(সমাজকর্ম-১ম) এইচএসসি: সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা এবং সমাজকর্ম’র সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা এবং সমাজকর্ম হচ্ছে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণী অর্থাৎ এইচএসসি’র সমাজকর্ম ১ম পত্রের সপ্তম অধ্যায়। সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা এবং সমাজকর্ম অধ্যায় থেকে বাছাইকৃত সেরা ৫টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা এবং সমাজকর্ম সৃজনশীল

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : সরকার জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ কে ভিত্তি ধরে ২০২১ সালের মধ্যে সাক্ষরতার হার ১০০% করার বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বরিশালের পলাশপুর বস্তিতে সাক্ষরতার হার খুবই নিম্ন। সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য বরিশালের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিশেষ কিছু পরিকল্পনা ও কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

ক. শিল্পবিপ্লবের ব্যাপ্তিকাল কত?
খ. অশিক্ষাজনিত কারণে পলাশপুর বস্তিতে কোন কোন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে?
গ. সাক্ষরতার হার ১০০% করার লক্ষ্যে সরকার কোন কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নীতি প্রণয়ন করবে?
ঘ. বরিশাল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা যে বিশেষ পরিকল্পনা ও কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তা বাস্তবায়নে একজন সমাজকর্মী কীভাবে সহায়তা করতে পারে?

১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. শিল্পবিপ্লবের ব্যাপ্তিকাল অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত।

খ. অশিক্ষা সমাজে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে।
অশিক্ষিত মানুষ জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল সম্পর্কে সচেতন নয়। এ কারণে পলাশপুর বস্তিতে জনসংখ্যা সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। অশিক্ষা দারিদ্র্য সৃষ্টির অন্যতম কারণ। অশিক্ষার কারণে পলাশপুরে দারিদ্র্য দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি সেখানে বেকারত্ব সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এই বেকারত্ব আবার নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত করতে পারে। অশিক্ষিত জনগোষ্ঠী পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ সম্পর্কে সচেতন থাকে না। যার ফলে পলাশপুরে অপুষ্টি সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

গ. সাক্ষরতার হার ১০০% করার লক্ষ্যে সরকার সামাজিক নীতি প্রণয়নের প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করবে।
সামাজিক নীতির মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। তাই সামগ্রিকভাবে প্রাসঙ্গিক সকল দিক বিবেচনায় এনে জনগণের প্রয়োজন ও প্রত্যাশার সাথে সঙ্গতি রেখে সামাজিক নীতি প্রণয়ন করতে হয়।
উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকার জাতীয় শিক্ষানীতির আওতায় ২০২১ সালের মধ্যে সাক্ষরতা হার ১০০% করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই পরিকল্পনা সঠিকভারের বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নীতি নির্ধারণ করতে হবে। এজন্য সরকার প্রথমেই নীতি প্রণয়নের যৌক্তিক প্রয়োজন নির্ধারণ করবে। পরবর্তী ধাপে নীতি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর সরকার খসড়া নীতি প্রণয়নের সার্বিক দায়িত্ব পালনের জন্য একটি কমিটি গঠন করবে। কমিটি নীতিটির নির্ধারিত ক্ষেত্রের বিভিন্ন দিক পর্যবেক্ষণ, অনুসন্ধান ও গবেষণার মাধ্যমে বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করবে। পরবর্তীধাপে নীতি প্রণয়ন কমিটি গৃহীত মতামতের ওপর ভিত্তি করে একটি খসড়া নীতি উপস্থাপন করবে। খসড়া নীতি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন করতে হবে।
কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নীতিটি অনুমোদন করবে। পরবর্তী ধাপে খসড়া নীতি বাস্তবায়নে জনগণের সমর্থন ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এরপর সরকার খসড়া নীতি পরীক্ষামূলকভাবে অনুশীলনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। সর্বশেষ ধাপে সরকার পরীক্ষামূলক অনুশীলনের ফলে প্রাপ্ত নীতির অনুমোদন করবে। এসকল ধাপগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করে সরকার উদ্দীপকে উল্লিখিত নীতিটি প্রণয়ন করবে। সামাজিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একজন সমাজকর্মী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

