি দেশের কথা, বাঙালি জাতি ও বাংলা ভাষার কথা, তেমনি অন্যদিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মাতৃভাষাও মর্যাদা লাভের পথ খুঁজে পাবে। আর এভাবে ভাষার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ এক বিরাট ভূমিকা পালন করবে। ২০০০ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। কারণ এদিন থেকেই বিশ্বব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে। আজ আমরা গর্ব করে বলতে পারি, পৃথিবীতে একমাত্র জাতি হিসেবে আমরাই মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছি। সেই রক্তদানের গৌরব বৃথা যায়নি। বিশ্ববাসী স্বীকৃতি দিয়েছে আমাদের মাতৃভাষাকে, সম্মান জানিয়েছে আমাদের আত্মত্যাগকে। একুশে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি লাভের পাশাপাশি বাংলাদেশের গুরুত্বও বৃদ্ধি পেয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। এই দিবসটি পালনের মাধ্যমে বিশ্ববাসী অনুভব করতে সক্ষম হবে মাতৃভাষা একটি দেশের জাতিসত্তার প্রধান বিবেচ্য বিষয়। তাই যখনই তাদের মাতৃভাষার ওপর কোনো আঘাত আসবে, তখনই তারা আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে উঠবে তাদের মাতৃভাষা রক্ষার জন্য। একই সাথে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের নাম।

পড়ুন → বিশ্ববিদ্যালয়
পড়ুন → বৈশাখী মেলা

Leave a Comment