ঘ. সামাজিক পরিকল্পনা জনকল্যাণ ও সামাজিক উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট।
একজন সমাজকর্মী তার জ্ঞান, দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রয়োগ করে সামাজিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নকে অধিক ফলপ্রসূ করে তোলেন।
উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে সাক্ষরতার হার ১০০% করার বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বরিশালের পলাশপুর বস্তিতে সাক্ষরতার হার খুবই নিম্ন। সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য বরিশালের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিশেষ কিছু পরিকল্পনা ও কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এই পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নে একজন সমাজকর্মী বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে পারেন। এক্ষেত্রে সমাজকর্মী সামাজিক গবেষণার পদ্ধতি ও কৌশল প্রয়োগ করে বাস্তবভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করতে পারেন। এ ধরনের বিশ্লেষণ পরিকল্পনাকে অধিক কার্যকরী করে তুলবে। এছাড়া অগ্রাধিকারভিত্তিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণপূর্বক পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় সম্পদের ব্যবস্থা করতে পারেন। এক্ষেত্রে সমাজকর্মী পরিকল্পনায় সম্পদ সংস্থানের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে সাহায্য করবেন। সেই সাথে পরিকল্পনার একাধিক বা বিকল্প কার্যধারা চিহ্নিত করতে সুনির্দিষ্ট কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করবেন। পরবর্তীতে সামাজিক বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ রেখে বাছাইকৃত বিভিন্ন বিকল্প কর্মকাণ্ডে সুবিধা-অসুবিধা মূল্যায়ন ও বিশ্লেষণে একজন সমাজকর্মী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। জনগণকে উদ্ভ পরিকল্পনার বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ, সচেতনতা বৃদ্ধি করে সমাজকর্মী পরিকল্পনা বাস্তবায়নকে সফল করতে পারেন। পরিকল্পনাটির প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বা সংশোধনের দরকার হলে সমাজকর্মী তা সরকার ও প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করবেন। এর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হাতে নিবেন।
পরিশেষে বলা যায়, কর্মসূচির বাস্তবায়নের মধ্যে পরিকল্পনার সার্থকতা নিহিত। এক্ষেত্রে সমাজকর্মী একজন সক্রিয় সদস্য হিসবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : বর্তমানে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের কাতারে পৌঁছে গেছে। বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের জন্য বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা করছে। এক্ষেত্রে তাদের সামনে কিছু বাধাও আসছে। যেমন- অতিরিক্ত জনসংখ্যা, দ্রুত সামাজিক পরিবর্তন, সঞ্চয়ের অভাব, বিদেশি সাহায্যের উপর নির্ভরশীলতা, জলবায়ু পরিবর্তন, কর্মসংস্থানের অভাব, নির্ভরশীল জনসংখ্যা ইত্যাদি।

ক. নীতি কী?
খ. সামাজিক নীতির বৈশিষ্ট্য লিখ।
গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশ সরকার কোন ধরনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে? এর শ্রেণিবিভাগ লিখ।
ঘ. বাংলাদেশের উন্নয়নে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বাধাগুলো চিহ্নিত করে ব্যাখ্যা করো।

২ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. নীতি হলো কোনো লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের পথ নির্দেশিকা।

খ. সামাজিক নীতি একটি বুদ্ধিজাত প্রক্রিয়া; যার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
সামাজিক নীতির বৈশিষ্ট্য হলো এটি সাধারণত মানবীয় প্রয়োজন ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে সমাজের জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট। সামাজিক নীতি বাস্তব তথ্যনির্ভর, উন্নয়নের মাইলফলক, যৌক্তিক ও ন্যায় সংগত এবং কমুর্সচি বাস্তবায়নের প্রদর্শক। এজন্য সামাজিক নীতিকে সামাজিক উন্নয়নের অনুসরণীয় আদর্শ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

গ. উদ্দীপকে বাংলাদশে সরকার সামাজিক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, যার বিভিন্ন শ্রেণিবিভাগ বিদ্যমান।
বাংলাদেশে যে সকল পরিকল্পনাগুলো গৃহীত হয় সেগুলা মূলত উন্নয়নমূলক বা কল্যাণমূলক পরিকল্পনা। সামাজিক পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বার্ষিক পরিকল্পনা, গণবার্ষিক পরিকল্পনা ও প্রেক্ষিত পরিকল্পনা। এ পরিকল্পনাগুলো সময়ের ভিত্তিতে বা বিশেষ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে প্রণয়ন করা হয়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ায় ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছে। এ ধরনের পরিকল্পনার নানা শ্রেণিবিভাগ বিদ্যমান। যে পরিকল্পনা ১ বছর বা এর চেয়ে কম সময়ের জন্য প্রণীত হয় তা বার্ষিক পরিকল্পনা। বার্ষিক পরিকল্পনার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো বাজেট। আবার সাধারণত পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনাকে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বলা হয়। এ পরিকল্পনাগুলোকে সরকারের যেকোনো আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মূল চালিকাশক্তি বলা হয়। অন্য একটি পরিকল্পনা হচ্ছে প্রেক্ষিত বা স্থায়ী পরিকল্পনা। এ ধরনের পরিকল্পনা সাধারণত ১০ থেকে ২০ বছর মেয়াদি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ভিশন ২০২১ একটি প্রেক্ষিত তা স্থায়ী পরিকল্পনার উদাহরণ। উক্ত পরিকল্পনাগুলো যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে উদ্দীপকে নির্দেশিত বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে।

ঘ. বাংলাদেশের উন্নয়নে বিভিন্ন সামাজিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে অতিরিক্ত জনসংখ্যা, মূলধনের প্রভাব, বেকারত্ব প্রভৃতিসহ নানা প্রতিবন্ধকতা লক্ষ করা যায়।
বাংলাদেশের সামাজিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বহুমুখী সমস্যা দেখা যায়। যেমন— যেকোনো সামাজিক পরিকল্পনা ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের পূর্বশর্ত হলো জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা। এজন্য প্রয়োজন ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, জনগণের অনুভূত প্রয়োজনগুলো বিবেচনা না করে পরিকল্পনা ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এক্ষেত্রে জনগণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা না করে বিপক্ষ শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখে। ফলে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়। সামাজিক পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে সমাজের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা, রীতিনীতি, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করতে হয়। এগুলোর ঘাটতির কারণেও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাধার সৃষ্টি হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক জটিলতা, মনিটরিং ও যথাযথ তত্ত্বাবধানের দুর্বলতা, দাতা সংস্থার গাফিলতি ও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও কারিগরি সহায়তার অভাবেও বাংলাদেশের সামাজিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সমস্যা দেখা দেয়।
উদ্দীপকে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার পথে কিছু বাধাকে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশে অধিক জনসংখ্যা, মূলধনের অভাব, সঞ্চয়ের অভাব, বিদেশি সাহায্য নির্ভরতা, প্রবল বেকারত্ব প্রভৃতি সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পরিকল্পনা যথাযথভাবে বাস্তবায়নে সমস্যার সৃষ্টি করে। এছাড়া অজ্ঞ, নিরক্ষর, অসচেতন জনগোষ্ঠীর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বড় বাধা।
উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সামাজিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে সকল সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে, তা সরকার ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে দূর করে যথার্থ বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন সম্ভব।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : সাফির ইংরেজি ভার্সনের ছাত্র। সাফিরের স্কুলটি ভাড়া বাড়িতে ক্লাস করে। তাদের কোনো খেলার মাঠ নেই। শুধু পড়া আর পড়া। সাফির স্কুলে যেতে চায় না। তার মা-বাবা তাকে স্কুলে যাওয়ার জন্য চাপ দিলে সাফির অসুস্থ হয়ে যায়।

ক. মাধ্যমিক শিক্ষা কোন শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে?
খ. প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে সাফিরের স্কুলটি বর্তমান শিক্ষানীতির কোন বিষয়টি লঙ্ঘন করেছে? দেখাও।
ঘ. শিশুদের মেধার সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে উক্ত শিক্ষা নীতির আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে –কথাটির যথার্থতা বিশ্লেষণ করো।

৩ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. মাধ্যমিক শিক্ষা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।

খ. প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বলতে ১০-২০ বছর ব্যাপী দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক পরিকল্পনাকে বোঝায়।
দীর্ঘ সময় ধরে নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। প্রেক্ষিত পরিকল্পনার উদাহরণ হিসেবে ‘ভিশন-২০২১’ এর উল্লেখ করা যায়। ২০১০-২০২১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি এই পরিকল্পনায় দারিদ্র্য দূরীকরণ, অসমতা হ্রাস এবং সামাজিক বর্ণনা হতে জনগণকে রক্ষা করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

গ. উদ্দীপকে সাফিরের স্কুলটি বর্তমান শিক্ষানীতির অন্যতম আলোচিত বিষয় শিশুর সুরক্ষা ও যথাযথ বিকাশের আনন্দময় ও সৃজনশীল পরিবেশ গড়ে তোলার মধ্যে খেলাধুলা ও শরীরচর্চার ব্যবস্থা রাখা নীতিটি লঙ্ঘন করেছে।
মুখস্থ বিদ্যার পরিবর্তে বিকশিত চিন্তাশক্তি, কল্পনাশক্তি এবং অনুসন্ধিৎসু মননের অধিকারী হয়ে শিক্ষার্থীরা যাতে প্রতি স্তরে মানসম্পন্ন প্রান্তিক যোগ্যতা অর্জন করতে পারে তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এছাড়া শিক্ষার প্রত্যেক স্তরে যথাযথ মান নিশ্চিত করা এবং পূর্ববর্তী স্তরে অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতার ভিত দৃঢ় করে পরবর্তী স্তরের সাথে সমন্বয় করা প্রয়োজন। এগুলো সম্প্রসারণে সহায়তা করা এবং নবতর জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে শিক্ষার্থীদের মর্মার্থ করা শিক্ষানীতির উল্লেখযোগ্য বিষয়। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাঠ, ক্রীড়া, খেলাধুলা ও শরীরচর্চার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা।
উদ্দীপকে সাফিরের স্কুলটি ভাড়া বাড়িতে হওয়ায় সেখানে কোনো খেলার মাঠ নেই। পড়ার অতিরিক্ত চাপ সাফির অসুস্থ হওয়ার অন্যতম কারণ যা বর্তমান শিক্ষানীতির লঙ্ঘন।

ঘ. শিশুর মেধার সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে উক্ত শিক্ষানীতি অর্থাৎ জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে কথাটি যথার্থ।
জাতীয় জীবনে প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব অত্যধিক। এটি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি। কারণ জনসংখ্যাকে দক্ষ করে তোলার ভিত্তিমূল প্রাথমিক শিক্ষা, যে কারণে সরকার বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জোরদার করেছে। প্রাথমিক শিক্ষার উল্লেখযোগ্য লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে মানসিক মূল্যবোধের বিকাশ এবং দেশজ উপাদানভিত্তিক শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক অনুসরণ করা; কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে এক ও অভিন্ন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি সব ধরনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলক করা; শিশুর মনে ন্যায়বোধ, কর্তৃত্ববোধ, শৃঙ্খলাবোধ প্রভৃতি গুণাবলি অর্জনে সহায়তা করা; শিক্ষার্থীর মনে বৃত্তিমূলক শিক্ষা সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণা তৈরি করা; শিক্ষান্তরে আদিবাসীগণ সকল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জন্য স্ব-স্ব মাতৃভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা করা প্রভৃতি।
এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করে শিক্ষার মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বৃদ্ধি করে আট বছর করা হয়েছে। শিক্ষা পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধারার সমন্বয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাঠসূচি অনুযায়ী নির্ধারিত বিষয়সমূহ বাধ্যতামূলকভাবে পড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৬ + বয়সে ভর্তির নিয়ম বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া ঝরে পড়া সমস্যা সমাধানকল্পে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। যেমন- উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা, দুপুরে খাবার ব্যবস্থা করা প্রভৃতি। প্রতিবন্ধী শিশুর সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উদ্দীপকে সাফির স্কুলটি ভাড়া বাড়িতে ক্লাস করায়। কিন্তু বর্তমান জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষার্থীর সুরক্ষা এবং শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাঠ, খেলাধুলা প্রভৃতির ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছে যা সাফির বিদ্যালয়ে নেই। তবে বর্তমান শিক্ষানীতিতে এ বিষয়টি ছাড়াও উপরে বর্ণিত দিকগুলোও রয়েছে। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত উদ্ভিটি যৌক্তিক।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : জনাব পিন্টু বিশ লক্ষ টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে একটি মৎস্য খামার করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করলেন। এজন্য তিনি একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেন যার মেয়াদ হবে ০৫ বছর, পরবর্তীতে তা বাড়তে পারে। এরপর এ প্রকল্পের কতজন শ্রমিক, কতজন বিশেষজ্ঞ লাগবে, তাদের বেতন-ভাতা বাবদ কত ব্যয়, প্রকল্প থেকে কত আয় হবে ইত্যাদি সম্বলিত একটি প্রস্তাব নিয়ে একটি ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করার পর ব্যাংকটিও তার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন এবং যাবতীয় বিবেচনা করে ঋণ দিতে সম্মত হলো। কিছুদিন পর দেখা গেল তার প্রকল্পটি বেশ লাভবান হচ্ছে।

ক. স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার মেয়াদ কত দিনের হয়?
খ. সামাজিক নীতি বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে পিন্টুর কর্মপ্রক্রিয়াটি ‘নীতি না পরিকল্পনা’—ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সফলতা বেশি’ যুক্তি দেখাও।

৪ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা ১ বছর বা তার চেয়ে কম সময়ের জন্য করা।

খ. সামাজিক নীতি হলো সেসব প্রতিষ্ঠিত আইন, প্রশাসনিক বিধান ও সংস্থা পরিচালনার মূলনীতি, কার্যপ্রক্রিয়া ও কার্যসম্পাদনের উপায় যা জনগণের সামাজিক কল্যাণকে প্রভাবিত করে।
সরকার বা এর নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান জনগণের সেবা ও উপার্জনের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির জন্য যে কর্মপন্থা গ্রহণ করে সেগুলোকে সামাজিক নীতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এগুলোর মূল উদ্দেশ্য রাষ্ট্রের নাগরিকদের সার্বিক আর্থ-সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করা। বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিরসনে সামাজিক নীতিগুলো আদর্শ হিসেবে বিবেচিত হয়। যেমন- শিক্ষানীতি, স্বাস্থ্যনীতি, জনসংখ্যানীতি ইত্যাদি।

গ. উদ্দীপকে পিন্টুর কর্মপ্রক্রিয়াটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা।
সাধারণত ১০ থেকে ২০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনাকে দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বলা হয়। অদূর ভবিষ্যতের জন্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন খাতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দীর্ঘমেয়াদি পটভূমিতে এই পরিকল্পনা তৈরি হয়। এজন্য দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার লক্ষ্য (Target) বিভিন্ন খাতে বিভক্ত করা হয়। যেমন- বাংলাদেশে ১৯৯০-২০১০ মেয়াদের জন্য একটি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণীত হয়। বিশ বছর মেয়াদি এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য ছিল জাতীয় আয় বৃদ্ধি, মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং অধিকতর আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন।
উদ্দীপকে পিন্টু তার মাছের খামারের জন্য ০৫ বছর মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা নির্ধারণ করেন। এই পরিকল্পনাকে তিনি শ্রমিকের সংখ্যা, বিশেষজ্ঞ সংখ্যা, বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয়, প্রকল্প থেকে আয় এরকম বিভিন্ন খাতে বিভক্ত করেন; যা দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনার অনুরূপ।

ঘ. আমার মতে, স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সফলতা বেশি।
সাধারণত কোনো দেশে স্বল্প সময়ের জন্য প্রণীত পরিকল্পনাকে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা বলা হয়। এ ধরনের পরিকল্পনা সাধারণত ১ বছর বা তার চেয়ে কম সময়ের জন্য প্রণীত হয়। যেমন- বার্ষিক বাজেট পরিকল্পনা। অন্যদিকে, দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে সামনে রেখে যে ধরনের পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয় তাকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বলে। ১ ধরনের পরিকল্পনা ৫ বছর থেকে ঊর্ধ্বে ২০ বছর পর্যন্ত হতে পারে। যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা সমাজের কল্যাণ, উন্নয়ন ও অগ্রগতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বিজ্ঞানভিত্তিক হাতিয়ার হচ্ছে পরিকল্পনা। এটি একটি সুশৃঙ্খল, ধারাবাহিক ও নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। কিন্তু পরিকল্পনা অল্প সময়ের জন্য গ্রহণ করা হলে অনেকক্ষেত্রেই এর ধারাবাহিকতা বাধাগ্রস্ত হয় এবং আশানুরূপ ফল লাভ করা সম্ভব হয় না। অন্যদিকে, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা বজায় থাকে এবং পরিকল্পনার বাস্তবায়নের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়। তাই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাতে পরিকল্পনার একটি আদর্শ চিত্র পাওয়া যায়।
সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার চাইতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাগুলো সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : দৈহিক প্রতিবন্ধীদের স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য যেসব পুনর্বাসনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় তার মধ্যে ‘চাকরি পুনর্বাসন’ অন্যতম। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এবং সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা বিভাগ টঙ্গীতে এ কেন্দ্রটি চালু করেছে। কেন্দ্রটি সব ধরনের প্রতিবন্ধীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহে কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে। এখানে ৫০ জনের প্রশিক্ষণের সুযোগ রয়েছে।

ক. পরিকল্পনাকে কাজের কী বলা হয়?
খ. সামাজিক নীতি বলতে কী বুঝ?
গ. উদ্দীপকের সরকারের গৃহীত উদ্যোগ সামাজিক নীতির অন্তর্ভূক্ত হবে কেন? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্ভ সংস্থাটি সামাজিক নীতি অবলম্বন করে অগ্রসর হওয়ায় কল্যাণমূলক কর্মে অগ্রগতি সাধন করতে পেরেছে- বিশ্লেষণ করো।

৫ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. পরিকল্পনাকে কার্য সম্পাদনের পূর্ব প্রস্তুতি বলা হয়।

খ. সামাজিক নীতি (Social Policy) হলো সেসৰ প্ৰতিষ্ঠিত আইন, প্রশাসনিক বিধান ও সংস্থা পরিচালনার মূলনীতি, কার্যপ্রক্রিয়া ও কার্যসম্পাদনের উপায় যা জনগণের সামাজিক কল্যাণকে প্রভাবিত করে।
সরকার বা এর নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান জনগণের সেবা ও উপার্জনের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির জন্য যে কর্মপন্থা গ্রহণ করে সেগুলোকে সামাজিক নীতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এগুলোর মূল উদ্দেশ্য রাষ্ট্রের নাগরিকদের সর্বাধিক আর্থ-সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করা। বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিরসনে সামাজিক নীতিগুলো আদর্শ হিসেবে বিবেচিত।হয়। যেমন- শিক্ষানীতি, স্বাস্থ্যনীতি, জনসংখ্যানীতি ইত্যাদি।

গ. উদ্দীপকে ‘চাকরি পুনর্বাসন’ কেন্দ্রটি সামাজিক নীতির বৈশিষ্ট্য অবলম্বন করে পরিচালিত হওয়ায় এ উদ্যোগ সামাজিক নীতির অন্তর্ভুক্ত হবে।
সামাজিক নীতি বলতে সমাজের উন্নয়ন এবং বৃহত্তর কল্যাণকে সামনে রেখে প্রণীত নীতিকে বোঝায়। সমাজের কল্যাণে বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক সেবা প্রদান বা সামাজিক সমস্যার সমাধান বা ব্যক্তি ও গোষ্ঠী জীবনের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার নিশ্চয়তা বিধানে যেসব নীতি প্রণয়ন করা হয় তাকেই সামাজিক নীতি বলা হয়। সামাজিক নীতি বর্তমান বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সামাজিক নীতির মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রের কল্যাণমুখী পরিকল্পনা ও কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, দৈহিক প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনমূলক কার্যক্রম ‘চাকরি পুনর্বাসন’-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা বিভাগ কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। সরকারের এ ধরনের নানা উদ্যোগ সামাজিক নীতির অন্তর্ভুক্ত। সামাজিক নীতি সামাজিক পরিবর্তন ও উন্নয়নের নির্দেশক হিসেবে কাজ করে। সামাজিক নীতির উদ্দেশ্য হিসেবে সমাজের সর্বস্তরের জনগণের কল্যাণ সাধন, পূর্ণ কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য নিরসন, কল্যাণমুখী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, সামাজিক অসমতা দূরীকরণ ও সামাজিক বিধান প্রকৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর সামাজিক নীতি সামাজিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। উদ্দীপকের দৈহিক প্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষম করে তুললে দারিদ্র্য এবং সামাজিক অসমতা হ্রাস পাবে। আর এসব কার্যক্রম পরিচালনা সামাজিক নীতির অংশ। এ কারণে উদ্দীপকের উদ্যোগটি সামাজিক নীতির অন্তর্ভূক্ত।

ঘ. উদ্দীপকে নির্দেশিত সংস্থাটি অর্থাৎ ‘চাকরি পুনর্বাসন’ সামাজিক নীতি অবলম্বন করে অগ্রসর হওয়ায় কল্যাণমূলক কর্মে অগ্রগতি সাধনে সক্ষম হয়েছে।
সামাজিক নীতি সমাজের বৃহত্তর কল্যাণ সাধনের জন্য প্রণীত হয়। এটি একটি বুদ্ধিজাত প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ার সাথে সংযুক্ত রয়েছে বিভিন্ন তথ্য ভাণ্ডার, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতা। এ নীতিতে সমাজের প্রতিটি জনগণের কল্যাণের বিষয় সর্বাগ্রে বিবেচনা করা হয়। সামাজিক নীতির কর্মসূচি বাস্তবায়নের পথপ্রদর্শক, দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত নীতি, জন অংশগ্রহণমূলক, বাস্তব তথ্যনির্ভর, উন্নয়নের মাইলফলক প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়।
উদ্দীপকের ‘চাকরি পুনর্বাসন’ কেন্দ্রে দৈহিক প্রতিবন্ধীদের কল্যাণ ও স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এখানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি সহায়তা করে এবং সমাজসেবা বিভাগ কর্মসূচিটি বাস্তবায়নের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এতে জনগণের অংশগ্রহণ রয়েছে এবং প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। এ বৈশিষ্ট্যগুলো সামাজিক নীতির বৈশিষ্ট্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ অর্থাৎ সংস্থাটি এ নীতিকে অবলম্বন করে অগ্রসর হয়েছে।
উপরের আলোচনা বিশ্লেষণ করে বলা যায়। যেহেতু সামাজিক নীতি মানুষের কল্যাণের জন্য প্রণীত হয়, তাই এ নীতি অবলম্বন করে সংস্থাটি অগ্রসর হওয়ায় কল্যাণমূলক কর্মে অগ্রগতি সাধন করতে পেরেছে।

Leave a Comment